দেশের চাহিদার ৯০ শতাংশ বিটুমিন আসে বিদেশ থেকে। এবার এ আমদানিনির্ভরতা শেষ হতে যাচ্ছে। গতকাল শনিবার দুপুরে ঢাকার কেরানীগঞ্জের পানগাঁওয়ে বিশাল কারখানায় ‘রোড টু দ্য ফিউচার’ স্লোগানকে সামনে রেখে যাত্রা শুরু করল বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের মালিকানাধীন বসুন্ধরা বিটুমিন প্লান্ট। এটি দেশের প্রথম বেসরকারি বিটুমিন প্লান্ট।
বসুন্ধরা বিটুমিন প্লান্টের বর্ণাঢ্য উদ্বোধন
- বাংলাদেশের জন্য অনেক বড় অর্জন : অর্থমন্ত্রী
আজ একটি ঐতিহাসিক দিন : বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধান অতিথি হিসেবে কারখানা উদ্বোধন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। উপস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা গ্রুপের কো-চেয়ারম্যান সাদাত সোবহান, ভাইস চেয়ারম্যান সাফিয়াত সোবহান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর ও তাঁর ছেলে ওয়ালিদ সোবহান। এ ছাড়া গণমাধ্যমের বেশ কয়েকজন সম্পাদক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, বসুন্ধরা গ্রুপের বিভিন্ন সেক্টরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাসহ বিশিষ্ট অতিথিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
বসুন্ধরা বিটুমিন প্লান্টের বর্ণাঢ্য উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে লেজার শোসহ ছিল অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার। দশ হাজারেরও বেশি লোক সমাগমের পুরো অনুষ্ঠানটি মনিটরিং করা হয় ড্রোনের মাধ্যমে। অনুষ্ঠান শেষে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালকে ক্রেস্ট দিয়ে সম্মাননা জানান বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। আর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর।
উদ্বোধনের পরপরই উৎপাদন শুরু করে প্লান্টটি। পরিশোধিত ক্রুড অয়েলের উপজাত থেকে তৈরি বিটুমিন সড়ক-মহাসড়ক নির্মাণে ব্যবহার করা হয়। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) নিয়ন্ত্রণাধীন ইস্টার্ন রিফাইনারি অভ্যন্তরীণভাবে ৭০ হাজার মেট্রিক টন বিটুমিন উৎপাদন করে। দেশে বিটুমিনের চাহিদা প্রায় পাঁচ লাখ টন। বাকিটা আসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে।
বসুন্ধরা বিটুমিন প্লান্ট এককভাবে বছরে সাড়ে আট লাখ মেট্রিক টন বিটুমিন ও পিচ উৎপাদন করতে পারবে। ফলে সরকারের বিপুল অঙ্কের বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে। বসুন্ধরা বিটুমিন প্লান্ট দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করবে। আর রপ্তানিতে আসবে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা।
অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল বসুন্ধরা গ্রুপের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘আমি খুবই আনন্দিত আপনাদের সঙ্গে একত্র হতে পেরেছি। আর এর পেছনে মূল কাজটি করেছে বসুন্ধরা গ্রুপ। তাদের এ উদ্যোগের কারণে আমি এখানে আসতে পেরেছি। পিছিয়ে পড়া মানুষকে এগিয়ে নেওয়াসহ কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে দেশে অবদান রাখছে বসুন্ধরা গ্রুপ।’
বিটুমিন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী আক্ষেপ করতেন উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বিটুমিন নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় আমরা আলোচনা করেছি। কিন্তু সমাধান খুঁজে পাইনি। আমাদের আবহাওয়ার সঙ্গে মেলে এমন বিটুমিন আমরা পাইনি। বলা হতো, এগুলো আমদানির পর গুণগত মান ঠিক থাকত না। সামান্য বৃষ্টি হলেই সড়কের বিটুমিন নষ্ট হয়ে যেত। যেসব বিটুমিন ব্যবহার করে রাস্তা তৈরি করতাম সেগুলো টেকসই হতো না। প্রধানমন্ত্রী একনেক সভায় (জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি) বা বাইরে সব জায়গায় আক্ষেপ করতেন, আমাদের রাস্তাগুলো কবে বিদেশের রাস্তার মতো হবে? আমাদের বলা হতো, এখানে অনেক বেশি বৃষ্টি হয়। বৃষ্টির কারণে বিটুমিনের মান ঠিক থাকে না। সে কারণে কখনো এগুলোকে আমরা আমাদের মতো করে ব্যবহার করতে পারিনি। আজ আমরা আনন্দিত। বসুন্ধরা গ্রুপ আমাদের সে সুযোগটি করে দিচ্ছে। বসুন্ধরার কাছে আমরা কৃতজ্ঞ।’
অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, ‘এখন আর বাইরে থেকে বিটুমিন আমদানি করতে হবে না। আমাদের চাহিদা মেটাতে দেশেই বিটুমিন পাব। চাহিদা মেটানোর পরে তাদের স্বপ্ন রপ্তানি করার। এটা বাংলাদেশের জন্য অনেক বড় অর্জন বলে বিশ্বাস করি।’
মুস্তফা কামাল বলেন, ‘এখানে আসার আগে বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যানের সঙ্গে আমার আলাপ হচ্ছিল। আমি উনাকে বলেছি একটা বড় কারখানা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে যেন তিন লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয়। তিনি (বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান) আমাকে আশ্বস্ত করেছেন, চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে এমন একটা কারখানা গড়ে তোলা হবে। এটি আমাদের জন্য বড় সুসংবাদ।’
এর আগে কেরানীগঞ্জ উপজেলার চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ পোস্তগোলা সেতুর টোল সমস্যা নিয়ে কথা বলেন। তিনি ৩০ বছরের পুরনো সেতুটিকে টোলমুক্ত করার দাবি জানান।
এ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘টোলের ব্যাপারটি আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে নিয়ে যাব। তিনি নিশ্চয় আপনাদের সঙ্গে একমত হবেন। আগামী ছয় মাস বা তার কিছুদিন পর টোলের ব্যাপারটি মীমাংসা হবে বলে আশা প্রকাশ করেন মন্ত্রী।
অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যের পর উপভোগ্য লেজার শো প্রদর্শন করা হয়। সেখানে বাংলাদেশে প্রথম বেসরকারি খাতের উদ্যোগে গড়ে ওঠা ‘বসুন্ধরা বিটুমিন প্লান্ট’ মূর্ত হয়ে ওঠে।
অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বসুন্ধরা গ্রুপের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ‘আজ একটি ঐতিহাসিক দিন। এই বছরটি গুরুত্বপূর্ণ। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী পালন করতে যাচ্ছি আমরা। এই মাস সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, ভাষার মাস। এই চমৎকার সময় এবং মুজিববর্ষে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার পথে বেসরকারি খাত এগিয়ে যাচ্ছে। তিল তিল করে বেসরকারি খাতে একেকটি শিল্প যোগ হচ্ছে। আর এর মানে হলো, হাজারো লোকের কর্মসংস্থান হওয়া, হাজারো পরিবারকে রক্ষা করা। আর এটিই হলো, সোনার বাংলা।’
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর পিতার স্বপ্ন পূরণ করে যাচ্ছেন। সেই স্বপ্ন পূরণে হাজারো মানুষের কর্মসংস্থানের জোগান দিতে দেশে যাঁরা এগিয়ে এসেছেন তাঁদের সম্মুখ ভাগে রয়েছে বসুন্ধরা গ্রুপ।’
বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের প্রশংসা করে নসরুল হামিদ বলেন, ‘সোবহান সাহেবের ছেলে আনভীর বিদেশ থেকে ফেরত এসে বাবার সঙ্গে হাত মিলিয়ে, বাবার যে স্বপ্ন তা বাস্তবায়ন করার জন্য রাত-দিন খেটে যাচ্ছেন। উনাদের তো টাকার অভাব নেই। তার পরও কেন করেন? কেন তাঁরা নতুন নতুন শিল্প গড়েন? কারণ, মানুষের প্রতি ভালোবাসা, দেশের প্রতি ভালোবাসা।’ এ সময় তিনি জানান, কেরানীগঞ্জে সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুলও হবে বসুন্ধরা গ্রুপের হাত ধরে।
বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান বলেন, ‘আমাদের বসুন্ধরা গ্রুপ অন্তত ৩০টি শিল্পকারখানা করেছে। বিশাল দুটি হাউজিং করেছে। বসুন্ধরা গ্রুপের একটি বৈশিষ্ট্য, বসুন্ধরা গ্রুপ শুধু নিজের জন্য করে না।’ হুন্ডি বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী এবং অর্থমন্ত্রীর একটি সিদ্ধান্তে রেমিট্যান্স বেড়ে গেছে। ২ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়ার সিদ্ধান্তে রেমিট্যান্স ৫০ শতাংশ বেড়ে গেছে। আমি তাঁদের আরেকটি অনুরোধ করব। আপনারা হুন্ডি বন্ধ করেন। বর্তমানের তুলনায় রেমিট্যান্স দ্বিগুণ হয়ে যাবে। এ দেশে প্রতি মাসে তিন বিলিয়ন ডলার আসবে।’ এ সময় তিনি শেখ রাসেলের নামে ক্রিকেট একাডেমি করার ঘোষণা দেন।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক এম শামীম জেড বসুনিয়া বলেন, মুজিববর্ষের প্রাক্কালে কারখানা উদ্বোধন বিরাট ব্যাপার। সবচেয়ে বড় কথা—কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিচ্ছে বসুন্ধরা গ্রুপ। দেশের চাহিদার ৯০ শতাংশ বিটুমিন আসে বিদেশ থেকে। বসুন্ধরা গ্রুপ এটা পূরণ করবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
কেরানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপ দেশের সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে। কেরানীগঞ্জের উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে। এই বিটুমিন প্রকল্প অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। ঢাকাকে চাপমুক্ত করতে হলে কেরানীগঞ্জের উন্নয়ন করতে হবে।
সম্পর্কিত খবর

বিবিসি বাংলার দাবি
শেখ হাসিনা প্রশ্নে ভারতের অবস্থান বদলাচ্ছে না
কালের কণ্ঠ ডেস্ক

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়ে শেখ হাসিনার অডিও ফাঁস কিংবা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে প্রথম অভিযোগ গঠন—যত যাই হোক, বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে ভারতের অবস্থানে এখনো কোনো পরিবর্তনের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। বাংলাদেশের অনুরোধ মেনে তাঁকে বিচারের জন্য প্রত্যর্পণ করার যে কোনো সম্ভাবনা নেই, দিল্লিতে ওয়াকিবহাল মহল সেটাও এখনো জোর দিয়েই বলছে। শেখ হাসিনা নিজেও এই দুটি বিষয়ের কোনোটি নিয়েই এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি।
গত এগারো মাসেরও বেশি সময় ধরে ভারতের আশ্রয়ে থাকাকালে তিনি নিয়মিতই দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাষণ দিচ্ছেন বা নানাভাবে ইন্টার্যাক্ট করছেন।
তবে বিবিসির যে তথ্যচিত্রে শেখ হাসিনার প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশের অডিও ফাঁস করা হয়েছে, তাঁর পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় এক ফেসবুক পোস্টে সেটিকে ‘অপসাংবাদিকতার নির্লজ্জ নজির’ বলে দাবি করেছেন।
এই মুহূর্তে আওয়ামী লীগের যে শত শত নেতাকর্মী ভারতে অবস্থান করছেন, তাঁদেরও অনেকেই তাঁদের নেত্রীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো খণ্ডন করার চেষ্টায় সামাজিক মাধ্যমে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন।
বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এরই মধ্যে এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট দিয়ে দাবি করেছেন, ‘রাষ্ট্রীয় অনুমোদনপ্রাপ্ত হত্যাকাণ্ডে’ শেখ হাসিনা যে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন, সেটা বিবিসির তদন্তে প্রমাণিত। এই পরিস্থিতিতে ভারতের যে আর টালবাহানা না করে এবং শেখ হাসিনাকে আড়াল না করে তাঁকে বাংলাদেশের হাতে তুলে দেওয়া উচিত—শফিকুল আলম সেই দাবিও জানিয়েছেন।
তবে ভারত সরকারের নীতিনির্ধারক ও শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তারা একান্ত আলোচনায় পরিষ্কার বলছেন, এই দাবি মেনে নেওয়ার কোনো প্রশ্নই ওঠে না। কারণ শেখ হাসিনাকে ‘যে পরিস্থিতিতে ও ভারতের যে নীতির ভিত্তিতে’ এ দেশে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে, তাতে কোনো মৌলিক পরিবর্তন ঘটেনি।
