‘আমার স্বামীর মতো আমি নিজেও বেঁচে নেই। আমার ও আমার মেয়ের জীবনের কোনো নিরাপত্তা নেই। এমনকি আমি যাতে মোরশেদের মামলা নিয়ে না লড়ি এ জন্য অনবরত আমাকে মানসিকভাবে হেনস্তা করা হচ্ছে।’ কালের কণ্ঠকে কাঁদতে কাঁদতে বলছিলেন ইশরাত জাহান।
পিছু ছাড়ছে না শারুন আতঙ্ক
ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন মোরশেদের স্ত্রী-কন্যা
- ► থানায় জিডি করে অজ্ঞাত স্থানে
► ‘প্রধানমন্ত্রীকে বলতে পারলে স্বস্তি পেতাম’
শাহাদাত স্বপন

স্বামীর মৃত্যুর ঘটনায় আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা করেছিলেন ইশরাত জাহান।
‘কোথায় আছি আপনাকেও বলব না’
ইশরাত বলেন, ‘মোরশেদ আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে যাঁদের আসামি করা হয়েছে তাঁদের ভয়ে প্রতিনিয়ত আতঙ্কের মধ্যে থাকি। হুইপের ছেলে শারুন চৌধুরী মামলার দুই আসামি পারভেজ ইকবাল ও জাবেদ ইকবালকে সঙ্গে নিয়ে মোরশেদকে বারবার হুমকি দিয়েছিলেন। আর এই হুমকির মুখেই আমার স্বামী আত্মহত্যা করেন। সেই তাঁরাই এখন আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। আমি তাঁদের ভয়ে বাসা ছেড়েছি।
পরিবার ছেড়ে অজ্ঞাত স্থানে যাওয়া প্রসঙ্গে ইশরাত বলেন, ‘মামলার আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুড়ে বেড়াচ্ছেন। তাঁরা অনেক ক্ষমতাবান, যেকোনো সময় আমার বা আমার মেয়ের ক্ষতি করতে পারেন। যেহেতু মোরশেদ আর্থিক লেনদেন ঘটনার জেরে হুমকি পেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। ফলে মামলা তদন্তের কাজে নিয়োজিত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা আর্থিক বিষয়গুলো খুঁজে দেখলেই যথেষ্ট প্রমাণ পেয়ে যাবেন। যথাযথ বিচার না হলে আমার মেয়েটাকে নিয়ে কিভাবে সার্ভাইভ করব, ভেবে কূল-কিনারা পাচ্ছি না।’
দুই আসামিই শারুনের খুব কাছের
মামলার সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে ইশরাত বলেন, ‘পিবিআইয়ের তদন্ত কর্মকর্তা কামরুল সাহেব তদন্ত করছেন। আমাকে একবার ডেকেছিলেন, তাঁকে আমি সব ধরনের তথ্য দিয়েছি। আমি বলেছি, মামলার আসামি ও চিটাগাং চেম্বারের সাবেক দুই পরিচালক পারভেজ ইকবাল ও জাবেদ ইকবাল দুজনই শারুন চৌধুরীর খুব কাছের। শারুন তাঁদের লালন-পালন করেন। শারুনের বোনের এক বিয়ের অনুষ্ঠানে দেখেছি, কোথায় কত টাকা লাগবে খরচের জন্য, এই দুজনকে শারুন নির্দেশনা দিচ্ছেন। শারুনের টাকার ব্যাগও ক্যারি করতেন তাঁরা। তাঁদের আইনের আওতায় নিলেই সব তথ্য বেরিয়ে আসবে।’
মোরশেদ আত্মহত্যার ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে ইশরাত বলেন, ‘হঠাৎ একদিন শারুন চৌধুরী মোরশেদকে ফোন করে বললেন, আপনি কি মোরশেদ সাহেব বলছেন? সেটি ছিল রমজান মাস। মোরশেদ তখন বলেছিলেন, হ্যাঁ। শারুন বললেন, আপনার সঙ্গে কি পারভেজের কোনো লেনদেন আছে? তখন মোরশেদ বলেছিলেন, হ্যাঁ। শারুন বলেছিলেন, এটা নিয়ে আপনার সঙ্গে আমার কথা আছে। তখন মোরশেদ বলেছিলেন, এটা তো আমার সঙ্গে পারভেজের লেনদেন। আপনার সঙ্গে কেন কথা বলব? তখন শারুন বলেছিলেন, আমি পারভেজকে দিয়ে টাকা খাটিয়েছি, এটা আমার টাকা। সো, ওই টাকাটা আপনার কাছ থেকে আমি এখন বের করব।’ ইশরাত জানান, মোরশেদ সেদিন শারুনের ডাকে না যেতে চাইলে শারুন বলেন, ‘আপনি আসবেন না, আপনার চৌদ্দগুষ্টি আসবে।’
‘শারুন আমাদের বাসায় আসেন’
ইশরাত আরো বলেন, ‘এর কিছু পরেই শারুন আমাদের বাসায় আসেন। তবে এসে বাসায় সিসিটিভি ক্যামেরা দেখে গাড়ি থেকে নামেননি। তবে শারুনের সঙ্গে আসা ব্যক্তিরা আমার বাসায় ভাঙচুর করে। এরপর ওই দিন রাতেই মোরশেদ চলে যান আজম ভাইয়ের (মোরশেদের বোন জামাই) বাসায়। সেখানেও যান শারুন ও তাঁর সহযোগীরা। ওই বাসায় সিসিটিভি ক্যামেরা ছিল না। তাই শারুন সেখানে নেমেছিলেন। সেখানে আরসাদুল আলম বাচ্চু, পারভেজ হারুনসহ তাঁদের কয়েকজন সহযোগী ছিলেন। মোরশেদের সঙ্গে সেখানে তর্ক হয় শারুনের। এ সময় মোরশেদের মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেন, চশমা খুলে ছুড়ে ফেলেন। শারুন মোরশেদের চেয়ে বয়সে ছোট, কিন্তু বাবার ক্ষমতার জোরে শারুন এতটা উদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেছেন, গালাগাল করেছেন যে ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। তাঁদের আচরণে মোরশেদ ভয় পেতেন। এ কারণেই তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নেন।’ এক পুলিশ কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করে ইশরাত বলেন, ‘চট্টগ্রাম পুলিশের তৎকালীন এই ডিসি মোরশেদকে ফোনে বলেছিলেন ‘আপনি আসবেন, নাকি আমি আসব? আমি এসে আপনাকে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে আসব। এই ডিসির অফিসে যতগুলো মিটিং হয়েছে প্রতিটি মিটিংয়ে আরসাদুল আলম বাচ্চু ও পারভেজ হারুন উপস্থিত ছিলেন।’
