<p>বন্ধু-বান্ধবের দেখাদেখি সন্তান এটা চায়, সেটা চায়, দামি পেনসিল বক্স কেনার বায়না ধরে, সুন্দর ব্যাগ চায়, আরো কত কী। অনেকে আবার মোবাইলে যা দেখে তাই চেয়ে বসে থাকে। প্রায় প্রত্যেক মা-বাবা এই দৃশ্যের সঙ্গে পরিচিত। বাড়ির ছোট সন্তানের ইচ্ছা বয়সের সঙ্গে চাহিদা আবদার বাড়তেই থাকে, পাল্টাতে থাকে এসবের ধরনও। তাই সব বাবা-মাকেই সন্তানের ওপর সতর্ক নজর রাখতে হবে। সন্তানকে এসব চাহিদার গোলকধাঁধা থেকে বের করে আনার দায়িত্ব কিন্তু মা-বাবারই। ছোট থেকে এসব বিষয় নিজের হাতে না সামলালে বয়ঃসন্ধিকালে গুরুতর সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।</p> <p><strong>সন্তানের আবদার সামলাতে মা-বাবার করণীয়</strong></p> <p>ছোটরা বায়না করতেই পারে। কিন্তু মা-বাবার উচিত ধৈর্য ধরে বোঝানো। ছোটদের ভুল সংশোধন করার আগে বরং ভুলের কারণ জানা জরুরি। সন্তানের সব চাহিদা কখনোই পূরণ করবেন না। আপনার সাধ্যও ওকে বোঝানো দরকার। টাকা-পয়সার গুরুত্ব ওকে বোঝানো দরকার। সন্তানকে শেখাতে হবে কিভাবে সামর্থ্য অনুযায়ী কাজ করতে হবে।</p> <p>সন্তানের বন্ধুদেরও চিনতে হবে। সন্তান কাদের সঙ্গে মিশছে, তাদের পরিবার কেমন জানার চেষ্টা করুন। অনেক সময়ে বন্ধুদের প্রভাবেও শিশুদের মধ্যে নেতিবাচক ভাবনা তৈরি হয়। মা-বাবাকে শেখাতে হবে, সন্তান কোনটা গ্রহণ করবে আর কোনটা নয়। এই শিক্ষাই সবচেয়ে আগে দরকার। সন্তানকে বুঝতে হলে তার সঙ্গে বেশি করে সময় কাটান। সময়ের অভাব থাকলে ফোনে তার সঙ্গে কথা বলুন। তাই বলে বন্ধুদের সঙ্গে মিশতে নিষেধ করবেন না। জীবনে বন্ধুর প্রয়োজনীয়তাও আছে। তবে নজর রাখুন। মা-বাবা দুই জনেই কর্মরত হলে অনেক সময়েই উপহার দিয়ে শিশুকে শান্ত রাখার চেষ্টা করেন। এতে তার মধ্যে চাহিদা বাড়তে থাকে।</p> <p>অন্যদের দেখে জিনিস চাওয়ার প্রবণতাও তৈরি হয়। এই প্রবণতা থেকে সন্তানকে বের করে আনতে মা-বাবাকে বোঝাতে হবে সে কতটা চাইতে পারে। নিজের সাধ্য সম্পর্কে ওর মধ্যে বাস্তব ধারণা তৈরি করতে হবে। নিয়মানুবর্তিতা শেখাতে হবে সন্তানকে। তবে কড়া শাসনে নয়, বরং বন্ধুর মতো মিশে। ওকে আঁকা, নাচ, গান, সাঁতারে অংশ নিতে দিন। এতে সে তার মনের খোরাক পাবে। নতুন জিনিস শেখার জন্য উৎসাহী থাকবে, ফলে মনে নেতিবাচক চিন্তা তৈরি হবে না। বড় হয়ে পেশা নির্বাচনেও সুবিধা হবে।</p> <p>ছোট বয়সে সন্তানকে ইচ্ছামতো চালনা করা সহজ। কিন্তু বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার নিজস্ব মতামতও থাকে। সেখানেও সন্তানকে নিজের মত প্রকাশের স্বাধীনতা দিন। সব ব্যাপারে শাসন করতে শুরু করলে সন্তান আরো বেশি জেদি ও একগুঁয়ে হয়ে উঠবে। আপনিই যে সন্তানের সবচেয়ে কাছের বন্ধু, এই ধারণা ওদের মধ্যে ছোট থেকেই বুনে দিতে হবে। তাহলে যেকোনো সমস্যায় পড়লে আপনার কাছেই আসবে। সন্তানের মনের আন্দাজ পাওয়াও সহজ হবে।</p>