<p style="text-align:justify">প্রেক্ষাগৃহের পর সদ্যই ওটিটি প্লাটফর্ম হইচইতে মুক্তি পেয়েছে ওপার বাংলার <em><strong>টোটা রায়চৌধুরী</strong></em> অভিনীত সিনেমা ‘চালচিত্র’। প্রতীম ডি গুপ্ত পরিচালিত এ সিনেমায় তিনি অভিনয় করেছেন একজন গোয়েন্দা পুলিশ অফিসার চরিত্রে। কলকাতা থেকে এই অভিনেতা কথা বলেছেন কালের কণ্ঠ বিনোদনের সঙ্গে। সিনেমা, ক্যারিয়ার, স্বপ্ন ও তার আদ্যোপান্ত শুনেছেন <em><strong>ইমরুল নূর</strong></em>।</p> <p style="text-align:justify"><strong>কালের কণ্ঠ : সদ্য মুক্তি পাওয়া সিনেমাটি দিয়েই কথা শুরু করতে চাই। ‘চালচিত্র’-এ আপনি একজন পুলিশ অফিসারের চরিত্রে অভিনয় করেছেন। সিনেমা কিংবা এই চরিত্রটি থেকে আপনার প্রাপ্তি কী?</strong></p> <p style="text-align:justify"><strong>টোটা রায়চৌধুরী :</strong> অনেক কিছু পেয়েছি সিনেমাটি থেকে। সেগুলো যদি এক এক করে বলি তা হচ্ছে, প্রথমবারের মতো এই পরিচালকের (প্রতীম ডি গুপ্ত) সঙ্গে কাজ করেছি। এর আগে দুবার কাজের প্রস্তাব এলেও শিডিউল ইস্যুর কারণে আমাদের একসঙ্গে কাজ করা হয়নি। ওর ছবি, কাজ করার ধরন, ওর সেন্সিবিলিটি আমার ভীষণ ভালো লাগে। তাই এবার যখন সুযোগটা এলো আর দেরি না করে হ্যাঁ বলে দিই। গল্পটা আমি জানতাম, কিন্তু স্ক্রিপ্ট পড়ার পর এটা আমাকে খুব আকর্ষণ করেছে। মনে হয়েছে, যদি এই চরিত্রটা না করি তাহলে অনেক বড় মিস হয়ে যাবে।</p> <p style="text-align:justify">দ্বিতীয় প্রাপ্তি হচ্ছে, খুব ভালো ভালো শিল্পীদের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা হয়েছে। বিশেষ করে এমন একজনের কথা না বললেই নয়, যিনি ইতিমধ্যেই আমাদের সবার প্রিয় হয়ে উঠেছেন, তিনি আপনাদের অপূর্ব (জিয়াউল ফারুক অপূর্ব)। এর পর বলব, যখন আমাদের সিনেমাটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় তখন এখানে আরো চারটি সিনেমা চলছিল। আমরা খুব অল্প সংখ্যক হলে সিনেমাটি রিলিজ করেছিলাম। দর্শক সেটি পছন্দ করতে শুরু করে। এরপর তারা বলছিল, সিনেমাটি না দেখলে দর্শকরা মিস করবেন। তারপর তারা আখ্যাও দেন, এই ছবিটা ২০২৪-এর সেরা বাংলা ক্রাইম থ্রিলার সিনেমা। দর্শকের এমন ভালোবাসার চেয়ে বড় প্রাপ্তি আর কী হতে পারে!</p> <p style="text-align:justify"><strong>কালের কণ্ঠ : সিনেমাটিতে আপনার সবচেয়ে স্মরণীয় মুহূর্ত কী ছিল?</strong></p> <p style="text-align:justify"><strong>টোটা রায়চৌধুরী :</strong> পর্দায় অপূর্ব এবং আমি প্রতিপক্ষ। সেই দৃশ্য শুট করার আগে যখন আমরা মেকআপ ভ্যানে বসে দুজন দুজনের সম্পর্কে জানা এবং অল্প সময়ের মধ্যে হৃদ্যতা গড়ে ওঠে। শুটের আগে আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ আড্ডা আর একটু পরই ক্যামেরার সামনে গিয়ে দুজনের ঠান্ডা যুদ্ধ; এটা আমার কাছে খুব ইন্টারেস্টিং লেগেছে। আমরা দুই রাত শুট করেছিলাম। ওই মুহূর্তটাই ভালো লেগেছে।