ঢাকা, বুধবার ২৩ জুলাই ২০২৫
৭ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৭ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, বুধবার ২৩ জুলাই ২০২৫
৭ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৭ মহররম ১৪৪৭

অ্যানড্রয়েডের বিকল্প হারমনি?

এস এম তাহমিদ
এস এম তাহমিদ
শেয়ার
অ্যানড্রয়েডের বিকল্প হারমনি?
অবশেষে গত ৯ আগস্ট নতুন অপারেটিং সিস্টেমের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিল হুয়াওয়ে। মাইক্রোকার্নেলনির্ভর এই অপারেটিং সিস্টেম সম্পর্কে জানাচ্ছেন

যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে সম্পর্কের টানাপড়েনের কারণে কিছুদিন আগে হুয়াওয়ের অ্যানড্রয়েড ও গুগল সেবা ব্যবহার করার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র সরকার। পরে অবশ্য সেটিও স্থগিত হয়েছে। কিন্তু ভবিষ্যতে হুয়াওয়ে যে আবার এ ধরনের সমস্যায় পড়বে না, এ কথা কে বলতে পারে!  সে কথা মাথায় রেখেই হুয়াওয়ে ঘোষণা করেছে তাদের ব্যাকআপ পরিকল্পনা, নিজস্ব এক অপারেটিং সিস্টেম—যার নাম চীনা ভাষায় হংমেং আর ইংরেজিতে ‘হারমনিওএস’।

অ্যানড্রয়েডও হারমনিওএস
গত মাসে হয়ে যাওয়া হুয়াওয়ে ডেভেলপার সম্মেলনের হারমনিওএস কেমন হবে, তার পুরোটাই তুলে ধরা হয়।

অনেকেই ধারণা করেছিল, হুয়াওয়ে সম্ভবত অ্যানড্রয়েডের কোড নিয়ে সেটিকে পরিবর্তন করে অ্যানড্রয়েডেরই আরেকটি সংস্করণ তৈরি করবে, যেমনটি শাওমি বা অপো করেছে। অ্যানড্রয়েড যেহেতু সম্পূর্ণ মুক্ত সফটওয়্যার বা ওপেন সোর্স আর তার কোড জিএনইউ লাইসেন্সের মাধ্যমে প্রকাশিত, তাই যুক্তরাষ্ট্র সরকার চাইলেও সেটি ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিতে পারবে না। তবে গুগলের সেবাগুলো, যেমন—গুগল প্লেস্টোর, ইউটিউব বা গুগল অ্যাকাউন্ট ব্যবহারের কোনো উপায় তাতে রাখা যাবে না। হুয়াওয়ে ফোনগুলোর চীনা বাজারের সংস্করণে এমনটা বহু আগে থেকেই চলে আসছে।

অথচ হারমনিওএস পুরোটাই সম্পূর্ণ নতুন। অ্যানড্রয়েডের সঙ্গে এটির কোনো মিল নেই, অ্যানড্রয়েডের অ্যাপগুলো তাতে চলার কথাও নয়। এতে নেই লিনাক্স কার্নেলের কোনো ছোঁয়া। তবে অ্যানড্রয়েডের মতোই হারমনিওএসের সোর্সকোড হবে উন্মুক্ত।

আপাতত সিস্টেমটি স্মার্টফোনে ব্যবহারের ব্যাপারেও হুয়াওয়ে কিছু বলা থেকে বিরত থেকেছে, ফলে ধরে নেওয়া যেতে পারে, খুব দ্রুতই হারমনিওএসসমৃদ্ধ ফোন বাজারে আসছে না।

যেমন হবে হারমনিওএস
অ্যানড্রয়েড বা আইওএসের গঠনশৈলী বলা হয় ‘মনোলিথিক’। একটি মূল কার্নেলের ওপর প্রসেসরের আর্কিটেকচার অনুযায়ী সার্ভিস ও অ্যাপের বুননে তৈরি হয় একটি ওএস। নানাবিধ ডিভাইসে সেগুলো ব্যবহার করা হলেও মূল কার্নেল এবং সার্ভিসগুলো থাকে এক। সে জন্য অ্যানড্রয়েড, অ্যানড্রয়েড ফর থিংস, ওয়্যার ওএস এবং ক্রোম ওএসের বেশির ভাগ অংশ এবং চালচলন একই।

