<p>হাইতিতে সশস্ত্র চক্রের হামলায় শিশুসহ অন্তত ৭০ জন নিহত হয়েছে। গতকাল ২০ জনের কথা বলা হলেও মৃত্যুর সংখ্যা বেশি বলে আশঙ্কা করা হয়েছিল। স্থানীয় মিডিয়া তখন জানিয়েছিল, ৫০ জনের বেশি নিহত হয়েছে। তবে হাইতিয়ান মানবাধিকারগোষ্ঠী এই সংখ্যা ২০ বা তার বেশি হতে পারে বলে জানিয়েছিল।</p> <p>এ ছাড়া এ ঘটনায় ৬ হাজার মানুষ পালিয়ে গেছে বলে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।   সহিংসতার প্রাদুর্ভাবে অভ্যস্ত হলেও এ ঘটনা দেশটিকে ব্যাপক ধাক্কা দিয়েছে।</p> <p>হাইতিয়ান কর্তৃপক্ষ সারা দেশে জরুরি অবস্থা সম্প্রসারিত করার এক মাস পর বৃহস্পতিবার এই গ্যাংয়ের তাণ্ডব ঘটে। এ ঘটনায় ১৬ জন গুরুতর আহত হয়েছে বলে জাতিসংঘ জানিয়েছে। গ্রান গ্রিফ গ্যাং সদস্যরা রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের প্রায় ৭১ কিলোমিটার (৪৪ মাইল) উত্তর-পশ্চিমে কেন্দ্রীয় আর্টিবোনাইট অঞ্চলের পন্ট-সোন্ডে গিয়ে তাণ্ডব চালায়।</p> <p>গ্র্যান গ্রিফ গ্যাং নেতা লাকসন এলান এই গণহত্যার দায় নিয়ে জানিয়েছেন, পুলিশ এবং অন্যান্য গোষ্ঠী যখন তাদের সেনাদের হত্যা করেছিল, তখন বেসামরিক লোকজন চুপ ছিল। এর প্রতিশোধ হিসেবে তারা এই হামলা চালিয়েছে। হামলার কারণে প্রায় ৬ হাজার ২৭০ জন তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছে বলে জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা জানিয়েছে। এর মধ্যে বেশিরভাগই আশেপাশের সেন্ট-মার্ক এবং অন্যান্য শহরে বসবাসকারী পরিবারের কাছে আশ্রয় নিয়েছে, অন্যরা অস্থায়ী শিবিরে অবস্থান করছে।</p> <p>হাইতির জাতীয় পুলিশের একজন মুখপাত্র শুক্রবার সন্ধ্যায় রয়টার্সকে বলেছেন, আর্টিবোনাইট বিভাগের দায়িত্বে থাকা পুলিশ পরিচালককে বদলি করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আপাতত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হচ্ছে এবং পরিস্থিতি নিরাপত্তা বাহিনী নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’</p> <p>আর্টিবোনাইট ভ্যালির স্থানীয় এক কমিশনের মুখপাত্র বার্টাইড হোরেস রয়টার্সকে বলেন, ‘গ্যাংটি কোনো প্রতিরোধের মুখোমুখি হয়নি। পুলিশ কর্মকর্তারা তাদের স্টেশনে রয়ে গেছে। সম্ভবত তারা গ্যাং সদস্যদের ছোড়া গুলিতে আহত হয়েছেন।</p> <p>একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, লোকজন মোটরবাইক ও হেঁটে সহিংসতার স্থান থেকে পালিয়ে যাচ্ছে। অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একজন সরকারি কৌঁসুলি হামলাটিকে ‘একটি গণহত্যা’ বলে বর্ণনা করেছেন। সশস্ত্র গ্যাং হাইতির বড় অংশের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। এদিকে কেনিয়ার অফিসারদের নেতৃত্বে জাতিসংঘ-সমর্থিত পুলিশিং মিশন জুনে শুরু হয়েছিল নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টায়। জাতিসংঘ জানিয়েছে, গ্যাং সদস্যরা ‘কমপক্ষে ৪৫টি বাড়ি এবং ৩৪টি গাড়িতে আগুন দিয়েছে’।</p> <p>২০২৩ সালের জানুয়ারিতে এর সদস্যদের বিরুদ্ধে পুলিশ স্টেশনে হামলা এবং ছয়জন কর্মকর্তাকে হত্যা করার অভিযোগ আনা হয়েছিল। এ ছাড়া তাদের  সাত লাখের বেশি মানুষকে পরিষেবা দেওয়া একটি হাসপাতাল বন্ধ করতে বাধ্য করার জন্যও দায়ী করা হয়।</p> <p>এপি কর্তৃক উদ্ধৃত জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই গ্যাংটির প্রায় ১০০ সদস্য রয়েছে। হত্যা, ধর্ষণ, ডাকাতি এবং অপহরণসহ অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। গ্রান গ্রিফকে হাইতির গ্যাংগুলোর মধ্যে সবচেয়ে হিংস্র বলে মনে করা হয়।</p> <p>২০২৩ সালের জানুয়ারিতে এর সদস্যদের বিরুদ্ধে পুলিশ স্টেশনে হামলা এবং ছয়জন কর্মকর্তাকে হত্যা করার অভিযোগ আনা হয়েছিল। এ ছাড়া তাদের  সাত লাখের বেশি মানুষকে পরিষেবা দেওয়া একটি হাসপাতাল বন্ধ করতে বাধ্য করার জন্যও দায়ী করা হয়। এর প্রতিষ্ঠাতা এবং বর্তমান নেতা উভয়ই মার্কিন নিষেধাজ্ঞার অধীন। প্রধানমন্ত্রী গ্যারি কনিল গ্যাংদের বিরুদ্ধে দমন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।</p> <p>সূত্র : বিবিসি</p>