তাঁরা যুক্তি দিচ্ছেন, প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে তাঁর যদি কোনো অডিও কেউ গোপনে রেকর্ড করে সেটা ফাঁসও করে দেয়; ভারতের সেটা দেখার বিষয় নয়, আর তাঁকে এ দেশে আতিথেয়তা বা রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়ার সিদ্ধান্তের সঙ্গে সেই অডিওর কোনো সম্পর্ক থাকতে পারে না।
দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশে যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনাসহ অন্য অভিযুক্তদের বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, সেটা আদৌ কতটা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হচ্ছে, তা নিয়েও ভারত সন্দিহান। এই পরিস্থিতিতে সেই ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে চার্জ গঠিত হলেও ভারত যে সেটাকে গুরুত্ব দেবে না, সে ইঙ্গিতও পরিষ্কার।
অবশ্য ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখনো এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বিবৃতি দেয়নি, বা মন্তব্যও করেনি।
প্রত্যর্পণের অনুরোধে যে কারণে সাড়া নেই : বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে যাতে বিচারের জন্য তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়, সেই অনুরোধ জানিয়ে সে দেশের অন্তর্বর্তী সরকার নয়াদিল্লিকে কূটনৈতিক চ্যানেলে একটি নোট ভার্বাল পাঠিয়েছিল গত ডিসেম্বর মাসেই।
ভারত সরকারের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা এ প্রসঙ্গে বিবিসিকে বলেছিলেন, ‘আমাদের দুই দেশের মধ্যে প্রত্যর্পণ চুক্তি আছে ঠিকই, কিন্তু কোনো দেশ যদি মনে করে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হলে তিনি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হবেন, তাহলে প্রত্যর্পণের অনুরোধ নাকচ করার অধিকারও তাদের আছে।’
তাঁর যুক্তি ছিল, বাংলাদেশে যেভাবে শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ঢালাওভাবে হত্যা মামলা আনা হচ্ছে, অভিযুক্তদের আইনজীবীরা পর্যন্ত আদালতে হাজির হতে পারছেন না কিংবা সালমান এফ রহমান, আনিসুল হক বা দীপু মনির মতো সাবেক নেতা-মন্ত্রীদের আদালত প্রাঙ্গণেই শারীরিকভাবে হেনস্তা করা হচ্ছে, তাতে এই বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে হাজারটা প্রশ্ন উঠতে বাধ্য।
এখন শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সেই ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধে আনুষ্ঠানিক চার্জ গঠন সম্পন্ন হলেও তাতে বিচারপ্রক্রিয়ার গুণগত মানে কোনো পরিবর্তন হয়েছে—এমনটা ভারত মনে করছে না। আর সে কারণেই চার্জ গঠন হলেও শেখ হাসিনাকে বিচারের জন্য ভারত বাংলাদেশের হাতে তুলে দেবে—এই সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
তবে এগুলো সবই মূলত ‘ঘোষিত যুক্তি’। ভারতের একাধিক সাবেক কূটনীতিবিদ বিবিসিকে বলেছেন, শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের অনুরোধ নাকচ করার আসল কারণটা হলো রাজনৈতিক। তাঁদের বক্তব্য হলো, ‘দক্ষিণ এশিয়ার কোনো দেশে সবচেয়ে বেশি দিন ধরে যিনি ভারতের আস্থাভাজন ও পরীক্ষিত বন্ধুর ভূমিকায় ছিলেন, তিনি শেখ হাসিনা।’ ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের এক সাবেক হাইকমিশনার বিবিসিকে বলেছেন, ‘আজ সংকটের মুহূর্তে ভারত যদি তাঁর পাশে না দাঁড়ায়, ভবিষ্যতে প্রতিবেশী দেশের কোনো নেতা-নেত্রীই ভারতকে আর কখনো বিশ্বাস করতে পারবেন না।’ আর এটাই সেই প্রকৃত কারণ—চার্জশিট পেশ হোক বা না হোক, অডিও লিক হোক বা না হোক—ভারত যে জন্য কখনোই শেখ হাসিনাকে বিচারের জন্য বাংলাদেশের হাতে তুলে দেবে না।
