ঢাকা, শুক্রবার ০৮ আগস্ট ২০২৫
২৪ শ্রাবণ ১৪৩২, ১৩ সফর ১৪৪৭

ঢাকা, শুক্রবার ০৮ আগস্ট ২০২৫
২৪ শ্রাবণ ১৪৩২, ১৩ সফর ১৪৪৭

গঠনতন্ত্রে সাত বড় পরিবর্তন

তৈমুর ফারুক তুষার
তৈমুর ফারুক তুষার
শেয়ার
গঠনতন্ত্রে সাত বড় পরিবর্তন

ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রে সাতটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এসেছে। গত শনিবার আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে এই পরিবর্তনগুলো অনুমোদন দেন কাউন্সিলররা। শিগগিরই এ গঠনতন্ত্র পুস্তিকা আকারে প্রকাশ করা হবে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতা কালের কণ্ঠকে এই তথ্য জানিয়েছেন।

দলের একাধিক সূত্র জানায়, এবারের গঠনতন্ত্রে সাতটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন হলো : এক. কেন্দ্রীয় কমিটির নাম সুনির্দিষ্ট করে ‘কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ’ করা হয়েছে। দুই. দলের যেকোনো পর্যায়ের কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার পরে ৪৫ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে হবে। আগে এই বাধ্যবাধকতা ছিল না। তিন. দলের উপজেলা, থানা ও ইউনিয়ন কমিটির উপদেষ্টার সংখ্যা বাড়িয়ে ২৭ করা হয়েছে।

আগে উপজেলা/থানায় ২১ জন এবং ইউনিয়ন কমিটিতে ১৫ জন নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করা হতো। চার. মহানগরের প্রতিটি পর্যায়ের কমিটিতে অন্তত দুই-তৃতীয়াংশ স্থানীয় ভোটার রাখতে হবে। পাঁচ. স্থানীয় সরকারের উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান, সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর পদে নির্বাচনে দলের মনোনয়ন দেওয়া হবে না। ছয়. মহিলা শ্রমিক লীগকে আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে।
সাত. আওয়ামী লীগের যেকোনো শাখা কমিটির নিয়মিত সভা এক মাসের পরিবর্তে দুই মাস পর পর করতে হবে।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক দলের ২২তম জাতীয় সম্মেলন গঠনতন্ত্র উপকমিটির সভাপতি ছিলেন। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র এমনিতেই যুগোপযোগী ও আধুনিক। এর পরও আমাদের সাংগঠনিক কাজের সুবিধার জন্য অল্প কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে।’

আওয়ামী লীগের আগের গঠনতন্ত্রের ২৫-এর ৭ (ক) অনুসারে শ্রমিক লীগ ও ছাত্রলীগকে ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

এবারের গঠনতন্ত্র

সংশোধন করে এ দুই সংগঠনের সঙ্গে মহিলা শ্রমিক লীগকেও স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। মহিলা শ্রমিক লীগ ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন হিসেবে তাদের গঠনতন্ত্র অনুসারে পরিচালিত হবে।

আওয়ামী লীগের এই সম্মেলনে গঠনতন্ত্র উপকমিটির সদস্যসচিব ছিলেন সেলিম মাহমুদ। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা মহিলা শ্রমিক লীগকে ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছি। তাদের গঠনতন্ত্র তৈরি করা হচ্ছে। সেখানে যেন আইএলওর সঙ্গে সাংঘর্ষিক কিছু না থাকে, সেটা দেখা হবে।’

দলের গত মেয়াদের গঠনতন্ত্রে ৪ নম্বর অনুচ্ছেদে গঠনপ্রণালী অংশের ৩ নম্বরে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির নাম লেখা আছে ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটি’। আবার গঠনতন্ত্রের ১৮ নম্বর অনুচ্ছেদসহ একাধিক স্থানে কেন্দ্রীয় কমিটির নাম ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ’ লেখা আছে। গঠনতন্ত্র সংশোধন করে এখন থেকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নাম নির্দিষ্ট করা হয়েছে ‘কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ’।

