ঢাকা, বুধবার ২৩ জুলাই ২০২৫
৮ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৭ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, বুধবার ২৩ জুলাই ২০২৫
৮ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৭ মহররম ১৪৪৭

চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে সেরা ২০ স্কুল

নূপুর দেব
নূপুর দেব
শেয়ার
চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে সেরা ২০ স্কুল
এবার এসএসসিতে দ্বিতীয় সেরা ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীদের 'সেলফি' তোলা। ছবি : রবি শংকর

এবারের এসএসসি পরীক্ষায় সামগ্রিক ফলাফল বিচারে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে টানা চতুর্থবার সবার সেরা হয়েছে নগরীর ঐতিহ্যবাহী কলেজিয়েট স্কুল। এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ৪০৪ পরীক্ষার্থী নিবন্ধন করে পরীক্ষায় অংশ নেয় ৪০৩ জন। তাদের মধ্যে ৩৭৭ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে। গত বছরও এখান থেকে ৩৮৭ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সবাই পাস করে।

জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৩৬৮ জন।

পাঁচটি মানদণ্ডের ভিত্তিতে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সেরা ২০ স্কুল নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ মাহবুব হাসান। প্রতিষ্ঠানে নিবন্ধিত শিক্ষার্থীর সংখ্যার মধ্যে নিয়মিত পরীক্ষার্থীর শতকরা হার, মোট পরীক্ষার্থীর শতকরা পাসের হার, জিপিএ-৫ প্রাপ্ত সংখ্যা, জিপিএ'র গড় এবং প্রতিষ্ঠানের মোট পরীক্ষার্থীর মোট সংখ্যার পয়েন্ট মিলিয়ে তা নির্ধারণ করা হয়েছে।

সে হিসাবে কলেজিয়েট স্কুলের প্রাপ্ত পয়েন্ট ৯৫ দশমিক ৯৭।

গতবার এ সংখ্যা ছিল ৯৬ দশমিক ৩৬।

৯১ দশমিক ১৬ পয়েন্ট নিয়ে চট্টগ্রাম বোর্ডে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। এ প্রতিষ্ঠান থেকে ৩৩৫ জন নিবন্ধন করে পরীক্ষায় অংশ নেয় ৩৩৪ জন। ২৮৫ জন জিপিএ-৫ পেয়ে পাস করেছে ৩৩৩ জন।

২০০১ থেকে টানা ২০১০ সাল পর্যন্ত প্রতিবারই এসএসসিতে চট্টগ্রাম বোর্ডে শীর্ষ স্থানে ছিল সরকারি এ বিদ্যালয়। মাঝখানে এক বছরের যাত্রাভঙ্গ। ২০১১ সালে পিছিয়ে পড়ে বিদ্যালয়টি। এরপর ২০১২ সালে পুনরায় জয়ের মুকুট ছিনিয়ে নেওয়ার মধ্য দিয়ে গৌরব পুনরুদ্ধারের যে যাত্রা শুরু হয়েছে ২০১৫ তে এসেও তা অক্ষুণ্ন রেখেছে কলেজিয়েট স্কুল।

ফলাফলে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ফৌজদারহাট ক্যাডেট স্কুল অ্যান্ড কলেজ।

এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ৫৫ জন নিবন্ধন করে সবাই পরীক্ষায় অংশ নেয়। সবাই জিপিএ ৫ পেয়েছে। ফৌজদারহাট স্কুলের প্রাপ্ত পয়েন্ট ৯১।

শীর্ষ ২০ স্কুলের মধ্যে বাকি ১৭টি হলো : বাংলাদেশ মহিলা সমিতি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (৮৮ দশমিক ৬৫), ইস্পাহানি পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ (৮৭ দশমিক ৮০), সরকারি মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয় (৮৭ দশমিক ৪৪), ক্যান্টনম্যান্ট ইংলিশ স্কুল (৮৬ দশমিক ৪৪), চট্টগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (৮৫ দশমিক ৯৫), সিলবার বেলস বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (৮৫ দশমিক ৫৮), চট্টগ্রাম সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (৮৫ দশমিক ০১), নাছিরাবাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (৮৩ দশমিক ৬৯), চিটাগাং পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ (৮১ দশমিক ৫৬), নৌ