শেখ হাসিনা নিজেই যা বলার বলবেন : গত বাহাত্তর ঘণ্টায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে নতুন করে মানবতাবিরোধী অপরাধে সম্পৃক্ত থাকার যেসব অভিযোগ উঠেছে বা আদালতে যে চার্জশিট পেশ হয়েছে, তা নিয়ে ভারত অবশ্য প্রকাশ্যে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র এ প্রসঙ্গে বিবিসিকে বলেন, ‘আমরা শেখ হাসিনার মুখপাত্র নই। তিনি যেসব বক্তব্য দেন তার সঙ্গে ভারত সরকারের যে কোনো সম্পর্ক নেই, সেটা অনেক আগেই আমরা স্পষ্ট করে দিয়েছি।’
ওই কর্মকর্তার বক্তব্য ছিল, শেখ হাসিনা ভারতের একজন অতিথি, কোনো রাজনৈতিক বন্দি নন। কাজেই ভারত তাঁর মুখে ‘লাগাম পরানোর’ কোনো প্রয়োজন বোধ করেনি কখনোই! সূত্র : বিবিসি বাংলা

শুদ্ধি অভিযানে বিএনপি
- এক বছরে পাঁচ সহস্রাধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা
নিজস্ব প্রতিবেদক

পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে প্রকাশ্যে মাথা থেঁতলে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় কঠোর অবস্থান নিয়েছে বিএনপি। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দিচ্ছে না দলটি। এমনকি এ ধরনের ঘটনা যাতে আর না ঘটে সে জন্য দলে শুদ্ধি অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দলের শীর্ষ নেতা।
মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলার আসামি পাঁচজনকে এরই মধ্যে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করেছে জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল।
বিএনপি সূত্র জানায়, ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর গত শুক্রবার দলের পক্ষ থেকে শুদ্ধি অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত সব ইউনিটকে জানিয়ে দেওয়া হয়।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ কালের কণ্ঠকে বলেন, “দলের জেলা থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যায়ে একটি ‘শুদ্ধি অভিযান’ চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
কী প্রক্রিয়ায় এই অভিযান চালানো হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কোনো দাগি অপরাধী কোনোভাবে দলের সঙ্গে যুক্ত কি না, দলে নতুন করে কেউ অনুপ্রবেশ করেছে কি না, বিএনপির নতুন সদস্য যাঁরা হয়েছেন তাঁদের আগের ইতিহাস কী তা পর্যালোচনা করতে বলা হয়েছে।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী সম্প্রতি বলেছেন, দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে বিএনপি, এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের প্রায় পাঁচ হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে বহিষ্কারসহ বিভিন্ন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
রিজভী গতকাল রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘মিটফোর্ডের ঘটনায় বিএনপি বা বিএনপির অঙ্গসংগঠনের নামে যাদের নাম পাওয়া গেছে, তাদের রাতেই আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপি একটি বৃহৎ পরিবার।
মূল আসামিদের এজাহার থেকে বাদ দেওয়া রহস্যজনক : পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে প্রকাশ্যে মাথা থেঁতলে হত্যাকাণ্ডের ঘটনার মূল আসামিদের এখনো গ্রেপ্তার না করা এবং মামলার এজাহার থেকে তাদের বাদ দেওয়া রহস্যজনক বলে দাবি করেছে বিএনপির তিন সংগঠন। গতকাল সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল যৌথ সংবাদ সম্মেলন করে।
তিনি বলেন, ‘এ ঘটনায় যারা সরাসরি সংশ্লিষ্ট, ভিডিও ফুটেজ ও সিসি ক্যামেরায় যাদের দেখা গেছে, আশ্চর্যজনকভাবে তাদের মামলার প্রধান আসামি করা হয়নি। যারা প্রাণঘাতী আঘাতগুলো করেছে, তারা অদ্যাবধি গ্রেপ্তারও হয়নি। এর কারণ আমাদের বোধগম্য নয়। বাদীর মেয়ে বলেছেন, মামলার এজাহারে খুনের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত তিনজন খুনিকে পুলিশ কৌশলে বাদ দিয়ে নিরপরাধ তিনজনকে আসামি করেছে। ঘটনার ৬০ ঘণ্টার বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও খুনের প্রমাণাদি হাতে থাকা সত্ত্বেও অদ্যাবধি মূল আসামিদের গ্রেপ্তার করা গেল না! এটি একটি বিরাট প্রশ্ন ও রহস্য।’
