<p> </p> <p><strong>[নবম-দশম শ্রেণির কৃষিশিক্ষা বইয়ের চতুর্থ অধ্যায়ে চেলে পোকার কথা উল্লেখ আছে]</strong></p> <p>চেলে পোকা পাটগাছের এক ধরনের ক্ষতিকর পোকা। এরা দেখতে ছোট, কালো রঙের শুঁড়বিশিষ্ট। পূর্ণবয়স্ক অবস্থায় লম্বায় প্রায় দুই মিলিমিটার। সারা গায়ে সাদা সূক্ষ্ম কাঁটা থাকে। সম্মুখে ছোট বাঁকা শুঁড় আছে। অগ্রবক্ষ লম্বা-চওড়ায় সমান এবং পেছনের দিক গোলাকৃতির। সদ্যোজাত কীড়া (গ্রাব) সাদা রঙের হয়। তখন এদের কোনো পা থাকে না এবং দেখতে ইংরেজি বর্ণ ‘প’-এর মতো। কীড়ার দৈর্ঘ্য পূর্ণবয়স্ক চেলে পোকার চেয়ে বেশি (তিন মিলিমিটার)। তবে প্রস্থ্থে এক মিলিমিটার।</p> <p>পাটের চারা যখন পাঁচ ইঞ্চির মতো লম্বা হয় তখন থেকে চেলে পোকার আক্রমণ শুরু হয়। পাটগাছের চারা অবস্থায় চেলে পোকা আলপিনের ছিদ্রের মতো করে পাতা খায়। তারপর ডিম পাড়ার জন্য স্ত্রী পোকা চারাগাছের কচি ডগায় আক্রমণ করে। স্ত্রী পোকা তার শুঁড় দিয়ে গাছের ডগা, পর্ব বা গিঁটে ছিদ্র করে ডিম পাড়ে। ডিম থেকে বাচ্চা বের হওয়ার পর কীড়া পাটের ডগার ভেতর চলে যায় এবং কাণ্ডের ছাল ও অন্যান্য কলা (টিস্যু) খেয়ে</p> <p>                                         কাণ্ডের ভেতর মজ্জায় প্রবেশ করে বড় হতে থাকে। আক্রান্ত স্থান থেকে একপ্রকার আঠা বের হয়ে আসে এবং কীড়ার মলের সঙ্গে শক্ত গিঁটের সৃষ্টি করে। পাট পচানোর সময় সেই গিঁট পচে না। এই গিঁটযুক্ত আঁশ বাজারে নিম্ন  শ্রেণির বলে বিবেচিত হয় এবং আঁশের মান ক্ষুণ্ন হয়। ফলে দামও কম পাওয়া যায়।</p> <p>কোনো কোনো সময় ফলও এই পোকা দ্বারা আক্রান্ত হয়।</p> <p>চেলে পোকার আক্রমণ থেকে পাট রক্ষা করতে হলে পাট ক্ষেতের পাশের বন ওকড়াগাছ এবং অন্যান্য আগাছা পরিষ্কার রাখতে হবে। পাট মৌসুমের প্রথমে ডগা আক্রান্ত চারাগুলো তুলে ফেললে পরবর্তী সময়ে এদের আক্রমণ কমে যায়। গাছের উচ্চতা ১২-১৫ সেন্টিমিটার হওয়ার পর চেলে পোকার আক্রমণ বেশি হলে এক মৌসুমে তিনবার ওষুধ ছিটিয়ে প্রায় সম্পূর্ণরূপে পোকা দমন করা যায়। এ ক্ষেত্রে মেটাসিসটক্স আর ৫০ ইসি, ডায়াজিনন ৬০ ইসি ও নুভাক্রন ৪০ ইসি প্রতি লিটারে ১.৫ মিলিগ্রাম ছিটালে ভালো ফল পাওয়া যায়।      </p> <p style="text-align: right;"><strong>ইন্দ্রজিৎ মণ্ডল</strong></p>