মানসম্মত একটি কম্পিউটার প্রশিক্ষণ সেন্টার দিতে চাইলে বিনিয়োগ করতে হবে ৮-১০ লাখ টাকা। কম বিনিয়োগেও শুরু করতে পারেন। ছোট পরিসরে শুরু করলেও ন্যূনতম তিন থেকে পাঁচ লাখ টাকা বিনিয়োগ করতে হবে।
যা যা লাগবে
শুরুতেই লাগবে ট্রেড লাইসেন্স।
মানসম্মত একটি কম্পিউটার প্রশিক্ষণ সেন্টার দিতে চাইলে বিনিয়োগ করতে হবে ৮-১০ লাখ টাকা। কম বিনিয়োগেও শুরু করতে পারেন। ছোট পরিসরে শুরু করলেও ন্যূনতম তিন থেকে পাঁচ লাখ টাকা বিনিয়োগ করতে হবে।
যা যা লাগবে
শুরুতেই লাগবে ট্রেড লাইসেন্স।
স্থান নির্বাচন
ঢাকার পান্থপথের ই-ফিউচারবিডির হেড অব আইটি ও তরুণ উদ্যোক্তা সুমন আহমেদ জানান, এ ব্যবসায় স্থান নির্বাচন খুব গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আশপাশের কোনো স্থান বেছে নেওয়া ভালো। এমন কোনো স্থানও বেছে নিতে পারেন, যেখানে তরুণ বা ছাত্রছাত্রীদের আনাগোনা বেশি।
চালু করতে পারেন যেসব কোর্স
চাহিদা আছে এমন সব কোর্স বেছে নিতে হবে।
কোর্সের ব্যাপ্তি ও ফি
বাজার যাচাই করে কোর্সের ব্যাপ্তিকাল ও ফি নির্ধারণ করতে হবে। কোর্সের ধরনের ওপর ব্যাপ্তি নির্ভর করে। তবে তিন ও ছয় মাস মেয়াদি কোর্সের চাহিদা বেশি। কোর্স ফির ক্ষেত্রে মানের বিষয়টি যেমন বিবেচনায় আনতে হবে, একই সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে এলাকার মানুষের সামর্থ্যের বিষয়টিও।
যাঁরা পরিচালনা করবেন
কোর্স পরিচালনার জন্য অভিজ্ঞ ও দক্ষ প্রশিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান ছাত্র এবং বিভিন্ন সফটওয়্যার ফার্মে কর্মরতদের নিয়োগ দিতে পারেন। তবে এর আগে নিশ্চিত হতে হবে, কোর্সের বিষয়ে তাঁদের যথেষ্ট জ্ঞান এবং অন্যদের বোঝানোর ক্ষমতা আছে কি না। দু-তিনটি ক্লাস পর পর শিক্ষার্থীরা কতটুকু শিখতে পারছে, তা জানার জন্য তাদের কাছ থেকে ফিডব্যাক নিতে হবে।
দেওয়া যেতে পারে সনদ
কোর্স শেষে শিক্ষার্থীদের দেওয়া যেতে পারে সনদ। এ জন্য বাংলাদেশ কারিগরি বোর্ড থেকে অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিবন্ধিত হতে হবে। এ ছাড়া বিশ্বের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে তাদের নির্ধারিত কোর্স পরিচালনার করেও শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দিতে পারেন বিদেশি সনদ।
এ ব্যবসার চ্যালেঞ্জ
তেমন ঝুঁকি না থাকলেও এ ব্যবসায় আছে বেশ কিছু প্রতিবন্ধকতা। হয়তো আপনার আশপাশেই আছে অনেক কম্পিউটার প্রশিক্ষণ সেন্টার, যারা নামমাত্র মূল্যে বিভিন্ন কোর্স অফার করছে। মান ঠিক রেখে এত কম খরচে প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করা হয়তো অনেকের জন্যই কঠিন। এমন পরিস্থিতিতে নিজেদের অবস্থান তৈরি করতে সময় লাগতে পারে। ভালো মানের কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টারগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকাও একটি চ্যালেঞ্জ। তবে বাজার উপযোগী কোর্স চালু, দক্ষ প্রশিক্ষক নিয়োগ দিলে প্রশিক্ষণার্থী পেতে বেগ পেতে হবে না। লিফলেট, ব্যানার, সাইনবোর্ড হতে পারে প্রচারের মাধ্যম।