অ্যাপলের ক্ষেত্রেও মাক কার্নেলের ওপরই ম্যাক, ওয়াচ, আই এবং আইপ্যাডওএস তৈরি করা হয়েছে।

হারমনিওএস আলাদা। এখানে ব্যবহার করা হবে একটি ক্ষুদ্র মাইক্রোকার্নেল, যার সঙ্গে প্রতিটি ডিভাইসের জন্য আলাদাভাবে সার্ভিস এবং হার্ডওয়্যারের বা সফটওয়্যারের সংযোগ তৈরি করা হবে। ফলাফল—একই কার্নেল অনেক ডিভাইসে ব্যবহার হলেও তাতে অপ্রয়োজনীয় কোড একেবারেই থাকবে না। ডিভাইসের হার্ডওয়্যারের সঙ্গে কার্নেল ও সার্ভিসগুলোর সম্পর্ক হবে আরো অনেক গভীর।

নিরাপত্তাও হবে আরো অনেক বেশি, কারণ মাইক্রোকার্নেলের সঙ্গে মূল সিস্টেমের কোনো সরাসরি যোগাযোগের প্রয়োজনই হবে না, রুট অ্যাকসেস পাওয়ার কোনো উপায় রাখা হবে না।

যেসব ডিভাইসে চলবে
হারমনিওএস শুধু ফোন নয়, স্মার্টওয়াচ, স্পিকার, টিভি, এমনকি ল্যাপটপেও ব্যবহার করা হবে বলে জানিয়েছে হুয়াওয়ে। মাইক্রোকার্নেলের ওপর তৈরি হওয়ায়, খুব সহজেই সব ধরনের ডিভাইস ও প্রসেসরের জন্য এটি প্রস্তুত করা যাবে। সেটি হতে পারে টাচস্ক্রিন, হতে পারে কি-বোর্ড-মাউস, আবার হতে পারে কোনো ধরনের ডিসপ্লে ও ইনপুট ছাড়া আইওটি ডিভাইস। সব ধরনের আর্কিটেকচার ও কাজে ব্যবহার করার সুবিধা থাকায় একই অ্যাপ ও সেবা সব ডিভাইসেই চালানো যাবে, গড়ে উঠবে একটি সংগতিসম্পন্ন ডিভাইস ইকোসিস্টেম।

পারফরম্যান্স
মাইক্রোকার্নেল হওয়ার অন্যতম সুবিধা, যে ডিভাইসে ওএস চলবে, তার শক্তি সুন্দরভাবে কাজে লাগানো যাবে। লিনাক্স ও মাক কার্নেল যেখানে প্রসেসর কোর আর থ্রেড গুনে সে অনুযায়ী কাজ ভাগ করে দিত, সেখানে হারমনিওএস ব্যবহার করবে ‘ডিটারমিনিস্টিক লেটেন্সি ইঞ্জিন’, যা প্রসেসরের কোরের ধরন, ব্যাটারির চার্জের অবস্থা, অন্যান্য অ্যাপের রিসোর্স ব্যবহার ও অ্যাপের ধরন—সব কিছু আমলে নিয়ে সে অনুয়ায়ী প্রসেসিং ক্ষমতা ভাগ করে দেবে। ফলে অ্যাপে ল্যাগ বহুগুণ কমে যাবে।

অপারেটিং সিস্টেমগুলোর সার্ভিসগুচ্ছের মধ্যকার যোগাযোগের ল্যাগও পারফরম্যান্স খারাপ হওয়ার মূল কারণ। হারমনিওএসে সমস্যা কাটিয়ে উঠবে বলে জানিয়েছে হুয়াওয়ে। মাইক্রোকার্নেলের সঙ্গে অন্যান্য হার্ডওয়্যার ড্রাইভার, ফাইল সিস্টেম, নেটওয়ার্ক এবং সিস্টেম সার্ভিসের মধ্যকার যোগাযোগব্যবস্থা সম্পূর্ণ নতুন করে তৈরি করা হবে বলে জানা গেছে।

