ঢাকা, বুধবার ২৩ জুলাই ২০২৫
৭ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৭ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, বুধবার ২৩ জুলাই ২০২৫
৭ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৭ মহররম ১৪৪৭

অষ্টম শ্রেণি : সমাজকর্ম দ্বিতীয় পত্র

  • সাধন সরকার, সহকারী শিক্ষক, লৌহজং বালিকা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, মুন্সীগঞ্জ
শেয়ার
অষ্টম শ্রেণি : সমাজকর্ম দ্বিতীয় পত্র

দ্বিতীয় অধ্যায়

সমাজকর্মের শাখা

বহু নির্বাচনী প্রশ্ন

১।        শিল্প সমাজকর্ম কাদের অধিকার ও সুবিধা নিয়ে কাজ করে?

  ক) কর্মীর   খ) মালিকের

  গ) উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মচারীদের       
ঘ) মালিক-কর্মী উভয়ের

২।        স্কুল সমাজকর্মী কাদের উন্নয়নে কাজ করেন?

  ক) শিক্ষার্থীর       খ) অভিভাবকের

  গ) শিক্ষকের       ঘ) এসএমসির

৩।        বিদ্যালয় সমাজকর্ম ভূমিকা রাখে

  i. পড়াশোনার মান উন্নয়নে

  ii. শিশুশ্রম হ্রাসকরণে

  iii. অভিভাবকদের উন্নয়নে

  নিচের কোনটি সঠিক?

  ক) iii    খ) iiii    

  গ) iiiii       ঘ) i, iiiii

৪।

       দলীয় প্রক্রিয়ায় বিদ্যালয় সমাজকর্মীর সহায়ক কী?

  ক) অভিজ্ঞতা       খ) জ্ঞান

  গ) পরিবেশ           ঘ) সম্পদ

৫।        শিল্প সমাজকর্মী একজন

  i. উপদেষ্টা ii. প্রশাসক

  iii. পরামর্শক

  নিচের কোনটি সঠিক?

  ক) iii        খ) iiii    

  গ) iiiii          ঘ) i, iiiii

৬।        জাতিসংঘের মতে, প্রবীণদের বয়স

  ক) ৫০ বছরের ঊর্ধ্বে          
খ) ৫৫ বছরের ঊর্ধ্বে

  গ) ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে          
ঘ) ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে

৭।        বার্ধক্যের আঘাত কিরূপ?

  ক) গ্রামে বেশি    খ) শহরে বেশি

  গ) সর্বজনীন          ঘ) উন্নত দেশে বেশি

৮।

       পারিবারিকভাবে প্রবীণদের নিরাপত্তা প্রদান কোন ধরনের ঐতিহ্য?

  ক) রাজনৈতিক     খ) সামাজিক 

  গ) ধর্মীয়             ঘ) অর্থনৈতিক

৯।        অনেক সময় প্রবীণরা কোন কারণে সমস্যার সৃষ্টি করে?

  ক) কম জ্ঞানের কারণে          
খ) বেশি জানার কারণে

  গ) মূল্যবোধের কারণে          
ঘ) বয়সের সমস্যার কারণে

১০।       বিদ্যালয় সমাজকর্ম শিক্ষাক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর বাধা দূর করার জন্য কাজ করে

  i. স্কুলসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে

  ii. স্কুল কর্মকর্তার সঙ্গে

  iii. শিক্ষার্থীর বন্ধুর সঙ্গে

  নিচের কোনটি সঠিক?

  ক) iii        খ) iiii    

  গ) iiiii          ঘ) i, iiiii

  উদ্দীপকের আলোকে ১১ ও ১২ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও :

  রাকিব মেধাবী শিক্ষার্থী। অনেক কষ্ট করে সে লেখাপড়া চালিয়ে যেতে থাকে।

পরিবারে অভাব-অনটন লেগেই থাকে। একটা সময় সে পারিপার্শ্বিক নানা সমস্যার কারণে মনোযোগ হারিয়ে ফেলে। যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও সে ভালো ফলাফল করতে পারে না।

১১।       রাকিবের ক্ষেত্রে বিদ্যালয়ের কোন শাখা সহায়তা করতে পারে?