আয়-রোজগার
সুমন আহমেদ জানান, এ ব্যবসার আয় নির্ভর করে ব্যবসার পরিধি, সেবা ও প্রশিক্ষণার্থীর ওপর। তবে মাসে পঞ্চাশ হাজার থেকে শুরু করে পাঁচ লাখ টাকার ওপরেও আয় করা সম্ভব। তিনি বলেন, 'প্রথমে প্রশিক্ষণার্থী পেতে একটু বেগ পেতে হবে। একটু ধৈর্য ধরে ব্যবসা চালিয়ে গেলে দেড় থেকে দুই বছরের মধ্যেই ভালো একটি অবস্থানে যাওয়া সম্ভব। এর জন্য পরিশ্রমী হতে হবে।'
সম্পর্কিত খবর
৫০০ টাকায় হরিতকীর কুর্তি
মাত্র ৫০০ টাকায় অফার মূল্যে কুর্তি পাওয়া যাচ্ছে অনলাইন ফ্যাশন ব্র্যান্ড হরিতকীতে। নকশিকাঁথা, ময়ূর, পটচিত্র, শাপলা, পদ্ম, গাঁদা, জবা, সূর্যমুখী, তরমুজ, মাল্টাসহ নানা মোটিফ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে কুর্তিগুলোর নকশায়। সাদা, নীল, হলুদ, লাল, খয়েরি, সবুজ, কালো, গোলাপি, হলুদসহ বিভিন্ন রঙের কুর্তি বেছে নিতে পারবেন ক্রেতারা। আরামদায়ক ম্যাটেরিয়ালে তৈরি কুর্তিগুলো পাওয়া যাবে হরিতকীর অনলাইন ফেসবুক পেজে।
রিমার্ক পেল গ্রিন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড
শিল্প খাতের অন্যতম সম্মাননা ‘গ্রিন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’ পেয়েছে রিমার্ক এইচবি লিমিটেড। কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি এবং শ্রমিকদের জন্য নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য এই পুরস্কার পেয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। কসমেটিকস, স্কিনকেয়ার ও হোমকেয়ার পণ্য উত্পাদনকারী প্রতিষ্ঠান রিমার্ক।
ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকায় স্পেশাল ফ্যামিলি ব্রাঞ্চ
ছুটির দিনে পরিবারের সব সদস্যের জন্য বিশেষ ফ্যামিলি ব্রাঞ্চ আয়োজন করেছে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা।
সকাল-সন্ধ্যা-রাত—মশার প্রকোপ যেন সর্বক্ষণের সঙ্গী। মশার গুনগুন আওয়াজে যেমন ঘুমের গভীরতা ভেঙে যায়, তেমনি মৃত্যুঝুঁকিতে ঠেলে দেয় প্রাণঘাতী মশকের কামড়। মশা ক্ষুদ্র জীব হলেও রোগসংক্রমণকারী হিসেবে এর জুড়ি নেই। ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, চিকুনগুনিয়া, জিকা ভাইরাস, এনকেফালাইটিসের মতো মারণব্যাধি হতে পারে মশার কামড়ে।
মশারির বিচিত্র রূপ
মশারির জালে, বুননে, রঙে, আকৃতি আর শৈলীতে দেখা যায় নজরকাড়া বৈচিত্র্য। সাধারণ মশারি, ফোল্ডিং মশারি, ম্যাজিক মশারি, প্রিন্সেস মশারি, মোটা ও চিকন সুতার মশারি মেলে বাজারে।
সাধারণত বড় খাটে কিং সাইজ মশারি মানানসই। গোলাপি, কমলা, হলুদ, সবুজ নানা রঙের মশারি পাবেন।
মশারির ম্যাটেরিয়াল