</p> <p style="text-align:justify"><strong>কালের কণ্ঠ : খুব সম্ভবত এই সিনেমাটির সিক্যুয়েল আসতে চলেছে সামনে। সেটি সম্পর্কে জানতে চাই...</strong></p> <p style="text-align:justify"><strong>টোটা রায়চৌধুরী :</strong> আমাদের সবার এবং পরিচালকের মনে হয়েছে যে খুব ইন্টারেস্টিং একটা সিক্যুয়েল হতে পারে। এটা অবশ্যই হবে, তবে প্রিক্যুয়েল এবং সিক্যুয়েল একইসঙ্গে হবে। আপাতত গল্প লেখার কাজ চলছে। এ বছরের শেষের দিকে আমাদের শুটিংয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা আছে।</p> <p style="text-align:justify"><strong>কালের কণ্ঠ :</strong> অপূর্ব সম্পর্কে জানতে চাইব। এই সিনেমাতে কাজ করার আগে থেকে তাকে চিনতেন? </p> <p style="text-align:justify"><strong>টোটা রায়চৌধুরী :</strong> অপূর্বর কথা শুনেছিলাম আমার বন্ধু ঋষি কৌশিকের কাছে। সে বলেছিল যে, অসম্ভব ভালো অভিনেতা। এর পর ইউটিউবে আমি তার কিছু কাজ দেখেছি। আমি বলি, বাহ! কী সুন্দর পার্সোনালিটি, অসম্ভব সুন্দর কণ্ঠ, তার অভিনয়। পরে যখন প্রতীম আমাকে জানায় যে, এই ছবিতে অপূর্ব কাজ করছে। শুনে আমি বলি, বাহ, দারুণ।</p> <p style="text-align:justify">নামের মতোই সে অপূর্ব অভিনেতা এবং মানুষ। এ দুটোর সমন্বয় খুব কম মানুষের মধ্যেই পাওয়া যায়, কিন্তু ওর মধ্যে দুটোই আছে। এই ছবিতে ওর চরিত্রটা এক্সটেন্ডেড ক্যামিও হলেও সে খুবই দুর্দান্ত করেছে। এই ছবিটির জন্য আপনারা ওর কতটুকু প্রশংসা শুনতে পাচ্ছেন জানি না, কিন্তু এখানে সবাই ওর অভিনয়ের প্রশংসা করছে। ও তো রোমান্টিক ইমেজের অভিনেতা, সেটা থেকে বেরিয়ে অন্য জনরায় এসে কাজ করেছে এবং সবার মন জয় করে নিয়েছে।</p> <p style="text-align:justify"><strong>কালের কণ্ঠ : বাংলাদেশে পছন্দের শিল্পী, নির্মাতা কারা? কার কার কাজ দেখা হয় আপনার?</strong></p> <p style="text-align:justify"><strong>টোটা রায়চৌধুরী :</strong> শিল্পীদের কথা বলতেই পারি। এপারে জয়া আহসানের সঙ্গে কাজ করেছি আমি। কলকাতায় জয়ার প্রথম সিনেমার হিরো আমিই ছিলাম, সিনেমাটির নাম ছিল আবর্ত। ভীষণ সেন্সিবল অ্যাক্টর, ভীষণ মিষ্টি ব্যবহার। ওর সঙ্গে কাজ করে খুব ভালো লেগেছিল। কিছু কিছু শিল্পীর সঙ্গে কাজ করতেও ভালো লাগে যার সঙ্গে খুব সহজেই কোলাবোরেট করা যায়। জয়াও ঠিক তেমনই। সৃজিত মুখার্জির একটি ছবিতে বাঁধনের (আজমেরী জক বাঁধন) কাজ দেখেছি, ভালো লেগেছে। এরপর চঞ্চল চৌধুরী রয়েছে। এরকম আরো অনেকেই আছেন।</p> <div style="text-align:center"> <figure class="image" style="display:inline-block"><img alt="Imrul Noor-Tota Roy Choudhury-Kaler Kantho" height="521" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/online/2025/Imrul Noor/Imrul Noor-Tota Roy Choudhury-Kaler Kantho.jpg" width="1167" /> <figcaption>টোটা রায়চৌধুরীর সঙ্গে আলাপকালে কালের কণ্ঠের বিনোদন প্রতিবেদক </figcaption> </figure> </div> <p style="text-align:justify"><strong>কালের কণ্ঠ : টলিউডের পাশাপাশি বলিউডেও কাজ করছেন। আবার দক্ষিণী সিনেমাতেও দেখা গেছে। শুধু ঢালিউডে অর্থাৎ বাংলাদেশে কোনো কাজ করা হয়নি আপনার...