  ক) হাসপাতাল সমাজকর্ম              
খ) বিদ্যালয় সমাজকর্ম

  গ) শিল্প সমাজকর্ম  ঘ) সাহিত্য সমাজকর্ম

১২।

      উদ্দীপকের ঘটনায় রাকিবের পড়ালেখায় উৎসাহ বাড়াতে বিদ্যালয় সমাজকর্মী

  i. শিক্ষার উপকরণ দিয়ে সহায়তা করতে পারেন

  ii. কাউন্সেলিং করতে পারেন

  iii. বিদেশে পাঠিয়ে সহায়তা করতে পারেন

  নিচের কোনটি সঠিক?

  ক) iii       খ) iiii    

  গ) iiiii          ঘ) i, iiiii

১৩।       স্কুল সমাজকর্মী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন

  i. শিক্ষার্থীদের চিত্তবিনোদনের ব্যবস্থা করে

  ii. শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সম্পর্ক উন্নয়নের কাজ করে

  iii. শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যের উন্নয়ন করে

  নিচের কোনটি সঠিক?

  ক) iii            খ) iiii    

  গ) iiiii          ঘ) i, iiiii

১৪।       মানবিক সমস্যার সাথে আধুনিক সমাজকর্মের সম্পর্ক কিরূপ?

  ক) বিপরীত  খ) প্রতিযোগিতামূলক

  গ) অত্যন্ত নিবিড়   ঘ) বিরূপ

১৫।       বাংলাদেশে চিকিৎসা সমাজকর্মের যাত্রা শুরু হয় কবে?

  ক) ১৯৪৫ সালে    খ) ১৯৫৪ সালে

  গ) ১৯৭০ সালে        ঘ) ১৯৭৮ সালে

১৬। ‘Reading to Social Problems’—গ্রন্থের লেখক কে?

  ক) ম্যাকাইভার     খ) আইরা সিলভার

  গ) এরিস্টটল           ঘ) জন ডিকেন্স

১৭।       সমষ্টি সমাজকর্মের পৃথক রূপ সমাজকর্মের কোন শাখা?

  ক) মিলিটারি সমাজকর্ম              
খ) পেশাগত সমাজকর্ম

  গ) প্রশাসন সমাজকর্ম                
ঘ) পল্লী সমাজকর্ম

১৮।       সমাজকর্মের কোন শাখা সম্পূর্ণভাবে মানসিক সেবা প্রদান করে?

  ক) ক্লিনিক্যাল সমাজকর্ম        
খ) প্রশাসন সমাজকর্ম

  গ) চিকিৎসা সমাজকর্ম         
ঘ) শহরে সমাজকর্ম

১৯।       সাইকিয়াট্রিক সমাজকর্মে রোগী কত ধরনের?

  ক) ২      খ) ৩

  গ) ৪                ঘ) ৫

২০।       বাংলাদেশে কত সালে স্কুল সমাজকর্ম চালু করা হয়?

  ক) ১৯৬৫       খ) ১৯৬৯ 

  গ) ১৯৭২             ঘ) ১৯৭৩

২১।       ক্লিনিক্যাল সমাজকর্ম কিভাবে কাজ করে?

  ক) ছোট পরিসরে   
খ) বৃহৎ পরিকল্পনা গ্রহণ করে

  গ) ধারাবাহিক বর্ণনার মাধ্যমে      
ঘ) কেস স্টাডি করে

২৩।       চিকিৎসা সমাজকর্মের নতুর নামকরণ হয় কত সালে?

  ক) ১৯৮২        খ) ১৯৮৪

  গ) ১৯৮৫        ঘ) ১৯৯৬

২৪।       ক্লিনিক্যাল সমাজকর্ম কাজ করে

  i. ব্যক্তির আচরণের ত্রুটি নির্ণয়ে

  ii. অর্থনৈতিক উন্নয়নে

  iii. মানসিক সেবা প্রদানে

  নিচের কোনটি সঠিক?

  ক) iii        খ) iiii    

  গ) iiiii          ঘ) i, iiiii

২৫।       সমাজকর্মের প্রয়োগ ক্ষেত্র বিস্তৃত হওয়ার যৌক্তিক কারণ কী?

