ক. বিজয়গুপ্তের রচিত মঙ্গল কাব্যের নাম কী?
খ. টেরাকোটা বলতে কী বোঝায়? ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকে বর্ণিত ‘ক’ শিল্পটির ধরন ব্যাখ্যা করো।
ঘ. “বাঙালির সংস্কৃতির বিকাশে ‘খ’ শিল্পটির গুরুত্ব অপরিসীম”—বিশ্লেষণ করো।
৪। উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
নিরা তার মামার সঙ্গে ঢাকার বাইরে বহু পুরনো জরাজীর্ণ একটি আবাসিক এলাকায় যায়। মামা বললেন, উনিশ শতকে ধনী ব্যবসায়ীদের অনেকেই
এখানে বসবাস করতেন। ফেরার পথে বাহাদুর শাহ পার্কটিকে দেখিয়ে বললেন, ‘জানিস তো, এই স্থানটির সঙ্গে জড়িয়ে আছে ভারতের প্রথম
স্বাধীনতাযুদ্ধের ইতিহাস।’
ক. ‘প্রত্ন’ অর্থ কী?
খ. উত্তরা গণভবন বলতে কী বোঝো? ব্যাখ্যা করো।
গ. নিরার দেখা ঢাকার বাইরের স্থাপত্য নিদর্শনটির বর্ণনা দাও।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত পার্কটি সম্পর্কে মামার শেষের বক্তব্যটির মূল্যায়ন করো।
৫। চিত্র দেখে নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

ক. সামাজিকীকরণ কাকে বলে?
খ. সামাজিকীকরণের ক্ষেত্রে সংবাদপত্রের ভূমিকা ব্যাখ্যা করো।
গ. চিত্রগুলো সামাজিকীকরণের কোন ধরনের মাধ্যমকে ইঙ্গিত করে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. ‘উক্ত মাধ্যম সামাজিকীকরণের অনেক সময় নেতিবাচক প্রভাব ফেলে’—বিশ্লেষণ করো।
৬। উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
রহিম মিয়ার কিছু জমি আছে। সেখানে তিনি ফসল ফলান। চাহিদা মেটানোর পর অতিরিক্ত ফসল তিনি বিক্রি করে দেন।
তাঁর বড় ছেলে রাহাত মালয়েশিয়ার একটি খামারে কাজ করে। প্রতি মাসে সে দেশে প্রচুর টাকা পাঠায়।
ক. PCI-এর পূর্ণরূপ লেখো।
খ. উৎপাদন ও আয় বৃদ্ধির লক্ষ্য ব্যাখ্যা করো।
গ. রহিম মিয়ার কাজ কোন ধরনের জাতীয় আয়ের উৎস? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. রাহাতের আয় দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছে—বিশ্লেষণ করো।
৭। তথ্যগুলো দেখে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
তথ্য-১ :
* নলকূপ স্থাপন
* রাস্তাঘাট সংস্কার ও নির্মাণ
* বয়স্কদের শিক্ষাদান
তথ্য-২ : * পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা
* অস্বাস্থ্যকর খাদ্য বিক্রি নিয়ন্ত্রণ
* যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ
ক. বাংলাদেশের সংবিধান কখন গৃহীত হয়?
খ. ‘জনগণ সকল ক্ষমতার উৎস’—ব্যাখ্যা করো।
গ. তথ্য-১-এ স্থানীয় সরকারের যে স্তরের চিত্র ফুটে উঠেছে তার গঠন ব্যাখ্যা করো।
ঘ. তথ্য-২-এ উল্লিখিত স্তরটি কিভাবে শহরাঞ্চলে স্থানীয় সরকার হিসেবে কাজ করতে পারে? মতামত দাও।
৮। উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
‘ক’ অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। তার মা মানুষের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে এবং বাবা দিনমজুর। সেই সুযোগে সে স্কুলে না গিয়ে অন্য ছেলেদের সঙ্গে মারধর ও পথে-ঘাটে মেয়েদের উত্ত্যক্ত করে। তাই তার বাবা এক পর্যায়ে তাকে দিনমজুরের কাজ করতে বাধ্য করে।
ক. মাদকাসক্তি রোধে কোন প্রতিজ্ঞায় তরুণদের উদ্বুদ্ধ করতে হবে?
