জেনারেটিভ এআই-এর আগমনে পরিবর্তনের ছোঁয়া লেগেছে কর্পোরেট ওয়ার্ল্ডের চেহারায়। তবে এই প্রযুক্তি দুঃস্বপ্ন, নাকি সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত? কোন পেশা সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়বে এই প্রযুক্তির জেরে? সদ্য প্রকাশিত এক মাইক্রোসফট রিপোর্ট বলছে, অনুবাদক, ইতিহাসবিদ, গ্রাহক পরিষেবা কর্মী, এমনকি লেখকদের কাজেই নেমে আসতে চলেছে সবচেয়ে বড় পরিবর্তন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মাইক্রোসফটের ‘কোপিলট’ চ্যাটবটের সঙ্গে ২ লাখের বেশি অজ্ঞাতপরিচয় ব্যবহারকারীর কথোপকথনের ওপর ভিত্তি করে এই গবেষণা চালানো হয়েছে। গবেষকরা দেখেছেন, যেসব পেশা তথ্য বিশ্লেষণ, লেখা বা যোগাযোগের ওপর নির্ভর করে, সেগুলোর ওপর জেনারেটিভ এআই-এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়তে চলেছে।
কোন কোন পেশা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে
এআইয়ের প্রভাবের নিরিখে ০ থেকে ১–এর মধ্যে স্কোরিং করে তৈরি হয়েছে এই তালিকা। সবার ওপরে রয়েছেন দোভাষী ও অনুবাদকরা (স্কোর ০.৪৯)। তারপরই ইতিহাসবিদ (০.৪৮), প্যাসেঞ্জার অ্যাটেনড্যান্ট (০.৪৭), পরিষেবা বিক্রয় প্রতিনিধিরা (০.৪৬)। লেখক ও সম্পাদকদের স্কোর ০.৪৫, কাস্টমার সার্ভিস এক্সিকিউটিভদের ০.৪৪, সিএনসি টুল প্রোগ্রামার ও টেলিফোন অপারেটরদের ০.৪২।
আরো পড়ুন
কাজল লাগানোর ভুলে হতে পারে যে ক্ষতি
তালিকায় রয়েছে আরো বেশ কিছু পেশা। যেমন টিকিট এজেন্ট, রেডিও হোস্ট, টেলিমার্কেটার, সংবাদ বিশ্লেষক, রাজনৈতিক গবেষক, সম্পাদক, জনসংযোগ বিশেষজ্ঞ ও ডেটা সায়েন্টিস্টদের নাম। যাদের পেশা মূলত তথ্য প্রক্রিয়াকরণ ও যোগাযোগের ওপর নির্ভরশীল, তাদের সকলেরই কাজকে প্রভাবিত করতে চলেছে জেনারেটিভ এআই।
কেন এই পেশাগুলো সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে
গবেষকদের মতে, এসব পেশায় বহু কাজই পুনরাবৃত্তিমূলক বা রুটিন, যেমন, তথ্য লেখা, সংক্ষেপে উপস্থাপন, প্রশ্নের উত্তর দেওয়া, যা ইতোমধ্যেই কোপিলট বা চ্যাটজিপিটির মতো এআই টুল সহজেই করতে পারছে।
ফলে আগামী দিনে এই কাজগুলোর ধরন পরিবর্তন শুধু সময়ের অপেক্ষা।
আরো পড়ুন
খাবারে লবণ বেশি খাচ্ছেন? কী হতে পারে এই অভ্যাসে
চাকরি যাবে না, বদলাবে কাজের ধরন
তবে এই রিপোর্ট কোথাও বলছে না যে এসব চাকরি একেবারেই চলে যাবে। বরং বলা হচ্ছে, জেনারেটিভ এআই আসায় কাজের ধরনে পরিবর্তন আসবে এবং নতুন স্কিল শিখে কৌশলে অভিযোজনই হবে সাফল্যের চাবিকাঠি। কেউ কেউ বলছেন, বহু হোয়াইট-কলার চাকরি হয়তো কমে যাবে, আবার কেউ বলছেন, এআই প্রযুক্তি আমাদের আরো বেশি দক্ষ করে তুলবে এবং নতুন কাজের দরজা খুলে দেবে।
কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই প্রযুক্তি থেকে পালানোর উপায় নেই।
বরং তা কিভাবে কাজে লাগানো যায়, সেটাই শেখা জরুরি। যারা অনুবাদক বা লেখক, তাদেরও ভয় পাওয়ার দরকার নেই, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তন আনতে হবে। অর্থাৎ, এআই আমাদের কাজ কেড়ে নেবে না, বরং আমাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করবে। প্রস্তুত থাকুন সেই নতুন যুগের জন্য।
আরো পড়ুন
মুখের দুর্গন্ধ এড়াতে কী করবেন
সূত্র : দ্য ওয়াল