রাজধানীর আইটি সিরামিক নামের একটি দোকান থেকে ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে ‘বাথ ও বেসিন’-এর এক সেট পানির কল পাঁচ হাজার ৫০০ টাকায় কিনেছিলেন আনোয়ারুল ইসলাম। কল দুটির ওপর পাঁচ বছরের ওয়ারেন্টি ছিল। বছর তিনেক ব্যবহার করার পর একটি কল থেকে ঠিকমতো সার্ভিস পাচ্ছিলেন না তিনি। কলের জয়েন্ট থেকে পানি লিক করছিল।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে প্রতিকার মিলছে
এম সায়েম টিপু ও শওকত আলী

একইভাবে সম্প্রতি এক ক্রেতার একটি ফ্রিজ কেনার এক মাসের মধ্যে নষ্ট হয়ে পড়লে বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান ক্রেতার চাহিদামতো সেটির বদলে নতুন ফ্রিজ না দিয়ে আগেরটি সারিয়ে দিতে চাইলেও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে মামলা করার সুবাদে ক্রেতা নতুন ফ্রিজই পেয়েছেন। এভাবে ওই আইনের আওতায় প্রতিকার চেয়ে সুফল পাওয়ার ঘটনা দিন দিন বাড়ছে। ২০১৬ সালে সারা বছরে যতসংখ্যক অভিযোগ জমা পড়েছিল তার চেয়ে বেশি অভিযোগ পড়েছে এ বছরের প্রথম দুই মাসেই।
তবে এখনো দেশের বেশির ভাগ মানুষ এ আইন বা এর কার্যকারিতা সম্পর্কে জানেই না। যারা জানে তাদেরও বড় অংশ মনে করে, অভিযোগ করে লাভ নেই। ভোক্তা অধিকার আইন বিষয়ে নাগরিক সমাজের ধারণা ও সচেতনতা জানার জন্য কনজ্যুমারস ফোরামের (সিএফ) পক্ষ থেকে সম্প্রতি ঢাকা নগরের ২৩টি এলাকায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ৪০৮ জনের ওপর একটি জরিপ পরিচালনা করা হয়।
ওই জরিপে অংশ নেওয়া নাগরিকরা মনে করেন, ব্যাপক জনগোষ্ঠীকে ভোক্তা অধিকার আন্দোলনে সম্পৃক্ত ও সচেতন করতে পত্রপত্রিকা ও রেডিও-টেলিভিশনে নিয়মিত প্রচার চালানো প্রয়োজন। একই সঙ্গে নাগরিকরা পাড়া-মহল্লায় ভোক্তা সংগঠন গড়ে তোলার দাবি জানিয়েছেন।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা যদিও দাবি করেছেন, অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে এরই মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত ক্রেতা-ভোক্তাদের অভিযোগ অধিদপ্তরে দায়ের করার জন্য কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞাপন এবং মোবাইল ফোনে মেসেজ প্রচার করা হয়েছে। বাস্তবে এসব প্রচার জনগণের মধ্যে তেমন সাড়া ফেলতে পারেনি। সিএফ জরিপের ফল অনুযায়ী ৬৯.৬০ শতাংশ মানুষ জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের এসব প্রচার সম্পর্কে অবগত নয়। জরিপে অংশ নেওয়া নাগরিকরা মনে করেন, এ বিষয়ে গণমাধ্যমে ধারাবাহিক ও নিয়মিত প্রচার চালানোর জন্য কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ভোক্তা অধিকার নিশ্চত করতে হলে সবার আগে জোর দিতে হবে ব্যাপক জনসচেতনতা তৈরির ওপর। সারা দেশে ভোক্তার স্বার্থ সুরক্ষার বার্তা পৌঁছে দেওয়াটা জরুরি। সেটি কোনো একটি প্রতিষ্ঠানের একক প্রচেষ্টা কিংবা সক্ষমতা দিয়ে সম্ভব হবে না। সরকারের আন্তরিকতা থাকতে হবে। পাশাপাশি সুধীসমাজকেও উদ্যোগী হতে হবে। এগিয়ে আসতে হবে সাধারণ মানুষকেও। এ ছাড়া ভোক্তা অধিকার-সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর কাঠামো বেশ দুর্বল। এগুলোকে আরো ভোক্তা-সহায়ক করতে হবে। পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণে বিএসটিইআইকে আরো শক্তিশালী করতে হবে।’
বাংলাদেশ অ্যাসোশিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) সভাপতি মোস্তাফা জব্বার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ভোক্তারা জানেই না তাদের অধিকারের জন্য একটি আইন আছে এবং প্রতিষ্ঠানও আছে। তাই অভিযোগ জানাতে সে কোথাও যায় না। অভিযোগ করার প্লাটফরমটি সহজ করা না গেলে প্রতি বছরই একটা হতাশার চিত্রই উঠে আসবে। তথ্য-প্রযুক্তিই পারে অভিযোগের জায়গাটিকে সহজ করতে। এ জন্য কল সেন্টারসহ মোবাইল ফোনে কোনো প্রযুক্তির ব্যবহার করা যেতে পারে।’