সুতি, পলিয়েস্টার, নাইলন, সিনথেটিক বা মাইক্রোফাইবারের মতো বিভিন্ন ম্যাটেরিয়ালে তৈরি মশারি পাওয়া যায়। তবে সুতি সুতার মশারির প্রচলন বেশি। কারণ এগুলো গরমে আরামদায়ক। এ ছাড়া পলিথিন, পলিপ্রোপিলিন দিয়েও তৈরি হয় মশারি।
মশারিতে নতুনত্ব
দুই দরজা, তিন দরজা, ঝুল, লেইস যোগ করে নতুনত্ব আনা হয়েছে মশারিতে। বাজারে নানা রকম মশারি পাওয়া যায়—ফোল্ডিং মশারি, ম্যাজিক বা বোনাফাইড প্যারাগন মশারি, কীটনাশকযুক্ত মশারি, প্রবেশপথযুক্ত জিপার মশারি ও চেরিবি এয়ারফ্লো মশারি। একেক মশারির একেক সুবিধা। তবে কীটনাশকযুক্ত মশারি সাধারণত বনাঞ্চল ও পাহাড়ি এলাকায় বেশি ব্যবহূত হয়।
কোন মশারি কখন
মশারি মশা নিবারক হিসেবে কাজ করে ঠিকই, তবে পলিয়েস্টার বা মোটা সুতার বুননে তৈরি মশারি বায়ুপ্রবাহে খানিকটা বাধা প্রদান করে। বায়ু নিরোধক মশারি শীতের ঠাণ্ডা হাওয়া আটকে নিদ্রায় আরামদায়ক উষ্ণতা দেয়। নিউ মার্কেটের আলম বেডিং স্টোরের কর্মী লুত্ফর রহমান বলেন, ‘গরমকালের জন্য রয়েছে জাদুকরী ম্যাজিক মশারি। এটি এক ঢিলে দুই পাখি মারে। মশা প্রতিরোধ তো করেই, সেই সঙ্গে বায়ুপ্রবাহও রাখে স্বাভাবিক। হালকা রঙের এই মশারি গরমে বেশি উপযোগী।’
ছোট সোনামণির মশারি
ছোটদের মশারি বিশেষ শৈলীতে গড়া। কয়েক ধরনের ফোল্ডিং মশারি রয়েছে তাদের জন্য। শিশুর বয়সভেদে ভিন্ন ভিন্ন হয় এগুলোর আকার। এ ছাড়া নবজাতক শিশুদের জন্য রয়েছে বিছানাসহ মশারি।
যেখানে পাবেন মশারি
সারা দেশেই বেডিং স্টোরগুলোতে মশারি পাওয়া যায়। রাজধানীর নিউমার্কেট, গাউছিয়া, চাঁদনী চক, রাজধানী সুপার মার্কেট, মিরপুর-১ শাহ আলী মার্কেট, মালিবাগের আনারকলি মার্কেট, মহাখালী, তেজগাঁও, মোহাম্মদপুর, উত্তরা ও যাত্রাবাড়ীর মার্কেটগুলোতেও মশারি কিনতে পাবেন। পুরান ঢাকার চকবাজার, বংশাল ও ইসলামপুরে মশারির পাইকারি মার্কেট। এ ছাড়া দারাজ, ইভ্যালি, রকমারি অথবা আজকের ডিলসহ বিভিন্ন অনলাইন শপে মশারি পাবেন।
দরদাম
মশারির নকশা, ধরন, মান, ফ্যাব্রিক, আকার ও ব্র্যান্ড ভেদে দামে পার্থক্য রয়েছে। সাধারণ মশারির দাম ৩০০ টাকা থেকে শুরু। উন্নতমানের মশারি এক হাজার ২০০ থেকে দুই হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে কিনতে পাওয়া যায়। ম্যাজিক মশারির দাম ৬০০ থেকে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। আবার আকৃতিভেদেও দামে ভিন্নতা রয়েছে। সিঙ্গল বেডের মশারির দাম ২৫০ থেকে ৪০০ টাকার মধ্যে। অন্যদিকে ডবল বেডের মশারির দাম ৫০০ টাকা থেকে শুরু। এ ছাড়া শিশুদের জন্য ফোল্ডিংসহ বিভিন্ন সুবিধাযুক্ত মশারি কিনতে পাবেন ২৫০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকার মধ্যে। মশারিযুক্ত বিছানা কেনা যাবে এক হাজার টাকার মধ্যেই।
