ঢাকা, রবিবার ২৭ জুলাই ২০২৫
১১ শ্রাবণ ১৪৩২, ০১ সফর ১৪৪৭

ঢাকা, রবিবার ২৭ জুলাই ২০২৫
১১ শ্রাবণ ১৪৩২, ০১ সফর ১৪৪৭
ডিসিসিআই

ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে উদ্বিগ্ন ব্যবসায়ীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে উদ্বিগ্ন ব্যবসায়ীরা

নিরাপদ ও সহায়ক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিশ্চিত না হলে দেশে ব্যবসা ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণ সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি তাসকীন আহমেদ। তিনি বলেন, সম্প্রতি চাঁদাবাজি, প্রতারণামূলক অনলাইন কার্যক্রম, পণ্য পরিবহনে ঝুঁকি, জালিয়াতিসহ বিভিন্ন অনিশ্চয়তা ব্যবসায়ীদের আস্থার জায়গায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। দেশের পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে তাতে ব্যবসায়ীরা ভীষণভাবে উদ্বিগ্ন। তিনি নিরাপদ পরিবেশ তৈরি, চাঁদাবাজি বন্ধসহ বিভিন্ন দাবি জানিয়ে বলেন, ব্যবসা পরিচালনার জন্য নিরাপদ ও স্বচ্ছ পরিবেশ নিশ্চিত করতে সরকারের কার্যকর হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।

গতকাল বুধবার ডিসিসিআই মিলনায়তনে আয়োজিত ব্যবসা-বাণিজ্য সহজীকরণে উন্নত আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখার অত্যাবশ্যকতা শীর্ষক মতবিনিময়সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তাসকীন আহমেদ বলেন, আন্দোলন-সংঘাত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অংশ হলেও দেশের অর্থনৈতিক সংকটকালে ব্যবসা ও নাগরিক জীবনে যাতে অকারণ বিঘ্ন না ঘটে, সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। পাশাপাশি রাজধানীর ওপর অতিরিক্ত চাপ কমাতে প্রশাসনিক ও বাণিজ্যিক বিকেন্দ্রীকরণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

সভায় ডিসিসিআইয়ের সাবেক ঊর্ধ্বতন সহসভাপতি আব্দুস সালাম বলেন, নিয়মিত ভ্যাট-ট্যাক্স দিয়েও ব্যবসায়ীরা ভীতিকর পরিবেশে কার্যক্রম পরিচালনা করতে বাধ্য হচ্ছেন, যা মোটেই কাঙ্ক্ষিত নয়।

বাংলাদেশ ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোলাম মওলা বলেন, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরও আইন-শৃঙ্খলার কাঙ্ক্ষিত উন্নতি হয়নি। স্থলবন্দরে পণ্য পরিবহনে দালালনির্ভরতা ও ট্রাকস্ট্যান্ডে বিশৃঙ্খলায় ব্যাবসায়িক ব্যয় বেড়েছে। তিনি ঢাকার লালবাগ, কোতোয়ালি ও চকবাজার এলাকায় নিরাপদ নগদ অর্থ পরিবহনের লক্ষ্যে সন্ধ্যাকালীন পুলিশি টহল বাড়ানোর দাবি জানান। চিনির ওপর অতিরিক্ত কর প্রত্যাহারের আহবান জানিয়েছেন বাংলাদেশ চিনি ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হাজি মো. আবুল হাসেম।

মৌলভীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হাজি সৈয়দ মোহাম্মদ বশির উদ্দিন বলেন, পুলিশ এখনো সক্রিয়ভাবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারছে না। তিনি চিনি ও তেলের বাজার উন্মুক্ত করার প্রস্তাব দেন। বাংলাদেশ ডাল ব্যবসায়ী সমিতির সিনিয়র সহসভাপতি নেসার উদ্দিন খান কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য ঠেকাতে পুলিশি হস্তক্ষেপ জোরদারের দাবি জানান। বাংলাদেশ মনিহারি বণিক সমিতির সহসভাপতি হাজি ফয়েজউদ্দিন বলেন, পুরান ঢাকায় আন্দোলনের কারণে পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।

মোহাম্মদপুর টাউন হল কাঁচাবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি লুৎফুর রহমান বাবু বলেন, মোহাম্মদপুরে আইন-শৃঙ্খলার অবনতির পাশাপাশি ফুটপাত দখলমুক্ত না হওয়ায় ব্যবসা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

ধামরাই ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম জানান, লাইসেন্স নবায়নের জটিলতায় ইটভাটা শিল্প ক্ষতির মুখে রয়েছে। ডিসিসিআই পরিচালক এনামুল হক পাটোয়ারী বলেন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে স্টেকহোল্ডারদের সমন্বয়, জনসচেতনতা এবং ফুটপাতে ভাসমান দোকান উচ্ছেদ করা জরুরি।