</strong></p> <p style="text-align:justify"><strong>টোটা রায়চৌধুরী :</strong> আমি তো কাজ করতে চাই, এক পায়ে খাড়া। বাংলাদেশে এত ভালো ভালো নির্মাতারা আছেন, অভিনয়শিল্পী আছেন; আমি অবশ্যই তাদের সঙ্গে কাজ করতে চাই। আমি আপনার (এই প্রতিবেদক) মাধ্যমে সবাইকে বার্তা পাঠাচ্ছি, কেউ যদি আমাকে সুযোগ দেন তাহলে অবশ্যই কাজ করতে রাজি আছি।</p> <p style="text-align:justify"><strong>কালের কণ্ঠ : গত বছরে বাংলাদেশ থেকে ‘গুলমোহর’ নামে একটি সিরিজে কাজের জন্য প্রস্তাব গিয়েছিল আপনার কাছে। সেটি কেন ফিরিয়ে দিয়েছিলেন?</strong></p> <p style="text-align:justify"><strong>টোটা রায়চৌধুরী :</strong> হ্যাঁ, সৈয়দ শাওকীর কাছ থেকে প্রস্তাব এসেছিল। ও কলকাতায় এসেছিল, তখন কাজটি নিয়ে কথা হয়েছিল। ও ভেরি শার্পড, টেলেন্টেড। ওর কাজ দেখেছি, বেশ প্রমিসিং মনে হয়েছে আমার কাছে। ওর কাজ আমার ভীষণ পছন্দ। সামহাউ ডেট এবং প্রসেস ওরিয়েন্টেড একটা সমস্যা হয়ে যায়। যার কারণে দুর্ভাগ্যবশত কাজটা আমি করতে পারিনি। ও অনেক বুদ্ধিমান নির্মাতা, ওর চিন্তাভাবনা আন্তর্জাতিক স্তরের। আমরা শিল্পীরা এমন পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করতে চাই যাদের চিন্তাভাবনা আমাদেরকে অনুপ্রাণিত করে একটা অন্য স্তরে উন্নীত করতে পারে। সে হচ্ছে সে ধরনের পরিচালক। আমি ভীষণভাবে চাই ওর সঙ্গে কাজ করতে।</p> <p style="text-align:justify"><strong>কালের কণ্ঠ : কোনো কাজ চূড়ান্ত করার ক্ষেত্রে কোন বিষয়টিকে প্রাধান্য দেন বেশি? পারিশ্রমিক, গল্প নাকি আপনার চরিত্রের ব্যাপ্তি?</strong></p> <p style="text-align:justify"><strong>টোটা রায়চৌধুরী :</strong> প্রথমে আমার কাছে গণ্য হবে গল্প। তারপর এর পরিচালক। এর পর আমার চরিত্রটা। দেখুন, অনেকেই হয়তো বলে যে, সব ধরনের চরিত্রে অভিনয় করতে পারব। সত্যি করে বলছি, সব ধরনের চরিত্র করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। এত বছরের অভিজ্ঞতা থেকে বুঝে গেছি যে, কোন চরিত্রটা করতে পারব আর কোনটা পারব না। দেখি চরিত্রটাকে জাস্টিফাই করতে পারব নাকি মুখ থুবড়ে পড়ব। এরপর অর্থাৎ সবশেষে দেখি পারিশ্রমিক। পারিশ্রমিক অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু তার ঊর্ধ্বে একজন শিল্পী হিসেবে আমার দরকার সেটাই যেটা আমাকে শিল্পী হিসেবে উন্নীত করবে। আর সেটা একটা ভালো গল্প, পরিচালক, চরিত্র ছাড়া সম্ভব হবে না।</p> <p style="text-align:justify"><strong>কালের কণ্ঠ : বলিউড থেকে শুরু করে টলিউড, ঢালিউডে একটা নতুন প্রথা চলছে। সিনেমায় তারকা শিল্পীদের ক্যামিও। প্রটাগনিস্টের বাইরে আপনাকেও ক্যামিও চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা গেছে। আমার প্রশ্ন হচ্ছে, একজন অভিনয়শিল্পী হিসেবে তখন আপনি কোন বিষয়টা চিন্তা করেন কিংবা কী ভেবে সিদ্ধান্ত নেন যে এটার ক্যামিও করা যায়?