<p>ভবন নির্মাণের সংবাদ করতে গিয়ে নামসর্বস্ব পত্রিকা ও অনলাইন পোর্টালের স্থানীয় সংবাদদাতা পরিচয়ে ভয়ভীতির মাধ্যমে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে রাজধানীর ডেমরায় দুই ব্যক্তি গণধোলাইয়ের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।</p> <p>গতকাল সোমবার (২২ এপ্রিল) বিকেলে ডেমরার বাঁশেরপোল এলাকার ইস্টার্ন হাউজিং সোসাইটিতে এ ঘটনা ঘটে। গণধোলাইয়ের শিকার কথিত সাংবাদিক পরিচয়দানকারীরা হচ্ছেন- শরীফুল ইসলাম ও মাকসুদুল আলম রবি।</p> <p>তবে বিষয়ে জানতে চাইলে ডেমরা থানার ওসি (তদন্ত) মো. ফারুক মোল্লা বলেন, চাঁদাবাজির বিষয়ে সোসাইটি থেকে লিখিত কোনো অভিযোগ করা হয়নি। মৌখিকভাবে অভিযোগ পেয়েছি, কিছু অর্থ পেলে হয়তো ভবন নির্মাণের অনিয়ম নিয়ে প্রতিবেদন করতেন না তারা।</p> <p>ওসি আরো বলেন, ওই সোসাইটি রাজউকের নিয়ম না মেনে ভবন নির্মাণে কিছু অসঙ্গতি ছিল। এজন্য বাংলাদেশ আওয়ার নামে এক সাংবাদিকসহ কয়েকজন সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে এক পর্যায়ে মারামারির মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে আটজনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে। </p> <p>স্থানীয়দের অভিযোগ, এরা নিজেদের সাংবাদিক পরিচয় দিলেও ইস্টার্ন হাউজিং সোসাইটি কর্তৃপক্ষের কাছে সাংবাদিক পরিচয়ের স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ দেখাতে রাজি হননি। একইসঙ্গে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে ব্যবসায়ীসহ নতুন-নতুন ভবন নির্মাণসংশ্লিষ্ট মালিকদের কাছে চাঁদা দাবি করেছেন। চাঁদা দিতে রাজি না হওয়ায় তারা ভবন এবং ভবনে বসবাসকারীদের ব্যক্তিগত চলাফেরার ভিডিও ধারণ করছিলেন। একইসঙ্গে চাঁদা না দিলে ‘রাজউক দিয়ে ভবন ভেঙে দেওয়া’ এবং ‘ভিডিও ভাইরাল করে দেওয়া’ হবে বলে হুমকি দিয়েছিলেন।</p> <p>সোমবার বিকেলে কথিত সাংবাদিক পরিচয়দানকারী ১০-১২ জনের সংঘবদ্ধ সদস্যরা ভিডিও ক্যামেরা, স্টিল ক্যামেরাসহ ইস্টার্ন হাউজিং প্রবেশের চেষ্টা করলে হাউজিংয়ের প্রধান ফটকের দায়িত্বরত পাহারাদারগণ তাদের পরিচয় জানতে চান। তারা নিজেদের সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে দ্রতগতিতে হাউজিং এলাকায় ঢুকে বিক্ষিপ্তভাবে বিভিন্ন ভবন, নির্মীয়মাণ ভবন, ব্যবসায়ীদের দোকানপাট এবং নারী-শিশুসহ হাউজিংয়ে বসবাসকারী পথচারিদের ভিডিও ধারণ করতে শুরু করেন।</p> <p>খবর পেয়ে ইস্টার্ন হাউজিং সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলামসহ সোসাইটির কয়েকজন সদস্য তাঁদের কাছে গিয়ে পরিচয় নিশ্চিত হওয়া চেষ্টা করেন। এ সময় নিজেদের সাংবাদিক পরিচয় দিলেও কে কোন পত্রিকার সাংবাদিক, তা জানাতে অপরাগতা প্রকাশ করেন তারা। একইসঙ্গে একটি ভবন থেকে নারী-শিশুসহ বের হওয়া কয়েকজনের ভিডিও ধারণ করতে গেলে, সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক অনুমতি ছাড়া নারী-শিশুদের ছবি ধারণ করতে নিষেধ করেন। বাধা না শোনায় শরিফুল নামের এক ক্যামেরাম্যানের ক্যামেরা হাত দিয়ে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন সোসাইটির সম্পাদক। এ সময় শরিফুল ও তার কয়েকজন সঙ্গী নিজেদের সাংবাদিক পরিচয়ের পাশাপাশি স্থানীয় এক প্রভাবশালীর পরিচয় দিয়ে ইস্টার্ন হাউজিং সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক জাহিদকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। জাহিদকে কথিত সাংবাদিকদের কাছে উদ্ধারের জন্য সোসাইটির অন্য সদস্যসহ স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে সাংবাদিক পরিচয়দানকারীরা তাঁদেরও ভিডিও ধারণের চেষ্টা করেন। এই পর্যায়ে সোসাইটিতে বসবাসকারী ভুক্তভোগীরা উত্তেজিত হয়ে কথিত সাংবাদিক পরিচয়দানকারী দুইজনেকে ধোলাই দেওয়া শুরু করলে বাকিরা পালিয়ে যান।</p>