খ. অপসংস্কৃতির প্রভাব মাদকাসক্তির বড় কারণ—বুঝিয়ে লেখো।
গ. উদ্দীপকে বর্ণিত সামাজিক সমস্যাটি ব্যাখ্যা করো।
ঘ. “উক্ত সমস্যাটি সমাধানে ‘ক’-এর বাবার নেওয়া সিদ্ধান্তটিই একমাত্র পদক্ষেপ নয়” বিশ্লেষণ করো।
৯। উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগ
ছক-ক :
* নিরক্ষরতা দূরীকরণ
* শিক্ষার প্রসার
* স্বাস্থ্য ও পরিবার
* কল্যাণমূলক কাজ
* রেজিস্ট্রেশন এবং কর্মসংস্থান
ছক-খ :
* মা ও শিশুর স্বাস্থ্য
* টিকা প্রদান
* বাল্যবিয়ে রোধ
* প্রশিক্ষণ
* উদ্বুদ্ধকরণ
ক. বাংলাদেশে প্রতি বর্গকিলোমিটারে কতজন লোক বাস করে?
খ. জনসংখ্যা নীতি বলতে কী বোঝায়?
গ. ওপরে উল্লিখিত ‘ক’ ছকের কাজগুলো কার উদ্যোগে সম্পাদিত হয়—ব্যাখ্যা করো।
ঘ. ‘ক’ ও ‘খ’ ছকের উদ্যোগগুলো কার্যকরের মাধ্যমে একটি রাষ্ট্রের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। —উক্তিটি বিশ্লেষণ করো।
১০। গত গ্রীষ্মের ছুটিতে তুষিত ময়মনসিংহ গিয়েছিল একটি নৃগোষ্ঠীর জীবন-জীবিকা দেখতে। নৃগোষ্ঠীটিকে দেখার পর সে রংপুরে বসবাসরত নৃগোষ্ঠীটিকে ওইটির সঙ্গে তুলনা করতে গিয়ে আশ্চর্য হলো।
ক. চাকমাদের সবচেয়ে বড় উৎসবের নাম কী?
খ. সাংগ্রাই উৎসব কী? ব্যাখ্যা করো।
গ. তুষিতের দেখা ওই ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক জীবন ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত নৃগোষ্ঠী দুটির সামাজিক জীবনের মধ্যে তুলনা করো।
১১। জান্নাতের বিয়ে হয় এক কারখানা শ্রমিকের সঙ্গে। বিয়ের পর পারিবারিক সচ্ছলতার জন্য সে নিজেও স্বামীর সঙ্গে কাজে যোগ দেয়। আশির দশকে প্রতিষ্ঠিত কারখানাটির উৎপাদিত পণ্য আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলোতে রপ্তানি করে বাংলাদেশ প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে।
ক. বাংলাদেশের বেশির ভাগ এলাকায় বছরে কয়টি ফসল উৎপন্ন হয়।
খ. জীববৈচিত্র্য বলতে কী বোঝায়?
