রাশিয়ার সেনাদের চালানো ধ্বংসলীলার তালিকায় ইউক্রেনের বুচা শহরের নাম শুরুর দিকেই থাকবে। সেখানে মৃত্যু আর নির্মমতার নানা মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দি করেছেন অতীতের বড় বড় যুদ্ধ কাভার করা প্রবীণ ফটো সাংবাদিক জেমস নাক্টওয়ে। দীর্ঘ পেশাগত জীবনে এভাবে মানবিক বিপর্যয়ের নানা ইতিহাস তাঁর হাতে ফ্রেমবন্দি হয়েছে।
নাক্টওয়ের এক ছবিতে দেখা যায়, ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের শহরতলি বুচায় এক নারী বাড়ির বাগানে তাঁর স্বামী ও ভাইয়ের মরদেহ খুঁজে পেয়েছেন।
মিহি তুষারে ছাওয়া দেহগুলো এক হাতে স্পর্শ করছিলেন ওই নারী। অন্য হাতটি নিজের মুখে চেপে রাখা। ইউক্রেন যুদ্ধের শুরুর দিকেই বুচায় অভিযান চালায় রুশ সেনারা। সেখানে ব্যাপক গণহত্যা চালানোর অভিযোগ করেছে ইউক্রেন।নাড়া দেওয়া ছবিটিতে আছে মানুষের আরো দুটি হাত। একটি হাত আলতোভাবে রাখা নিজের কুকুরটির মাথায়।
ছবিটি সম্পর্কে ৭৫ বছর বয়সী নাক্টওয়ে বলেন, ‘হাত ও চোখ। আমি সব সময় হাত ও চোখের দিকে নজর দিই।
কুকুরটিকেও বিশদে তুলে ধরেছি। ছবির কুকুরটির মুখাবয়বে মায়া খুঁজে পাবেন আপনি।’
থাইল্যান্ডের ব্যাংককে ‘মেমোরিয়া’ নামে নাক্টওয়ের ছবির প্রদর্শনী চলছে। এশিয়ায় একমাত্র এখানেই তাঁর ছবিগুলো দেখা যাচ্ছে।
আশির দশকের মধ্য আমেরিকা থেকে চলতি ইউক্রেন যুদ্ধ পর্যন্ত মোট ১২৬টি ছবি নিয়ে ‘মেমোরিয়া’ প্রদর্শনী।
এর বেশির ভাগ ছবিই সাদা-কালো। ওভারসিজ প্রেস ক্লাব অব আমেরিকার বিখ্যাত ‘রবার্ট কাপা গোল্ড মেডেল’ পাঁচবার জিতেছেন নাক্টওয়ে। ডিজিটাল প্রযুক্তির প্রসার ও ভিডিওচিত্রের ব্যাপক প্রচলনের এই সময়ও তাঁর ছবি বিশেষভাবে দৃষ্টি আকর্ষণ করে। রূঢ় তাত্ক্ষণিকতা, দুর্দান্ত কম্পোজিশন ও আলোকসম্পাতের জন্য বোদ্ধামহলে সুপরিচিত তাঁর ছবি। পেশাগত জীবনের দীর্ঘসময় ফিল্ম ব্যবহার করে ছবি তুলেছেন নাক্টওয়ে। সাদা-কালো ছবি নিয়ে তাঁর দর্শন : ‘আমি সব সময় রংকে এমনভাবে ব্যবহার করি যাতে তা ছবির মূল বিষয় না হয়ে ওঠে। রং খুব একটি শক্তিশালী ব্যাপার। এতই শক্তিশালী যে তা ছবির মূল বিষয়বস্তু হয়ে উঠতে পারে। তাই আমি একে নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখতে চাই।’
সূত্র : বিবিসি