আর্ক কম্পাইলার
অপারেটিং সিস্টেম তৈরি করে বাজারে আনলেই হয় না, অ্যাপ তৈরির জন্য নির্মাতাদের উৎসাহিত করতে না পারলে সেটি সফলতা পায় না। তার বড় প্রমাণ ব্ল্যাকবেরি ১০ ওএস, উইন্ডোজ ফোন বা আরটি, স্যামসাং টাইজেন বা সেইলফিশওএস। সে সমস্যা সমাধান করতে হুয়াওয়ে তৈরি করেছে ‘আর্ক কম্পাইলার’। তাদের দাবি, অ্যানড্রয়েড অ্যাপের সোর্সকোড সরাসরি হুয়াওয়ে আর্কের মাধ্যমে কম্পাইল করে হারমনিওএসে চালানো যাবে। এর পরও কিছু প্রশ্ন রয়েই যায়, যেমন অ্যানড্রয়েড অ্যাপগুলোর সঙ্গে গুগল অ্যাকাউন্ট ও সেবা গভীরভাবে জড়িত। সেগুলো ছাড়া অ্যাপগুলো ঠিকমতো চলবে কি না, ব্যবহারকারী পূর্ণাঙ্গ অভিজ্ঞতা পাবে কি না। যদি তা না হয়, আর অ্যাপগুলো যদি বেশ পরিবর্তন করা লাগে, তাহলেও নির্মাতারা উৎসাহ হারিয়ে ফেলতে পারে।

হুয়াওয়ের অ্যানড্রয়েড ফোনগুলোতে এর মধ্যেই নিজস্ব অ্যাপ স্টোর আছে। হারমনিওএসও এ সেবাই অ্যাপ প্রকাশ ও পৌঁছে দিতে ব্যবহার করবে বলে ধরে নেওয়া যেতে পারে। এর জন্য লাগবে হুয়াওয়ে অ্যাকাউন্ট,যা কিনা গুগল বা অ্যাপল অ্যাকাউন্টের হুয়াওয়ে সংস্করণও বলা যেতে পারে।

শুরুটা যেভাবে হবে
আপাতত স্মার্টফোন বা ট্যাবলেটে হারমনিওএস ব্যবহারের কোনো পরিকল্পনা নেই হুয়াওয়ের। কেননা হারমনিওএস নিজেদের মনমতো হয়নি এখনো। হারমনিওএস ১.০ সংস্করণে এখনো হারমনিওএস মাইক্রোকার্নেলের পাশাপাশি আছে লিনাক্স কার্নেল এবং হুয়াওয়ের পুরনো প্রজেক্ট লাইটওএস কার্নেল। তবে দ্রুতই হারমনিওএস ২.০ সংস্করণ প্রকাশ করা হবে, সেখানে এগুলো আর থাকবে না। ২০১৭ সাল থেকে হারমনিওএস নিয়ে কাজ শুরু করেছে হুয়াওয়ে। মাত্র দুই বছরে একটি অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে পুরোপুরি দাঁড়িয়ে যাবে, সে আশাও করা যায় না। তবে এ বছর থেকেই হুয়াওয়ের টিভি, স্পিকার, স্মার্টওয়াচের মতো পণ্যে হারমনিওএস দেখা যেতে পারে।

হারমনিওএসকে বারবার ‘ইন্ডাস্ট্রিয়াল’ সিস্টেম হিসেবে অবহিত করেছে হুয়াওয়ে। এতে বোঝা যাচ্ছে, সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য তৈরি ডিভাইসের পাশাপাশি কারখানা এবং অন্যান্য প্রকৌশল কাজেই শুরুতে ব্যবহার করা হবে এটি। ডিসপ্লে ও ইনপুটহীন ইন্টারনেট অব থিংস ডিভাইস, যেমন স্মার্ট লাইট, সিকিউরিটি সিস্টেমেও হারমনিওএস ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। স্মার্টহোম ডিভাইসগুলোতেও দেখা যেতে পারে হারমনিওএস।