গ. উদ্দীপকে বর্ণিত শিল্পটি ব্যাখ্যা করো।
ঘ. বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে উক্ত শিল্পের অবদান মূল্যায়ন করো।

বাংলাদেশে প্রতি বর্গকিলোমিটারে এক হাজারেরও বেশি লোক বাস করে
সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
১ থেকে ৯ নম্বর প্রশ্নের জ্ঞান (ক) ও অনুধাবনমূলকের (খ) উত্তর :
১। ক) ইউরোপের শান্তিচুক্তি ওয়েস্টফালিয়ার চুক্তি নামে পরিচিত।
খ) ১৭৯৩ সালে ভূমি-সংক্রান্ত চুক্তিটিকে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত বলা হয়।
১৭৯৩ সালে কর্নওয়ালিস প্রশাসন কর্তৃক ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানি সরকার ও বাংলার জমি মালিকদের (সব শ্রেণির জমিদার ও স্বতন্ত্র তালুকদারদের)
মধ্যে সম্পাদিত একটি যুগান্তকারী চুক্তি। এ চুক্তির আওতায় জমিদার ঔপনিবেশিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় ভূ-সম্পত্তির নিরঙ্কুশ স্বত্বাধিকারী হন। যা চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত নামে পরিচিত।
২। ক) নৌপথে পরিচালিত অভিযানটির নাম ‘অপারেশন জ্যাকপট’।
খ) পাকিস্তানি সেনারা ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে যে গণহত্যার অভিযান চালিয়েছিল তার নাম দিয়েছিল ‘অপারেশন সার্চলাইট’।
পাকিস্তানি সৈন্যরা ২৫ মার্চ রাত সাড়ে ১১টায় ঢাকা সেনানিবাস থেকে রাস্তায় বেরিয়ে পড়ে। এ সময় তাদের প্রথম আক্রমণের শিকার হয় ঢাকার ফার্মগেট এলাকায় রাস্তায় মিছিলরত মুক্তিকামী বাঙালিরা। একই সঙ্গে আক্রমণ চালানো হয় পিলখানা ও রাজারবাগ পুলিশ লাইনে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতেও গভীর রাতে আক্রমণ পরিচালিত হয়। ইকবাল হল (জহুরুল হক হল) ও জগন্নাথ হলে ঢুকে পাকিস্তানি সেনারা গুলি করে অনেক ঘুমন্ত ছাত্রকে হত্যা করে। জহুরুল হক হল সংলগ্ন রেলওয়ে বস্তিতে সেনাবাহিনী আগুন দিলে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ সংঘটিত হয়। শুধু ২৫ মার্চ রাতেই ঢাকায় সাত থেকে আট হাজার নিরীহ মানুষ নিহত হয়।
৩। ক) বিজয়গুপ্তের রচিত মঙ্গলকাব্যের নাম মনসামঙ্গল।
খ) পোড়ামাটির শিল্প বলা হয় টেরাকোটা।
মাটির ফলক বা পাত তৈরি করে তাতে ছবি উত্কীর্ণ করে পুড়িয়ে স্থায়ী রূপ দেওয়াকে টেরাকোটা বা পোড়ামাটির শিল্প বলা হয়। দিনাজপুরের কান্তজির মন্দিরে এভাবে পোড়ামাটির কাজ দিয়ে রামায়ণের কাহিনি উত্কীর্ণ আছে।
৪। ক) ‘প্রত্ন’ অর্থ পুরনো বা প্রাচীন।
খ) নাটোরের দিঘাপতিয়ার জমিদারের প্রাসাদ বর্তমানে উত্তরা গণভবন নামে পরিচিত।
দেশের মূল্যবান স্থাপত্য কীর্তির নিদর্শন এ জমিদার বাড়িটি। এতে সংরক্ষণ করা হয়েছে জমিদারের ব্যবহার্য জামাকাপড়, তৈজসপত্র, মৃৎপাত্র, অলংকার প্রভৃতি নানা মূল্যবান দ্রব্যদি। এ জন্য উত্তরা গণভবন বর্তমানে আমাদের দেশে একটি বিখ্যাত আঞ্চলিক জাদুঘর হিসেবে পরিচিতি লাভ করছে।
৫। ক) সমাজের নিয়মনীতি, মূল্যবোধ, বিশ্বাস, আদর্শ ইত্যাদি আয়ত্ত করার প্রক্রিয়াকে সামাজিকীকরণ বলে।
খ) ব্যক্তির সামাজিকীকরণের ক্ষেত্রে সংবাদপত্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
সংবাদপত্র পড়ে মানুষ আপন সমাজ ও বিশ্ব সম্পর্কে একটি স্বচ্ছ ধারণা লাভ করে, যা তার মনের সংকীর্ণতা দূর করে। সংবাদপত্র মানুষের মধ্যে পারস্পরিক সহনশীলতা, সহমর্মিতা ও বিশ্বজনীনতার বোধ সৃষ্টি করে, যা প্রকৃতপক্ষে সামাজিকীকরণে ভূমিকা রাখে।
নাটোরের দিঘাপতিয়ার জমিদারের প্রাসাদ বর্তমানে উত্তরা গণভবন নামে পরিচিত। দেশের মূল্যবান স্থাপত্য কীর্তির নিদর্শন এই জমিদারবাড়ি। এতে সংরক্ষণ করা হয়েছে জমিদারের ব্যবহার্য জামাকাপড়, তৈজসপত্র, মৃৎপাত্র, অলংকার প্রভৃতি মূল্যবান দ্রব্য।
৬। ক) PCI-এর পূর্ণরূপ Per Capital Income.
