<p>অষ্টম অধ্যায়</p> <p>রেচন প্রক্রিয়া</p> <p>জ্ঞানমূলক প্রশ্ন</p> <p>১। রেচন কী?</p> <p>উত্তর : রেচন মানবদেহের একটি জৈবিক প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে দেহে বিপাক প্রক্রিয়ায় উৎপন্ন নাইট্রোজেনঘটিত ক্ষতিকর বর্জ্য পদার্থ বের করে দেওয়া হয়।</p> <p>২। হাইলাস কী?</p> <p>উত্তর : বৃক্কের ভেতরের পার্শ্ব অবতল হয়। অবতল অংশের ভাঁজকে হাইলাস বলে।</p> <p>৩। পেলভিস কী?</p> <p>উত্তর : ইউরেটারের ফানেল আকৃতির প্রশস্ত অংশকে পেলভিস বলে।</p> <p>৪। মেডুলা কী?</p> <p>উত্তর : ক্যাপসুলের ভেতরের অংশকে মেডুলা বলে।</p> <p>৫।  প্যাপিলা কী?</p> <p>উত্তর : মেডুলায় সাধারণত ৮ থেকে ১২টি রেনাল পিরামিড থাকে। এদের   অগ্রভাগ প্রসারিত হয়ে রেনাল প্যাপিলা  গঠন করে।</p> <p>৬। ইউরিনিফেরাস নালিকা কী?</p> <p>উত্তর : প্রতিটি বৃক্কে বিশেষ এক ধরনের নালিকা থাকে, যাকে ইউরিনিফেরাস নালিকা বলে।</p> <p>৭। ইউরোক্রোম কী?</p> <p>উত্তর : ইউরোক্রোম নামে এক ধরনের  রঞ্জক পদার্থের উপস্থিতিতে মূত্রের রং হালকা হলুদ হয়।</p> <p>৮। নেফ্রন কী?</p> <p>উত্তর : বৃক্কের ইউরিনিফেরাস নালিকার ক্ষরণকারী অংশ এবং কাজ করার একককে নেফ্রন বলে।</p> <p>৯। মালপিজিয়ান অঙ্গ কী?</p> <p>উত্তর : মালপিজিয়ান অঙ্গ ও রেনাল টিউব্যুল নিয়ে প্রতিটি নেফ্রন গঠিত।  প্রতিটি মালপিজিয়ান অঙ্গ বা রেনাল করপাসল আবার গ্লোমেরুলাস ও বোম্যান্স ক্যাপসুল নিয়ে গঠিত। বোম্যান্স ক্যাপসুল গ্লোমেরুলাসকে বেষ্টন করে থাকে।</p> <p>১০। রেনাল টিউব্যুল কী?</p> <p>উত্তর : বোম্যান্স ক্যাপসুলে অক্ষীয়দেশ থেকে সংগ্রাহী নালি পর্যন্ত বিস্তৃত চওড়া নালিকাটিকে রেনাল টিউব্যুল বলে।</p> <p>১১। ডায়ালিসিস কী?</p> <p>উত্তর : বৃক্ক সম্পূর্ণ অকেজো বা বিকল হওয়ার পর বৈজ্ঞানিক উপায়ে রক্ত পরিশোধিত করার নাম ডায়ালিসিস।</p> <p>১২। কিডনি সংযোজন কী?</p> <p>উত্তর : যখন কোনো ব্যক্তির কিডনি বিকল বা অকেজো হয়ে পড়ে তখন কোনো সুস্থ ব্যক্তির কিডনি তার দেহে প্রতিস্থাপন করা যায়, তাকে কিডনি সংযোজন বলে।</p> <p>অনুধাবনমূলক প্রশ্ন</p> <p>১। রেচন পদার্থ বলতে কী বোঝায়?</p> <p>উত্তর : রেচন পদার্থ বলতে মূলত নাইট্রোজেনঘটিত বর্জ্য পদার্থকে বোঝায়। মানবদেহের রেচন পদার্থ মূত্রের মাধ্যমে শরীর থেকে  বের হয়ে আসে। মূত্রের প্রায় ৯০ শতাংশ উপাদান হচ্ছে পানি। অন্যান্য উপাদানের মধ্যে আছে ইউরিয়া, ইউরিক এসিড, ক্রিয়াটিনিন ও বিভিন্ন ধরনের লবণ।</p> <p>২। দেহে বৃক্ক কিভাবে কাজ করে? ব্যাখ্যা করো।</p> <p>উত্তর : দেহের অপ্রয়োজনীয় এবং ক্ষতিকর বর্জ্য পদার্থ মূত্রের মাধ্যমে অপসারণে বৃক্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বৃক্কের ভেতরের নেফ্রন একটি জটিল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ক্রমাগত মূত্র উৎপন্ন করে। উৎপন্ন মূত্র সংগ্রাহী নালিকার মাধ্যমে বৃক্কের পেলভিসে আসে এবং পেলভিস থেকে মূত্র ইউরেটারে আসে। ইউরেটার থেকে মূত্র মূত্রথলিতে এসে সাময়িকভাবে জমা থাকে। মূত্র পরে দেহের বাইরে নিষ্কাশিত হয়।</p> <p>৩। অসমোরেগুলেশন বলতে কী বোঝো?</p> <p>অথবা, দেহে পানির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে মূত্র তৈরিকারী অঙ্গের ভূমিকা ব্যাখ্যা করো।</p> <p>অথবা, মানবদেহে পানির ভারসাম্য রক্ষা  হয় কিভাবে ব্যাখ্যা করো।</p> <p>উত্তর : দেহে পানি ও পানিতে দ্রবণীয় দ্রব্য তথা সোডিয়াম, পটাসিয়াম এবং ক্লোরাইড আয়ন ইত্যাদির মধ্যে ভারসাম্য রক্ষার প্রক্রিয়াকে অসমোরেগুলেশন বলে।</p> <p>যাবতীয় শারীরবৃত্তিক কাজ সম্পাদনের জন্য মানবদেহে পরিমিত পানি থাকা  অপরিহার্য। মূলত মূত্রের মাধ্যমেই সবচেয়ে বেশি পানি দেহ থেকে বেরিয়ে যায়। দেহের পানিসাম্য নিয়ন্ত্রণে বৃক্ক  প্রধান ভূমিকা পালন করে। বৃক্ক নেফ্রনের মাধ্যমে পুনঃ শোষণ প্রক্রিয়ায় দেহে  পানির সমতা বজায় রাখে। গ্লোমেরুলাসে রেচন বর্জ্য, পানি এবং অন্যান্য তরল  পদার্থ পরিস্রুত হয়। বৃক্ক অকার্যকর হয়ে গেলে দেহে পানি জমতে থাকে। চোখ-মুখসহ সারা শরীর ফুলে যেতে পারে, এমনকি উচ্চ রক্তচাপও সৃষ্টি হতে পারে।</p> <p>৪। বৃক্কে কেন পাথর হয়?</p> <p>উত্তর : মানুষের কিডনিতে ছোট আকারের পাথরজাতীয় পদার্থের সৃষ্টিকে বৃক্কে পাথর বলে। অতিরিক্ত শারীরিক  ওজন, কিডনির সংক্রমণ, কম পানি পান করা ইত্যাদি বৃক্কে পাথর হওয়ার কারণ হতে পারে।</p>