<p>চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিংপিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশ সময় দুপুরে বেইজিংয়ের দ্য গ্রেট হল অব দ্য পিপলে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় একান্তে দ্বিপক্ষীয় বিষয় নিয়ে আলাপ করেন শেখ হাসিনা এবং শি জিনপিং।</p> <p>এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেওয়া হয় রাষ্ট্রীয় সংবর্ধনা। সকাল ৯টায় দ্য গ্রেট হল অব দ্য পিপলে দেওয়া হয় গার্ড অব অনার। পরে বৈঠক করেন চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াংয়ের সঙ্গে। বৈঠক শেষে ২১টি চুক্তি-সমঝোতা ও সাতটি ঘোষণাপত্র স্বাক্ষর করা হয়।</p> <p>শি জিনপিং উল্লেখ করেন যে, চীন ও বাংলাদেশ বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী। দুই দেশের মধ্যে হাজার বছরের বন্ধুত্বপূর্ণ আদান-প্রদান রয়েছে। কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার পর থেকে দুই দেশ সর্বদা একে অপরকে সম্মান ও সমর্থন করেছে, একে অপরের প্রতি সম-আচরণ করেছে, জয়-জয় সহযোগিতা করেছে এবং ‘গ্লোবাল সাউথ’ দেশগুলোর মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ বিনিময় ও পারস্পরিক উপকারী সহযোগিতার একটি মডেল স্থাপন করেছে। </p> <p>তিনি বলেন, ‘চীন বাংলাদেশের সঙ্গে পুরনো প্রজন্মের নেতাদের গড়া গভীর বন্ধুত্বকে মূল্যায়ন করে। আগামী বছর কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০তম বার্ষিকী উপলক্ষে ‘এক অঞ্চল এক পথ উদ্যোগে’র উচ্চমানের যৌথ নির্মাণকে আরো গভীর করার সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করতে, বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতার গভীরতা ও প্রশস্ততা প্রসারিত করতে এবং চীন-বাংলাদেশ সার্বিক কৌশলগত অংশীদারির সম্পর্ক আরো স্থিতিশীল ও দীর্ঘ মেয়াদে গড়ে তুলতে ইচ্ছুক চীন।’</p> <p>শেখ হাসিনা বলেন, চীনের সঙ্গে গভীর বন্ধুত্বের জন্য বাংলাদেশ সম্মানিত। তিনি প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বিচক্ষণ নেতৃত্বে বিভিন্ন অসুবিধা ও চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে, জনগণের জীবনমান উন্নয়নে চীনের দ্রুত ও মহান সাফল্যের উচ্চ প্রশংসা করেন। বাংলাদেশ জাতীয় মুক্তি ও দারিদ্র্য বিমোচন এবং উন্নয়নের জন্য দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং এই প্রক্রিয়ায় মূল্যবান সহায়তার জন্য চীনকে ধন্যবাদ দেন শেখ হাসিনা। </p> <p>বাংলাদেশ চীনের সফল উন্নয়ন অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিতে, অর্থনীতি, বাণিজ্য, অবকাঠামো, দারিদ্র্য বিমোচন এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে  দ্বিপক্ষীয়  সহযোগিতা প্রসারিত করতে এবং যুব ও সাংস্কৃতিক বিনিময়কে শক্তিশালী করতে ইচ্ছুক। ‘এক অঞ্চল এক পথ উদ্যোগে’র যৌথ নির্মাণ এই অঞ্চলে অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং জনগণের জীবনমান উন্নত করতে অনেক সহায়ক হয়েছে। বাংলাদেশ বিআরআইয়ের যৌথ নির্মাণের সহযোগিতায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করবে। বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের সমন্বিত উন্নয়ন পরিকল্পনায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে এবং বাংলাদেশকে ‘ভিশন ২০৪১’ বাস্তবায়নে সহায়তায় চীনের অংশগ্রহণকে স্বাগত জানায়। </p> <p>বাংলাদেশ দৃঢ়ভাবে এক-চীন নীতি মেনে চলে, তাইওয়ান ইস্যুতে চীনের অবস্থানকে সমর্থন করে, চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপকারী বহিরাগত শক্তির দৃঢ় বিরোধিতা করে এবং চীনের মূল স্বার্থ রক্ষায় দৃঢ়ভাবে সমর্থন করে। বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে সার্বিক কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারি বৃহত্তর উন্নয়ন সাধন করবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বৈঠকে অংশ নেন।</p> <p>চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয়েছে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর চীন সফর। আজ রাতেই ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।</p>