খ) দেশের কৃষি, শিল্প ও সেবা খাতে উৎপাদন ও আয় বৃদ্ধির মূল লক্ষ্য হচ্ছে জনগণের জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি।
দেশে উৎপাদন বাড়লে জনগণের জীবনযাত্রার ওপর তার প্রভাব পড়বে। দারিদ্র্য হ্রাস পাবে, মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়বে, কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়বে, বেকারত্ব হ্রাস পাবে। এর সঙ্গে যদি আমাদের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়, তবে প্রবৃদ্ধির সূচকে আমাদের দেশ অনেক এগিয়ে যাবে।
৭। ক) বাংলাদেশের সংবিধান গৃহীত হয় ৪ নভেম্বর ১৯৭২ সালে।
খ) একটি গণতান্ত্রিক দেশে সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক মনে করা হয় জনগণকে।
কেননা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সরকার গঠিত হয় জনগণের ভোটে। জনগণ ভোটাধিকার প্রয়োগে পছন্দমাফিক সরকার বানাতে পারে। অথবা সরকারের পদ থেকে যে কাউকে সরিয়ে দিতে পারে। এ কারণেই জনগণকে সব ক্ষমতার উৎস বলা হয়েছে।
৮। ক) মাদকাসক্তি রোধে ‘মাদককে না বলুন’ এ প্রতিজ্ঞায় তরুণদের উদ্বুদ্ধ করতে হবে।
খ) আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে মাদকাসক্তির অনেক কারণের মধ্যে অপসংস্কৃতির প্রভাব একটি অন্যতম কারণ।
চলচ্চিত্র, টিভি চ্যানেল, ইন্টারনেট প্রভৃতির মাধ্যমে আজকাল দেশের সংস্কৃতি সহজেই অন্য দেশের সংস্কৃতি ও জনজীবনকে প্রভাবিত করছে। দুই ভিন্ন সংস্কৃতির টানাপড়েনে পড়ে যুবসমাজের একটা অংশ বিভ্রান্ত ও পথভ্রষ্ট হয়ে মাদকে আকৃষ্ট হচ্ছে।
৯। ক) বাংলাদেশে প্রতি বর্গকিলোমিটারে এক হাজারেরও বেশি লোক বাস করে।
খ) কোনো দেশের জনসংখ্যা বিষয়ে জাতীয় পর্যায়ে যে নীতি গ্রহণ করা হয়, তাকেই বলা হয় দেশটির জনসংখ্যানীতি।
দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এ নীতি প্রণয়ন করা হয়। এ নীতির লক্ষ্য হলো জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করে দেশের নাগরিকদের জীবনমানের উন্নতি এবং দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করা।
১০ ও ১১ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের সম্পূর্ণ উত্তর :
১০। ক) চাকমাদের সবচেয়ে বড় উৎসবের নাম ‘বিজু’।
খ) মারমাদের পুরনো বর্ষকে বিদায় ও নতুন বর্ষকে বরণ করে নেওয়ার জন্য পালিত উৎসবই হলো সাংগ্রাই উৎসব।
এটি তাদের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। বান্দরবান ও রাঙামাটিতে এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময়ে এ উৎসব বেশ উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্গে উদ্যাপিত হয়।
গ) তুষিতের দেখা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীটি হলো গারো নৃগোষ্ঠী।
