<p>মাদকের মামলায় দণ্ডিত নাজমুল হাসান হয়ে মিরাজুল ইসলাম সাজা খেটেছেন কি না, তা তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারির এ প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।</p> <p>এসংক্রান্তে প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে আনার পর বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) এ আদেশ দেন বিচারপতি আতাউর রহমানের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ। সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ প্রতিবেদনটি আদালতের নজরে আনেন। এ সময় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম ফজলুল হক ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আঞ্জুমান আরা বেগম। আর কথিত আপিলকারী নাজমুল হাসানের আপিলের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ রমজান খান।</p> <p>সংশ্লিষ্ট হাইকোর্ট বেঞ্চের বৃহস্পতিবারের কার্যতালিকায় নাজমুল হাসানের ফৌজদারি আপিলটি রায়ের জন্য ১৩ নম্বর ক্রমিকে ছিল।</p> <p>আইনজীবী মনজিল মোরসেদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় নাজমুল হয়ে যে জেল খেটেছে তার নাম মিরাজুল। পরবর্তী সময়ে জামিনে বের হয়ে সে আপিল করে; শুনানির পর সে আপিলটি রায়ের জন্য ছিল।’</p> <p>এ আইনজীবী বলেন, ‘প্রকাশিত প্রতিবেদনটি আদালতের নজরে এনে বলেছি, যে ফৌজদারি আপিলের শুনানি হয়েছে সে আপিলের আপিলকারী প্রকৃত আপিলারি নন। প্রতিবেদনটি উপস্থাপনের পর আদালত ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলকে বলেছেন, প্রতিবেদনে বর্ণিত ঘটনা তদন্ত করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা যেন প্রতিবেদন দেন। এর জন্য রায় ঘোষণা আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্থগিত রাখা হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে হবে।’</p> <p>মনজিল মোরসেদ বলেন, ‘একজন দণ্ডিত অপরাধী যদি টাকার বিনিময়ে নিজের সাজা অন্যকে দিয়ে খাটাতে পারে তাহলে সেটি আইনের শাসনের দুর্বলতা। গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি দেখা উচিত।’</p> <p>বিষয়টি অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিনকে জানানো হয়েছে বলে জানান ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম ফজলুল হক। </p> <p>নাজমুল হাসানের আপিলে কিভাবে নিয়োগ পেলেন জানতে চাইলে আইনজীবী মোহাম্মদ রমজান খান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমাকে এই মামলাটা দিয়েছে জজকোর্টের অ্যাডভোকেট নজরুল। উনার চেম্বার থেকে আসামি আত্মসমর্পণ করেছে। ওই আইনজীবীর চেম্বার রায়ের সত্যায়িত অনুলিপি আমাকে দেওয়ার পর আমি হাইকোর্টে আপিল করেছি। আমি আসামিকে চিনি না।’</p> <p><strong>যা বলা হয়েছে প্রতিবেদনে</strong><br /> ‘মাদক মামলায় যুবলীগ নেতার আয়নাবাজি/ভয়ংকর প্রতারণা’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২০ সালের আগস্ট মাসে উত্তরায় একটি বাসায় অভিযান চালায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। সেখান থেকে বিপুল পরিমাণ ফেনসিডিল, গাঁজাসহ আটক করা হয় আনোয়ার হোসেন নামের একজনকে। তবে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন মাদকচক্রের মূল হোতা। মাদক উদ্ধারের এ ঘটনায় দুজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। বিচারে অপরাধ প্রমাণ হওয়ায় পলাতক ওই ব্যক্তিকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। </p> <p>প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, সাজাপ্রাপ্ত ওই আসামি মাদক কারবারের মূল হোতা মো. নাজমুল হাসান। ঢাকার উত্তরার ৫৪ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের এই নেতার বাবার নাম আবুল হাসেম চেয়ারম্যান। কিন্তু এই পরিচয়ে আদালতে আত্মসমর্পণ করে যিনি জেল খেটেছেন, তাঁর প্রকৃত নাম মিরাজুল ইসলাম। টাকার বিনিময়ে রীতিমতো চুক্তি করে নাজমুলের সাজা নিজের ঘাড়ে নিয়েছেন তিনি। যদিও চুক্তিমতো সব টাকা পাননি মিরাজুল। জামিনে বেরিয়ে এসে টাকা চাইতে গেলে উল্টো ৫০ পিস ইয়াবা দিয়ে পুলিশের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয়।</p>