<p><strong>[নবম-দশম শ্রেণির বিজ্ঞান বইয়ের অষ্টম অধ্যায়ে হীরার কথা উল্লেখ আছে]</strong></p> <p>প্রাচীনকাল থেকেই হীরাকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়। বর্তমানে এর কদর শুধু উচ্চমূল্যের জন্য হলেও প্রাচীনকালে এর সঙ্গে ধর্মীয় বিভিন্ন বিষয়ও জড়িত ছিল। যেমন—প্রাচীন রোমান ও গ্রিসে হীরাকে দেবতাদের অশ্রু বা পতনশীল কোনো তারা মনে করা হতো। এটি অত্যন্ত মূল্যবান। এর তৈরির প্রক্রিয়া বেশ জটিল, কষ্টসাধ্য ও সময়সাপেক্ষ। গোটা বিশ্বেই হীরার আংটি উপহার হিসেবে দারুণ জনপ্রিয়। অনেকের ধারণা, মাটির অভ্যন্তরে থাকা কয়লা থেকে হীরার সৃষ্টি। আসলে হীরা গঠনে খুব সামান্যই অবদান রাখে কয়লা। হীরা তৈরি হয় ৯০০ থেকে ১৩০০ সেলসিয়াস তাপমাত্রায় আর ভূগর্ভের ১৪০ থেকে ১৯০ কিলোমিটার গভীরে। মাটির গভীরে উচ্চ তাপমাত্রা ও চাপের মাঝে থাকা হীরার মূল আকরিকগুলো পৃথিবীর অভ্যন্তর থেকে ওপরের দিকে উঠে আসে আগ্নেয়গিরির লাভার সঙ্গে। বাইরে আসার পর এরা শীতল হয়ে জমাট বাঁধে এবং কিম্বারলাইট (এক প্রকার শিলা) তৈরি করে। আফ্রিকায় হীরার প্রচুর খনি আছে।</p> <p>হীরার মূল্য কেমন হবে তা নির্ভর করে এর রং, কিভাবে কাটা হয়েছে, কতটা স্বচ্ছ প্রকৃতির এবং কত ক্যারেট ওজনের—এসব বিষয়ের ওপর। স্বর্ণের ক্ষেত্রে বিশুদ্ধতার একক ক্যারেট হলেও হীরার ক্ষেত্রে ক্যারেট ভরের একক। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় হীরার খনি দক্ষিণ আফ্রিকার দ্য কিম্বার্লি মাইন, যেখানে রেকর্ড পরিমাণ হীরা উত্তোলন করা হয়। পরিত্যক্ত হওয়ার পর জায়গাটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘দ্য বিগ হোল কিম্বার্লি’। দক্ষিণ আফ্রিকায় যত পর্যটকের সমাগম হয় তার একটা বড় অংশ আসে এই বিগ হোলকে কেন্দ্র করে। সবচেয়ে বড় হীরা আফ্রিকায় পাওয়া গেলেও বিশ্ববাসীকে এ রত্নটি চিনিয়েছে ভারতবর্ষ। ১৭৩০ সাল পর্যন্ত হীরার একমাত্র উৎসস্থল বলতে ছিল ভারতের অন্ধ্র প্রদেশ। সেখানেই পাওয়া যায় বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন আর জগদ্বিখ্যাত হীরা কোহিনূর। ১০৫ ক্যারেটের এই হীরার জন্য কত না রক্ত ঝরেছে ভারতবর্ষে। রাজকীয় হীরাটি শোভা পেয়েছে মোগল বাদশাহ আর সুলতানি শাসকদের মাথায়। উনিশ শতকে এই রত্ন দখলে নেয় ব্রিটিশরা।</p> <p> </p> <p style="text-align: right;"><strong>পিন্টু রঞ্জন অক</strong></p>