<p>আজ অভিনেতা আবদুল কাদেরের মৃত্যুবার্ষিকী। তিন বছর আগে না-ফেরার দেশে চলে যান ‘কোথাও কেউ নেই’ নাটকের মাধ্যমে বিপুল জনপ্রিয়তা পাওয়া এই অভিনেতা। তবে ‘কোথাও কেউ নেই’ নাটকের আগে থেকেই তিনি নাটকের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পাশাপাশি বিভিন্ন বিজ্ঞাপন চিত্রসহ বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেন তিনি। দাদার পাশাপাশি কিছুদিন হলো তাঁর নাতনি সিমরিন লুবাবা জনপ্রিয়তা পায়। মূলত তাঁর হাত ধরেই লুবাবার বিনোদন মাধ্যমে আগমন। তারপর চলচ্চিত্র ও বিজ্ঞাপন চিত্রে দেখা গেছে লুবাবাকে।</p> <p>দাদার মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁকে স্মরণ করে দীর্ঘ এক পোস্ট দিয়েছে এই শিশু অভিনেত্রী। সে লিখেছে, ‘ডিসেম্বর মানেই আমাদের জীবনে আনন্দ-বেদনার স্মৃতি ফিরে আসা। ২০২০ সালের আগ পর্যন্ত ডিসেম্বর ছিল আমাদের পরিবারের কাছে শুধুই আনন্দের উপলক্ষ। কারণ ১৯৭১ সালে দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে এ দেশের বীর যোদ্ধারা আমাদের জন্য স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন। আমরা পেয়েছিলাম স্বাধীন একটি দেশ। প্রতিবছর ১৬ ডিসেম্বর আমরা বিজয় দিবস উদযাপন করতাম। ২০২০ সালের আগ পর্যন্ত প্রতিবছর সেই উদযাপনে আমার পুরো পরিবার একসাথে থাকত। আমাদের মধ্যমণি হতেন আমার দাদাভাই। তারপর এক ঝড়ে সব এলোমেলো হয়ে গেল। সেই ঝড়ের পর থেকে প্রতিবছর ডিসেম্বর আসে আমাদের জীবনে আনন্দ আর বেদনা নিয়ে। বিজয় দিবস মানেই আমাদের আনন্দ আর বিজয় দিবসের ঠিক ১০ দিন পর ২৬ ডিসেম্বর আমাদের জন্য অত্যন্ত বেদনার। ২০২০ সালের ২৬ ডিসেম্বর আমরা হারিয়েছিলাম আমাদের পরিবারের সবচেয়ে আলোকিত মানুষ, সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য মানুষ, সবচেয়ে প্রিয় মানুষ, আমার দাদা শ্রদ্ধেয় আব্দুল কাদেরকে। আজ আরো একটি ২৬ ডিসেম্বর চলে যাচ্ছে। তিন বছর আগে আজকের এই দিনে আমার দাদা ভাই সবাইকে কাঁদিয়ে না-ফেরার দেশে চলে গিয়েছিলেন।’</p> <p> সে আরো লেখে, ‘…আমি জানি আপনাদের অনেকেই আমাকে ভালোবাসেন, স্নেহ করেন। ভালোবাসেন আর স্নেহ করেন বলেই নানা সময়ে আমার ভুল হলে সেগুলো নিয়ে সমালোচনা করেন এবং আমাকে শুধরে দিতে চেষ্টা করেন। সে জন্য আমি অবশ্যই আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আপনাদের কাছে আমি ঋণী। প্রতিনিয়ত আমাকে আপনারা যেভাবে সাপোর্ট দিয়ে যাচ্ছেন তা সত্যিই প্রশংসনীয়। আমাদের খুব ইচ্ছে আছে দাদার স্মৃতির উদ্দেশ্যে একটি স্মারকগ্রন্থ প্রকাশ করার। আমরা জানি না কার সাথে দাদার কেমন স্মৃতি আছে। জানি না দাদাকে নিয়ে আপনাদের কার কী লেখার আছে। আপনারা যারা সরাসরি দাদার সাথে পরিচিত ছিলেন এবং তার সাথে আপনাদের স্মৃতি আছে আমরা চাই আপনারা আমার দাদার সাথে থাকা সেই সব স্মৃতিকথা লিখুন। এবং যাদের সাথে দাদার পরিচয় না থাকলেও দাদাকে ভালোবাসতেন, পছন্দ করতেন তারাও দাদাকে নিয়ে লিখতে পারেন। আমরা সেই সব লেখা একত্র করে একটি স্মারকগ্রন্থ প্রকাশ করতে চাই। যাদের লেখা সেই গ্রন্থে স্থান পাবে তাদের নিয়ে একটি অনুষ্ঠান করে গ্রন্থটির মোড়ক উন্মোচনের আয়োজনও করতে চাই।’</p> <p>লুবাবা জানায়, তার দাদা প্রয়াত আব্দুল কাদের ভাষা আন্দোলনের আগের বছর ১৯৫১ সালের ১ এপ্রিল পূর্ব পাকিস্তানের মুন্সীগঞ্জ জেলার টঙ্গিবাড়ী উপজেলার সোনারং গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাঁর পিতার নাম ছিল আবদুল জলিল এবং মাতার নাম ছিল আনোয়ারা খাতুন। তিনি সোনারং হাই স্কুল ও বন্দর হাই স্কুল থেকে এসএসসি, ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে বিএ অনার্স ও এমএ করেছিলেন।</p>