  ক) অনুশীলনভিত্তিক বিজ্ঞান হওয়ায়           খ) পরিধি বিস্তৃত হওয়ায়

  গ) সামাজিক বিজ্ঞানের কাজ করায়            ঘ) পদ্ধতি ব্যবহার করায়

২৬।       রোগীদের রোগ-শোক সম্পর্কে সচেতন করে কোনটি?

  ক) প্রশাসন সমাজকর্ম         
খ) চিকিৎসা সমাজকর্ম

  গ) শিল্প সমাজকর্ম  ঘ) ক্লিনিক্যাল সমাজকর্ম

 

  উত্তর : ১. ঘ ২. ক ৩. ক ৪. গ ৫. খ ৬. গ ৭. গ ৮. খ ৯. গ ১০. ক ১১. খ ১২. ক ১৩. ক ১৪. গ ১৫. খ ১৬. খ ১৭. ঘ ১৮. ক ১৯. ক ২০. খ ২১. গ ২২. খ ২৩. খ  ২৪. খ ২৫. খ  ২৬. খ।

 

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

ছোট পাখি, ছোট পাখি... সর্বনাশ হয়ে গেছে

শেয়ার
ছোট পাখি, ছোট পাখি... সর্বনাশ হয়ে গেছে

শেখ হাসান, চিফ ফটো জার্নালিস্ট, কালের কণ্ঠ

দুপুর একটা দশ কিংবা পনেরো মিনিট হবে, হঠাৎ খবর এলো একটা জেট বিমান ক্র্যাশ করেছে। হ্যাঁ, ততক্ষণে আমাদের সর্বনাশ হয়ে গিয়েছে। আমাদের ছোট ছোট পাখিগুলো আগুনে ঝলসে ছটফট করছে।

মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি বিল্ডিংয়ে আগুন ধরেছে।

খবর পেয়েই ছুটে গেলাম স্পটে। সেখানে পৌঁছাই দুপুর দুইটার পর। যখন হাউজ বিল্ডিং এলাকায় পৌঁছাই, তখন অনেকে বলছিল, ও দিক দিয়ে যাওয়া যাবে না। কথা না শুনেই এগিয়ে গেলাম।
একটু সামনে যেতেই দেখলাম, ছাত্র, সাধারণ মানুষ সবাই মিলে রাস্তার দু’পাশ সরিয়ে অ্যাম্বুলেন্স চলাচলের জন্য রাস্তা তৈরি করে দিয়েছে। আরও প্রায় ৫০০ গজ যেতেই আর মোটরসাইকেল চালানো যাচ্ছিল না। বাইকটা রাস্তার পাশে রেখে হাঁটা শুরু করলাম। প্রথমে বোঝা গেল না বিমানটা কোথায় পড়েছে! একটা আন্ডারকনস্ট্রাকশন বিল্ডিংয়ে উঠে গেলাম টপ শট নেব বলে, কিন্তু কিছুই দেখা যাচ্ছিল না।
আশেপাশের লোকজনকে জিজ্ঞেস করলাম বিমানটা কোথায় পড়েছে? তারা দূরের দোতলা বিল্ডিংয়ের দিকে ইশারা করলো। ওখান থেকে নেমে পাশের বিল্ডিংটির পেছন দিকে গিয়ে দেখি উদ্ধারকর্মীরা দেওয়াল ভেঙে হতাহতদের বের করার চেষ্টা করছে। দ্রুত সেসব ছবি তুলে নিলাম। বিমানটা সরাসরি ক্লাসরুমে ঢুকে পড়েছে। সামান্য অংশই কেবল বাইরে ছিল।
আমি পৌঁছানোর আগেই আগুন নেভানো হয়েছে। চারদিকে মানুষে ঠাসা। সবার মুখে আতঙ্ক আর কান্না।  বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত স্পটে ছিলাম। এই সময়ের মধ্যে আহতদের সরাসরি চোখে দেখিনি, যাদের দেখেছি তারা উদ্ধারকর্মী, বা অতিরিক্ত গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তারা কেউ ঠিকভাবে কথা বলার অবস্থায়ও ছিলেন না। বারবার অ্যাম্বুলেন্স আসা-যাওয়া করছিল, বোঝা যাচ্ছিল না, প্রতিটিতে কতজন করে নেওয়া হচ্ছে। কয়েকজনকে দেখেছি সন্তানকে খুঁজছে আর কাঁদছে, চারপাশ ভারী হয়ে উঠছিল। কয়েকজনের ছবি নিয়েছি, কিন্তু ওই পরিস্থিতিতে তো আর তাদের সঙ্গে কথা বলা যায় না।