জানতে চাইলে আব্দুর রাজ্জাক কালের কণ্ঠকে বলেন, এত দিন দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের নাম একেক জায়গায় একেকটা লেখা হতো। এবার নাম চূড়ান্ত করে দেওয়া হয়েছে। এখন থেকে সব জায়গায় ‘কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ’ লেখা হবে।

আওয়ামী লীগের সব শাখা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার পরবর্তী ৪৫ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট শাখার পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে হবে; না পারলে ওই কমিটি বাতিল করা হবে। তবে বিশেষ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট কমিটি তাদের অনুমোদনকারী কমিটির কাছে সময় বাড়ানোর লিখিত আবেদন করতে পারবে। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আবেদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবেন।

আব্দুর রাজ্জাক কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এত দিন দেখা যেত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার পরে দু-এক বছর চলে যাচ্ছে, কিন্তু পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হচ্ছে না। দলের নেতাকর্মীরা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পেছনে ঘুরে হয়রান হয়ে যান, কিন্তু কমিটি আর হয় না। এতে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে সমস্যা হয়। এ জন্য আমরা পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের সময় বেঁধে দিয়েছি।’

দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সাংগঠনিক কাজে সম্পৃক্ততা বাড়াতে জেলা, উপজেলা, থানা, ইউনিয়ন পর্যায়ের কমিটিতে উপদেষ্টা পদের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। এখন থেকে দলের সব পর্যায়ের কমিটির উপদেষ্টা পরিষদ হবে ২৭ সদস্যের।

আগের গঠনতন্ত্রের ২৬ নম্বর অনুচ্ছেদের উপদেষ্টা পরিষদ অংশের ৩ নম্বরে বলা ছিল, ‘সংগঠনের জেলা, মহানগর, উপজেলা/থানা, ইউনিয়ন পর্যায়েও কেন্দ্রের অনুরূপ উপদেষ্টা পরিষদ গঠিত হইবে। মহানগরে ২৭, জেলায় ২৭, উপজেলা ও থানায় ২১ জন, ইউনিয়নে ১৫ জন সদস্যবিশিষ্ট উপদেষ্টা পরিষদ গঠিত হইবে।’

দলের গঠনতন্ত্র পরিবর্তন করে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর পদে প্রার্থী মনোনয়নের বিষয়টি বাদ দেওয়া হয়েছে। আগের গঠনতন্ত্রের ২৮ (৪) অনুচ্ছেদের (ক)-তে বলা হয়, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান ও দুজন ভাইস চেয়ারম্যান (মহিলা ও পুরুষ) পদে প্রার্থী মনোনয়ন দেবে। এবারের গঠনতন্ত্রে ধারাটি পরিবর্তন করে দুজন ভাইস চেয়ারম্যান মনোনয়ন দেওয়ার বিষয়টি বাদ দেওয়া হয়েছে।

আগের গঠনতন্ত্রের ২৮ (৬)-এ সিটি করপোরেশনের মেয়র ও কাউন্সিলর পদে প্রার্থী মনোনয়নের বিষয়টি উল্লেখ ছিল। এবারের গঠনতন্ত্রে পরিবর্তন এনে কাউন্সিলর পদে মনোনয়নের অনুচ্ছেদটি বাদ দেওয়া হয়েছে।

এবারের গঠনতন্ত্রে মহানগরের যেকোনো স্তরের কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে কমিটিতে দুই-তৃতীয়াংশ স্থানীয় ভোটার রাখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। মহানগরের ভোটের রাজনীতিকে শক্তিশালী করতে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সেলিম মাহমুদ কালের কণ্ঠকে বলেন, অনেক সময় দেখা যায় যে মহানগরের বিভিন্ন কমিটিতে জেলা থেকে আসা ব্যক্তিদের প্রাধান্য থাকে। এতে স্থানীয় ভোটের রাজনীতিতে কিছু সমস্যা দেখা যায়। এ কারণে মহানগরের সব পর্যায়ের কমিটিতে দুই-তৃতীয়াংশ স্থানীয় ভোটারকে রাখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