</strong></p> <p style="text-align:justify"><strong>টোটা রায়চৌধুরী :</strong> আমি ক্যামিওটা তখনই করি যখন পরিচালকের সঙ্গে আমার সম্পর্কটা মধুর হয়। এই চরিত্রটার ব্যাপ্তি এত ছোট হয়, সেই পরিচালকের ওপর সেই বিশ্বাস, তার কাজ সম্পর্কে সম্যক ধারণা না থাকলে আমি সেটা নাও পারতে পারি। কিছু কিছু চরিত্র আছে যেগুলো পড়ে বোঝা যায়। যেমন- চালচিত্রে অপূর্বের চরিত্রটা এখানে এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে, ওর চরিত্রটা ফেলে দিলে স্ক্রিপ্টটাই কোথাও দাঁড়াবে না। একটা আদর্শ ক্যামিও করার পরিস্থিতি হচ্ছে এই ধরনের গল্পগুলো।</p> <p style="text-align:justify"><strong>কালের কণ্ঠ : যদি ভুল না করি, আপনার সেনাবাহিনীতে যুক্ত হয়ে দেশের সেবা করার ইচ্ছে ছিল। এরপর সিনেমাতেই কেন আসা হলো এবং কীভাবে?</strong></p> <p style="text-align:justify"><strong>টোটা রায়চৌধুরী :</strong> আমি বোর্ডিং স্কুলে পড়ে বড় হয়েছি, খুব স্ট্রিক্ট লাইফ লিড করেছি। আমার যে ধরনের মানসিকতা, সেনাবাহিনী হচ্ছে সেরকম জায়গা যেখানে আমি যথার্থ কদর পেতে পারি। সেই প্রস্তুতি নিতে নিতেই আমার কাছে ছবির সুযোগ এলো। আর সেই সুযোগটাও এলো সেসময়ের নামজাদা পরিচালক প্রভাত রায়ের কাছ থেকে। তিনি আমাকে ডেকে কাজ দেন। যদিও সেটা ক্যামিও চরিত্রই ছিল। তখন আমি ফার্স্ট ইয়ার থেকে সেকেন্ড ইয়ারে উঠছি। শীতের ছুটি। দশ-বারো দিনের একটা কাজ, তার জন্য আবার পারিশ্রমিকও পাব, আনন্দও হবে। সেসব ভেবেই কাজটি করলাম। এরপর অঞ্জন চৌধুরী আমাকে ডেকে একটা কাজ দেন। একটার পর একটা কাজ করতে করতে কখন যে বয়সসীমা পেরিয়ে গেলাম আর খেয়াল নেই। এখনো কাজ করতেই আছি।</p> <p style="text-align:justify"><strong>কালের কণ্ঠ : প্রায় তিন দশকেরও বেশি সময়ের ক্যারিয়ার আপনার। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে এমন কোনো চরিত্র রয়েছে কি, যা আপনি করতে চান কিন্তু এখনো পাননি?</strong></p> <p style="text-align:justify"><strong>টোটা রায়চৌধুরী :</strong> আমার একটা স্বপ্নের চরিত্র ছিল ফেলুদা। সেটা আমি করে নিয়েছি। এর পর আমার আর কোনো চাহিদা নেই। এখন এমন একটা মুহূর্তে আমরা বাস করছি সেখানে স্বপ্ন না দেখে যদি সেটা পরিচালকের ওপরে ছেড়ে দেই তাহলে মনে হয় লাভটা বেশি হবে। আমি যখন কাজ শুরু করেছিলাম তখন অভিনেতাদের একটা সময় পর্যন্ত প্রায় একটা নির্দিষ্ট চরিত্রে অভিনয় করে যেতে হতো। যিনি হিরো করতেন তিনি হিরোই করতেন, ভিলেন ভিলেনই করতেন। তাদের নিয়ে তেমন কোনো এক্সপেরিমেন্ট করা হতো না। তাদেরকে সে সুযোগটাও দেওয়া হয়নি। তারাও হয়তো সে আক্ষেপ নিয়েই অবসরে চলে গেছেন। আমরা সত্যি ভাগ্যবান যে, এখন অভিনেতাদেরকে অনেক অনেক চরিত্রে দেখার সুযোগ আছে। দর্শকও এখন অনেক বেশি গ্রহণ করতে সক্ষম হচ্ছেন। এর জন্য এই সময়ে আমি আর কোনো স্বপ্ন দেখি না। পরিচালকের ভিশনে যদি ফিট হতে পারি, তার মতো করে যদি অভিনয় করতে পারি সেটাই আমার কাছে যথেষ্ট।