‘প্রধানমন্ত্রীকে বলতে পারলে স্বস্তি পেতাম’
স্বামী মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্তদের ধরা হলে প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে বলে আশাবাদী ইশরাত জাহান। তিনি বলেন, ‘অভিযুক্তরা বহাল তবিয়তে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আর যুবলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শহীদুল হক চৌধুরী রাসেল, যিনি মোরশেদকে হুমকি দিয়েছিলেন, তিনি তো ঢাকাতেই বসে আছেন।’ তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘একজন লোককেও কি ধরা যাচ্ছে না? যদিও তাঁরা অনেক টাকার মালিক এবং প্রভাবশালী।’ এর পরও ন্যায়বিচারের আশা করে ইশরাত বলেন, তিনি শেষ দেখে ছাড়বেন। ইশরাত বলেন, ‘আমার মেয়ে প্রতিদিন আমাকে বলে—মা, তুমি সেভ থাকবে তো? আল্লাহ যদি আমার মৃত্যু কারো হাতে রেখে থাকে সেটা হতে পারে। তবে আমি মোরশেদের মতো সুইসাইড করব না। আল্লাহ যত দিন হায়াত রেখেছেন, যতদূর সম্ভব আমি ফাইট করে যাব। আমি এখনো সরকারের ওপর ভরসা করছি, আমি প্রকৃত বিচার পাব। প্রকৃত ঘটনা তুলে ধরে আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি লিখতে চাই। অন্তত একটি চিঠি পাঠিয়ে যদি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে বিষয়টি অবহিত করতে পারি, স্বস্তি পেতাম।’
ইশরাত জাহান অশ্রুসিক্ত গলায় বলেন, ‘উপার্জনক্ষম ব্যক্তিটিকে হারিয়ে অন্ধকারে হাবুডুবু খাচ্ছি। কী করব, কোথায় যাব, কিভাবে সংসার চালাব। এত দিন পর কি মা-বাবার বাসায় ফিরে বোঝা হবো?’
ইশরাতের ঘরে এখন তালা
প্রতিবেদকের কথা হয় মোরশেদের বড় ভাইয়ের স্ত্রী সামিরা চৌধুরীর সঙ্গে। তিনি বলেন, মোরশেদের বড় ভাই আরশাদ চৌধুরী পিবিআইয়ের তদন্ত কর্মকর্তা কামরুলের সঙ্গে দুই দিন আগে দেখা করেছেন। কামরুল জানিয়েছেন, আসামিদের মোবাইল ফোন বন্ধ। তাঁদের রিচ করা যাচ্ছে না। তবে তদন্তকাজ চলমান আছে। ঘটনা উদঘাটনে তদন্ত করতে সময় লাগবে।
সামিরা চৌধুরী বলেন, ‘মোরশেদের ঘরে এখন তালা। প্রাণভয়ে ইশরাত মেয়েকে নিয়ে একেক দিন একেক জায়গায় পালিয়ে অবস্থান করছেন। আমাদেরও বলেন না কোথায় থাকেন।’ তিনি জানান, মোরশেদের বৃদ্ধা মা সন্তান হারানোর শোকের পাশাপাশি বিচার কার্যক্রমে অগ্রগতি না দেখে বিমর্ষ অবস্থায় শয্যাশায়ী।
শারুন চৌধুরী ও তাঁর ক্যাডারদের নির্যাতন ও অব্যাহত চাপের মুখে গত ৭ এপ্রিল আত্মহত্যা করেন ব্যাংকার মোরশেদ চৌধুরী। তার আগে সুসাইড নোটে লিখে যান, ‘আর পারছি না। সত্যি আর নিতে পারছি না। প্রতিদিন একবার করে মরছি। কিছু লোকের অমানুষিক প্রেসার আমি আর নিতে পারছি না। প্লিজ, সবাই আমাকে ক্ষমা করে দিয়ো। আমার জুমকে (মেয়ে) সবাই দেখে রেখো। আল্লাহ হাফেজ।’ এপর ১১ এপ্রিল চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলনে ইশরাত জাহান বলেছিলেন, ‘এটা আমার দৃষ্টিতে একটি হত্যাকাণ্ড, ফোর্স ডেথ। আমি আমার স্বামীর আত্মহননের নেপথ্যে জড়িতদের বিচার চাই।’
মোরশেদ আত্মহত্যা প্ররোচনা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম তদন্তের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে কালের কণ্ঠকে বলেন, তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে। আসামিদের ধরার প্রচেষ্টা চলছে। তদন্তাধীন বিষয়ে এর চেয়ে বেশি কিছু বলা ঠিক হবে না বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চট্টগ্রাম ১২ আসনের সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর ছেলে শারুনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
সম্পর্কিত খবর

