মানুষের শরীরের ভারসাম্য রক্ষা ও ওজন সঠিকভাবে মাটিতে স্থানান্তর করার জন্য হাঁটুর ভূমিকা অনেক। এটি অত্যন্ত জটিল একটি জয়েন্ট, যা ছোট-বড় তিনটি হাড়ের সমন্বয়ে তৈরি। কোনো কারণে হাঁটুতে আঘাত পেলে, বার্ধক্যজনিত কারণে, স্থূলতা অথবা হাঁটুর অতিরিক্ত ব্যবহারজনিত কারণে এর অস্থিগুলোয় গঠনগত পরিবর্তন হয়ে যে রোগ হয়, তাকেই বলে হাঁটুর বাত বা হাঁটুর অস্টিওআর্থ্রাইটিস। সাধারণত ৩০ থেকে ৬৫ বছর বয়সসীমার লোকজন এ রোগে বেশি আক্রান্ত হন এবং বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এ রোগের ব্যাপকতা বাড়ে।
হেল্থ কর্নার
হাঁটুর বাত : লক্ষণ ও চিকিৎসা
ডা. মোহাম্মদ ইসরাত হাসান

লক্ষণ : ১. এ রোগের প্রাথমিক পর্যায়ে রোগী দীর্ঘক্ষণ হাঁটলে বা চেয়ার থেকে উঠতে গিয়ে বা সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামার সময় ব্যথা অনুভব করেন। ২. পায়খানায় বসার সময় বা নামাজ পড়ার সময় হাঁটুতে ব্যথা হয়। ৩. আক্রান্ত হাঁটু ফুলে যেতে পারে। ৪. ব্যথার কারণে রোগী খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটতে পারেন।
রোগ নির্ণয় : রোগের লক্ষণ বিশ্লেষণ করে হাঁটুর ব্যথা প্রদাহজনিত মনে না করলে সাধারণত কোনো রক্ত পরীক্ষা করার দরকার হয় না। তবে এক্স-রে করাতে হয়। এ ছাড়া ক্ষেত্রবিশেষে সাইনোভিয়াল ফ্লুইড অ্যানালাইসিস ও এমআরআই করা লাগতে পারে।
চিকিৎসা ও করণীয়
ক. চিকিৎসা : হাঁটুর বাতের চিকিৎসা অবশ্যই একজন ফিজিয়াটিস্ট বা ফিজিক্যাল মেডিসিন ও রিহ্যাবিলিটেশন বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে হওয়া বাঞ্ছনীয়। চিকিৎসার মধ্যে রয়েছে-
প্রাথমিক চিকিৎসা- ১. প্রাইস (PRICE) রেজিমেন : প্রাথমিকভাবে ব্যথা কমানোর জন্য এই রেজিমেন মানা হয়।
শল্য চিকিৎসা- সাধারণত ওপরের বর্ণিত চিকিৎসা পদ্ধতিতে যদি একজন রোগী ভালো না হন শুধু সে ক্ষেত্রেই শল্য চিকিৎসা করা হয়, যার খুব একটা দরকার হয় না। এর মধ্যে রয়েছে- ১. আরথ্রোস্কপিক ডিব্রাইডমেন্ট, ২. অস্টিওটমি, ৩. প্যাটেলো-ফিম্রোল রিপ্লেসমেন্ট, ৪. টোটাল নি রিপ্লেসমেন্ট।
(খ) করণীয় : প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ছাড়াও ভালো থাকার জন্য রোগীকে কিছু নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হবে- ১. হাঁটু ভাঁজ করে কোনো কাজ না করা। ২. চেয়ারে বসে নামাজ পড়া। ৩. উঁচু পায়খানা বা হাই কমোড ব্যবহার করা। ৪. রান্নার সময় উঁচু মোড়া বা চেয়ার ব্যবহার করা। ৫. নরম স্যান্ডেল ব্যবহার করা। ৬. অতিরিক্ত উঁচু স্যান্ডেল বা জুতা পরা। ৭. একটানা দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা বা না হাঁটা। ৮. উঁচুনিচু জায়গায় হাঁটাহাঁটি না করা। ৯. সিঁড়িতে, রিকশায় বা গাড়িতে ওঠার সময় যে হাঁটুতে ব্যথা কম তা আগে দেওয়া আর নামার সময় বেশি ব্যথার হাঁটু আগে দেওয়া। ১০. প্রয়োজনে যে হাঁটুতে ব্যথা তার বিপরীত হাতে হাঁটার সময় লাঠি ব্যবহার করা। ১১. ব্যথাযুক্ত হাঁটুতে কোনো কিছু মালিশ না করা। ১২. শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমানোর পদক্ষেপ নেওয়া। ১৩. চিকিৎসকের দেখানো ব্যায়াম নিয়মিত দিনে দুইবার করা। ১৪. চলাফেরার সময় নি ক্যাপ (Knee Cap) ব্যবহার করা।
পরামর্শ : এভাবে একজন ফিজিয়াট্রিস্টের তত্ত্বাবধানে থেকে চিকিৎসা নিলে রোগ নিয়ন্ত্রণে থাকবে এবং রোগী ভালো থাকবেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগে যে কেউ এ রোগের বিশেষায়িত চিকিৎসা নিতে পারেন।
সম্পর্কিত খবর