গঠনতন্ত্র উপকমিটির একাধিক নেতা জানান, এবারের গঠনতন্ত্রে সব শাখা কমিটির নিয়মিত সভার মধ্যবর্তী সময়ের ব্যবধান বাড়ানো হয়েছে। আগের গঠনতন্ত্রে প্রতি মাসে একবার করে সভার নিয়ম রাখা হয়েছিল। এবারে তা দুই মাস করা হয়েছে।

একাধিক সূত্র জানিয়েছে, আগের গঠনতন্ত্রে জেলা পরিষদ নির্বাচনের ক্ষেত্রে ৬৪ জেলা পরিষদের কথা উল্লেখ ছিল। এবারে তা পরিবর্তন করে ৬১ জেলা পরিষদ করা হয়েছে। কারণ পার্বত্য তিন জেলা পরিষদে নির্বাচন না হওয়ায় প্রার্থী মনোনয়ন দিতে হয় না।

এ ছাড়া আগের গঠনতন্ত্রে উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদের সংখ্যা নির্দিষ্ট করা ছিল না। এবারের গঠনতন্ত্রে এগুলোর সংখ্যা নির্দিষ্ট করে উল্লেখ করা হয়েছে।

 

 

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠক

সরকারে গেলে কী করবে বিএনপি জানতে চাচ্ছেন কূটনীতিকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
সরকারে গেলে কী করবে বিএনপি জানতে চাচ্ছেন কূটনীতিকরা

আসছে নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করলে বিএনপি কোন কোন বিষয়ে অগ্রাধিকার দেবে, সে সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন বিদেশি কূটনীতিকরা। আগামী ফেব্রুয়ারিতে রোজার আগে বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। জানা গেছে, লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠক করছেন বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক ও উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিরা। আগামী নির্বাচন সামনে রেখে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ, সম্ভাবনা ও বিএনপির অগ্রাধিকারসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনায় আগ্রহ দেখাচ্ছেন বিদেশি প্রতিনিধিরা।

জানা গেছে, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে লন্ডনে তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন কাতারের একজন মন্ত্রী। এ ছাড়া বৈঠক করেছেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্র, কমনওয়েলথ ও উন্নয়ন বিষয়ক দপ্তরের ইন্দোপ্যাসিফিক বিষয়ক পার্লামেন্টারি আন্ডারসেক্রেটারি অব স্টেট, ব্রিটিশ এমপি ক্যাথরিন ওয়েস্ট, ব্রিটিশ কনজারভেটিভ দলের গবেষণা উন্নয়নবিষয়ক সাবেক পরিচালক রজ ক্যাম্পসেল, ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক, যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স (সিডিএ) ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন, ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক গোয়েন লুইস প্রমুখ।

গত মাসে সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) এক জরিপের ফল প্রকাশ করেছে। ওই জরিপে অংশ নেওয়া তরুণদের ৩৮.৭৬ শতাংশ মনে করে, আগামী জাতীয় নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার দৌড়ে বিএনপি শীর্ষে থাকবে।

প্রবল গণ-আন্দোলনের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। বর্তমানে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ। আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে বিগত বছরগুলোতে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনগুলো অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক ছিল না বলে কড়া সমালোচনা করেছে পশ্চিমা দেশগুলো।
ব্যাপক কারচুপি, বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বর্জনের কারণে ওই নির্বাচনগুলো দেশে-বিদেশে বিতর্কিত হয়েছে। গণ-অভ্যুত্থানের পর ক্ষমতায় আসা ড. ইউনূসের সরকারের অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের অঙ্গীকার বাস্তবায়ন এবং সেই নির্বাচনের সম্ভাব্য ফলাফল কী হতে পারে সেদিকে দৃষ্টি রাখছে বিভিন্ন দেশ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, রাজনীতির মাঠে স্বীকৃত সবচেয়ে বড় দল বিএনপির জন্য আগামী নির্বাচনে বড় সম্ভাবনা রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তারেক রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার সম্ভাবনার ইঙ্গিত পাচ্ছেন আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার প্রধান ও উদার অর্থনীতির বিভিন্ন দেশের নেতারা। তাঁরা তাঁদের প্রতিনিধি পাঠাচ্ছেন দ্বিপক্ষীয় ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কসহ বিভিন্ন বিষয়ে তারেক রহমানের সঙ্গে আলোচনার জন্য।