আজ রাজপথে নামছে বিএনপি
নিজস্ব প্রতিবেদক

পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে মো. সোহাগ হত্যাকাণ্ডের ‘অপপ্রচার ষড়যন্ত্রের’ প্রতিবাদে শান্তিপূর্ণভাবে আজ থেকে রাজপথে থাকবে বিএনপি। বিএনপি মনে করছে, এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে জামায়াতে ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) রাজপথ দখল করার চেষ্টা করছে বলে মনে করছে বিএনপি। এ জন্য রাজপথে বিএনপিও শক্তি ও জনসমর্থন দেখাবে।
এখন পর্যন্ত এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দিচ্ছে না দলটি।
মাঠে নামছে ছাত্রদল : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি জানান, গোপন তৎপরতায় দীর্ঘদিন ধরে অভ্যস্ত গুপ্ত সংগঠন কর্তৃক মব সৃষ্টির অপচেষ্টা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বিনষ্ট করা এবং সারা দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির প্রতিবাদে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল আজ রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে বিক্ষোভ মিছিল করবে। গুপ্ত সংগঠন বলতে ইসলামী ছাত্রশিবির ও তাদের সহযোগী সংগঠনকে বোঝানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির।
ছাত্রদলের ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, আজ দুপুর ২টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শাহবাগ পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি সারা দেশের সব জেলা ও মহানগরে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।
কর্মসূচির বিষয়ে ঢাবি শাখা ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন, ‘গুপ্ত সংগঠন হিসেবে সেসব সংগঠনকেই বোঝানো হয়েছে, যারা প্রকাশ্যে নিজেদের রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনার বদলে গোপনে রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন ও সহিংসতা ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলা তৈরি করছে। গত ৫ আগস্টের পর একটি মুক্ত রাজনৈতিক পরিবেশ থাকা সত্ত্বেও তাদের এহেন গুপ্ত কার্যক্রম এ দেশের রাজনৈতিক পরিবেশকে অসহনশীল করে তুলছে এবং রাজনৈতিক বিষয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করে তুলছে। এ রকম কুচক্রী কার্যক্রমের বিরুদ্ধেই জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল তার কর্মসূচি গ্রহণ করেছে, যেন দেশবাসীকে এসব বিভ্রান্তিকর বিষয়ে সচেতন করে তোলা যায়।’
গুপ্ত সংগঠন বলতে কাদের বোঝানো হচ্ছে জানতে চাইলে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, ‘ছত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর যারা ক্যাম্পাসগুলোতে মব সৃষ্টি করে ‘সাধারণ শিক্ষার্থী’ নামে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করছে, তারাই গুপ্ত সংগঠন। ছাত্রশিবির এবং গুপ্তভাবে সংগঠন পরিচালনা করতে ছাত্রশিবিরকে যারা পৃষ্ঠপোষকতা করে, আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় তারা।’