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর থেকে পাওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০০৯ সালে আইনটি কার্যকর হওয়ার পর ২০১০ সালে ওই আইনের আওতায় অধিদপ্তরে অভিযোগ এসেছিল মোট ৭৩টি। সব কটিই নিষ্পত্তি হয়েছে। পরের তিন বছর অভিযোগের হার ছিল আরো কম। তবে এর পর থেকে বছর বছর বাড়ছে অভিযোগ তথা মামলা। সেই সঙ্গে প্রতিকারও পাচ্ছে ভোক্তারা। ২০১৪ সালে অভিযোগ জমা পড়ে ৫৩৭টি, সব কটিই নিষ্পত্তি হয়। ২০১৫ সালে ২২৫টি অভিযোগ জমা পড়ে, যার মধ্যে একটি ছাড়া সবই নিষ্পত্তি হয়। ২০১৬ সালে অভিযোগ পড়ে এক হাজার ৬২২টি, যার মধ্যে নিষ্পত্তি হয়েছে এক হাজার ৬০৬টি। ২০১৭ সালের প্রথম দুই মাসেই এক হাজার ৬৮২টি অভিযোগ জমা পড়েছে। নিষ্পন্ন না হওয়া অভিযোগের মধ্যে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অভিযোগ জমা দেওয়ার পর অভিযোগকারী আর সাড়া দেননি। ফলে অভিযোগগুলো ‘নথিভুক্ত’ করে রাখা হয়েছে। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, মামলার সব কটিই ভোক্তার অনুকূলে গেছে। ভোক্তাদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এ পর্যন্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ বাবদ আদায় করা হয়েছে ১৭ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। এ ছাড়া অনেক প্রতিষ্ঠানকে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সার্ভিসিং সেবা দিতে বাধ্য করা হয়েছে।
মাসুদুল মান্নান নামের এক ক্রেতা হাউয়াই এক্সপেরিয়েন্স শপ নামের একটি দোকান থেকে টি-১-৭ মডেলের একটি ট্যাব কেনেন। সাত দিনের মধ্যে কোনো সমস্যা হলে সেটি মেরামত বা পরিবর্তন করে দেওয়ার লিখিত প্রতিশ্রুতি দেন বিক্রেতা। কিন্তু দুই দিনের মাথায় ট্যাবটিতে সমস্যা দেখা দিলে গ্রাহক বিক্রেতার কাছে যান। বিক্রেতা ট্যাবটি সারাতে গিয়ে আরো একটি পার্টস নষ্ট করে ফেলেন। তখন বিক্রেতা সেটিও ঠিক করে দিতে চান। কিন্তু ক্রেতা চান নষ্ট ট্যাবের বদলে নতুন ট্যাব। সমাধান না পেয়ে মাসুদুল মান্নান মামলা করেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে। সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তা দুই পক্ষের শুনানি শেষে ট্যাবটি পরিবর্তন করে দেওয়ার নির্দেশ দেন। সে অনুযায়ী বিক্রেতা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই ট্যাবটি পরিবর্তন করে দেন।
আশুলিয়ার জালালাবাদ হাউজিংয়ে বসবাসরত শহীদুল হকের বিদ্যুৎ বিল এক মাসে হঠাৎ প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যায়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে কোনো সমাধান না পেয়ে তিনি ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে মামলা ঠুকে দেন বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১-এর বিরুদ্ধে। দুই পক্ষকে শুনানিতে ডাকা হলে দেখা যায় গ্রাহকের বিদ্যুতের লাইনের কিছু সমস্যার কারণেই মিটারে ভুল তথ্য উঠে আসে। সেটাও প্রায় ২০০ ইউনিটের মতো, যার দাম দুই হাজার চার টাকা। পরে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১-এর পক্ষ থেকে বর্ধিত বিল বাদ দেওয়া হয়।
আগে অধিদপ্তরে গিয়ে অভিযোগ জমা দিতে হলেও এখন অনলাইনেই সেটি করা যাচ্ছে। অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে অন্যান্য অপশনের মধ্যে অভিযোগের ফরম রয়েছে। সেটি পূরণ করে মেইলের মাধ্যমে অভিযোগ দায়ের করা যায়।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, পানির কল কিনে কেউ তিন বছরের মাথায় এসে আবার সার্ভিসিং সুবিধা পাবে এটা অনেকে চিন্তাও করে না। কিন্তু তাদের সেবা প্রাপ্তির যে অধিকার রয়েছে, তারা যাতে সেটি যথাযথভাবে পায় সে জন্যই কাজ করে যাচ্ছে অধিদপ্তর।
অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম লস্কর কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা সব ধরনের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানকে তাদের আচরণের বিষয়ে সতর্কবার্তা পৌঁছে দিচ্ছি। কারণ কেউ অভিযোগ করলে আমরা শুধু জরিমানা নয়, দোকান সিলগালা করে দিতেও পিছপা হই না। এ জন্য ভোক্তাদের সাড়া প্রয়োজন। যদিও এখন অনেকে স্বপ্রণোদিত হয়ে আমাদের কাছে অভিযোগ করছে। আবার প্রতিকারও পাচ্ছে। আমাদের ১৩ জন তদন্ত কর্মকর্তা সার্বক্ষণিক অভিযান ও শুনানির কাজ করছেন। এখানে আরো বেশ কিছু কর্মকর্তা দেওয়া হচ্ছে। এতে কাজে আরো গতি আসবে বলে আশা করছি।’
শফিকুল ইসলাম লস্কর আরো বলেন, ‘এখন শুধু ছোট দোকানিদের নয়, গ্রামীণফোনের মতো বড় কম্পানিকেও আমরা ছাড় দিচ্ছি না। কয়েক দিন আগে গ্রামীণফোনকে আড়াই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে, যা থেকে আবার ৬২ হাজার টাকা পাচ্ছেন অভিযোগকারী। আমরা এলাকাভিত্তিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মালিকদের আমন্ত্রণ জানাই। প্রতি সপ্তাহে এক দিন গণশুনানি হয়। সেখানে তাঁদের আইন সম্পর্কে জানানো হয়। পরামর্শ দেওয়া হয় যাতে তাঁরা অসৎ উপায়ে ব্যবসা করা থেকে বিরত থাকেন।’
সম্পর্কিত খবর

এসএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশ আজ
নিজস্ব প্রতিবেদক

এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হবে আজ বৃহস্পতিবার। দুপুর ২টা থেকে যেকোনো মোবাইলে এসএমএস, শিক্ষা বোর্ডগুলোর ওয়েবসাইট এবং নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ফল জানতে পারবে শিক্ষার্থীরা। এই ফল প্রকাশের মাধ্যমে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ১৯ লাখ শিক্ষার্থীর অপেক্ষার অবসান হবে।
এ বছর আগের মতো ফলাফল প্রকাশের কোনো আনুষ্ঠানিকতা থাকছে না।
শিক্ষা উপদেষ্টা ড. সি আর আবরার গতকাল বলেছেন, এবারের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল হস্তান্তরে আনুষ্ঠানিকতা থাকছে না। দুই মাসের কম সময়ের মধ্যেই সব বোর্ডের ফলাফল প্রকাশিত হচ্ছে। সব বোর্ড নিজেদের মতো করে ফল প্রকাশ করবে।
যেভাবে জানা যাবে ফল : যেকোনো মোবাইলে এসএমএসের মাধ্যমে ফলাফল জানতে মোবাইলের এসএমএস অপশনে গিয়ে ঝঝঈ লিখে স্পেস দিয়ে বোর্ডের নামের প্রথম তিন অক্ষর লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে পরীক্ষার বছর লিখে তা ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে। ফিরতি এসএমএসে ফল জানিয়ে দেওয়া হবে।
দাখিলের ফল পেতে উধশযরষ লিখে স্পেস দিয়ে গধফ লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০২৫ লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে। কারিগরি বোর্ডের ক্ষেত্রে ঝঝঈ লিখে স্পেস দিয়ে ঞবপ লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০২৫ লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে।