ফেরার পথে এক ছাত্র অনুরোধ করলো “ভাইয়া, আমাদের বাংলাদেশ মেডিকেলে নামিয়ে দিতে পারবেন?” রাজি হয়ে গেলাম। তখন আরেকটি ছেলেও সঙ্গে এলো। এমন পরিস্থিতিতে তাদের নিয়ে হাসপাতালের সামনে নামিয়ে দিই।

 

অনুলিখন: অলকানন্দা রায়

 

 

 

মন্তব্য

কখন কী ঘটল

শেয়ার
কখন কী ঘটল

জুলাই ২১, ২০২৫

দুপুর ১টা ৬ মিনিট : বিমানবাহিনীর ঘাঁটি বীর উত্তম এ কে খন্দকার থেকে ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো. তৌকির ইসলাম যুদ্ধবিমান এফ-৭ বিজিআই নিয়ে উড্ডয়ন করেন।

 

দুপুর ১টা ১২ মিনিট : মধ্যাকাশে বিমানটিতে কারিগরি ত্রুটি দেখা দেয়। পাইলটের সর্বাত্মক চেষ্টার পরও বিমানটি উত্তরার দিয়াবাড়িতে অবস্থিত মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে আছড়ে পরে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা অনুযায়ী, বিমানটির সামনের অংশ সরাসরি দোতলা ভবনটির দ্বিতীয় তলায় আঘাত করে।

 

দুপুর ১টা ৪০ (আনুমানিক) : উত্তরা, টঙ্গী, পল্লবী, কুর্মিটোলা, মিরপুর, পূর্বাচল ফায়ার স্টেশনের ৮টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজ শুরু করে।

 

দুপুর ২টা ১৫ (আনুমানিক) : ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকার্যক্রম শুরু করে সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী, বিজিবি এবং পুলিশ।

 

বিকেল ৩টা ১০ (আনুমানিক) : পাইলটসহ মোট ৫ জনকে বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারযোগে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নেওয়া হয়।

 

বিকেল ৪টা : প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ২২ জুলাই রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়।

 

বিকেল ৫টা : আইএসপিআরের বিজ্ঞপ্তিতে জানা যায়, পাইলট লে. মো. তৌকির ইসলাম মারা গেছেন। তখন পর্যন্ত ১৯জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়, ১৭১জন আহত ব্যক্তি ৮টি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

 

রাত ৯টা ১০ মিনিট : ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্ধারকার্যক্রম সমাপ্ত ঘোষণা করে।

 

জুলাই ২২, ২০২৫

রাত ২টা : মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা ৬ দফা দাবিতে ক্যাম্পাসে আন্দোলন শুরু করে।

 

সকাল ১০টা ৩০ মিনিট : মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ পরিদর্শনে যান শিক্ষা ও আইন উপদেষ্টা । শিক্ষার্থীরা গাফিলতির অভিযোগ তুলে তাদের ঘিরে বিক্ষোভ করে।

 

দুপুর ১২টা ৩০ মিনিট : জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ২৭ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ বিষয়ক বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান। চিকিৎসাগ্রহনকারী আহতদের সংখ্যা কমে ৭৮জনে নেমে এসেছে বলে জানান।  ৬জনের পরিচয় নিশ্চিত করা যায়নি, ২০জনের মৃতদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

 

বিকেল ৩টা : প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নিকটস্থ উত্তরা সেক্টর ১২তে অবস্থিত সিটি কর্পোরেশন কবরস্থানে দূর্ঘটনায় নিহতের দাফনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

 

বিকেল ৪টা : দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের আইডি কার্ডে বাবা-মা বা অভিভাবকের ফোন নম্বর সংযুক্ত করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের ব্লাড গ্রুপও সংযুক্ত করতে বলা হয়।

 

এস এম তাহমিদ

 

 

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

‘থাকব না আর এই দেশে’