সামনে লতাপাতা ঝুলে আছে। মনে হচ্ছে, হাত দিয়ে সরালেই সামনে বিশাল এক গুলবাগিচা খুঁজে পাব। কষ্টিপাথরে খোদাই করা সারি সারি এই কুঞ্জবনকে কিছুতেই মসজিদের মিহরাব বলে মনে হচ্ছে না। খানিকটা ভাবনার রং মেশালে এখানে বিশাল এক খোদাই করা বাগ ও বাহারের অংশ বলে মনে হয়।
কুসুম্বা নামটি শুনলে মনে হয় কুসুমে কুসুমে আচ্ছাদিত। এখানে আসলেই কুসুম আছে মসজিদের বাইরে আর ভেতরের দেয়ালের কারুকাজে, সজ্জায়। দূর থেকে দেখলে একটি ছোট আকারের তিন গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ বলে মনে হবে। সুলতানি আমলে নির্মিত মসজিদটির তিনটি গম্বুজের পেছনের দিকে রয়েছে আরো তিনটি গম্বুজ, যা সামনে থেকে দেখা যাচ্ছে না।
বাংলার প্রাচীন মসজিদের স্থাপত্যকলা আমাকে বরাবরই মুগ্ধ করে। প্রতিটি মসজিদ আকারে আয়তাকার কুঁড়েঘরের মতো আর তার মাথায় শোভা পায় গম্বুজ। বাংলার প্রাচীন মসজিদের পাশে সাধারণত কোনো মিনার দেখা যায় না।
কুসুম্বা মসজিদ পুরোটা পাথরে তৈরি। প্রবেশ করার জন্য সামনে তিনটি দরজা রয়েছে। দরজা বেশ উঁচু, মিহরাব আকারের। অবশ্য একে দরজা না বলে প্রবেশপথ বা খিলান বলা যায়। আক্ষরিক অর্থে দরজা বলতে যা বোঝায়, তা এখানে অনুপস্থিত। খোদার ঘর তো এমনই হওয়া উচিত, যা খোলা থাকবে সব সময়। আশ্রয়ের প্রথম ও শেষ স্থান হবে এই মিহরাবসম খোলা দরজা।
প্রবেশপথের ওপরের দেয়ালে ফুল, লতাপাতা আঁকা। আর প্রতিটি প্রবেশপথের মাঝখানের দেয়ালের পাথরে জানালার নকশা খোদাই করা। সেই জানালায় শোভা পাচ্ছে গুলদস্তা। তার ওপর লতাপাতার নকশা। দোতলা সমান উঁচু মসজিদটি আসলে একতলা।
বাইরে ঘুরে ঘুরে দেখছিলাম। দক্ষিণ দিকের দেয়ালে খোদাই করা কারুকাজ নজর কাড়ল। এদিকে আসরের আজানের পর রোদ হেলে পড়ল। তখন রোদের আঁচে দেয়ালকে মনে হলো সুরমার খনি, যেন ইচ্ছা করলে এই দেয়াল থেকে সুরমা নিয়ে চোখে মাখা যাবে। এ পাশের দেয়ালে কোনো প্রবেশপথ নেই। শুধু সামনের দিকেই আছে প্রবেশপথ। দক্ষিণের দেয়ালে রোদ পড়লে পাথরে খোদাই করা কারুকাজ আরো স্পষ্ট হয়ে ওঠে। দেয়ালের মাঝখানে মিহরাব আকারের পাশাপাশি দুটি বন্ধ দরজা। আর এরই মাঝে পাথরে খোদাই করা হয়েছে ঝারোখা। মধ্যযুগে দেয়ালে ঝারোখা রাখা হতো আলো আর হাওয়া চলাচলের জন্য। আর এই দক্ষিণ দেয়ালের বাকি অংশের ওপর-নিচে খোদাই করা আছে ছয়টি গুলে গুলজার জানালা। আসলে এখানে কোনো জানালা নেই, দেয়ালকে রাজকীয় করে তুলতে শিল্পী জানালার অবয়ব খোদাই করেছেন।
বিভিন্ন দেশের মসজিদে গিয়েছি। বিভিন্ন মসজিদের নকশা আমাকে মুগ্ধ করেছে। কিন্তু বাংলাদেশেও যে এমন অমূল্য রত্ন আছে জানতাম না। জানালায় খোদাই করা ফুলের গুচ্ছ যেন ওপর থেকে নিচে মালার মতো করে ঝুলে আছে। আর তার নিচে শোভা পাচ্ছে লতাপাতা। বাংলাদেশের প্রত্যন্ত এক গ্রামে এমন রাজসিক মসজিদ, ভাবতেই অবাক হলাম।