শিক্ষা বোর্ডগুলোর সমন্বিত ওয়েবসাইট http://www.educationboardresults.gov.bd -এর মাধ্যমে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল জানা যাবে। আন্ত শিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি জানিয়েছে, ওয়েবসাইটে রোল নম্বর, রেজিস্ট্রেশন নম্বর, পরীক্ষার নাম, বছর ইনপুট দিয়ে ও শিক্ষা বোর্ড সিলেক্ট করে ‘সাবমিট’ বাটনে ক্লিক করে ফল জানা যাবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় নিয়মিত-অনিয়মিত মিলিয়ে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১৯ লাখ ২৮ হাজার ৯৭০ জন। ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে ১৪ লাখ ৯০ হাজার ১৪২ জন শিক্ষার্থী। দাখিল পরীক্ষায় অংশ নেয় দুই লাখ ৯৪ হাজার ৭২৬ জন এবং কারিগরি বোর্ডের অধীনে পরীক্ষার্থী ছিল এক লাখ ৪৩ হাজার ৩১৩ জন।
ফল প্রকাশের পর তা পুনর্নিরীক্ষণের সময়ও জানিয়েছে আন্ত শিক্ষা বোর্ড। ১১ থেকে ১৭ জুলাই পর্যন্ত আবেদন করা যাবে। আবেদন পদ্ধতি শিক্ষা বোর্ডগুলোর ওয়েবসাইট এবং টেলিটক বাংলাদেশের ওয়েবসাইটে আজ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে।

ভারতীয় জেনারেলের দাবি
চীন-পাকিস্তান-বাংলাদেশের জোট ভারতের নিরাপত্তায় প্রভাব ফেলতে পারে
কালের কণ্ঠ ডেস্ক

ভারতের প্রতিরক্ষা সর্বাধিনায়ক (সিডিএস) জেনারেল অনিল চৌহান বলেছেন, চীন, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ নিজেদের স্বার্থে একে অন্যের প্রতি ঝুঁকছে। এই ঘনিষ্ঠতা ভারতের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। গত মঙ্গলবার ভারতের চিন্তক প্রতিষ্ঠান অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন (ওআরএফ) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে অনিল চৌহান এ কথাগুলো বলেন।
জেনারেল চৌহান বলেন, ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর অর্থনৈতিক সংকট বহিরাগত শক্তিদের প্রভাব বিস্তারের সুযোগ করে দিচ্ছে।
জেনারেল চৌহান বলেন, এই প্রবণতা ভারতের জন্য বড় এক সমস্যা। সম্প্রতি চীনের কর্মকর্তারা সে দেশে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক সম্মেলনে মিলিত হয়েছিলেন।
চীন ও পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠতা বহু পুরনো। বাংলাদেশে রাজনৈতিক পালাবদল, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশত্যাগ এবং তাঁর ভারতে আশ্রয়লাভ ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
অনুষ্ঠানে সিডিএস জেনারেল চৌহানকে পাকিস্তান-ভারত সাম্প্রতিক সংঘাতের সময় চীনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। জবাবে তিনি বলেন, ওই সংঘাতে পাকিস্তানকে চীন কতটা ও কিভাবে সমর্থন দিয়েছে, সহায়তা করেছে, তা বলা খুবই কঠিন।
জেনারেল চৌহান বলেন, তবে ঘটনা হলো পাকিস্তান তাদের প্রয়োজনীয় প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের বেশির ভাগটাই চীন থেকে নেয়। সে কারণে পাকিস্তানে চীনের উপস্থিতি থাকার কথা। বিশেষ করে সংঘাত ও সংঘর্ষের সময়। সেটা কতটা ছিল এবং সমর্থন বা সহায়তার চরিত্র কেমন ছিল, তা বলা সহজ নয়।
অপারেশন সিন্দূর নাম দিয়ে পাকিস্তানে হামলার প্রসঙ্গে ভারতের উপসেনাপ্রধান লে. জেনারেল রাহুল আর সিং অবশ্য গত শুক্রবার বলেছিলেন, সংঘাতের সময় পাকিস্তানকে চীন শুধু সাহায্যই করেনি, সংক্ষিপ্ত ওই যুদ্ধকে তারা তাদের অস্ত্রের পরীক্ষাগার করে তুলেছিল।
ওই কর্মকর্তার দাবি, ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তান ওই যুদ্ধে যেসব অস্ত্র ব্যবহার করেছে, সেগুলোর ৮১ শতাংশই চীনের তৈরি। সেসব অস্ত্র প্রকৃত যুদ্ধের সময় কতটা কার্যকর, সে পরীক্ষাও চীন করে ফেলেছে। ওই সংঘাতকে চীন তার অস্ত্রসম্ভারের পরীক্ষাগার হিসেবে ব্যবহার করেছে। সূত্র : ডেকান হেরাল্ড

গণ-অভ্যুত্থানে মানবাধিকার লঙ্ঘন
বিচার আইসিসিতে পাঠানোর অনুরোধ অ্যামনেস্টিরf
কালের কণ্ঠ ডেস্ক

২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিটি ঘটনা আইসিসিতে পাঠানোর বিষয়টি বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে এ আহ্বান জানিয়েছে ব্রিটেনভিত্তিক এই মানবাধিকার সংগঠন।