শেয়ার
‘থাকব না আর এই দেশে’
এ এফ এম ইউসুফ, সায়ানের বাবা ও শিক্ষক

সহকারী অধ্যাপক এ এফ এম ইউসুফ ও শিক্ষক শামীমা শাম্মী—মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক দুজনই। বাবা-মায়ের স্কুলেরই ছাত্র তাঁদের দুই সন্তান। সপ্তম শ্রেণিতে পুত্র সায়ান ইউসুফ আর তৃতীয় শ্রেণিতে ছোট্ট ফারিসা। সোমবারের ট্রাজেডিতে নিজেদের ১৪ বছর বয়সী পুত্র সন্তানকে হারালো এই শিক্ষক দম্পতি।

ফারিসা হারালো তার বড় ভাইকে।

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়নের বশিকপুর গ্রামের পাল বাড়ির বাসিন্দা তাঁরা। দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টরে ভাড়া বাসায় থাকতেন শিক্ষক দম্পতি। সন্তান হারানোর শোকে হতবিহ্বল বাবা ইউসুফ তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়ায় বারবার তিনি একটা কথাই বলছিলেন, ‘আমরা এই দেশে থাকব না।

’ বলেন, ‘পলিটিশিয়ানরা এ দেশটা পলিউটেড (দূষিত) করে ফেলেছে। আমরা এই দেশে আর থাকব না। আমি সহকারী প্রফেসর, আমার ওয়াইফও কেমিস্ট্রির লেকচারার। থাকব না আর এই দেশে।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে তাঁদের গ্রামের বাড়ি বশিকপুর পাল বাড়িতে গেলে সায়ানের দাদি কামরুন নাহারের আর্তনাদ শোনা যায়। তিনি আর্তনাদ করে বলতে থাকেন, ‘ও বাবু, আমার সোনামনি কই, ওরে মাগো, আমার সোনামনি কই?’ এর একটু পরেই [দুপুর পৌনে ১টার দিকে] গাড়িতে করে সায়ানের মরদেহ আসে বাড়ির সামনে। গাড়ির শব্দ শুনেই কামরুন কাঁদতে কাঁদতে ছুটে আসেন। এ সময় কয়েকজন প্রতিবেশি তাঁকে ধরে রাখার চেষ্টা করেন। তাদের কাছ থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে ছুটে যেতে যান গাড়ির কাছে।

কয়েকজন বয়োজ্যেষ্ঠ্য প্রতিবেশি তাকে বুঝিয়ে নিয়ে গেলেন ঘরের ভেতর, তবু থামেনি কামরুন নাহারের আর্তনাদ।

১০ মিনিট পর আরেকটি গাড়ি এসে থামে এই বাড়ির সামনে। সেই গাড়ি থেকে নেমে আসেন সায়ানের বাবা ইউসুফও। বন্ধু ও স্বজনদের জড়িয়ে ধরে কাঁদলেন কিছুক্ষণ। তাঁদের উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আমি তো কারো ক্ষতি করি নাই। আমার ছেলে মেধাবী ছিল। ক্লাসে সে প্রথম হতো। এত সুন্দর, এত স্মার্ট ছিল। আমার ছেলেরে আমি সবসময় আইনস্টাইন বলে ডাকতাম। কখনো দুষ্টামি করেও মিথ্যা কথা বলি নাই। আমার সঙ্গে কেন এমন হলো!’

সায়ানের চাচা মিজানুর রহমান বলেন, ‘ঝলসানো শরীর ও কাঁধে ব্যাগ নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে নিজেই বের হয়ে আসে সায়ান। পরে তার বাবা-মা তাকে শনাক্ত করে। সেই প্রথম বের হয়ে এসেছে ভিডিওতে দেখেছি।’

জানা যায়, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় সায়ান। মাইলস্টোনে ইউসুফের সহকর্মী রায়হানা আক্তার। তিনি রসায়নের শিক্ষক। তিনি বলেন, ‘ইউসুফ স্যারের স্বপ্ন ছিল ছেলেকে আমেরিকায় পাঠাবে পড়াশোনার জন্য। আমেরিকায় সায়ানের এক মামা থাকেন। সেখানেই ছেলেকে পাঠানোর কথা। কিন্তু সব শেষ! সহকর্মী হিসেবে আমরা তাঁর শোকে মর্মাহত।’