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

গুলশানে সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদাবাজি আটক ৫

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
গুলশানে সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদাবাজি আটক ৫
গুলশানে সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদাবাজির সময় আটক হওয়া পাঁচজন। ছবি : কালের কণ্ঠ

রাজধানীর গুলশানে সাবেক এক নারী সংসদ সদস্যের বাড়িতে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে পুলিশের কাছে হাতেনাতে আটক হয়েছেন পাঁচজন। আটক ব্যক্তিদের মধ্যে চারজন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পদধারী ছাত্রনেতা। তাঁরা হলেন রাজ্জাক রিয়াদ (২৫), সাকাদাউন সিয়াম (২২), সাদমান সারদার সাদাব (২১) ও ইব্রাহিম হোসেন মুন্না (২৪)। আটক আরেকজন আমিনুল ইসলাম (১৩)।

গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় গুলশান-২-এর ৮৩ নম্বর রোডে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক এমপি শাম্মী আহমেদের বাসায় এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ সূত্র জানায়, সাবেক এমপি শাম্মী আহমেদ পলাতক থাকায় ওই বাসায় বর্তমানে তাঁর স্বামী বসবাস করছেন। সমন্বয়ক পরিচয়ে ভয় দেখিয়ে গত সপ্তাহে তাঁর কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়।

গুলশান থানার ওসি হাফিজুর রহমান বলেন, রাজ্জাক রিয়াদের নেতৃত্বে এর আগে শাম্মী আহমেদের স্বামীর কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা চাঁদা নেওয়া হয়।

তবে তারা ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছিল। আজ (গতকাল) ওই চাঁদাবাজরা বাকি টাকা আদায় করতে আবারও ওই বাসায় যায়। এক পর্যায়ে চাঁদাবাজরা স্বর্ণালংকার লুট করার চেষ্টা করে। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে হাতেনাতে তাদের আটক করে।
পরে তাদের গুলশান থানায় নিয়ে আসা হয়। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন। এ ছাড়া চাঁদাবাজির আগের অর্থ উদ্ধারে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। পুলিশ জানায়, রাজ্জাক রিয়াদের নেতৃত্বে এই চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটেছে। তিনি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক এবং বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের (বাগছাস) সদস্য।
রিয়াদ নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার বাসিন্দা। বর্তমানে ধানমণ্ডির নিউ মডেল এলাকায় বসবাস করেন। আটক ইব্রাহিম হোসেন মুন্নার গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরের রামদাসদী গ্রামে এবং আমিনুল ইসলাম বাড্ডা আলাতুন্নেছা স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

সংগঠন থেকে বহিষ্কার : গতকাল রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দপ্তর সম্পাদক শাহাদাত হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে অভিযুক্ত পাঁচজনের মধ্যে তিনজনকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাংগঠনিক কাঠামো ও শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঢাকা মহানগর শাখার আহ্বায়ক ইব্রাহিম হোসেন মুন্না, সদস্য সাকাদাউন সিয়াম ও সাদমান সারদার সাদাবকে সাংগঠনিক পদ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের অভিযুক্তদের সঙ্গে সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।  এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, রাজ্জাক রিয়াদ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক এবং বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) সদস্য এবং আমিনুল ইসলাম সংগঠনের কেউ না হওয়ায় এ বিজ্ঞপ্তিতে তাদের নাম উল্লেখ করা হয়নি।

এদিকে চাঁদাবাজির অভিযোগে আটক পাঁচজনের বিরুদ্ধে দ্রুত মামলা ও বিচারের দাবিতে গতকাল রাত ১২টার দিকে গুলশান থানার সামনে বিক্ষোভ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গুলশান শাখার সদস্যরা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গুলশান থানার ওসি।

মন্তব্য

মাইলস্টোনে বিমান দুর্ঘটনায় আহতদের খোঁজ নিতে বার্ন ইনস্টিটিউটে প্রধান উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
মাইলস্টোনে বিমান দুর্ঘটনায় আহতদের খোঁজ নিতে বার্ন ইনস্টিটিউটে প্রধান উপদেষ্টা

মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান দুর্ঘটনায় আহত রোগীদের চিকিৎসার খোঁজ নিতে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে গেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।

