<p>গত বছরের শেষার্ধে অর্থাৎ জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ২৮২টি অভিযোগ পেয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। এ সব অভিযোগের মধ্যে নিষ্পত্তি হয়েছে ১৩০টি অভিযোগ, ১২৯টি অভিযোগ নিষ্পত্তির বিষয়ে কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এ সময়ে কমিশন স্বপ্রণোদিত হয়ে ৫১টি অভিযোগ নিয়ে কাজ করেছে। এর মধ্যে ১২টি অভিযোগ নিষ্পত্তি হয়েছে। কার্যক্রম চলমান রয়েছে ৩৯টি অভিযোগের।</p> <p>আজ মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) রাজধানীর একটি হোটেলে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আয়োজিত মানবাধিকার সুরক্ষায় গণমাধ্যমকর্মীদের ভূমিকা বিষয়ক মতবিনিময়সভায় এ সব তথ্য জানানো হয়। সভায় কমিশনের সাম্প্রতিক বিষয়ে কার্যক্রম উপস্থাপন করেন সংস্থাটির পরিচালক কাজী আরফান আশিক। স্বাগত বক্তব্য উপস্থাপন করেন কমিশন সচিব সেবাষ্টিন রেমা। কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য সেলিম রেজা, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত এবং জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচির সহকারী আবাসিক প্রতিনিধি আনোয়ারুল হক।</p> <p>সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পরিপ্রেক্ষিত-এর নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ বোরহান কবীর। তিনি বলেন, ‘কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টের তথ্য অনুযায়ী গত বছর বিশ্বজুড়ে ৯৯ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। সংবাদ প্রকাশের জন্য নিপীড়িত, নির্যাতিত সাংবাদিকদের সংখ্যা সহস্রাধিক। বিশ্বে মানবাধিকারের পক্ষে কাজ করার জন্যই তাদের হত্যা করা হয়েছে।’</p> <p>সভাপতির বক্তব্যে কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘মুক্ত গণমাধ্যম এবং মানবাধিকার সুরক্ষা একে অন্যের পরিপূরক। মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো সম্পর্কে জানতে আমরা গণমাধ্যমের সহায়তাই নিয়ে থাকি। আমার স্বপ্রণোদিত হয়ে যেসব অভিযোগ নিয়ে কাজ করেছি তা গণমাধ্যমের খবরের ওপর ভিত্তি করেই।’</p> <p>সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘মানবাধিকার কমিশনের ক্ষমতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধির চেষ্টা আমরা অব্যাহতভাবে করে যাচ্ছি। মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটলে আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পিবিআই, সিআইডিসহ বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে কাজ করি। পুলিশ সদস্যরা শাস্তির আওতায় এসেছে, এমন ঘটনাও আছে।’</p> <p>শ্যামল দত্ত বলেন, ‘আমার দুই সহকর্মী হত্যার শিকার হয়েছে, তাদের সেই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন ১০৮ বার পেছানো হয়েছে। এমন আরো অনেক ঘটনায় বলতে পারি আমাদের মানবাধিকার এখনো নিশ্চিত হয়নি। মানবাধিকার নিশ্চিতে সকলের সমন্বয় নিশ্চিত করতে হবে। যেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রবণতা বেশি, সেখানে গণমাধ্যম তত সংকুচিত এবং ততটাই ঝুঁকিতে।’</p> <p>আনোয়ারুল হক বলেন, ‘মানবাধিকতার ইস্যুতে বিশেষায়িত সাংবাদিকতার বিকাশ জরুরি। সাংবাদিকদের আইনি সুরক্ষারও প্রয়োজন। আমরা এসব কিছু নিয়েই মানবাধিকার কমিশনের সঙ্গে কাজ করতে চাই। কমিশন, গণমাধ্যম এবং সিভিল সোসাইটিকে মানবাধিকার নিয়ে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে।’</p>