<p>আর্সেনিক একটি সেমিমেটাল। বাংলা করলে অর্ধ বা আধাধাতু বলা যায়। এর অক্সাইড সাদা আর্সেনিক হিসেবে পরিচিত। শতাব্দীর পর শতাব্দী আর্সেনিক বিষ ভূমিকায় ব্যবহার হয়ে আসছে। তামা শোধনাগারের চিমনি থেকে সাদা আর্সেনিক চেঁচে পাওয়া যায়। সেখানে আর্সেনিক-সমৃদ্ধ আকরিকের গলিত অবস্থা থেকেই সাদা আর্সেনিকের প্রাপ্যতা। বিষাক্ত ধর্ম সত্ত্বেও ১৭৮০ সালে ওষুধ হিসেবে জনপ্রিয় হয়। </p> <p>১৯০৯ সালের দিকে আর্সেনিক নির্ভর আরেকটি যুগান্তকারী ওষুধ আবিষ্কৃত হয়। নাম দেওয়া হয় সালভারসান। যা রক্তের সংক্রমণজনিত সিফিলিস রোগের নিরাময় করতে পারে। লিউকেমিয়ার মতো চিকিৎসাতেও সাদা আর্সেনিক থেকে তৈরি আর্সেনিক ট্রাইঅক্সাইড ব্যবহার করা হয়। </p> <p>১৯ শতকে সবুজ পিগমেন্ট কপার আর্সেনাইট আর্সেনিক বিষক্রিয়ার এক হুমকির রূপ দেখায়। ওয়ালপেপারে ব্যবহার করা পিগমেন্ট বিষক্রিয়া ছড়ায়। ওয়ালপেপারটি যখন পানিতে সিক্ত হয়ে স্যাঁতসেঁতে হয়ে আসে। বাতাসের সাথে ক্রিয়ায় এটি ট্রাইমিথাইলআরসিন বাষ্প ছাড়তে শুরু করে। এই বাষ্পটিই মূলত বিষাক্ত ছিল। </p> <p>২০০৫ সালে অবশ্য গ্যাসটির বিষাক্ত ধর্ম বিজ্ঞানীরা অস্বীকার করেন। আগাছানিধন ও কাঠ সংরক্ষণে আর্সেনিকের ব্যবহার বন্ধ করা হয়েছে। তবে অর্ধপরিবাহী হিসেবে গ্যালিয়াম আর্সেনাইডের (GaAs) সম্ভাবনা ব্যাপক বেড়েছে। প্রাকৃতিক কিছু খাদ্য উপাদানেও সামান্য আর্সেনিক দেখা যায়, যেমন চিংড়ি। তবে তা স্বাস্থ্যের পক্ষে হুমকি নয়। আমাদের দেশের প্রেক্ষিতে অগভীর নলকূপের আর্সেনিক ভয়ানক হুমকির। আর্সেনিকের বিষাক্ত প্রভাবে জটিল রোগ হতে পারে। </p> <p><strong>দশা</strong><br /> রাসায়নিক সংকেত: As<br /> পারমাণবিক সংখ্যা: ৩৩<br /> নামকরণ: গ্রিক arsenikon (খনিজজাত হলুদ অরপিমেন্ট) থেকে।</p> <p><strong>বিক্রিয়া</strong><br /> পর্যায় সারণির গ্রুপ ১৫-এর একটি সেমিমেটাল মৌল। ভিন্ন তিনটি পরমাণুর সাথে আর্সেনিক বন্ধন গড়তে পারে। প্রাণনাশক গ্যাস আর্সাইন (AsH<sub>3)</sub> তার একটি উদাহরণ। পাঁচটি পরমাণু হলে তার নমুনা হিসেবে পেন্টাক্লোরাইড (AsCl<sub>5</sub>)। এতে আবার দুটো অক্সাইড পাওয়া যায়। একটি As<sub>2</sub>O<sub>3</sub> এবং অন্যটি As<sub>2</sub>O<sub>5</sub>। আর্সেনিক দুই ধরনের লবণ তৈরি করে। আর্সেনাইট (ঋণাত্মক আয়ন AsO<sub>3</sub><sup>3-</sup>) এবং আর্সেনেট (ঋণাত্মক আয়ন AsO<sub>4</sub><sup>3-</sup>)। যখন এটি বেশ উত্তপ্ত হয়, আর্সেনিক সাবলাইমস ৬১৬ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে পাওয়া যায়। অবশ্য প্রক্রিয়াটি উর্ধপাতনে সম্পন্ন হয়। কঠিন থেকে সরাসরি বাষ্প।</p> <p><strong>সম্পর্কিত মৌল</strong><br /> ফসফরাস (P 15)<br /> গ্যালিয়াম (Ga 31)<br /> অ্যান্টিমনি (Sb 51)</p> <p><br /> <strong>জীবনী</strong><br /> <strong>আলবার্টাস ম্যাগনাস</strong><br /> ১১৯৩-১২৮০<br /> জার্মান ক্যাথলিক ভিক্ষু। আর্সেনিক পৃথককারী প্রথম ব্যক্তি। </p> <p><strong>কার্ল উইলহেলম শেলে</strong><br /> ১৭৪২-১৭৮৬<br /> জার্মান-সুইডিশ রসায়নবিদ। যিনি ১৭৭৫ সালে শেলের সবুজ নামে তামার আর্সেনাইট রঞ্জক আবিষ্কার করেন।</p> <p><strong>পল এরিক</strong><br /> ১৮৫৪-১৯১৫<br /> জার্মান চিকিৎসক। তিনি সিফিলিস রোগের ওষুধ সালভারসান আবিষ্কার করেন।</p> <p><strong>বর্ণনা</strong><br /> জন এমসলে</p>