আগামী নির্বাচন নিয়ে বিএনপির পরিকল্পনা জানার পাশাপাশি বিএনপি সরকার গঠন করলে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরো এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে আগ্রহের কথা জানাচ্ছেন তাঁরা। এ ছাড়া রাষ্ট্র সংস্কারে বিএনপির ৩১ দফা নিয়েও ব্যাপক আগ্রহ বিদেশিদের।

জানা গেছে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান অত্যন্ত আগ্রহের সঙ্গে বিদেশি প্রতিনিধিদের কথা শুনছেন এবং তাঁর পরিকল্পনার বিষয়ে আলোচনা করছেন। দেশের উন্নয়ন সম্ভাবনার ক্ষেত্রে প্রধান বাধাগুলোর বিষয়ও আলোচনায় স্থান পাচ্ছে। বিএনপি এরই মধ্যে দেশবাসীর সামনে ৩১ দফা সংস্কার পরিকল্পনা তুলে ধরেছে। ওই পরিকল্পনায় রাষ্ট্র ও রাজনীতির ক্ষেত্রে বিএনপির দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিফলিত হয়েছে। জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে দেশ পরিচালনার সুযোগ পেলে ওই সংস্কার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবে দলটি।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ১/১১-এর পর থেকে আওয়ামী লীগের শাসনামলে তারেক রহমান অব্যাহত অপপ্রচারের শিকার হয়েছেন। সব জল্পনাকল্পনার বিপরীতে বিদেশি কূটনীতিকদের সাম্প্রতিক সৌজন্য সাক্ষাৎ ও বৈঠকের মধ্য দিয়ে বিশ্বনেতাদের কাছে তারেক রহমানের গ্রহণযোগ্যতা প্রতিফলিত হয়। তারেক রহমানের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানে নানা ধরনের গুজব ও বিভ্রান্তিকর প্রচারণা ছিল। তবে সম্প্রতি তারেক রহমানের সঙ্গে ওই দেশের প্রতিনিধির সাক্ষাৎ সব বিভ্রান্তিকে ভুল প্রমাণ করেছে। একই সঙ্গে পশ্চিমা বিশ্বে তারেক রহমানের গ্রহণযোগ্যতাও প্রমাণিত হয়েছে।

বিগত ফ্যাসিবাদী সরকার বিএনপির সঙ্গে বিদেশি কূটনীতিকদের বৈঠক বা সাক্ষােক সন্দেহের চোখে দেখত। এসব সাক্ষাৎ নিয়ে তৎকালীন সরকার অসন্তোষ জানাত। আওয়ামী লীগ সরকারের এমন আচরণকে বিএনপির সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে বাধা হিসেবে দেখা হতো। এখন তারেক রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ব্যবধান কমানোর চেষ্টা করছেন বিদেশি কূটনীতিকরা।

বাংলাদেশে চলমান সংস্কার উদ্যোগকে জোরালো সমর্থন দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান বিষয়ে অনেকের সন্দেহ ও সংশয় ছিল। কিন্তু সম্প্রতি তারেক রহমান ও যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসনের বৈঠকের মধ্য দিয়ে সেই সন্দেহ ও সংশয় দূর হয়ে গেছে। ওই বৈঠক বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারেও যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনকে প্রতিফলিত করে।