জানা গেছে, ঈদুল আজহার ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে মা-বাবা ও বোনের সঙ্গে ঈদ করতে এসেছিল সায়ান। আবারও কোনো এক ছুটিতে পরিবারের সঙ্গে বেড়াতে আসার কথা ছিল। তার আগেই সায়ান এসেছে লাশ হয়ে।

সোমবারের ট্রাজেডিতে প্রাণ হারায় লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার আরেক শিক্ষার্থী—পার্বতীনগর ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রামের রহিমবক্স হাজী বাড়ির আব্দুস সামাদের ছেলে আফনান ফায়াজ। মাইলস্টোনে সায়ানেরই ক্লাসমেট ছিল ফায়াজ। গতকাল সকালে ঢাকায় দাফন করা হয় ফায়াজের মরদেহ।

ইন্দ্রজিৎ মণ্ডল

মন্তব্য

‘আম্মু, রাত্রে তুমি থাকবা না আমার কাছে?’

শেয়ার
‘আম্মু, রাত্রে তুমি থাকবা না আমার কাছে?’
আব্দুল্লাহ ছামীম

জুলেখা বেগম, নিহত আব্দুল্লাহ ছামীমের মা

দুপুরে কেউ একজন ফোন করছিল, ‘আপনার ছেলে বিমান দুর্ঘটনায় আহত হইছে। তাড়াতাড়ি আসেন।’ আমি গেছি। দৌড়াইয়া গেছি।

ওরে দেইখ্যা... পরে দেখি অ্যাম্বুলেন্স নাই। অনেক কষ্টে কোনোরকমে একটা অ্যাম্বুলেন্স ঠিক কইরছি। অ্যাম্বুলেন্সের ভিতরে এসি নাই। এ কেমন বাংলাদেশ।
আমার বাবায় যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিল। ঢাকা মেডিকেলে নিলাম। হেই ঢাকা মেডিকেল নিতে নিতে আমার বাবায় চিল্লাইছে আর কইছে, ‘আম্মু কতক্ষণ লাগব, ভাইয়া (অ্যাম্বুলেন্স চালককে) কতক্ষণ লাগব আর? ভাইয়া, এতদূরে হাসপাতাল কেন, ভাইয়া? এতদূরে হাসপাতাল অইলে তো মানুষ মারা যাইব নিতে নিতে। এতদূরে কেন হাসপাতাল।
কাছাকাছি বানাইতে পারল না? এতদূরে কেন? আমারে বিদেশে নিয়া যাও চিকিৎসা করতে।’

পরে হাসপাতালে নিলাম। ভর্তি করাইল। বাবায় কইছে ‘আমারে একটু পানি দাও আম্মু। আমারে পানি দিলে আমি নিঃশ্বাস নিতে পারি।

’ আর ডাক্তার দেয় না দিতে। ডাক্তারে বলে কী, পানি খাইলে সমস্যা অইবো। আমার বাবায় নাস্তা চাইছে। দিতে পারি নাই। আমার বাবায় কয়, ‘আম্মু, আম্মু গো, রাত্রে তুমি থাকবা না আমার কাছে? হাসপাতালে আমি থাকব না।’ আমি বলছি, হ, বাবা আমি থাকব। যেকোনো কিছুর বিনিময়ে হোক, আমি তোমার কাছে থাকব। আমারে বলে কী, ‘আমার আপু আর তুমি থাকবা।’ আমি কইছি তুমি টেনশন কইরো না। কিন্তু এখন আমি আছি, বাবাটা নাই।

[মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ত আব্দুল্লাহ ছামীম। বাড়ি শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার ডিএম খালি মাঝিকান্দি গ্রামে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২১ জুলাই রাত ১১টার দিকে মারা যায় সে।  দুই ভাই এক বোনের মধ্যে ছামীম ছোট। বাবাহারা তিন সন্তানকে নিয়ে রাজধানী উত্তরা দিয়াবাড়ি খালপাড় এলাকায় থাকেন মা জুলেখা বেগম।]

পিন্টু রঞ্জন অর্ক

 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