ভবিষ্যৎ
মাইক্রোকার্নেল এবং সব ডিভাইসের জন্য তৈরি ডিস্ট্রিবিউটেড অপারেটিং সিস্টেম যে ভবিষ্যৎ, তা হুয়াওয়েরও আগে বুঝতে পেরেছে গুগল। তাদের সম্পূর্ণ নতুন ফিউশা অপারেটিং সিস্টেমও মাইক্রোকার্নেলের ওপরই তৈরি। ফিউশাও এখনো ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত নয়, গুগল কবে নাগাদ কোন ধরনের ডিভাইসে এটি ব্যবহার শুরু করবে, তা নিয়েও কোনো পরিষ্কার বক্তব্য তাদের নেই। তবে ভবিষ্যতে হারমনিওএস এবং ফিউশার মধ্যে লড়াই হবে, তা স্পষ্ট। এখন পর্যন্ত যেসব অপারেটিং সিস্টেম সাধারণ ব্যবহারের জন্য বাজারে আছে, যেমন—লিনাক্সের ডিস্ট্রিবিউশন, ম্যাক বা আইওএস, উইন্ডোজ, অ্যানড্রয়েড—সবই বলা যেতে পারে মনোলিথিক, একটি মূল কার্নেলের সঙ্গে সার্ভিসগুচ্ছ জুড়ে তৈরি। একাধিক আর্কিটেকচার বা নানাবিধ ডিভাইসে এগুলো সহজে মানিয়ে নিতে পারে না। সেখানে গুগলের ফিউশা, হুয়াওয়ের হারমনি এবং আরো কিছু মাইক্রোকার্নেল অপারেটিং সিস্টেম, যেমন কিউএনএক্স ভবিষ্যতে সব ধরনের ডিভাইসের একক অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে নিজের স্থান করে নেবে—এমনটাই বোঝা যাচ্ছে।

মন্তব্য

রিলস দেখতে আর স্ক্রল করতে হবে না, যে আপডেট নিয়ে আসছে ইনস্টাগ্রাম

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
রিলস দেখতে আর স্ক্রল করতে হবে না, যে আপডেট নিয়ে আসছে ইনস্টাগ্রাম
সংগৃহীত ছবি

আজকাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রিলস বা শর্ট ভিডিও অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। শত কাজের মাঝে একটু সময় পেলেই অনেকে ঢুঁ মারেন ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুক কিংবা ইউটিউবে। কিন্তু রিলস দেখতে গেলে বারবার স্ক্রল করতে হয়। তবে এখন থেকে আর তেমনটা স্ক্রল করতে হবে না ইনস্টাগ্রামে।

আরো সহজ হতে চলেছে রিলস দেখা।

কী এই ফিচার

খুব শিগগির রিলসে ‘অটো স্ক্রল’ ফিচার আনছে ইনস্টাগ্রাম। এর ফলে রিলস দেখতে গেলে আর স্ক্রল করতে হবে না। মোবাইল স্ক্রিনে চলতে থাকবে একের পর এক রিলস।

ইতিমধ্যেই আইফোনে এসে গেছে ইনস্টাগ্রামের নতুন এই ফিচার। তবে অ্যান্ড্রয়েড ফোনে কবে আসবে, তা এখনো জানা যায়নি।

আরো পড়ুন
ঘড়ি বাঁ হাতে পরা হয় কেন, ডান হাতে পরলে কী হয়?

ঘড়ি বাঁ হাতে পরা হয় কেন, ডান হাতে পরলে কী হয়?