মন্তব্য
কক্সবাজার সফর

সারজিস, হাসনাতসহ এনসিপির ৫ কেন্দ্রীয় নেতাকে শোকজ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
সারজিস, হাসনাতসহ এনসিপির ৫ কেন্দ্রীয় নেতাকে শোকজ

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম বর্ষপূর্তির দিন গত মঙ্গলবার কক্সবাজার সফরে যাওয়ার ঘটনায় পাঁচ কেন্দ্রীয় নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এর মধ্যে চার শীর্ষ নেতা ও এক কেন্দ্রীয় নেতা রয়েছেন। গতকাল বুধবার দুপুরের দিকে তাঁদের কাছে এই নোটিশটি পাঠানো হয়। গতকাল এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহউদ্দিন সিফাত গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বিজ্ঞপ্তিতে তিনি জানান, কারণ দর্শানোর নোটিশটি এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ ও যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহকে দেওয়া হয়েছে। নোটিশটি দিয়েছেন দলের আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম ও সদস্যসচিব আখতার হোসেন। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দলের দুই শীর্ষ নেতার কাছে সশরীরে উপস্থিত হয়ে এই সফরের কারণ ও প্রেক্ষাপট সম্পর্কে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে নোটিশে বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন বলেন, আমরা তাঁদের সফরের বিষয় কিছুই জানি না।

আমরা সবাই মিলে আলোচনা করে তাঁদের কাছে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠিয়েছি। তাঁরা নোটিশের উত্তর দিলে আমরা বিস্তারিত জানতে পারব।

এই পাঁচ নেতাকে পৃথকভাবে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হলেও নোটিশগুলোর ভাষা একই। এতে বলা হয়েছে, গতকাল (মঙ্গলবার) ৫ই আগস্ট জুলাই অভ্যুত্থানের প্রথম বর্ষপূর্তি ও রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ দিবসে আপনি এবং দলের আরো চারজন কেন্দ্রীয় সদস্য ব্যক্তিগত সফরে কক্সবাজার গিয়েছেন।

এই সফরসংক্রান্ত কোনো তথ্য কিংবা ব্যাখ্যা রাজনৈতিক পর্ষদ-এর নিকট পূর্বে অবগত করা হয়নি। এমতাবস্থায়, আপনার এই সিদ্ধান্তের কারণ ও প্রেক্ষাপট সম্পর্কে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম এবং সদস্যসচিব আখতার হোসেনের নিকট সশরীরে উপস্থিত হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা প্রদান করার জন্য আপনাকে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা যাচ্ছে।

এদিকে কক্সবাজার সফরে যাওয়া এনসিপির এই পাঁচ নেতা গতকাল প্রতিবেদনটি লেখা পর্যন্ত কক্সবাজার সাগরপারের একটি হোটেলে অবস্থান করেছেন। জানা যায়, তাঁরা মেরিন ড্রাইভের বিলাসবহুল হোটেল সি পার্লে (রয়েল টিউলিপ) রাত কাটানোর পর গতকাল দুপুর ১২টার দিকে কক্সবাজার শহরের উদ্দেশে রওনা হন। এরপর দুপুর ২টার দিকে কক্সবাজার সাগরপারের কলাতলী হোটেল-মোটেল জোন এলাকার শালিক নামের একটি রেস্তোরাঁয় দুপুরের খাবার খেয়ে সাগরপারের সুগন্ধা পয়েন্টের আরেক বিলাসবহুল হোটেল প্রাসাদ প্যারাডাইসে ওঠেন।

সেখান থেকে বিকেল ৫টার দিকে কয়েকজন বেরিয়ে যান। কিন্তু অন্যরা হোটেলেই অবস্থান করেন।

জানা যায়, এই পাঁচ নেতা কেন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠানে উপস্থিত হননি, সে বিষয়ে কেন্দ্রীয় কমিটির কোনো নেতাই কোনো তথ্য জানেন না। তাঁরা কাউকে না জানিয়েই কক্সবাজার গেছেন। এমনকি দলটির কক্সবাজারের নেতাকর্মীরাও বিষয়টি সম্পর্কে জানেন না।