মোনায়েম মুন্না বলেন, ‘কারা কেন এই তিন আসামিকে বাদ দিয়ে নতুন করে অন্যজনকে আসামি করল, এটি আমরা জানতে চাই। আর ঘটনাটি বুধবারের। শুক্রবার এই ঘটনা ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়েছে। দুই দিন আগের ঘটনা কেন দুই দিন পর প্রচার করা হলো? এর পেছনে কারা জড়িত, সেটিও খুঁজে দেখা উচিত। আপনাদের মাধ্যমে দেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে এই প্রশ্নটি রেখে এর যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা এক তীব্র মানসিক যাতনা নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলন করছি। দেশের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে আমরা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। এই নৃশংস বর্বরতা প্রত্যক্ষ করে পুরো জাতি স্তম্ভিত। আমি এই নৃশংসতার তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ধিক্কার জানাচ্ছি। সভ্যতার এই সময়ে এমন আদিম বর্বরতা আমরা কোনোভাবে মেনে নিতে পারি না। এই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ইন্ধনদাতা হিসেবে যাদের নাম এসেছে, মামলায় যাদের আসামি করা হয়েছে, তার মধ্যে আমাদের তিন সংগঠনের পাঁচজনকে গতকাল আজীবনের জন্য বহিষ্কার করেছি। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর প্রতি আহবান জানিয়েছি অতি দ্রুত তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জন্য। সাংগঠনিক দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহির জায়গা থেকে যা কিছু প্রয়োজন, আমরা সেই ব্যবস্থাগুলো নিয়েছি। অভিযোগ পেলে কাউকে ছাড় দিচ্ছি না।’
তিনি বলেন, ‘বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সরকার ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে কঠোর হতেই হবে। আপনারা আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতিকল্পে কার্যকর পদক্ষেপ নিন। এখানে আমাদের যদি কোনো ধরনের সহযোগিতার প্রয়োজন হয়, আমরা তা করতে সর্বদা প্রস্তুত আছি।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী, সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, সিনিয়র সহসভাপতি রেজাউল করীম পল, ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির প্রমুখ।

খুলনায় সাবেক যুবদল নেতা হত্যাকাণ্ডে জড়িতরা শনাক্ত
- ১১ মাসে ২৭ হত্যা
খুলনা অফিস

খুলনা মহানগরে ১১ মাসে ২৭টি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। সেই সঙ্গে প্রতিনিয়ত ঘটছে চুরি, ছিনতাই, হামলার মতো ঘটনা। এ অবস্থায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন খুলনার বিভিন্ন মহলের প্রতিনিধিরা। সর্বশেষ গত শুক্রবার দুপুরে সন্ত্রাসীরা গুলি করে এবং পরে রগ কেটে নিজ বাড়ির সামনে হত্যা করে যুবদলের সাবেক নেতা মাহবুবুর রহমান মোল্লাকে।
খুলনার পুলিশ দাবি করছে, ১১ মাসে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের মধ্যে বেশির ভাগের কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে জড়িতদের গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।
খুলনা মহানগরের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন খুলনা বিএনপির নেতারা।
খুলনার নাগরিক সমাজের সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট বাবুল হাওলাদার বলেন, সন্ধ্যা নামলেই খুলনাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করে।
কেএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) মোহাম্মদ রাশিদুল ইসলাম খান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তবে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো বিভিন্নভাবে বিভক্ত হয়ে তাদের আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করছে। যার ফলে অপরাধগুলো ঘটছে। খুলনা মহানগরের দৌলতপুর থানা যুবদলের সাবেক সহসভাপতি মো. মাহবুবুর রহমান মোল্লা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তিন ব্যক্তিকে শনাক্ত করেছে পুলিশ।’ তাঁদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে জানিয়ে মোহাম্মদ রাশিদুল ইসলাম খান জানান, গতকাল শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।
নিহত মাহবুবুরের বাবা মো. আ. করিম মোল্লা বাদী হয়ে গতকাল দুপুরে দৌলতপুর থানায় হত্যা মামলা করেছেন। মামলার আসামিদের সবাই অজ্ঞাতপরিচয়। মামলা তদন্ত করছেন দৌলতপুর থানার ওসি মীর আতাহার আলী। তিনি জানিয়েছেন, আপাতত হত্যার কারণ বলা যাচ্ছে না। পুলিশের দুটি এবং ডিবির একটি মিলে মোট তিনটি দল রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা করছে। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে খুলনা পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, ৫ আগস্ট-পরবর্তী দুটি মামলার জের, দলীয় কোন্দল, স্থানীয় প্রভাব-প্রতিপত্তি, মাদক ও চরমপন্থী সংযোগ, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) হামলাসহ সাতটি বিষয় সামনে রেখে পুলিশ তদন্ত করছে।
গত শুক্রবার দুপুর দেড়টায় দৌলতপুর থানার মহেশ্বরপাশা পশ্চিমপাড়ার নিজ বাড়ির সামনে মোটরসাইকেলযোগে আসা তিন অস্ত্রধারী মাহবুবুরকে (৪০) প্রথমে গুলি করে এবং পরে দুই পায়ের রগ কেটে হত্যা করে। ওই দিন বিকেলে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে ময়নাতদন্ত শেষে রাতেই পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।
গতকাল সকালে নিহতের বাড়িতে গেলে মাহবুবুরের স্ত্রী এ্যারিন সুলতানা বলেন, ‘আমার স্বামী সবাইকে বিশ্বাস করতেন। ঘটনার কিছুদিন আগে থেকেই তাঁকে বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। সম্প্রতি বাড়ি এসেও একটা গ্রুপ হুমকি দিয়ে গেছে।’ নিহত মাহবুবুরের দুটি মেয়ে রয়েছে। বড় মেয়ে জান্নাতুল (১১) চতুর্থ শ্রেণির এবং ছোট মেয়ে মাওয়া (৯) দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী।
নিহত মাহবুবুরের এক আত্মীয় বলেন, ‘মূলত দুটি মামলাকে কেন্দ্র করেই তার সঙ্গে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের বিরোধ হয়। একটি মামলার বাদী মাহবুব নিজে এবং অন্যটির বাদী মো. জাকির হোসেন। ওই দুটি মামলার আসামিরা মাহবুবকে কয়েকবার হুমকি দিয়েছিল।’

আইন উপদেষ্টা
সোহাগ হত্যার বিচার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে
নিজস্ব প্রতিবেদক

আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, রাজধানীর পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালের সামনে ভাঙ্গারি ব্যবসায়ী সোহাগকে নৃশংসভাবে হত্যার বিচার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের অধীনে করা হবে।
গতকাল শনিবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এসব কথা বলেন।
স্ট্যাটাসে ড. আসিফ নজরুল লেখেন, মিটফোর্ডের নারকীয় হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে সরকার বদ্ধপরিকর। এরই মধ্যে এই ঘটনায় জড়িত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তিনি জানান, পুলিশ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত শুরু করেছে। এই পাশবিক হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার করে দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে। দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আইন, ২০০২-এর ধারা ১০ অনুযায়ী এই মামলাটি দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তির জন্য ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হবে বলে জানান তিনি।