বাংলাদেশের বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলায় বসবাসকারী ক্ষুদ্র জাতিসত্তাগুলোর মধ্যে গারোরা হলো সংখ্যাগরিষ্ঠ। এ জাতিগোষ্ঠীর আদি বাসস্থান ছিল তিব্বত। গারোরা সাধারণত ‘মান্দি’ নামে নিজেদের পরিচয় দিতে পছন্দ করে। গারোরা মঙ্গোলীয় নৃগোষ্ঠীর লোক।
উদ্দীপকের তুষিত ময়মনসিংহ গিয়েছিল একটি নৃগোষ্ঠীর জীবন-জীবিকা দেখতে। বাংলাদেশের এ বৃহত্তর জেলায় বসবাস করে গারো নৃগোষ্ঠীরা। গারোরা ভাতের সঙ্গে মাছ ও শাক-সবজি খেয়ে থাকে। তাদের একটি বিশেষ খাদ্য হচ্ছে কচি বাঁশগাছের গুড়ি। এর জনপ্রিয় নাম ‘মিউয়া’। গারোরা খুব আমোদ-প্রমোদপ্রিয়। তাদের সামাজিক উৎসবগুলো কৃষিকেন্দ্রিক। তাদের শ্রেষ্ঠ উৎসব হলো ‘ওয়ানগালা’। গারোদের ভাষা ‘আচিক খুসিক’। এ ভাষার নিজস্ব বর্ণমালা নেই। তারা মাটির ওপর গাছ, বাঁশ ও ছন দিয়ে বাড়িঘর তৈরি করে। তবে অনেকে ছনের পরিবর্তে টিনের ও মাটির তৈরি ঘরেও বাস করে।
ঘ) উদ্দীপকে তুষিতের ময়মনসিংহে দেখা নৃগোষ্ঠীটি হলো গারো এবং রংপুরে বসবাসরত নৃগোষ্ঠীটি হলো সাঁওতাল। গারোদের সামাজিক জীবনের সঙ্গে সাঁওতালদের সামাজিক জীবনের বেশ অমিল রয়েছে।
বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাংশে বসবাসকারী ক্ষুদ্র জাতিসত্তাগুলোর মধ্যে একটি প্রধান নৃগোষ্ঠী হলো সাঁওতাল। তারা রাজশাহী, দিনাজপুর, রংপুর ও বগুড়া জেলায় বাস করে। সাঁওতালরা অস্ট্রালয়েড নৃগোষ্ঠীভুক্ত লোক। তাদের দেহের রং কালো, উচ্চতা মাঝারি ধরনের এবং চুল কালো ও ঈষৎ ঢেউ খেলানো।
গারোদের সমাজ মাতৃসূত্রীয়। তাদের সমাজে মা হলেন পরিবারের প্রধান। সন্তানেরা মায়ের উপাধি ধারণ করে। পরিবারের সর্বকনিষ্ঠ কন্যা পরিবারের সমুদয় সম্পত্তির উত্তরাধিকার লাভ করে থাকে। গারো পরিবারে পিতা সংসার ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করে। তাদের সামাজিক জীবনে বিশেষত বিয়ে, উত্তরাধিকার, সম্পত্তির ভোগদখল ইত্যাদিতে এ মাহারির গুরুত্ব অপরিসীম। গারো সমাজে বেশ কয়েকটি দল রয়েছে। এ রকম প্রধান পাঁচটি দল হচ্ছে : সাংমা, মারাক, মোমিন, শিরা ও আরেং।
অন্যদিকে সাঁওতাল সমাজ হলো পিতৃসূত্রীয়। তাদের সমাজে পিতার সূত্র ধরে সন্তানের দল ও গোত্রপরিচয় নির্ণয় করা হয়। সাঁওতাল সমাজের মূল ভিত্তি হচ্ছে গ্রাম-পঞ্চায়েত। পঞ্চায়েত পরিচালনার জন্য পাঁচজন ‘মাঝি পরাণিক’ থাকে। এরা হলো মাঝিহারাম, জগমাঝি, পরাণিক, গোডেৎ ও নায়েক। নায়েককে তারা পঞ্চায়েত সদস্য নয়, বরং ধর্মগুরু হিসেবে গণ্য করে।
১১। ক) বাংলাদেশের বেশির ভাগ এলাকায় বছরে তিনটি ফসল উৎপন্ন হয়।
খ) প্রকৃতির মধ্যে সব রকমের জীব যে নিয়মে বেঁচে থাকে তাকেই সংক্ষেপে জীববৈচিত্র্য বলা যায়।
সবুজ গাছপালা বাতাসে যে অক্সিজেন ছড়িয়ে দিচ্ছে, তা গ্রহণ করে প্রাণীরা বেঁচে থাকে। আবার প্রাণীদের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় নাইট্রোজেন পায় গাছপালা। বনের বিভিন্ন প্রাণী একে অন্যকে শিকার করে বেঁচে থাকে। এভাবে প্রকৃতির বুকে নানা ধরনের জীব একে অপরের সঙ্গে নিবিড়ভাবে সম্পর্কিত থেকে প্রকৃতিকে বৈচিত্র্যপূর্ণ করেছে। আর জীবের এ বৈচিত্র্যই জীববৈচিত্র্য।