বাহিনী স্কুল অ্যান্ড কলেজ (৮১ দশমিক ২৯), সাউথ পয়েন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজ (৮০ দশমিক ৬৩), অপর্ণাচরণ সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (৮০ দশমিক ৫২), কক্সবাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (৭৬ দশমিক ৮২), কাফকো স্কুল অ্যান্ড কলেজ (৭৬ দশমিক ৭২), সেন্ট স্কলাস্টিকা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (৭৬ দশমিক ১৫), বাকলিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (৭৫ দশমিক ৯৯) এবং সেন্ট প্লাসিডস উচ্চ বিদ্যালয় (৭৫ দশমিক ৩৭)।

টানা চারবার প্রথম স্থান ধরে রাখা প্রসঙ্গে কলেজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষক গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী বলেন, 'শিক্ষক-অভিভাবক-শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় স্কুলের এ অর্জন। তবে আমরা ভালো পাস করাকে কখনো গুরুত্ব দিইনি। আমরা চাই এখানকার শিক্ষার্থীরা প্রগতিশীল, বিজ্ঞানমনষ্ক, মনুষ্যত্ব সম্পন্ন সত্যিকারের মানুষ হোক।'

গতকাল ফলাফল জানতে সকাল থেকেই কলেজিয়েট স্কুলে ভিড় জমে শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের। রৌদ্রোজ্জ্বল দুপুরে ফল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অভিভাবক সবার মধ্যে বাঁধভাঙা আনন্দ-উল্লাস।

তীব্র তাপদাহের মধ্যেও আনন্দের কমতি ছিল না কারো মাঝে। নাচে গানে মেতে উঠে শিক্ষার্থীরা। উচ্ছ্বাস ও আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়ে শিক্ষার্থীরা। জিপিএ-৫ পাওয়া কলেজিয়েট স্কুলের শিক্ষার্থী আলভি আহমেদ বলেছে, 'জেএসসিতে জিপিএ-৫ পাইনি। ওই সময় অনেক কষ্ট পেয়েছিলাম। এবার সে কষ্ট দূর হলো।'

সাইদুজ্জামান বলে, 'ইঞ্জিনিয়ার হয়ে এদেশের মানুষের সেবায় কাজ করতে চাই। কারণ ভালোমানের ইঞ্জিনিয়ারের বড়ই অভাব।'

একই স্কুলের আরেক কৃতী শিক্ষার্থী রিয়াসাদ হোসেন নিজের সাফল্যের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বলে, 'আমাদের এতদিনের পরিশ্রম এ ফলাফলের মধ্য দিয়ে সার্থক হয়েছে। ভবিষ্যতেও এ ধরনের ফলাফল অব্যাহত থাকবে, এ প্রত্যাশা করি।'

বান্দরবানে পাসের হার ভালো নয়

নিজস্ব প্রতিবেদক মনু ইসলাম জানান : বান্দরবান জেলায় এবার পাসের হার ভালো নয়। জেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বান্দরবান ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজও ভালো ফলাফল করতে পারেনি।

বান্দরবান ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ তাদের শতভাগ পাসের হার ধরে রাখলেও কমে গেছে জিপিএ-৫ পাসের সংখ্যা।

এবার এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে বিজ্ঞান ও ব্যবসা শিক্ষা বিভাগ থেকে মোট ৬৫ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৪ জন। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ৪৮।

স্কুলের সিনিয়র শিক্ষক মোহাম্মদ ইয়াকুব জানান, বিজ্ঞান বিভাগে ৩৮ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২১ জন জিপিএ-৫, ১৬ জন এ-গ্রেড এবং মাইনাস-এ পেয়েছে ১ জন। এছাড়া ব্যবসা শিক্ষা বিভাগে ২৭ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৩ জন জিপিএ-৫, এ গ্রেড ২১ জন এবং ৩ জন পেয়েছে মাইনাস-এ গ্রেড।

এদিকে বান্দরবান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবার মোট ১৪৬ পরীক্ষার্থী অংশ নেয়। এর মধ্যে ৭ জন ছাড়া অন্যরা পাস করেছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক জ্ঞান রঞ্জন চাকমা জানান, পাস হওয়া ১৩৯ জনের মধ্যে জিপিএ-৫ গ্রেডে পাস পেয়েছে ১৩ জন।

দাখিলে কাগতিয়া মাদ্রাসায় শতভাগ পাস

বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এবারের দাখিল পরীক্ষায় কাগতিয়া এশাতুল উলুম কামিল এম এ মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা শতভাগ সাফল্যের ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন রেখেছে। চলতি বছর দাখিল পরীক্ষায় এ মাদ্রাসা থেকে মোট ৭৭ শিক্ষার্থী অংশ নেয়। এর মধ্যে ১২ জন 'জিপিএ-৫', ৬০ জন 'এ', ৫ জন 'এ-' পেয়েছে।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