গতকাল শনিবার রাত ৯টা ১০ মিনিটে হাসপাতালে যান তিনি। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়,  হাসপাতালে পৌঁছে প্রধান উপদেষ্টা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ নাসির উদ্দিনের কাছ থেকে সেদিনের ঘটনার বর্ণনা শোনেন এবং আহত রোগীদের বর্তমান অবস্থা জানতে চান।

অধ্যাপক নাসির জানান, বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের মাল্টিডিসিপ্লিনারি কনসালটেশন বোর্ডের পরামর্শক্রমে চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে।

রোগীদের আন্তর্জাতিক প্রটোকল অনুযায়ী মূল্যায়ন করা হয়েছে এবং সর্বোত্তম সেবা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশি চিকিৎসকদের পাশাপাশি বিদেশি বিশেষজ্ঞদেরও পরামর্শ গ্রহণ করা হচ্ছে।

তিনি জানান, সবার সম্মিলিত মূল্যায়নে বর্তমানে বার্ন ইনস্টিটিউটে চারজন ক্রিটিক্যাল, ৯ জন সিভিয়ার এবং ২৩ জন ইন্টারমিডিয়েট ক্যাটাগরির রোগী আছেন। এই মূল্যায়ন রোগীর অবস্থা অনুযায়ী সময় সময় পরিবর্তন হতে পারে বলেও জানান তিনি।

প্রধান উপদেষ্টা চিকিৎসার জন্য কোনো ধরনের যন্ত্রপাতি, সরঞ্জাম, ওষুধ বা অন্য কিছুর প্রয়োজনীয়তা আছে কি না জানতে চান।

পরিচালক বলেন, এই মুহূর্তে চিকিৎসাধীন রোগীদের জন্য প্রয়োজনীয় সব কিছু সরকারের পক্ষ থেকে সরবরাহ করা হচ্ছে। এর বাইরে যে দু-একটি সরঞ্জাম প্রয়োজন ছিল সেগুলো সিঙ্গাপুরের চিকিৎসকদল সঙ্গে করে নিয়ে এসেছে।

প্রধান উপদেষ্টা হতাহতের বিস্তারিত জানতে চাইলে বিশেষ সহকারী অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান ঘটনার বিশদ বর্ণনা দিয়ে বলেন, প্রাথমিকভাবে ঘটনাস্থলের কাছাকাছি হাসপাতালগুলোতে দগ্ধ রোগীদের নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানে হাসপাতালের চিকিৎসকরা অতি দ্রুত প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে প্রায় সবাইকে বার্ন ইনস্টিটিউটে এবং কম্বাইন্ড মিলিটারি হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।

ঘটনার পরপরই মন্ত্রণালয় থেকে বার্ন ইনস্টিটিউটের পরিচালককে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছিল। চিকিৎসক, নার্সসহ সব সেবাদানকারীরা প্রস্তুত ছিলেন এবং একসঙ্গে জরুরি বিভাগে আসা প্রায় ৩০ জন দগ্ধ রোগীকে দ্রুত চিকিৎসাসেবা দিতে সক্ষম হয়েছেন।

তিনি আরো জানান, প্রায় ১০টি হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে পরে অন্য হাসপাতালে রোগীদের দ্রুত স্থানান্তরিত করার কারণে প্রথম দিকে নিহত ও আহত রোগীর সংখ্যা নিয়ে কিছুটা বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছিল। এ ছাড়া বেশ কয়েকটি দেহাবশেষ ছিল যেগুলো ডিএনএ প্রোফাইলিংয়ের মাধ্যমে পরিচয় নিশ্চিত করতে হয়েছে, যার ফলে কিছু সময় লেগেছে।

অধ্যাপক সায়েদুর জানান, রোগীদের স্থানান্তরের সময় আম্বুল্যান্সের অভাব প্রকটভাবে বোঝা গেছে।

এই দুর্ঘটনার মধ্য দিয়ে দেশের জরুরি স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতাগুলো দৃশ্যমান হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা অবিলম্বে এ বিষয়ে করণীয় সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব পাঠানোর নির্দেশ দেন এবং দ্রুত এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।

এ ঘটনায় নিহতদের পরিবার ও আহতদের মানসিক সুস্থতা নিশ্চিতে ও ট্রমা কাটিয়ে উঠতে কাউন্সেলিংয়ের প্রতি জোর দেন প্রধান উপদেষ্টা। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের সম্পৃক্ত করে সম্মিলিত উদ্যোগ নিতে নির্দেশ দেন তিনি। এ কার্যক্রমে সব নিহতের পরিবার, আহত ও আহতের পরিবার এবং মাইলস্টোন স্কুলের প্রত্যেককে অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।

