কিন্তু তার আগে কার্যক্ষেত্র প্রস্তুত রাখতে হবে। তা না হলে তারা জেগে উঠে উপযুক্ত কাজ বা দায়িত্ব না পেলে আবার ঘুমিয়ে পড়বে এবং তখন ভাবের বাঁশি বাজিয়ে জাগানোর চেষ্টা করলেও জাগানো যাবে না। দেশকে উন্নতি ও মুক্তির পথে এগিয়ে নিতে হলে কোমর বেঁধে কাজে নেমে পড়তে হবে এবং নামবার আগে ভালো করে পর্যবেক্ষণ করে কাজের ইতিবাচক ফল সম্পর্কে জানতে হবে। কাজের সম্ভাবনা-অসম্ভাবনার কথা আগে ভেবে কাজে নামলে ব্যক্তির উৎসাহ অনর্থক নষ্ট হয় না। উদ্দীপকেও এ সম্পর্কে বলা হয়েছে, কল্পলোকের জগৎ থেকে বাস্তবতা ভিন্ন এক জগৎ, যেখানে বড় হতে হলে পরিশ্রমের বিকল্প নেই। তাই লেখকও দেশের উন্নতি, মুক্তি ও মানুষের কল্যাণের জন্য ভাবের সঙ্গে বাস্তবধর্মী কাজে তত্পর হওয়ার দিকটি নির্দেশ করেছেন।
(ঘ) ‘কল্পনার জগতে হাবুডুবু না খেয়ে দেশ ও জাতির কল্যাণে আত্মনিয়োগ করাই মনুষ্যত্বের পরিচায়ক’—মন্তব্যটি ‘ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধের আলোকে মূল্যায়ন করো।
উত্তর : ‘কল্পনার জগতে হাবুডুবু না খেয়ে দেশ ও জাতির কল্যাণে আত্মনিয়োগ করাই মনুষ্যত্বের পরিচায়ক’ বলেই লেখক বাস্তবধর্মী কাজে তত্পর হওয়ার ওপর জোর দিয়েছেন।
‘ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধের লেখক দেখিয়েছেন, ভাব ও কাজের পার্থক্য আসমান-জমিনের মতো। কাজ হলো মানুষকে কব্জায় বা আয়ত্তে আনার জন্য তার সবচেয়ে কোমল জায়গায় ছোঁয়া দিয়ে তাকে মাতিয়ে তুলে ইতিবাচক কাজের জন্য তৈরি করা। ভাব পুষ্পবিহীন সৌরভের মতো অবাস্তব উচ্ছ্বাস বলে এটা দিয়ে মহৎ কিছু অর্জন করা যায় না। তারপর কর্মশক্তি ও সঠিক উদ্যোগের দরকার হয়। যথাযথ পরিকল্পনা ও কাজের স্পৃহার অভাবে যেকোনো মহৎ উদ্যোগ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই দেশের উন্নতি, মুক্তি ও মানুষের কল্যাণের জন্য ভাবের সঙ্গে বাস্তবধর্মী কর্মে সম্পৃক্ত হতে হবে।
উদ্দীপকেও এ সম্পর্কে বলা হয়েছে—শিক্ষার দ্বারা নিজের সুপ্ত প্রতিভাকে জাগ্রত করে সঠিক কর্মানুশীলনের মাধ্যমে মানুষকে বড় হতে হবে।
‘ঘ’ নম্বর মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায় যে—ভাব নয়, বাস্তবধর্মী কাজে আত্মনিয়োগের মাধ্যমে মনুষ্যত্বের বিকাশের পাশাপাশি দেশ ও জাতির কল্যাণ সাধিত হয়।
বহু নির্বাচনী প্রশ্ন
১। ‘অবাস্তব উচ্ছ্বাস’ কোনটি?
(ক) কাজ (খ) ভাব
(গ) পুষ্পবিহীন সৌরভ (ঘ) সৌরভবিহীন পুষ্প
২। ‘কাজ’ মানে কী?