গত মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা থেকে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে এই পাঁচ নেতা কক্সবাজার বিমানবন্দরে পৌঁছান। এরপর তাঁরা প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে উখিয়ার ইনানী সৈকতের পাঁচতারা হোটেল সি পার্লে (রয়েল টিউলিপ) ওঠেন।

(প্রতিবেদনটি তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন কক্সবাজার প্রতিনিধি)

মন্তব্য
অভিমত

ইশতেহারে অর্থনৈতিক সংস্কারের স্পষ্ট অঙ্গীকার থাকতে হবে

    ড. ফাহমিদা খাতুন
শেয়ার
ইশতেহারে অর্থনৈতিক সংস্কারের স্পষ্ট অঙ্গীকার থাকতে হবে
ড. ফাহমিদা খাতুন

২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের সময় ঘোষণা রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার আবহে একটি প্রয়োজনীয় অগ্রগতি। এত দিন নির্বাচন ঘিরে যে ধোঁয়াশা, গুজব ও দ্বিধা-দ্বন্দ্ব বিরাজ করছিল, এই ঘোষণার ফলে তা কিছুটা হলেও প্রশমিত হয়েছে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা যেকোনো দেশের জন্যই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও বিনিয়োগ পরিবেশের পূর্বশর্ত। তাই এই ঘোষণাকে আমরা রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার সম্ভাব্য সংকেত হিসেবে দেখতে পারি।

নির্বাচনের সুস্পষ্ট সময়সীমা ও কাঠামোর ধারণা পাওয়া গেছে, যা বিনিয়োগকারীদের পরিকল্পনায় সহায়ক হতে পারে। তবে এটি আস্থার একটি সূচনা মাত্র। পুরো আস্থা ফিরিয়ে আনতে হলে প্রক্রিয়াটির বিশ্বাসযোগ্যতা, স্বচ্ছতা ও সহিংসতামুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। যদি সব রাজনৈতিক দলকে যথাযথভাবে অন্তর্ভুক্ত করে, প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষ ভূমিকার মাধ্যমে একটি অংশগ্রহণমূলক এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা যায়, তাহলে দেশি ও বিদেশি উভয় বিনিয়োগকারীর আস্থা জোরদার হবে।
অন্যদিকে রাজনৈতিক সংঘাত ও সহিংসতা বাড়লে এই ইতিবাচক পদক্ষেপের প্রভাব অনেকটাই ব্যর্থ হয়ে যাবে।

নির্বাচনের পূর্ববর্তী সময়ে বিনিয়োগ ও ব্যবসার গতি সাধারণত নির্ভর করে রাজনৈতিক ঝুঁকির মাত্রার ওপর। অভিজ্ঞতা বলে, বিনিয়োগকারীরা এই সময়টাতে অপেক্ষাকৃত সতর্ক থাকেন। বিশেষত দীর্ঘমেয়াদি ও বৃহৎ বিনিয়োগগুলো নির্বাচনের ফলাফলের দিকে তাকিয়ে থাকে।

কারণ সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে নীতিগত ধারাবাহিকতা বিঘ্নিত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। কর-নীতিতে হঠাৎ পরিবর্তন, রাজস্ব ব্যবস্থার রূপান্তর কিংবা বাণিজ্যিক বিধি-নিষেধ প্রভাব ফেলতে পারে বিনিয়োগ সিদ্ধান্তে। যদিও কিছু স্বল্পমেয়াদি বাণিজ্যিক কার্যক্রম নির্বাচনকে ঘিরে বাড়তে পারে, সামগ্রিক বিনিয়োগচিত্র স্থবির থাকে। সরকার বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে, আরো কিছু নীতিগত পদক্ষেপ নিতে হবে।