গতকাল বুধবার সংগঠনটির সাউথ এশিয়া বিষয়ক ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এসংক্রান্ত একটি পোস্ট করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়, গত বছরের ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্টের মধ্যে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিটি ঘটনার বিচার রোম সনদের ১৪ অনুচ্ছেদ অনুসারে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) পাঠানোর বিষয়টি বিবেচনার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
গতকাল বুধবার ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে আন্দোলনকারীদের ওপর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরাসরি গুলির নির্দেশের একটি ফোনকল নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি। প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হওয়ার পর সহিংসতার সঙ্গে যুক্ত সব অপরাধীকে বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।
এর আগে এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে জাতিসংঘের একটি তথ্য-উপাত্তভিত্তিক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪ সালে আন্দোলন চলাকালে দেশের বিভিন্ন স্থানে নিরাপত্তাবাহিনীর গুলিতে প্রায় এক হাজার ৪০০ মানুষ নিহত হন। প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই সহিংসতায় নিহতদের মধ্যে বেশির ভাগই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী কর্তৃক ব্যবহৃত ধাতব পেলেটযুক্ত অস্ত্রের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলছে, বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের উচিত অবিলম্বে একটি স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্তের ব্যবস্থা করা এবং আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে একটি ন্যায্য বিচারপ্রক্রিয়ার মাধ্যমে সব অপরাধীকে জবাবদিহির আওতায় আনা।

সরকারের উদ্যোগেই জুলাই ঘোষণাপত্র, ইতিবাচক বিএনপি
- দায়িত্বে আছেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা
দু-এক দিনের মধ্যে মতামত জানাবে বিএনপি
হাসান শিপলু

ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকে পূর্ণাঙ্গ রূপ দিতে আবার উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এরই অংশ হিসেবে প্রধান কয়েকটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করা হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) চাপের মুখে সরকার এই উদ্যোগ নিয়েছে।
এর আগে কয়েক দফা ঘোষণাপত্র দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হলেও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কিছু বিষয়ে ঐকমত্য হয়নি।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, ঘোষণাপত্রের একটি খসড়া সম্প্রতি তাদের দলের একজন শীর্ষ নেতার কাছে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে গত দুই দিন দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আলোচনা করা হয়।
ঘোষণাপত্রে ১৯৭২ সালের সংবিধান উপযুক্ত প্রক্রিয়ায় সংশোধন, পুনর্লিখন বা প্রয়োজনে বাতিল করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করার কথা বলা আছে। এ বিষয়ে বিএনপির আপত্তি রয়েছে। দলটি পরবর্তী সংসদের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সংবিধান সংশোধনের পক্ষে থাকলেও সংবিধান বাতিল করে তা পুনর্লিখনের বিপক্ষে।
সরকারসংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, অন্তর্বর্তী সরকারের পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদকে ঘোষণাপত্রের খসড়া প্রণয়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তাঁর সঙ্গে বিএনপির একজন শীর্ষ নেতার কথা হয়েছে।
এ ব্যাপারে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এ নিয়ে অগ্রগতি হচ্ছে। খসড়া ঘোষণাপত্র তৈরি হচ্ছে। কিন্তু এ যৌথ প্রচেষ্টার জন্য আরো মতামত দরকার, যাতে এটি ব্যাপকভাবে গ্রহণযোগ্য হয় এবং জন-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে পারে।
সরকারের পক্ষ থেকে একটি খসড়া ঘোষণাপত্র পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, ‘সরকারের খসড়া ঘোষণাপত্রের ওপর ভিত্তি করে গত ফেব্রুয়ারিতে আমরা মতামত দিয়েছিলাম। এরপর সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে আর যোগাযোগ করা হয়নি। এখন আবার একটি খসড়া দেওয়া হয়েছে। আমরা দলীয় ফোরামে আলোচনা করে মতামত জানাব।’
গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর গণ-অভ্যুত্থানে আন্দোলনকারী সংগঠন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন হঠাৎ করে এই ঘোষণাপত্রের বিষয়টি সামনে আনে। তখন এর প্রভাব কী হতে পারে, তা বুঝতে চাইছিল বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। ঘোষণাপত্রের পক্ষে-বিপক্ষে তর্কবিতর্কের পাশাপাশি বিষয়টি নিয়ে রাজনীতিতে এক ধরনের উত্তাপ তৈরি হয়। এমন পরিস্থিতিতে সরকার থেকে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে সরকার সর্বদলীয় বৈঠক করে, কিন্তু তাতে ঐকমত্য হয়নি। ওই সময় বিএনপি এত দিন পর ঘোষণাপত্রের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। এরপর গত ১৬ জানুয়ারি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও অংশীজনের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। কিন্তু পরবর্তী সময়ে এই ইস্যুতে সরকারের কার্যক্রম ধীরগতিতে চলতে থাকে।
সম্প্রতি এনসিপি জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে আবার সরব হয়ে ওঠে। গত ৪ জুলাই ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঠাকুরগাঁওয়ে এক পথসভায় এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম জুলাই-আগস্টের মধ্যে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি এও বলেন, এই ঘোষণাপত্রের সাংবিধানিক ভিত্তি থাকবে। অন্যথায় তাঁদের পক্ষ থেকে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র’ দেওয়া হবে বলে সরকারকে সতর্ক করেন নাহিদ।
সরকারসংশ্লিষ্ট একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বলেন, ঘোষণাপত্রের মূল অংশীজন হলো বিএনপি ও এনসিপি। তাদের মধ্যে ঐকমত্য হলে দ্রুত ঘোষণাপত্র দেওয়া যাবে।
ঘোষণাপত্রে উল্লেখযোগ্য যা আছে : খসড়া ঘোষণাপত্রে ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে স্বাধীনতা অর্জন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ, ১৯৯০ সালের গণ-অভ্যুত্থান, ওয়ান-ইলেভেনের প্রেক্ষাপট এবং ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার আন্দোলনের বিষয় তুলে ধরা হয়। কোন পরিপ্রেক্ষিতে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন হয়, সে বিষয়টিও উঠে আসে।
এতে ১৯৭২ সালের সংবিধানের কাঠামোগত দুর্বলতা ও অপপ্রয়োগের কথাও বলা হয়। স্বাধীনতা-পরবর্তী আওয়ামী লীগ সরকার জন-আকাঙ্ক্ষা পূরণে ‘ব্যর্থতা’ এবং গণতন্ত্র ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো কার্যকারিতা ক্ষুণ্ন করার কথাও তুলে ধরা হয়।