মসজিদের ভেতরে আসরের নামাজ চলছিল বলে সামনের দিঘির পারে গিয়ে বসলাম। বিশাল এক দিঘি, পানি খুব স্বচ্ছ। পানিতে সাঁতরে বেড়াচ্ছে হংস মিথুন। মুসল্লিদের নামাজ শেষ হওয়ার পরও বাইরে ঘুরে ঘুরে দেখছিলাম। হঠাত্ আমার গাড়ির চালক বললেন, ‘আপা, ভেতরে গিয়ে দেখে আসেন।’
দ্বিধায় ছিলাম। মসজিদে নারীদের প্রবেশের অনুমতি আছে কি নেই। চালক বলতেই আর সময় নষ্ট করিনি। সোজা ভেতরে চলে গেলাম। খুব বড় মসজিদ নয়। ভেতরের দিকে মুসলিম স্থাপত্যকলা অনুসরণ করে বেশ কয়েকটি স্তম্ভ দাঁড়িয়ে আছে। আর কিবলার দিকের পুরো অংশে কষ্টিপাথরে খোদাই করা অপরূপ লতাপাতা। দেখে বাকরুদ্ধ হয়ে গেলাম। মসজিদের ভেতরের কারুকাজ এত সুন্দর হতে পারে! কষ্টিপাথর সাধারণত আমরা মন্দিরে শোভা পেতে দেখি। কিন্তু মসজিদে কষ্টিপাথরের কারুকাজ দেখে আমার বিস্ময় আর কাটছিল না। আর এ কোনো সাধারণ কারুকাজ নয়, অতি সূক্ষ্ম কাজ। ইমাম সাহেবের জন্য মিহরাব আর এর দুই পাশের দুটি মিহরাব সজ্জিত করা হয়েছে। মসজিদের বাকি দেয়ালে সাধারণ পাথরের ওপর খোদাই করা। ভেতরের মেঝে লাল কার্পেটে আচ্ছাদিত, যেন লাল জমিনে সুদৃশ্য দুষ্প্রাপ্য কালো গোলাপ ফুটেছে বাগিচায়। কষ্টিপাথরে খোদাই ভালোমতো দেখতে হলে দিন পার হয়ে যাবে। কোথাও গুলদস্তা, কোথাও ঝুলে থাকা ফুলের গুচ্ছ, কোথাও পেঁচিয়ে ওঠা গভীর কালো রঙের ফুলের হার। বাধা দেওয়ার কেউ নেই, তবু দ্বিধা নিয়ে ইমাম সাহেবের জায়নামাজের এক কোনায় গিয়ে এই রূপ দেখে বিমোহিত হই।
মসজিদের বাইরে একটি বোর্ডে লেখা, ‘মিহরাব আচ্ছাদিত আছে কালো পাথরে।’ আমার ধারণা, যাঁরা এটি লিখেছেন, তাঁরা জানেন না, কষ্টিপাথর ছাড়া অন্য পাথরের ওপর এত সূক্ষ্ম খোদাই করা যায় না।
মিহরাবের পাশে ছোট নিচু ঘর আর আছে ওপরে ওঠার সিঁড়ি। আমি তরতর করে সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠে গেলাম। এই জায়গাটাকে বলা হয় বাদশাহ কি তখত বা বাদশাহর আসন। উঁচুতে দাঁড়িয়ে খুতবা দেওয়ার স্থান বলে ধারণা করা হয়। অনেকে বলে থাকেন, এখানে কাজী বসে বিচারকাজ পরিচালনা করতেন। শুধু বিচারকাজ পরিচালনার জন্য ব্যবহার করা হলে এই জায়গায় মিহরাব থাকার কথা নয়। এখানে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়া হতো বলে আমার ধারণা। কারণ অকারণে মিহরাব নির্মাণের প্রচলন কোথাও নেই। একে আবার অনেকে জেনানাদের [নারীদের] নামাজের জায়গাও বলে থাকেন। আগেকার দিনে জেনানাদের ঘর থেকে বের হওয়ার নিয়ম ছিল না। বাইরে গিয়ে নামাজ পড়ার প্রশ্নই আসে না। হালে অল্প কিছু আধুনিক মসজিদে গিয়ে নারীরা নামাজ পড়তে পারছেন। তাই ধরে নিচ্ছি, এটি নামাজ পড়া ও খুতবা দেওয়ার স্থান।