</p> <p style="text-align:justify"><strong>কালের কণ্ঠ : নায়ক নাকি অভিনেতা, নিজেকে কোনটা বলতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন?</strong></p> <p style="text-align:justify"><strong>টোটা রায়চৌধুরী :</strong> অবশ্যই অভিনেতা। যখন আমার নায়ক হওয়ার বয়স ছিল তখন নেগেটিভ চরিত্রে অভিনয় করেছি। আবার টেলিভিশনেও অভিনয় করেছি। যারা ট্র্যাডিশনালি নায়ক হন তারা নায়কোচিত চরিত্রেই সিনেমা করে যান। আমি তখনও নিজেকে নিয়ে একটু এক্সপেরিমেন্ট করার চেষ্টা করতাম, আর সে কারণেই হয়তো এত বছর ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে গেছি।</p> <p style="text-align:justify"><strong>কালের কণ্ঠ : সবশেষ প্রশ্ন। আপনি ঋতুপর্ণ ঘোষের পরিচালনায় ‘চোখের বালি’ সিনেমাতে কাজ করেছিলেন, যেখানে আপনার বিপরীতে ছিলেন বিশ্বসুন্দরী ঐশ্বরিয়া রায়। তাদের দুজনের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে একটু জানতে চাই...</strong></p> <p style="text-align:justify"><strong>টোটা রায়চৌধুরী :</strong> ঋতু দা (ঋতুপর্ণ ঘোষ) আমার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন। উনি যদি আমার জীবনে না আসতেন, আমার ক্যারিয়ার হয়তো অন্যদিকে চলে যেত। তিনি তখন আমাকে বিশ্বাস করতেন যখন আমার নিজের ওপর নিজের বিশ্বাস ছিল না। তিনি যখন আমাকে চরিত্রটা দিচ্ছিলেন, আমার বিশ্বাস হচ্ছিল না। বলেছিলাম, আমি কি পারব? তখন তিনি বলেছিলেন, আমার কাছে মনে হয়েছে বলেই তোকে দিচ্ছি, নয়তো আমার কাছে চরিত্রটির জন্য লোকেদের লাইন ধরে আছে। তখন আমার এত নামও হয়নি। ঋতু দার কাছে অনেকেই তখন আমার নামে নেগেটিভ মন্তব্য করতেন যে, ও পারবে না। কিন্তু ঋতু দা সেসবে কান দেননি, তিনি আমাকে দিয়েই কাজটি করিয়ে নিয়েছেন। এটাই হচ্ছে বড় পরিচালকদের দর্শন। আমি অনেক কিছু শিখেছি উনার কাছে।</p> <p style="text-align:justify">আর ঐশ্বরিয়া রাইয়ের কথা যদি বলি, সেসময়ে তিনি একদম পিক, ভারতবর্ষের এক নম্বর নায়িকা। এত রূপসী মানবী আমি জীবনে কখনো দেখিনি। তিনি ছিলেন একদম নিঁখুত সুন্দরী। আমার সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছিল তার ব্যবহার। অনেক রূপসী নারী দেখেছি যাদের দম্ভে মাটিতে পা পড়ে না। তিনি একেবারেই তার উল্টো ছিলেন। খুব বেশি মিশুক ছিলেন না, কিন্তু কেউ উনার সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি সময় বের করে কথা বলতেন, সুন্দর ব্যবহার করতেন। সিনেমাটির জন্য আমাদের সময় ছিল ৫ মাস। প্রত্যেক মাসে দশ দিন করে শিডিউল ছিল। উনি পঞ্চাশ দিন কাজ করেছেন। মানুষের শিল্পসত্তা মরে যাবে কিন্তু তার ব্যবহারটা রয়ে যাবে।  বাইশ বছর পার হয়ে গেছে কিন্তু এখনো উনার ব্যবহারটা আমার মনে আছে।</p>