<p>একটি মহামারির মধ্যে যেকোনো সময় যেকোনো পরিস্থিতি দেখা দিতে পারে। ফলে মানুষকে সব সময় নিজের সুরক্ষার প্রস্তুতি রাখতে হবে নিজ থেকেই। সরকার যা করার করবে। সরকারের অনেক কিছুর দিকে নজর রেখে পরিকল্পনা করতে হয়। পরামর্শক কমিটি সরকারকে পরামর্শ দেয়। তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে বৈঠকের মাধ্যমে আগে নিজেরা আলোচনা করে, সিদ্ধান্তে পৌঁছে এবং সেই সিদ্ধান্ত সরকারকে পরামর্শ আকারে অবহিত করে। তবে এর বাইরে আমি বেশি জোর দিতে চাই মানুষের সতর্কতার ওপর। বিশেষ করে মাস্ক পরা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কোনো বিকল্প নেই। এগুলোতে অবহেলা করলেই বিপদে পড়তে হবে। শুধু নিজে নয়, পরিবারের অন্যদেরও বিপদের মুখে পড়তে হয়।</p> <p>সবচেয়ে বেশি বিপদ হয় পরিবারের বয়স্ক মানুষের ও যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের। কারণ মৃত্যু ও জটিলতায় বেশি পড়ে এই দুই শ্রেণির মানুষ। আমি বলি, আমাদের এখানে দুটি মহামারির মধ্যে আমরা পড়েছি। যেহেতু এখন পর্যন্ত যারা মারা যাচ্ছে তাদের বেশির ভাগের ডায়াবেটিস আছে। আর এই ডায়াবেটিস একটি মহামারি আকারে আগেই আমাদের দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। ঘরে ঘরে ডায়াবেটিস রোগী। এর মধ্যে বড় একটি অংশ জানে না তাদের এই রোগ আছে। যেমন অনেকের উপসর্গ না থাকায় এখন তারা বুঝতে পারছে না তাদের করোনা আছে কি না; কিন্তু পরীক্ষা করাতে গিয়ে দেখতে পাচ্ছে অনেকেরই কারোনা আছে। ঠিক একইভাবে অনেকের ডায়াবেটিসের উপসর্গ নেই; কিন্তু পরীক্ষা করাতে গেলে দেখে তার ডায়াবেটিস আছে।</p> <p>ফলে আর যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের যেমন দীর্ঘমেয়াদি জটিলতা থাকে—কিডনি নষ্ট হয়, স্ট্রোক হয়, হৃদরোগ হয় তেমনি এসব রোগী করোনায় আক্রান্ত হলে ঝুঁকি বেশি থাকে, জটিলতা বেশি হয়, সহজে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যায়, চিকিৎসায়ও অনেকের শেষ রক্ষা হচ্ছে না।</p> <p>অন্যদিকে যাদের ডায়াবেটিস আছে তারা করোনায় আক্রান্ত হলে চিকিৎসার জন্য স্টেরয়েডসহ আরো কিছু ওষুধ দিতে হচ্ছে, যেগুলো ডায়াবেটিসের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। যাদের আগে ওষুধে চলত তাদের এখন ওষুধও লাগে, আবার ইনসুলিনও লাগে। ফলে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।</p> <p>লেখক : চেয়ারম্যান বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি</p>