 

কিভাবে এই ফিচারটি চালু করবেন

‘অটো স্ক্রল’ ফিচারটি চালু করতে গেলে প্রথমে যেকোনো একটি রিলস ওপেন করতে হবে। তারপর ডানদিকে নিচে তিনটি বিন্দু দেওয়া একটি অপশন ক্লিক করতে হবে।

তারপর ‘অটো স্ক্রল’ ফিচারটি চালু করতে হবে। একবার এই ফিচারটি চালু করা হয়ে গেলে রিলস দেখার সময় আর বারবার স্ক্রল করতে হবে না।

সূত্র : সংবাদ প্রতিদিন

মন্তব্য

অ্যানোনিমাস পেজ থেকে গুজব ছড়াচ্ছে বেটিং চক্র

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
অ্যানোনিমাস পেজ থেকে গুজব ছড়াচ্ছে বেটিং চক্র

উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনার পরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে ‘অ্যানোনিমাস মেইন পেজ’ নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে দেওয়া এক স্ট্যাটাস। এই স্ট্যাটাসটি ছিল ২০ জুলাইয়ের। যেখানে দাবি করা হয়, ‘একটি বিদ্যালয়ের বিল্ডিং ধসে পড়বে, অনেক শিশুর প্রাণহানি ঘটবে। এমনটা ঘটবে বিদ্যালয়ের বিল্ডিংয়ের দুর্বল রক্ষণাবেক্ষণের কারণে।

এরপরই সোমবার উত্তরায় মাইলস্টোন কলেজের প্রাইমারি ভবনে বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার পরেই অনেকে দাবি করতে শুরু করেন, হয়তো এই ঘটনার সঙ্গে স্ট্যাটাসের কোনো যোগসাজশ রয়েছে। শুধু তাই নয়, ওই একই পেজ থেকে উত্তরায় বিমান দুর্ঘটনার কিছুক্ষণ পরই অপর এক স্ট্যাটাসে দাবি করা হয়, তারা আগেই সতর্ক করেছিল। একদিন আগেই এমন কিছু ঘটবে, সেটার আগাম বার্তা দিয়েছিল। একের পর এক গুজব ছড়ানো হচ্ছিল পেজটি থেকে।

এছাড়া সোমবার সন্ধ্যায় ওই একই পেজ থেকে আরো একটি স্ট্যাটাসে দাবি করা হয়- বাংলাদেশে আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে একটি বোমা বিস্ফোরিত হবে। এটি হতে পারে কোনো হোটেল কিংবা হাসপাতালে।

মুহূর্তের মধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হুলস্থূল শুরু হয়। অনেকেই তাদের সেই পোস্ট শেয়ার করে এক ধরনের আতঙ্ক-উদ্বিগ্নের কথাও প্রকাশ করেন।

তবে বিষয়টি বেশি দূর গড়ানোর আগেই এই ফেসবুক পেজের মুখোশ উন্মোচন করেছেন আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা এএফপির বাংলাদেশের ফ্যাক্ট-চেকবিষয়ক সম্পাদক কদরুদ্দিন শিশির। 

নিজের ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘অনলাইন জুয়াড়িদেরকে খোদা বানিয়ে ফেলা বন্ধ করুন! আজকের এই দিনে এমন জিনিসে অ্যাটেনশন দিতে হবে তা ভাবাও কষ্টকর। ‘অ্যানোনিমাস মেইন পেজ’ নিয়ে যে হাইপ তোলা হয়েছে, তারপর একটু সময় দিলাম পেইজটার পেছনে। যা পেলাম তা হচ্ছে--- প্রথমত, এটি অ্যানোনিমাস হ্যাকার গ্রুপের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কিছু নয়। অ্যানোনিমাস এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যে ফেসবুক পেইজ দেওয়া আছে সেটি এই পেইজ নয়।

