<p>১। চেয়ারম্যান আজমল সাহেবের এলাকায় একজন ভালো মানুষ হিসেবে যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। কিন্তু তাঁর ছেলে কারণে-অকারণে বাড়ির কাজের লোক, আশপাশের খেটে খাওয়া মানুষের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে, তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে। চেয়ারম্যান ছেলেকে ডেকে বুঝিয়ে বলেন, ‘তুমি যাদের আজ তুচ্ছ জ্ঞান করছ—সত্যিকার অর্থে তারাই আধুনিক সভ্যতার নির্মাতা, তাদের কারণেই আমরা সুন্দর জীবনযাপন করছি।’</p> <p>ক) ‘কুলি-মজুর’ কবিতায় রেলপথে কোনটি চলে?</p> <p>উত্তর : ‘কুলি-মজুর’ কবিতায় রেলপথে বাষ্প-শকট চলে।</p> <p>খ) ‘শুধিতে হইবে ঋণ’—কথাটি দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে?</p> <p>উত্তর : ‘শুধিতে হইবে ঋণ’—কথাটির দ্বারা শ্রমজীবী মানুষের শ্রমের উপযুক্ত মূল্য ও প্রাপ্য সম্মান দেওয়ার কথা বোঝানো হয়েছে।</p> <p><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/2017/Print-2017/October/07-10-2017/Kalerkantho_17-10-07-29.jpg" style="float:right; height:101px; margin:8px; width:400px" />কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর ‘কুলি-মজুর’ কবিতায় শ্রমজীবী মানুষের অধিকারের পক্ষে কলম ধরেছেন। যুগ যুগ ধরে কুলি-মজুরের মতো লাখোকোটি শ্রমজীবী মানুষের হাতে গড়ে উঠেছে মানবসভ্যতা। কিন্তু যুগ যুগ ধরে সমাজে এই কুলি-মজুররাই সবচেয়ে বঞ্চিত ও উপেক্ষিত। এক শ্রেণির হৃদয়হীন স্বার্থান্ধ মানুষ এদের শ্রমের বিনিময়ে পাওয়া বিত্ত-সম্পদের সবটুকুই ভোগ করেছে অথচ এদের তারা মানুষ হিসেবে গণ্য করতেও নারাজ; কিন্তু দিনবদলের সময় এসে গেছে। এই শ্রমজীবী মানুষদের দীর্ঘদিন ধরে ঠকিয়ে ধনিক শ্রেণি তাদের ঋণের বোঝা বহু গুণে বাড়িয়েছে। এখন এই ঋণ তাদের শোধ করতে হবে। অর্থাৎ শ্রমজীবী মানুষের প্রাপ্য মজুরি, সম্মান পাই-পাই করে তাদের বুঝিয়ে দিতে হবে।</p> <p>গ) চেয়ারম্যান সাহেবের ছেলের আচরণে ‘কুলি-মজুর’ কবিতার কোন দিকটি প্রকাশ পেয়েছে—ব্যাখ্যা করো।</p> <p>উত্তর : চেয়ারম্যান সাহেবের ছেলের আচরণে ‘কুলি-মজুর’ কবিতার বাবু সাহেবের চরিত্রে শ্রমজীবী মানুষকে অবজ্ঞা করার দিকটি প্রকাশ পেয়েছে।</p> <p>‘কুলি-মজুর’ কবিতার কবি কাজী নজরুল ইসলাম মানবসভ্যতার যথার্থ রূপকার শ্রমজীবী মানুষের অধিকারের পক্ষে কলম ধরেছেন। যুগ যুগ ধরে কুলি-মজুরের মতো লাখোকোটি শ্রমজীবী মানুষের হাতে গড়ে উঠেছে মানবসভ্যতা। এদেরই অক্লান্ত শ্রমে ও ঘামে রাজপথে মোটর, সাগরে জাহাজ আর রেলপথে রেলগাড়ি। গড়ে উঠেছে দালানকোঠা, কলকারখানা। অথচ এদের শোষণ করে যারা ধনি হয়েছে, তারা তা ভুলে গিয়ে এই শ্রমজীবী মানুষকে মানুষ হিসেবে গণ্য করতেও নারাজ। তাই শুধু ‘কুলি’ হওয়ার কারণে এক বাবু সাহেব তাকে অবজ্ঞা করে রেলগাড়ি থেকে ঠেলে নিচে ফেলে দেয়। এমন ঘটনা কবিকে ব্যথিত করে।</p> <p>উদ্দীপকের চেয়ারম্যান সাহেবের ছেলেও ‘কুলি-মজুর’ কবিতার বাবু সাহেবের মতো কারণে-অকারণে খেটে খাওয়া মানুষের সঙ্গে খারাপ আচরণ ও তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে, যা ‘কুলি-মজুর’ কবিতার বাবু সাহেব চরিত্রের নির্মম দিককে প্রকাশ করেছে।</p> <p>ঘ) ‘‘চেয়ারম্যান সাহেবের আচরণ ‘কুলি-মজুর’ কবিতার মূল ভাবেরই প্রতিফলন’’—বিশ্লেষণ করো।</p> <p>উত্তর : বিভিন্ন পেশার শ্রমজীবী মানুষের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ জাগানোই ‘কুলি-মজুর’ কবিতার মূলভাব, যা উদ্দীপকের চেয়ারম্যান সাহেবের আচরণে প্রকাশ পেয়েছে।</p> <p>‘কুলি-মজুর’ কবিতায় কবি কাজী নজরুল ইসলাম মানবসভ্যতার যথার্থ রূপকার শ্রমজীবী মানুষের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়ে তাদের অধিকারের পক্ষে কলম ধরেছেন। কারণ যুগ যুগ ধরে কুলি-মজুরের মতো লাখোকোটি শ্রমজীবী মানুষের হাতে গড়ে উঠেছে মানবসভ্যতা। এদেরই অক্লান্ত শ্রমে ও ঘামে মোটর, জাহাজ, রেলগাড়ি চলছে। গড়ে উঠেছে দালানকোঠা, কল-কারখানা। এদের শোষণ করেই ধনিক শ্রেণি হয়েছে বিত্ত-সম্পদের মালিক। কিন্তু যুগ যুগ ধরে সমাজে এই কুলি-মজুররাই সবচেয়ে বঞ্চিত ও উপেক্ষিত। এই শ্রমজীবী মানুষদের ন্যায্য অধিকার যারা বঞ্চিত করেছে, তাদের অনেক ঋণ জমা হয়েছে শ্রমজীবী মানুষের কাছে। সভ্যতার প্রকৃত রূপকারদের ন্যায্য পাওনা অবশ্যই তাদের মেটাতে হবে। তাই কবি তাদের জয়গান করেছেন।</p> <p>উদ্দীপকের চেয়ারম্যান আজমল সাহেব ভালো মানুষ বলে তাঁর ছেলের অমানবিক আচরণ সংশোধন করতে চেয়েছেন। খেটে খাওয়া মানুষদের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য না করে যেন তাদের প্রাপ্য মজুরি ও সম্মান দেওয়ার চেষ্টা করা হয়— তিনি তা কামনা করেছেন।</p> <p> </p> <p>‘কুলি-মজুর’ কবিতার উপর্যুক্ত বক্তব্য থেকে বলা যায়, চেয়ারম্যান সাহেবের ছেলের প্রতি তাঁর উপদেশ মূলত ‘কুলি-মজুর’ কবিতার মূল ভাবেরই প্রতিফলন।</p>