(ক) সৌরভবিহীন পুষ্প (খ) পুষ্পবিহীন সৌরভ
(গ) যা ভাবকে রূপ দেয় (ঘ) অবাস্তব উচ্ছ্বাস
৩। ভাবকে মন্দ বলা যায় না কেন?
i) ভাব জিনিসটা খুব ভালো বলে
ii) মানুষকে কব্জায় আনা যায় বলে
iii) আমাদের দেশ ভাব-পাগলা বলে
নিচের কোনটি সঠিক?
(ক) i ও ii (খ) i ও iii
(গ) ii ও iii (ঘ) i, ii ও iii
৪। ভাবের সার্থকতা কিভাবে পাওয়া যায়?
(ক) লোককে মাতিয়ে তুলতে পারলে
(খ) কাজের দাসরূপ নিয়োগ করতে পারলে
(গ) কার্যসিদ্ধি করতে পারলে
(ঘ) ভালোমন্দ জ্ঞান হারিয়ে না ফেললে
৫। ভাবের বাঁশি কে বাজাবেন?
i) কবি ও লেখক
ii) নিঃস্বার্থ ত্যাগী ঋষি
iii) ভাব-পাগলা মানুষ
নিচের কোনটি সঠিক?
(ক) i (খ) ii
(গ) iii (ঘ) i, ii ও iii
৬। ভাবের বাঁশিবাদক জনগণকে নাচাবেন কেন?
i) মানুষের কল্যাণের জন্য
ii) নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য
iii) মহত্ত্ব প্রদর্শনের জন্য
নিচের কোনটি সঠিক?
(ক) i (খ) ii
(গ) iii (ঘ) i ও iii
৭। কোন উদ্দেশ্য নিয়ে ভাবের বন্যা বহাতে হবে?
i) ত্যাগের উদ্দেশ্য
ii) কল্যাণ কামনা
iii) মহত্ত্বর উদ্দেশ্য
নিচের কোনটি সঠিক?
(ক) i ও ii (খ) i ও iii
(গ) ii ও iii (ঘ) i, ii ও iii
৮। সাধারণের সমস্ত উৎসাহ ও প্রাণ কিভাবে কাদা ঢাকা পড়ে যাবে?
(ক) ঘুমিয়ে পড়লে
(খ) জেগে ঘুমালে
(গ) কুম্ভকর্ণের মতো নিদ্রায় থাকলে
(ঘ) পলি পড়ে
৯। কাজ করবার জন্য লোকদের কিভাবে জাগাতে হবে?
(ক) ঢোল-কাঁসি বাজিয়ে (খ) সোনার কাঠি ছুঁইয়ে
(গ) মাদল বাজিয়ে (ঘ) কোমল অনুভূতিতে কঠিন আঘাত করে
১০। অনেকের মতে, কোনটি পাপ?
(ক) লোকের কোমল অনুভূতিতে ঘা দেওয়া
(খ) গরমা গরম কার্যসিদ্ধি করানোর চেষ্টা করা
(গ) নিজের কার্যসিদ্ধির জন্য জনগণকে জাগিয়ে তোলা
(ঘ) ভাবাবেশে উন্মত্ত অধীর হওয়া
১১। লেখকের মতে কোনটি বরং ভালো?
(ক) জেগে ঘুমানো
(খ) কুম্ভকর্ণের নিদ্রা
(গ) ভাবের বাঁশি বাজিয়ে জনগণকে জাগানো
(ঘ) ভাবকে কাজের দাসরূপে পরিণত করা
১২। ‘অনেক সময় অনুপযুক্ত প্রযুক্ত ইহা হইতে সুফল না ফলিয়া কুফলই ফলে।’ কোনটি সম্পর্কে এ কথা বলা হয়েছে?