‘দ্বিতীয়ত, ‘অ্যানোনিমাস মেইন পেজ’ নামক পেইজটি ঘেঁটে জানা গেছে, এটি একটি অনলাইন জুয়ার পেইজ। মূলত অনলাইন জুয়া প্রমোট করা (টিকিট বিক্রির), নতুন সদস্য সংগ্রহের জন্য এটি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তারা অনলাইন গেমিং বা জুয়া সংক্রান্ত পোস্ট দিয়ে থাকে। তৃতীয়ত, তাদের যে পোস্ট ভাইরাল হয়েছে ‘স্কুল ভবন ধসে’ পড়া সংক্রান্ত সেটিতে লেখা হয়েছিল: ‘A school building will collapse leaving lots of kids l!veless. We see a terrible disaster fast coming, This will be as a result of poor maintenance on the building. We shall do everything in our power to avert this terrible catastrophe we’ve seen coming.’

‘এখানে কোনোভাবেই বাংলাদেশের নাম উল্লেখ নেই। আর বাংলাদেশে আজ যে ঘটনা ঘটেছে তাতে স্কুল ভবন ধসে পড়েনি। ভবনের ওপর বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। যারা মারা গেছেন কেউ ভবনের ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত কারণে মারা যাননি। মারা গেছেন বিমান বিস্ফোরিত হয়ে লাগা আগুনে। ফলে এটা কোনোভাবেই বলার সুযোগ নেই যে, ওই পেইজে বাংলাদেশের এই ঘটনার ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছিল।’

‘গুজবে আজমসহ কিছু আওয়ামী লীগার তাদের ফেসবুক পেইজগুলোতে এই উপসংহার টানার চেষ্টা করেছেন, যা আসলে মূল পোস্টের সঙ্গে মিলে না। চতুর্থত, এই পেইজটি যে একটি স্ক্যামার জুয়াড়ি গ্রুপ দ্বারা পরিচালিত তা স্পষ্ট হচ্ছে তাদের ওই পোস্টটি বাংলাদেশে ভাইরাল হওয়ার পর থেকে। ভাইরাল হওয়ার প্রথম দিকেও পেইজটির ট্রান্সপারেন্সি সেকশন চেক করে দেখা গেছে এটি ৩টি দেশ থেকে চালানো হয়। এর মধ্যে একটি হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই দ্বীপ, আরেকটি নাইজেরিয়া এবং তৃতীয়ত দেশের নাম এডমিন প্রকাশ করেনি।’ 

‘পোস্ট ভাইরাল হওয়ার পর তাদের পেইজের নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠায় এডমিনদের অবস্থানকারী দেশের তথ্য তারা হাইড করে দিয়েছে। আফ্রিকায় নাইজেরিয়া অনলাইন জুয়াড়িদের আশ্রয়স্থল হিসেবে পরিচিত। জুয়ার প্রমোশনমূলক ওদের একটা পুরনো ভিডিওতে একজন আফ্রিকানকে দেখা গেছে। অর্থাৎ, এটির সঙ্গে নাইজেরিয়ান জুয়াড়িদের কানেকশন থাকার খুবই সম্ভাবনা রয়েছে।’

‘তাদের পোস্টটি ভাইরাল হওয়ার পরে যখন বুঝতে পেরেছে তারা বাংলাদেশিদের অ্যাটেনশন পাচ্ছে (বিকেল থেকে তাদের ফলোয়ার ২ লাখের কাছাকাছি থেকে ৩ লাখের ওপরে উঠেছে) তখন একের পর এক বাংলাদেশ বিষয়ক পোস্ট দেওয়া শুরু করেছে। এবং আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ভয়ঙ্কর কিছু বাংলাদেশের মার্কেটগুলোতে ঘটবে বলেও ভবিষ্যদ্বাণী করেছে। একইসঙ্গে তাদের আরো নানান জুয়ার পেইজ প্রমোট করা শুরু করেছে বাংলাদেশি নতুন ব্যবহারকারীদের লক্ষ্য করে। আহ্বান জানাচ্ছে দ্রুত ফলোয়ার হওয়ার জন্য। এই পেইজটি ফলো করে জানি না কতজন অনলাইন জুয়ায় ঝুঁকে ফতুর হয়। এমনিতেই বাংলাদেশে অনলাইন জুয়া নানানভাবে বাড়ছে।’