এর পাশাপাশি দগ্ধ রোগীদের নিকটাত্মীয়দের হাসপাতালে অবস্থানের সময় তাদের প্রতি যত্নশীল হওয়ার বিষয়ে পরিচালককে নির্দেশনা দেন প্রধান উপদেষ্টা।

বিভিন্ন হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসাসেবায় নিয়োজিত সব চিকিৎসক, নার্সসহ সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। একই সঙ্গে বিদেশ থেকে যাঁরা এই বিপদের সময় বাংলাদেশের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন তাঁদেরও ধন্যবাদ জানান তিনি।

হাসপাতাল পরিদর্শনকালে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম উপস্থিত ছিলেন।

 

মন্তব্য
এনবিআর চেয়ারম্যান

করব্যবস্থায় বড় বাধা দুর্নীতি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
করব্যবস্থায় বড় বাধা দুর্নীতি
আবদুর রহমান খান

দেশের করব্যবস্থায় বড় বাধা দুর্নীতি বলে মনে করেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান। তিনি বলেন, প্রকৃত মূল্যে পণ্য আমদানি-রপ্তানি না হলে কমপ্লায়েন্ট প্রতিষ্ঠান ও প্রকৃত করদাতারা ক্ষতিগ্রস্ত হন। জবাবদিহি ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই করব্যবস্থায় দুর্নীতি প্রতিরোধ সম্ভব।

গতকাল শনিবার রাজধানীর এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত করব্যবস্থাপনায় সংস্কার নিয়ে আয়োজিত ছায়া সংসদে তিনি এসব কথা বলেন।

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, আমদানি-রপ্তানিতে আন্ডার ইনভয়েসিং-ওভার ইনভয়েসিং নিয়ন্ত্রণ করতে না পারা আমাদের সমন্বিত ব্যর্থতা। বর্তমান যুগে পণ্যের দাম পৃথিবীর কোন প্রান্তে কত, তা বোতাম টিপলেই জানা যায়। ঋণপত্র খোলার সময় ব্যাংক ও কাস্টমস পরীক্ষা ও যাচাইয়ের মাধ্যমে দাম নিশ্চিত হতে পারে।

তিনি বলেন, রাজনৈতিক সদিচ্ছা না থাকলে করব্যবস্থাপনায় সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা কঠিন।

বর্তমান সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছার কারণেই কর প্রশাসনে সুশাসন প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত সহজ হচ্ছে। কর আদায়ের চেয়ে বেশি কর অব্যাহতি দেওয়া হয়। এই আইনগুলো সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে সরকার চাইলেই আর অব্যাহতি দিতে পারবে না।
শুধু সংসদ অর্থবিলের মাধ্যমে কর অব্যাহতি দিতে পারবে। এ ছাড়া দেশের সর্বস্তরে কর শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।

ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, সবার প্রচেষ্টা থাকলে করনীতি ও করব্যবস্থাপনা দুই ভাগে বিভক্ত করলে সুফল পাওয়া যাবে। তবে এই সংস্কারে প্রশাসন ক্যাডারের আধিপত্য বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন আয়কর ও কাস্টমস কর্মকর্তারা। সংস্কারের ফলে রাজস্ব খাতের কর্মকর্তারা পদোন্নতি ও পদমর্যাদায় ক্ষতিগ্রস্ত হলে বৈষম্য তৈরি হবে।

রাজস্ব প্রশাসনে অতিরিক্ত শাস্তিমূলক পদক্ষেপ ও প্রশাসনিক ভয় বিভাগীয় কার্যক্রমে হতাশা তৈরি করতে পারে। এতে দায়িত্ব পালনে অনীহা বাড়বে। ফলে কর আদায় ব্যাহত হয়ে রাজস্ব আদায় কমতে পারে।

রাজস্ব আদায় বৃদ্ধিতে সাতটি সুপারিশ করেছে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি। এর মধ্যে রয়েছে করজাল বাড়িয়ে আদায় সহজ করা ও পূর্ণাঙ্গ অটোমেশন, প্রস্তাবিত রাজস্ব সংস্কার বিষয়ে সবাইকে স্পষ্ট ধারণা দেওয়া, আয়কর ও কাস্টমস ক্যাডারের কর্মকর্তাদের যাতে উচ্চতর পদে যেতে বাধা তৈরি না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখা, কেইস টু কেইস ভিত্তিতে কর অব্যাহতির সুযোগ বন্ধ করা, শুল্ক ফাঁকি বন্ধে প্রকৃত মূল্যে আমদানি নিশ্চিত করা, করভীতি দূর করে করবান্ধব পরিবেশ তৈরি ও করের টাকার সঠিক ব্যবহার করা।