আমার মন পড়ে আছে মিহরাবের কারুকাজে। আবার নিচে এসে দেখতে থাকলাম এই অসামান্য সৃষ্টি। একটি মিহরাবের সঙ্গে আরেকটি মিহরাবের কারুকাজের মিল নেই। এমনকি একই মিহরাবে এক ফুট দূরের নকশার সঙ্গেও মিল নেই। আজকাল এ ধরনের নকশা করা বন্ধ হয়েছে কেন কে জানে! কেন যে এ ধরনের কারুশিল্প কেউ নিজের করে নিচ্ছে না। এখনো কিছু মন্দিরের জন্য কষ্টিপাথরের ওপর খোদাই করা মূর্তি তৈরি করা হয়। তবে কষ্টিপাথরের ব্যবহার অন্য কোনো শিল্পকলায় সেভাবে দেখা যায় না। আমি তবু মুগ্ধ নয়নে দেখি, দেয়ালে লতাপাতা ছেয়ে আছে, কোথাও ফুলদানিতে ফুল হয়ে, কোথাও ঘণ্টার মতো ঝুলে থেকে, কোথাও বা পাশাপাশি ফুলবাগিচা হয়ে সূক্ষ্ম কারুকাজে সাজিয়ে রেখেছে মসজিদটিকে।
কিভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী যেকোনো বাসে চড়ে রাজশাহী-নওগাঁ হাইওয়ের কাছে কুসুম্বা মসজিদ দেখতে যেতে পারেন। এসি ও নন-এসি বাসের ভাড়া ৭০০ থেকে এক হাজার ৪০০ টাকা। চাইলে নওগাঁ জেলা পরিষদের একটি ডাকবাংলোতে থাকতে পারবেন। এ ছাড়া বেশ কিছু সাধারণ মানের আবাসিক হোটেল রয়েছে। নওগাঁর দেলুয়াবাড়ী বাজারে বেশ কিছু মিষ্টান্ন ভাণ্ডার ও রেস্তোরাঁয় সুলভ মূল্যে খাবার খেতে পারবেন।
রূপচর্চায় হলুদের ব্যবহার নতুন কিছু নয়। বিয়ের আগে বর-কনের গায়ে হলুদ মাখার রেওয়াজ বহুদিনের। ত্বকের যেকোনো সমস্যা দূর করতে হলুদের জুড়ি মেলা ভার। অ্যান্টিসেপটিক হিসেবেও কাজ করে হলুদ।
হলুদে থাকে বিভিন্ন উপাদান, যা ত্বকের জন্য বেশ উপকারী। লাবণ্য ফিরে পেতে এবং ব্রণ, র্যাশ, অ্যালার্জিসহ বিভিন্ন ক্ষত ও পোড়া দাগ দূর করতে সাহায্য করে হলুদ।
গায়েহলুদের অনুষ্ঠান ছাড়াও অনেকেই কাঁচা হলুদ বেটে গায়ে মাখেন। তবে হলুদের সঙ্গে অন্য কিছু উপকরণ মিশিয়ে ব্যবহার করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। দুধ, বেসন, মধু অথবা লেবু মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।
হলুদের এত এত গুণ জেনে নিশ্চয়ই অবাক হচ্ছেন। ভাবছেন, এখন থেকে রোজ ত্বকের যত্নে হলুদ ব্যবহার করবেন।
ত্বকে যদি অ্যালার্জির সমস্যা থাকে, তবে হলুদ ব্যবহার করা যাবে না। অ্যালার্জি আরো বাড়তে পারে। শুরুতেই ত্বকে হলুদের প্যাক পুরোপুরি ব্যবহার করা উচিত নয়। সামান্য পরিমাণ হাতের ত্বকে লাগিয়ে দেখুন। কোনো সমস্যা হয় কি না পরখ করুন। পরে ধীরে ধীরে হলুদ ব্যবহারের পরিমাণ বাড়াতে পারেন।
হলুদের প্যাক বেশিক্ষণ ত্বকে লাগিয়ে রাখা উচিত নয়। এতে ত্বকে গাঢ় হলুদ দাগ ফুটে উঠতে পারে। আবার র্যাশও দেখা দিতে পারে। ত্বকে সমানভাবে হলুদ ব্যবহার করুন। একই জায়গায় বেশি, অন্য জায়গায় কম, এটি যেন না হয়।
হলুদ লাগানোর পর অবশ্যই ভালো করে ধুয়ে ফেলুন। কাঁচা হলুদ বাটা, বেসন, চালের গুঁড়া ও টক দই একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। মুখে ও গলায় লাগান এই প্যাক। শুকিয়ে গেলে হালকা হাতে ঘষে তুলে ফেলুন। সপ্তাহে তিন দিন এই প্যাক লাগালে ত্বক উজ্জ্বল ও মসৃণ হবে। কাঁচা হলুদ ও মসুর ডাল একত্রে বেটে নিয়ে সঙ্গে মুলতানি মাটি ও গোলাপজল সহযোগে পেস্ট তৈরি করে ত্বকে লাগাতে পারেন। নিয়মিত ব্যবহারে ত্বক হয়ে উঠবে উজ্জ্বল ও মসৃণ।