মন্তব্য

চলতি সপ্তাহেই আসতে পারে আইওএস ২৬

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
চলতি সপ্তাহেই আসতে পারে আইওএস ২৬
ছবি : অ্যাপল

চলতি বছরের জুন মাসে অ্যাপলের ওয়ার্ল্ডওয়াইড ডেভেলপারস কনফারেন্স (ডব্লিউডব্লিউডিসি) থেকে আইওএস ২৬ ডেভেলপার বিটা প্রকাশ করা হলেও সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য এটি প্রকাশ হয়নি। তবে ব্যবহারকারীদের জন্য সুখবর, গুজব রয়েছে আইওএস ২৬ পাবলিক বিটা এ সপ্তাহেই প্রকাশ হতে যাচ্ছে।

ব্লুমবার্গের প্রতিবেদক মার্ক গুরম্যানের সর্বশেষ পাওয়ার অন নিউজলেটারে এমন তথ্যই জানা গেছে। সেখানে গুরম্যান জানিয়েছেন, আইওএস ২৬ আগামী সপ্তাহে পাবলিক বিটা পর্যায়ে যাবে বলে সব ধরনের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।

এটি আপডেট করা অপারেটিং সিস্টেমটিকে বর্তমানে যে পরিমাণ দর্শক আছে তার চেয়ে অনেক বেশি দর্শকের কাছে নিয়ে যাবে। যদিও এটি প্রকাশের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত নয়, এটি সেপ্টেম্বরে আইফোন ১৭-এর সঙ্গে প্রকাশ হতে পারে।

গত সপ্তাহে এক্সে একটি পোস্টে গুরম্যান বলেছিলেন, আইওএস ২৬ পাবলিক বিটা ২৩ জুলাই বা তার কাছাকাছি সময়ে প্রকাশ হতে পারে। পরবর্তী পাওয়ার অনের তথ্য থেকে মনে হচ্ছে, গুরম্যান সেই সময়ের বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী।

গুরম্যানের প্রতিবেদনে ২০২৬ সালে প্রকাশ হতে যাওয়া আইওএস ২৭ সম্পর্কেও সংক্ষেপে আলোচনা করা হয়েছে। গুরম্যান বিশ্বাস করেন, অ্যাপল ইতিমধ্যেই এই সফ্টওয়্যারটির উন্নয়নকাজ শুরু করেছে, যা অ্যাপলের ভাঁজযোগ্য আইফোনের সঙ্গে আসতে পারে। গুজব রয়েছে যে এটি ২০২৬ সালের শেষ দিকে অথবা ২০২৭ সালের প্রথম দিকে বাজারে আসবে। বাজারে বর্তমান সেরা ভাঁজযোগ্য ফোনগুলোকে ছাড়িয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাপলের এটি প্রথম প্রচেষ্টা।

আইওএস ২৬ ছাড়াও অ্যাপল প্রায় নিশ্চিতভাবেই একই সময়ে ম্যাকওএস ২৬, আইপ্যাড ২৬, ওয়াচওএস ২৬, টিভিওএস ২৬-এর জন্য পাবলিক বিটা ও হোমপ্যাডের অপারেটিং সিস্টেমের জন্য আপডেট প্রকাশ করবে।

আইওএস ২৬ আপগ্রেডটি লিকুইড গ্লাসের নতুন নকশার পাশাপাশি স্প্যাম কল থেকে বর্ধিত সুরক্ষা, নতুন গেমস অ্যাপ, অ্যাপল ইন্টেলিজেন্সের আপডেট ও আরো অনেক কিছুর আমূল পরিবর্তন ও নতুন অনুভূতি নিয়ে আসবে।

সূত্র : টেক রাডার

মন্তব্য

প্রথমবারের মতো এআই দিয়ে তৈরি দৃশ্য ব্যবহার করল নেটফ্লিক্স

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
প্রথমবারের মতো এআই দিয়ে তৈরি দৃশ্য ব্যবহার করল নেটফ্লিক্স
ফাইল ছবি : এএফপি