সশস্ত্র বাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসির মেয়াদ আরো দুই মাস বাড়ল
বিশেষ প্রতিনিধি

বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কর্মকর্তাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতার মেয়াদ আরো দুই মাস (৬০ দিন) বাড়ানো হয়েছে। এ বিষয়ে গতকাল রবিবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এর আগে গত ১৩ মে থেকে তাঁদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসির ক্ষমতার মেয়াদ দুই মাস বাড়ানো হয়েছিল। সেই মেয়াদ গতকাল শেষ হয় ।
মেয়াদ বাড়ানোর আদেশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কমিশন্ড কর্মকর্তাদের (কোস্ট গার্ড ও বিজিবিতে প্রেষণে নিয়োজিত সমপদমর্যাদার কর্মকর্তারাসহ) ‘দ্য কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর, ১৮৯৮’-এর ১২(১) ও ১৭ ধারা অনুযায়ী স্পেশাল এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা অর্পণ করা হলো। এর মেয়াদ হবে ১৪ মার্চ থেকে ৬০ দিন পর্যন্ত। সারা দেশে তাঁরা এই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, সেনাবাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ‘ফৌজদারি কার্যবিধি-১৮৯৮’-এর ৬৪, ৬৫, ৮৩, ৮৪, ৮৬, ৯৫(২), ১০০, ১০৫, ১০৭, ১০৯, ১১০, ১২৬, ১২৭, ১২৮, ১৩০, ১৩৩ ও ১৪২ ধারার অপরাধগুলো বিবেচনায় নিতে পারবেন।
প্রথমে গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর সেনাবাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। পরে ৩০ সেপ্টেম্বর প্রজ্ঞাপন সংশোধন করে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদের (সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কর্মকর্তা) এই ক্ষমতা দেওয়া হয়। অর্থাৎ শুধু সেনাবাহিনী নয়, বিমান ও নৌবাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদেরও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দেওয়া হয়। তখন ৬০ দিনের জন্য এই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল।

শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ বিএনপির
নিজস্ব প্রতিবেদক

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও সাবেক পুলিশপ্রধান (আইজিপি) বেনজীর আহমেদসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে গুমের অভিযোগ দিয়েছে বিএনপি।
গতকাল রবিবার দুপুরে ভুক্তভোগীদের সঙ্গে নিয়ে এই অভিযোগ দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য এবং তথ্য সেলের সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন খান।
অভিযোগ তদন্ত করে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত গুমের ঘটনায় ১১ জন ভুক্তভোগীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে লিখিত অভিযোগে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময় এসব ভুক্তভোগীকে অপহরণের পর আয়নাঘরে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। গত বছর ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পলায়নের পর মোহাম্মদ আলীকে হাত ও চোখ বেঁধে পূর্বাচলের শেষ প্রান্তে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ফেলে আসা হয়। পাঁচ বছর তিন মাস ১৩ দিন পর তিনি মুক্তি পান।
তাঁর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১১ জন ভুক্তভোগীর নাম উল্লেখ করে আবেদনটি করা হয় বলে জানান সালাহউদ্দিন খান।
সালাহউদ্দিন খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভুক্তভোগীরা শেখ হাসিনাসহ ১৬ জন এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরো ৩০ থেকে ৩৫ জনের নাম উল্লেখ করে ন্যায়বিচারের আশায় আবেদন করেছেন। ভুক্তভোগীরা বলেছেন, শুধু বিএনপি করার অপরাধে বিগত সরকারের নির্মম নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে তাঁদের।

সোহাগের পরিবারের পাশে তারেক রহমান
বরগুনা প্রতিনিধি

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে পুরান ঢাকায় নিহত ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম মনি। গতকাল রবিবার বিকেলে তিনি বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার কাকচিড়া ইউনিয়নের সোহাগের গ্রামের বাড়িতে যান। তিনি স্থানীয় কাকচিড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আয়োজিত সভায় বক্তব্য দেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে তিনি নিহত সোহাগের পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।