<p>ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের নাম বদলে ‘বাংলা’ করার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরেই দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারকে বলছে সে রাজ্যের সরকার। বৃহস্পতিবার আবারও এ প্রসঙ্গ তুললেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, “অনেক শিক্ষার্থীর উপকার হবে। অনেককে শেষে বলার সুযোগ দেওয়া হয়। পশ্চিমবঙ্গের ‘বাংলা’ নাম কেন হতে পারে না?” নিউজ১৮ প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।</p> <p>প্রতিবেদন অনুসারে, মমতা এদিন বলেছেন, ‘রাজ্যের নামের ব্যাপার দুইবার বিধানসভায় পাস করা হয়েছে। ওরা যা যা তথ্য চেয়েছে সব দিয়েছি। তবু ওরা বাংলা রাজ্য নাম দিচ্ছে না।…বাংলা দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চিত।’</p> <p>ওয়ান ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন অনুসারে, মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন তুলেছেন, কোনো বিশেষ কারণে কি এই নাম বদল করা হচ্ছে না? অন্যান্য রাজ্যের নাম তো অনেক আগে থেকেই বদল হয়েছে। বোম্বে থেকে মুম্বাই হয়েছে। মাদ্রাজ থেকে চেন্নাই হয়েছে। উড়িষ্যা থেকে ওড়িশা হয়েছে। তাহলে পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে কেন এত বাধা আসছে? </p> <p>মমতার উদ্ধৃতি দিয়ে আনন্দবাজার পত্রিকা বলেছে, “বর্তমান নামটি ‘ডাব্লিউ’ দিয়ে শুরু হয়। নাম বদলে ‘বাংলা’ করা হলে বিভিন্ন জায়গায় আমাদের ছেলেমেয়েদের সুবিধা হবে। কাজের জন্য আর বেশি অপেক্ষা করতে হবে না। অনেকবার এই আরজি কেন্দ্রীয় সরকারকে জানিয়েছি। যুক্তি দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করেছি। আবার বলছি।”</p> <p>এ ছাড়াও মুখ্যমন্ত্রী জানান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কিছু মাপকাঠির ভিত্তিতে কিছু ভাষাকে ধ্রুপদি ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। তা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে একটি চিঠিও দিয়েছেন তিনি।</p> <p>আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, বাংলা ভাষার প্রাচীনত্ব প্রমাণ করার জন্য রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে একটি বিস্তারিত ও দীর্ঘ গবেষণা করা হয়েছে। তার মাধ্যমে বাংলার আড়াই হাজার বছরের পুরনো ইতিহাস জানা গেছে। এই ভাষাকে ধ্রুপদী ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য ওই গবেষণাপত্রের সারাংশও কেন্দ্রীয় সরকার পাঠিয়েছে রাজ্য সরকার।</p> <p>মমতা বলেছেন, ‘ভারত সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তামিল, তেলুগু, সংস্কৃত, কন্নড়, মালয়ালাম এবং ওড়িয়া ভাষাকে ধ্রুপদি ভাষার স্বীকৃতি দিয়েছে। বাংলা অনেক ব্যাপারেই বঞ্চিত। আমরা গবেষণা করে এ বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করেছি। আড়াই হাজার বছর ধরে বাংলা ভাষায় জনমত বিবর্তিত হয়েছে। এই ভাষাও তাই কেন্দ্রীয় স্বীকৃতির যোগ্য।’</p> <p>বাংলার প্রাচীনতা নিয়ে চার খণ্ডের একটি গবেষণাপত্রও তৈরি করেছে রাজ্য সরকার। এত দিন বাংলা এই স্বীকৃতি থেকে বঞ্চিত থাকার কারণ হিসেবে আগের সরকারের নিষ্ক্রিয়তার দিকেও আঙুল তুলেছেন মমতা। তিনি বলেন, ‘বাংলার অনেক দিন আগেই জাতীয় স্বীকৃতি পাওয়ার কথা ছিল। এখানেও বাংলা বঞ্চিত হয়েছে। এই অপদার্থতা আমাদেরই। যাঁরা আগে ক্ষমতায় ছিলেন, তাঁরা এ নিয়ে কোনো চেষ্টা করেননি। রাজনীতির বাইরে কিছুই তাঁরা করেননি।’</p> <p>প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া চিঠিতে মমতা জানিয়েছেন, বাংলা সারা দেশে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কথিত ভাষা। বিশ্বের নিরিখে এই ভাষার স্থান সপ্তম। ধ্রুপদি ভাষা হিসেবে কেন্দ্রীয় সরকারের স্বীকৃতির জন্য যে যে বৈশিষ্ট্য দরকার, বাংলায় তা আছে।</p>