নেটফ্লিক্স তাদের টেলিভিশন শোতে প্রথমবারের মতো উৎপাদনক্ষম কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় (এআই) তৈরি ভিজ্যুয়াল ইফেক্ট ব্যবহার করেছে।

স্ট্রিমিং জায়ান্টটির সহ-প্রধান নির্বাহী টেড সারান্দোস বলেছেন, ‘আর্জেন্টিনার বিজ্ঞান কল্পকাহিনি শো ‘দি এটারনাউট’ একটি ভবন ধসের দৃশ্য তৈরি করতে প্রম্পটের ওপর ভিত্তি করে এআই দিয়ে তৈরি ভিডিও ও ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। এ প্রযুক্তি প্রযোজনা দলকে দ্রুত ও কম খরচে দৃশ্য সম্পন্ন করতে সাহায্য করেছে।’

অন্যদের কাজ ব্যবহার করে তাদের সম্মতি ছাড়াই কনটেন্ট তৈরি করায় ও মানুষের কাজ প্রতিস্থাপন করার আশঙ্কায় বিনোদন শিল্পে উৎপাদনক্ষম কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার বেশ বিতর্কিত।

 

সারান্দোস এমন একটি সময়ে এ মন্তব্য করলেন যখন, জুন মাসের শেষ পর্যন্ত তিন মাসে নেটফ্লিক্সের আয় গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১১ বিলিয়ন ডলার হয়েছে বলে ঘোষণা করা হয়েছে। তাদের মুনাফা ২.১ বিলিয়ন ডলার থেকে বেড়ে ৩.১ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।

‘দি এটারনাউটে’ ব্যবহৃত জেনারেটিভ এআই প্রযোজনা দলকে বুয়েনস এইরেসে ভবনধসের একটি দৃশ্য স্বাভাবিকের চেয়ে ১০ গুণ দ্রুত সম্পন্ন করতে সাহায্য করেছে বলে জানিয়েছে সারান্দোস।

সারান্দোস বলেন, ‘এটি আসলে পর্দায় প্রদর্শিত নেটফ্লিক্সের একটি অরিজিনাল সিরিজ বা ছবিতে প্রথম এআই তৈরি দৃশ্য।

তাই নির্মাতারা এর ফলাফলে রোমাঞ্চিত।’

২০২৩ সালে হলিউড ধর্মঘটের সময় উত্থাপিত প্রধান উদ্বেগগুলোর মধ্যে এআই ছিল অন্যতম। তিন মাসের ওই ওয়াকআউটের সময় স্ক্রিন অ্যাক্টরস গিল্ড-আমেরিকান ফেডারেশন অব টেলিভিশন অ্যান্ড রেডিও আর্টিস্টস ইউনিয়ন এআই ব্যবহারের ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণের আহ্বান জানিয়েছিল।

চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রির অনেকেই এআইকে শিল্পের জন্য অবমাননাকর বলে অভিহিত করেছেন।

সিঙ্গাপুর অ্যানিমেশন স্টুডিও ক্রেভএফএক্সের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ডেভিয়ার ইউন বলেছেন, ‘নেটফ্লিক্সের এআই গ্রহণ কোনো আশ্চর্যের বিষয় নয়, কারণ অন্য বড় স্টুডিওগুলোও প্রযুক্তিটিকে স্বাগত জানাচ্ছে। এটা সময়ের ব্যাপার বলে মনে হচ্ছে। এআই অবশ্যই ছোট স্টুডিওগুলোকে বড় বাজেটের ভিজ্যুয়াল তৈরির সুযোগ করে দেওয়ার দরজা খুলে দিচ্ছে। তবে অবশেষে এআই নয়, শিল্পীই সিদ্ধান্ত নেন চূড়ান্ত ছবিতে কী থাকবে।’

সূত্র : বিবিসি

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