রাজনৈতিক দলগুলোকে তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রার সংকট, ব্যাংকিং দুর্বলতা, রপ্তানি সংকোচন, জলবায়ু ঝুঁকি ও নারীর প্রতি বৈষম্যের মতো বিষয়গুলোতে বাস্তবভিত্তিক অগ্রাধিকার দিতে হবে।

প্রথমত, নির্বাচনের আগে ও পরে অর্থনৈতিক নীতির ধারাবাহিকতা বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি প্রয়োজন।

দ্বিতীয়ত, রাজনৈতিক সহিংসতা প্রতিরোধ এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবেবিশেষত শিল্পাঞ্চল ও বাণিজ্যিক এলাকায়।

তৃতীয়ত, ব্যাংকিং খাতের সুশাসন প্রতিষ্ঠা, ডলারসংকট নিরসন এবং রাজস্ব প্রশাসনের আধুনিকীকরণ করতে হবে।

এ ছাড়া ব্যবসা পরিচালনায় আমলাতান্ত্রিক জটিলতা হ্রাস এবং ওয়ানস্টপ সার্ভিস কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন সময়োপযোগী পদক্ষেপ হবে।

নির্বাচনী ইশতেহার শুধু রাজনৈতিক আদর্শের দলিল নয়; বরং এটি দেশের উন্নয়ন কৌশল এবং অর্থনৈতিক রূপরেখার দিকনির্দেশক।

রপ্তানি খাতে বহুমুখীকরণ, আইটি, কৃষি-প্রক্রিয়াজাত পণ্য ও হালকা প্রকৌশলকে উৎসাহ দেওয়া, অবকাঠামো ও জ্বালানিতে টেকসই বিনিয়োগ, মানবসম্পদ উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং জলবায়ু অভিযোজনএসবই বাস্তবমুখীভাবে উপস্থাপন করতে হবে। তবে ইশতেহারে প্রতিশ্রুতি দিলেই হবে না, তার বাস্তবায়নের সময়সীমা ও কৌশলও নির্দিষ্ট করে জানাতে হবে। বিনিয়োগকারীরা শুধু প্রতিশ্রুতি নয়; বরং এর সম্ভাব্য বাস্তবায়ন পরিমাপ করেই আস্থা গড়ে তোলে।

সব মিলিয়ে বলা যায়, নির্বাচনের সময় ঘোষণা একটি শুভ সূচনা। তবে এই সূচনাকে ফলপ্রসূ করতে হলে নির্বাচনী পরিবেশে অন্তর্ভুক্তি, স্বচ্ছতা, নীতিগত ধারাবাহিকতা এবং অর্থনৈতিক সংস্কারের স্পষ্ট অঙ্গীকার থাকতে হবে। তাহলেই এই রাজনৈতিক অগ্রগতি আমাদের কাঙ্ক্ষিত অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার দিকে নিয়ে যেতে পারবে।

লেখক : নির্বাহী পরিচালক, সেন্টার

ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)

অনুলিখন : মাসুদ রুমী

মন্তব্য

সেনাপ্রধানের সঙ্গে সৌদি রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
সেনাপ্রধানের সঙ্গে সৌদি রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ
ওয়াকার-উজ-জামান

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন নবনিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত ড. আব্দুল্লাহ জাফের বিন আবিয়া।

গতকাল বুধবার সেনা সদরে তাঁদের সাক্ষাৎ হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।

আইএসপিআর জানায়, সাক্ষাৎকালে তাঁরা শুভেচ্ছা বিনিময় করেন এবং দুই দেশের মধ্যকার সামরিক সহযোগিতা আরো জোরদার করার বিষয়ে আলোচনা করেন।

এ ছাড়া সৌদি রাষ্ট্রদূত দেশের সামগ্রিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি বজায় রাখতে সেনাবাহিনীর কার্যকর ভূমিকার প্রশংসা করেন।

সেনাপ্রধান সৌদি আরবে বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশি প্রবাসী কর্মীর কর্মসংস্থানের জন্য সৌদি সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং উভয় দেশের অর্থনীতিতে তাঁদের অবদানের কথা তুলে ধরেন।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