<p>প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিডিআর হত্যাকাণ্ড ও হেফাজতে ইসলামের পদক্ষেপসহ বেশ কয়েকটি ষড়যন্ত্রের উল্লেখ করে জনসমর্থনের প্রতি আওয়ামী লীগের আস্থা পুনর্ব্যক্ত করেছেন।</p> <p>তিনি বলেন, ‘কেউ চাইলেই আওয়ামী লীগকে ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিতে পারবে না। যখন আমরা ২০০৮ এর পর থেকে সরকারে এসেছি, অনেকভাবে ক্ষমতা থেকে উৎখাতের চেষ্টা করা হয়েছে, বিডিআরের ঘটনা ঘটানো হলো, হেফাজতের ঘটনা ঘটানো, নানা ধরনের ঘটনা, বহু রকমের কারসাজির চেষ্টা করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘ষড়যন্ত্র করে খুন করে ফেলা যায়, হত্যা করে ফেলা যায়, কিন্তু জনসমর্থন না থাকলে ক্ষমতায় গিয়ে কেউ টিকে থাকতে পারে না, মানুষের কল্যাণও করতে পারে না, এ হচ্ছে বাস্তবতা।’</p> <p>প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনাসভায় ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘১৫ আগস্টের ঘটনাকে যারা শুধু একটি পারিবারিক ঘটনা বলে অপপ্রচার চালানোর চেষ্টা করেছিল তাদের আসল উদ্দেশ্যটা ধরা পড়ে যায় ৩ নভেম্বরের হত্যাকাণ্ডে। স্বাধীন বাংলাদেশের স্বাধীনতা যারা মানতে পারে নাই, স্বাধীন বাংলাদেশকেই যারা স্বীকার করে নাই, মানতে চায় নাই, তাদের দোসররাই ছিল এর মাঝে এবং তারাই ছিল এই হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা। শুধু হত্যাকাণ্ড সংঘটন নয়, পুরো আদর্শকেই পরিবর্তন করা হয়েছিল।’</p> <p>খন্দকার মোশতাককে ‘বেঈমান,’ ‘মীরজাফর’ আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, ‘মোশতাক বঙ্গবন্ধুকে হত্যা এবং ৩ নভেম্বরের জেলহত্যায় জড়িত ছিল। কারণ সে ছিল রাষ্ট্রপতি এবং জিয়া ছিল তার প্রধান সেনাপতি। তাদেরই পরিকল্পনা এবং তাদেরই হুকুমে কারাগারের দরজা খুলে খুনিদের প্রবেশ করতে দেওয়া হয় এবং তারাই হত্যাকাণ্ডটা ঘটায়। এরই ধারাবাহিকতায় জিয়াউর রহমান একদিকে সেনাপ্রধান অন্যদিকে নিজেকে নিজে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা দেয়। কাজেই, চক্রান্তটা যে কোথায় তা সহজেই বোঝা যায়।’</p> <p>শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা শুধু এই দিবসটা পালন নয়, সেই সাথে আমাদের এই কথা মনে রাখতে হবে যে সন্ত্রাসী চক্র, খুনি চক্র, স্বাধীনতাবিরোধী চক্র তারা কিন্তু বসে নাই। তাদের চক্রান্ত চলতেই থাকবে। যত ভালো কাজই আমরা করি না কেন তাদের মুখ থেকে ভালো কথা বের হয় না।’</p> <p>প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ টিকে আছে, কারণ এর তৃণমূলের নেতাকর্মী অর্থাৎ এর শিকড়ের শক্তি অনেক গভীরে। কাজেই সেটা যদি কারো চক্ষুশূল হয় বা সে কারণে কারো মনে ব্যথা হয়, তাহলে আমাদের কিছু করার নেই। আমরা জনগণের সমর্থনটা পাই, কারণ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে জনগণের স্বার্থে, জনকল্যাণে এবং জনগণের মঙ্গলে কাজ করে। আর এটা জনগণ খুব ভালোভাবে উপলব্ধি করে এবং এর শুভ ফলটা জনগণই পায়।’</p> <p>শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত জোটের সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতির কারণে দেশে জরুরি অবস্থা জারি হয় এবং ওয়ান-ইলেভেন আসে এবং খালেদা জিয়ার পছন্দের লোকদের নিয়েই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসে। সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারও ক্ষমতায় এসে দল গঠনের চেষ্টা করে।’ ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে পার্টি কার্যালয়ে মূল অনুষ্ঠানে আরো বক্তৃতা করেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।</p> <p>১৯৭৫ সালের ৩ আগস্ট ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের অভ্যন্তরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর এবং পাকিস্তানে তাঁর আটককালীন মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব প্রদানকারী জাতীয় চার নেতা মুজিবনগরের প্রবাসী সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ, অর্থমন্ত্রী এম মনসুর আলী এবং খাদ্য ও ত্রাণ মন্ত্রী এ এইচ এম কামারুজ্জামানকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। সূত্র : বাসস।</p>