<p><strong>[একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির জীববিজ্ঞান দ্বিতীয় পত্র বইয়ের প্রথম অধ্যায়ে জেলিফিশের কথা উল্লেখ আছে]</strong></p> <p>জেলিফিশ এক ধরনের অমেরুদণ্ডী প্রাণী, পৃথিবীর সব মহাসাগরে দেখতে পাওয়া যায়। নামে ‘ফিশ’ হলেও এরা মাছ নয়। সাগর-মহাসাগরে থাকে বলে এদের আমরা মাছ বলি। ঘণ্টাকৃতি জেলিসদৃশ প্রাণীটি প্রাণিজগতের নিডারিয়া পর্বের সিফোজোয়া শ্রেণির অন্তর্গত। ২০০৭ সালে উটাহতে খুঁজে পাওয়া যায় একটি জেলিফিশের ফসিল। তা থেকেই আমরা জানতে পারি, এরা পৃথিবীতে ছিল ৫০০ মিলিয়ন বছরেরও আগে। অর্থাৎ এই প্রাণীটির শুরু ডাইনোসোরের চেয়ে আরো তিন গুণ আগে। পৃথিবীতে প্রায় দুই হাজার প্রজাতির জেলিফিশ আছে।</p> <p>জেলিফিশের দেহ জোনাকি পোকার মতো জ্বলজ্বল করে। কারণ এদের দেহের Green Fluorescent Protein (GFP)। এদের মুখ ও পায়ুপথ একই। প্রাণীটির উচ্চতাভীতি আছে। অসম্ভব সুন্দর এই প্রাণীটির মাথা ও হৃদয় বলতে কিছু নেই। এদের দেহের ৯৮ শতাংশই পানি দিয়ে গঠিত। জেলিফিশের শরীরের ভেতর থেকে সুতার মতো এক ধরনের অঙ্গ বের হয়, এগুলোকে টেন্টাকেলস বলে। টেন্টাকেলসে ‘নেমাটোসিস’ নামের একটি অঙ্গ থাকে, যার সাহায্যে এরা শিকার করে।</p> <p>জেলিফিশের সব প্রজাতির মধ্যে সবচেয়ে ভয়ংকর প্রজাতির জেলিফিশ হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ান বক্স জেলিফিশ। দেখতে এরা অনেকটা ঘনকের মতো। গায়ের রং স্বচ্ছ বলে এদের সহজে দেখাও যায় না। এই প্রজাতির জেলিফিশের আছে লম্বা কর্ষিকা, যা নেমাটোসিস্ট ও বিষ বহন করে। এদের হুলের আঘাত মাত্র চার মিনিটেই শিকারকে মেরে ফেলতে পারে, যা সাপের বিষকেও হার মানায়। এর বিষরোধক এখনো আবিষ্কৃত হয়নি। প্রতিটি বক্স জেলিফিশে ৬০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করার মতো পর্যাপ্ত পরিমাণ বিষ জমা থাকে।</p> <p>বিশ্বের বৃহত্তম জেলিফিশ লায়ন ম্যান জেলিফিশ। এরা প্রায় ১২০ ফুট পর্যন্ত প্রসারিত হতে পারে। তবে ওজন ও ব্যাসের দ্বারা বিশ্বের বৃহত্তম জেলিফিশ হলো টাইটানিক নোমুরার জেলিফিশ। এদের ওজন ৪৪০ পাউন্ড পর্যন্ত হতে পারে।</p> <p>মুন জিলিফিশের শরীরের মাঝখানে চির ধরে আবার জোড়া লেগে যায়। অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, আবার টিস্যুগুলো জন্মায় আর আগের অবস্থায় ফিরে যায়। কখনোই বার্ধক্য আসে না ব্যাকওয়ার্ড এজিং জেলিফিশের। বয়সের ভারে এদের মৃত্যু হয় না। বয়সকে লুকিয়ে ফের যৌবনে ফিরে যাওয়ার অদ্ভুত ক্ষমতা রয়েছে এই প্রজাতির জেলিফিশের।              </p> <p style="text-align: right;"><strong> ইন্দ্রজিৎ মণ্ডল</strong></p>