মানববন্ধন


ডেঙ্গু রোগী


চট্টগ্রামে নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল পরিদর্শন করলেন নৌবাহিনী প্রধান
নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের পাশাপাশি দেশের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে নৌ সদস্যদের সক্রিয় অংশগ্রহণ অব্যাহত রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল বুধবার বাংলাদেশ নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালের কার্যক্রম সরেজমিনে গিয়ে পরিদর্শন করেছেন। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে।
আইএসপিআর জানায়, পরিদর্শনকালে নৌবাহিনী প্রধান এনসিটি-২ জেটি এলাকায় কনটেইনার হ্যান্ডলিং কার্যক্রম, এপ্রেইস পয়েন্টে কনটেইনার এক্সামিন কার্যক্রম এবং সিটিএমএস ভবনে টার্মিনাল অপারেশন সিস্টেম কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।
আইএসপিআর আরো জানায়, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ গত সোমবার চট্টগ্রাম ড্রাই ডক লিমিটেডের কাছে চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি পরিচালনার দায়িত্ব দেয়। চট্টগ্রাম ড্রাই ডক লিমিটেড এনসিটির দায়িত্ব নেওয়ার ফলে বন্দরের কর্মকাণ্ডে শৃঙ্খলা, সময়ানুবর্তিতা ও কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে বন্দরের কার্যক্রমকে আরো বেগবান করবে বলে আশা ব্যক্ত করেছেন নৌবাহিনী প্রধান ।

ঢাবি ক্লাবে ‘ফ্যাসিবাদী’ আওয়ামী শিক্ষকদের পুনর্বাসনের প্রতিবাদ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্লাবে আওয়ামী লীগপন্থী নীল দলের শিক্ষকদের পুনর্বাসনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী। গতকাল বুধবার দুপুরে ঢাবি ক্লাব প্রাঙ্গণে এই বিক্ষোভ হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘স্বৈরাচারের গদিতে আগুন জ্বালাও একসাথে’, ‘সাদা-নীল ভাগাভাগি, এই ক্যাম্পাসে হবে না’, ফ্যাসিবাদের দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘আওয়ামী লীগের চামচারা, হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘গণহত্যার মদদদাতারা, হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘ঢাবি ক্লাবে হবে না, দালালদের ঠিকানা’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে ‘ফ্যাসিবাদী আওয়ামী দোসর’ নীল দলের শিক্ষকদের পুনর্বাসন করা হয়েছে।
মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের এক বছর না পেরোতেই ঢাবি ক্লাবে খুনি আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করা হচ্ছে। ঢাবি ক্লাবের ১৫ সদস্যের কমিটির সাতজনই নীল দলের সদস্য, যা সাদা দলের শিক্ষকদের জন্য লজ্জাজনক।
অন্য শিক্ষার্থী আশিক খান বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে ছাত্রলীগের দ্বারা সাধারণ শিক্ষার্থী নির্যাতনের বৈধতা দিয়েছিলেন নীল দলের শিক্ষকরা। গত বছরের ৫ আগস্টের পরও নীল দলের শিক্ষকরা ঢাবি ক্লাবে বিপ্লব বেহাত করতে ষড়যন্ত্র করেছিলেন।