ঘোষণাপত্রে বলা হয়, ‘স্বাধীনতা-পরবর্তী সরকার সাংবিধানিকভাবে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করে মত প্রকাশ ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা হরণ করার ফলে ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সিপাহি-জনতার বিপ্লব সংগঠিত হয় এবং পরবর্তী সময়ে বহুদলীয় গণতন্ত্র, মত প্রকাশ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতাা পুনঃপ্রবর্তনের পথ সুগম হয়।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির একজন নীতিনির্ধারক কালের কণ্ঠকে বলেন, স্বাধীনতা-উত্তর সিপাহি-জনতার বিপ্লব বাংলাদেশের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। আবার ওয়ান-ইলেভেনের ঘটনা বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি কালো অধ্যায়। মূলত তখন থেকে শেখ হাসিনার একচ্ছত্র ক্ষমতা, আধিপত্য ও কর্তৃত্ববাদী ফ্যাসিবাদের পথ সুগম হয়। এই বিষয়গুলো যুক্ত করার ফলে ঘোষণাপত্র বেশ সমৃদ্ধ হয়েছে।
খসড়ায় স্বৈরশাসক এইচ এম এরশাদের বিরুদ্ধে জনতার অবিরাম সংগ্রাম এবং এর মাধ্যমে গণ-অভ্যুত্থান এবং পুনরায় সংসদীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার পথ সৃষ্টির বিষয়টিও উঠে আসে।
ঘোষণাপত্রে বলা হয়, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের ধারাবাহিক তিনটি প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে অবৈধ আওয়ামী লীগ সরকার দেশের মানুষকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে।
তবে বিএনপি নেতাদের কয়েকজন ২০০৮ সালের বিতর্কিত নির্বাচনকেও এর সঙ্গে যুক্ত করার পরামর্শ দেন দলীয় ফোরামে।
অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের বিষয়ে বলা হয়, সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ বলে প্রদত্ত সুপ্রিম কোর্টের মতামত অনুসারে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট প্রতিষ্ঠিত অন্তর্বর্তী সরকার অনুমোদিত হয়।
বিএনপির স্থায়ী কমিটিতে আলোচনা : গত মঙ্গলবার এবং গতকাল বুধবার রাতে অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে খসড়া ঘোষণাপত্র পুঙ্খানুপুঙ্খ বিচার-বিশ্লেষণ করে কিছুটা সংযোজন-বিয়োজন করে বিএনপি তাদের মতামত দিয়েছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে বিএনপি এ বিষয়ে তাদের মতামত সরকারকে জানাবে।
গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
আরো যেসব বিষয়ে আলোচনা : মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর মার্কিন শুল্ক আরোপ, নারী আসন, নির্বাচনে পিআর পদ্ধতিসহ সংস্কারের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। বৈঠকে বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ মার্কিন শুল্ক আরোপের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিএনপি। একই সঙ্গে এই শুল্কনীতি পুনর্বিবেচনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিও আহ্বান জানিয়েছে দলটি।
জানা গেছে, বৈঠকে সংস্কার ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপের প্রতিবেদন তুলে ধরেন সালাহউদ্দিন আহমদ। এরপর সংস্কারের বিভিন্ন ইস্যুতে মতামত দেন বিএনপি নেতারা। ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে এর মধ্যে সংসদে নারীদের আসন ৫০ থেকে ১০০-তে উন্নীত করার ব্যাপারে রাজনৈতিক ঐকমত্য হয়েছে। তবে তাঁরা কিভাবে নির্বাচিত হবেন, সে ব্যাপারে এখনো ঐকমত্য হয়নি। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, তাঁরা প্রচলিত পদ্ধতিতে সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব নির্বাচিত করার পক্ষে অবস্থান নেবেন। পাশাপাশি কোনোভাবেই পিআর পদ্ধতি মানবেন না তাঁরা।