ছায়া সংসদে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল মেডিক্যাল কলেজের বিতার্কিকদের হারিয়ে গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের বিতার্কিকরা জয়ী হয়। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র দেওয়া হয়।

মন্তব্য

নির্বাচনে অস্ত্রের চেয়েও হুমকি এআই : সিইসি

খুলনা অফিস
খুলনা অফিস
শেয়ার
নির্বাচনে অস্ত্রের চেয়েও হুমকি এআই : সিইসি

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) অস্ত্রের চেয়েও ভয়াবহ হুমকি হতে পারে।  গতকাল শনিবার সকালে খুলনার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আয়োজিত মতবিনিময়সভার আগে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এটি একটি আধুনিক হুমকি। যেকোনো কিছু দেখলেই তাই শেয়ার করা ঠিক নয়।

একটু যাচাই-বাছাই করে শেয়ার করা উচিত। অপপ্রচার থেকে নির্বাচনব্যবস্থাকে যথাসম্ভব নিরাপদ রাখার জন্য মিডিয়ার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। সোশ্যাল মিডিয়াতে যে ভুল তথ্য দেওয়া হয়, সে ব্যাপারে আপনাদের সহায়তা প্রয়োজন।

সিইসি বলেন, আগামী নির্বাচনে ভোটারদের আস্থা, তাঁদের ভোটকেন্দ্রে নিয়ে আসা, সামাজিক মাধ্যম ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে অপতথ্যের প্রচার বন্ধ করাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

সামাজিক মাধ্যমে দ্রুত অপতথ্য-মিস ইনফরমেশন, ম্যাল ইনফরমেশন ছড়িয়ে দেওয়া হয়, যা দ্রুত সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে ও বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে এইআই প্রযুক্তির মাধ্যমে হুবহু ভিউিও-ভয়েস তৈরি করা হচ্ছে। এইআই প্রযুক্তি এখন অস্ত্রের চেয়ে ভয়ংকর হয়ে উঠেছে। মডার্ন যুগে মডার্ন থ্রেট বহুবিধ ও নিত্যনতুন চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে আমরা এগোচ্ছি।
এই ধরনের অপপ্রবাহের কারণে ইউরোপের একটি দেশে ভোট স্থগিত করারও ঘটনা ঘটেছে, যা নির্বাচন কমিশনকে ভাবাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করা হবে।

তিনি বলেন, রাতের আঁধারে কোনো কার্যক্রম নয়, দিনের আলোতেই সবকিছু করতে চাই, যাতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা যায়। আমরা জাতিকে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে চাই। তা না করতে পারলে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিয়েই প্রশ্ন উঠবে।

সবার সহযোগিতায় আমরা জাতিকে একটি ভালো নির্বাচন উপহার দিতে চাই, এটা আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য।

তিনি বলেন, আমরা যদি মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন করতে পারি, গণ-অভ্যুত্থান করতে পারি, তাহলে একটি স্বচ্ছ, গ্রহণযোগ্য ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারব না কেন? জীবন যদি ফজর থেকে মাগরিব হয়, তাহলে আমি আমার জীবনের আসর পর্যন্ত এসে গেছি। তাই এমন কিছু করব না, যা আমাকে কলঙ্কিত করবে। ব্যক্তিগত লক্ষ্য বা স্বার্থ নয়, বরং দেশের জন্য একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করে যেতে চাই। তবে এটি শুধু আমার একার পক্ষে সম্ভব নয়, এ জন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, নির্বাচনের তারিখ ঘোষিত হলে আপনারা জানতে পারবেন কবে নির্বাচন হবে, তার আগে বলা সম্ভব নয়। এ ছাড়া যখন নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হবে তখন আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নির্বাচন কমিশনের অধীনে আসবে। 

তিনি বলেন, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের কথা আমরা বলিনি, প্রধান উপদেষ্টা বিভিন্ন দপ্তরকে বলেছেন ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে।

সিইসি বলেন, আমরা কোনো দলীয় সরকারের অধীনে নেই, আমরা একটি ইন্টেরিম সরকারের অধীনে আছি, তাই আমাদের দলীয় কোনো চাপ নেই। একটি সুন্দর, সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন জাতিকে উপহার দেওয়ার জন্য আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি চলছে। বিদ্যমান আইন না বদলানো পর্যন্ত আগের নিয়মেই নির্বাচন হবে।

সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ফয়সাল কাদের, জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা বেনজির আহমেদ ফরাজীসহ নির্বাচন কমিশন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বিকেলে নগরের সার্কিট হাউস মিলনায়তনে খুলনা বিভাগের প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনার মতবিনিময় করেন।

 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