(ক) গরমা গরম কার্যসিদ্ধি করিয়ে নেওয়া
(খ) লোকের কোমল অনুভূতিতে ঘা দেওয়া
(গ) ভাবের বন্যা বইয়ে দেওয়া
(ঘ) জেগে ঘুমানোর ভান করা
১৩। হুজুগে মেতে ওঠা ছাত্রদল কোনটিকে স্থায়ীরূপে বরণ করে নিতে পারল না?
(ক) স্পিরিট বা আত্মার শক্তির পবিত্রতাকে
(খ) ভাবের সুরা পান করাকে
(গ) সৎ সংকল্প ও মহৎ ত্যাগকে
(ঘ) কাজের সম্ভাবনা-অসম্ভাবনার কথা আগে বিবেচনা করাকে
১৪। কোনটিকে সাময়িক উত্তেজনা বলা হয়েছে?
(ক) ছাত্রদলের স্কুল-কলেজ থেকে বের হয়ে আসা
(খ) স্পিরিটকে বিশ্রীভাবে সুখ ভ্যাঙচানো
(গ) ভাবের সুরাপানে জ্ঞান হারানোকে
(ঘ) ত্যাগের অভিনয় করাকে
১৫। কারা একটু নামের জন্য বা বদনামের ভয়ে আত্মার শক্তিকে নষ্ট করেছে?
(ক) সত্যিকার কর্মীরা (খ) মুখোশ পরা ত্যাগী মহাপুরুষরা
(গ) স্কুল-কলেজের ছাত্রদল (ঘ) সহজ জনসাধারণ
১৬। কারা আর দরকার পড়লে বাইরে আসতে পারবে না?
(ক) যারা ভাবের সুরা পান করে জ্ঞান হারিয়েছে
(খ) যারা হুজুগে মেতে স্কুল-কলেজ থেকে বের হয়ে এসেছে
(গ) যারা সত্যি কথা স্পষ্টভাবে বলতে গিয়ে পোয়াল চাপা পড়েছে
(ঘ) যারা হট্টগোল বাঁধিয়ে লোককে সম্পূর্ণ উল্টো বুঝিয়েছে
১৭। দেশের সত্যিকার ডাক এলে কারা আর সাড়া দিতে পারবে না?
i) যারা ত্যাক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে আবার মুখটি চুপ করে ঢুকেছে
ii) যারা হুজুগে মেতে স্কুল-কলেজ থেকে বের হয়ে এসেছে
iii) যে বেচারারা সত্যি কথা স্পষ্টভাবে বলতে গিয়ে পোয়াল চাপা পড়েছে
নিচের কোনটি সঠিক?
(ক) i ও ii (খ) i ও iii
(গ) ii ও iii (ঘ) i, ii ও iii
১৮। ‘তাহারাই অনুশোচনাটা কিছুতেই মন হইতে মুছিয়া ফেলিতে পারিবে না’—কিসের অনুশোচনা?
(ক) নামের (খ) বদনামের
(গ) হটকারিতার (ঘ) ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধির
১৯। কাদের দুর্বল ও কাপুরুষ বলে অভিহিত করা হয়েছে?
(ক) তথাকথিত কর্মীদের (খ) সত্য সাধকদের
(গ) যুবকদের (ঘ) জনসাধারণকে
২০। ‘দশচক্রে ভগবান ভূত’ কথাটির অর্থ কী?
i) দশজনের চক্রান্তে সাধুও অসাধু প্রতিপন্ন হতে পারে
ii) বহুলোকের ঘড়যন্ত্রে অসম্ভবও সম্ভব হয়
iii) দশজনের চক্রান্তে ভগবানও অতীত হয়ে যায়
নিচের কোনটি সঠিক?
(ক) i ও ii (খ) i ও iii
(গ) ii ও iii (ঘ) i, ii ও iii
উত্তর :
১. ক ২. গ ৩. ক ৪. খ ৫. খ ৬. ক ৭. গ ৮. ঘ ৯. খ ১০. ক ১১. খ ১২. খ ১৩. গ ১৪. ঘ ১৫. গ ১৬. খ ১৭. ক ১৮. গ ১৯. গ ২০. ক।