গ) উদ্দীপকে বর্ণিত শিল্পটি হলো পোশাকশিল্প।
গত শতকের আশির দশকে পোশাকশিল্পের অগ্রযাত্রা শুরু হয়। অতি অল্প সময়ে এ শিল্পটি দেশের বৃহত্তম রপ্তানিমুখী
শিল্পে পরিণত হয়েছে। দেশে বর্তমানে তিন হাজারেরও বেশি পোশাকশিল্প ইউনিট রয়েছে। এতে ৪০ লাখের বেশি শ্রমিক কাজ করছে। বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দেশগুলোতে পোশাক রপ্তানি করে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা আয় করে।
উদ্দীপকে ওই শিল্প তথা পোশাকশিল্পটির মাধ্যমে নারীরা অর্থনৈতিকভাবে সচ্ছলতা অর্জন করায় বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটিয়ে সমাজের ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে সক্ষম হচ্ছে। তারা নিজেরাও স্বাবলম্বী মানুষ হিসেবে গড়ে উঠেছে। অনেকেই কাজের পাশাপাশি লেখাপড়া ও প্রশিক্ষণ নিয়ে অধিকতর দক্ষতা অর্জন করছে। নিজেদের সন্তানদের তারা লেখাপড়ার মাধ্যমে যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করছে।
ঘ) বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে ওই শিল্প তথা পোশাকশিল্পের অবদান অপরিসীম।
বর্তমান বিশ্ব ব্যবস্থায় অত্যন্ত দ্রুত শিল্পায়ন ঘটছে। নতুন নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার ঘটিয়ে মানুষ বিভিন্ন ধরনের পণ্যসামগ্রী তৈরি করছে। সেসব পণ্য নিয়ে তারা ব্যবসা-বাণিজ্য করছে, জীবন-জীবিকা নির্বাহ করছে। সে কারণে দ্রুত দেশের আর্থ-সামাজিক পরিবর্তন বা উন্নতি ঘটছে।
উদ্দীপকের শিল্পটির মাধ্যমে নিজেদের সন্তানদের তারা লেখাপড়ার মাধ্যমে যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করছে। এ ছাড়া এ শিল্প উৎপাদিত পণ্য আমরা ইউরোপ আমেরিকায় রপ্তানি করে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছি। যা আমাদের জীবনমানকে অনেক উন্নত করে তুলছে।
সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশে তৈরি পোশাকশিল্পের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। এ শিল্পটি অসংখ্য মানুষের জীবন-জীবিকার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে মিশে গেছে। বর্তমানে প্রায় ৪০ লাখ মানুষ এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত। এ শিল্পের ফলে দেশের অর্ধেক জনসংখ্যা নারীকে জনসম্পদে রূপান্তর করা সম্ভব হচ্ছে। অসংখ্য নারী নিজেদের দারিদ্র্য ঘোচাতে গার্মেন্টে যুক্ত হয়েছেন। এতে তাঁরা স্বাবলম্বী হয়েছেন। অনেকে কাজের পাশাপাশি লেখাপড়া ও প্রশিক্ষণ নিয়ে অধিকতর দক্ষতা অর্জন করেছেন। অতএব এ কথা বলা যায় যে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে পোশাকশিল্পের গুরুত্ব অনস্বীকার্য।