<p style="text-align:justify">ফরিদপুরের সালথায় জুমার বয়ানে আওয়ামী লীগ সরকারের জুমুল-নির্যাতন নিয়ে কথা বলায় হাফেজ মাওলানা মুজাহিদুল হক (৩৫) নামের এক ইমামকে চাকরিচ্যুতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার মাঝারদিয়া ইউনিয়নের মুরাটিয়া গ্রামের মধ্যপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় বইছে।</p> <p style="text-align:justify">স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মধ্যপাড়া জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মাঝারদিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান মো. আফছার মাতুব্বরের ছেলে মো. স্বপন মাতুব্বর। শেখ হাসিনার পতনের পর গত ৯ আগস্ট শুক্রবার জুমার নামাজের বয়ানে মুজাহিদুল হক আওয়ামী লীগ সরকারের জুলুম-নির্যাতন নিয়ে কথা বলেন। এ সময় সভাপতির সমর্থকরা ইমামের বয়ানে বাধা দেন। পরে নামাজ শেষে সভাপতি ইমামকে মসজিদ থেকে বের করে দেন।</p> <p style="text-align:justify">মঙ্গলবার বিকেলে ভুক্তভোগী মুজাহিদুল হক কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘মুরাটিয়া মধ্যপাড়া জামে মসজিদে আট মাস ধরে ইমামতি করছি। গত ৯ আগস্ট জুমার বয়ানে জালিমের জুলুম-নির্যাতনের পরিণাম কী হয়, তা নিয়ে কথা বলি। সেই সঙ্গে ২০১৩ সালের ৫ মে ঢাকার শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হামলার বিষয়টি তুলে ধরি। এ সময় কালাম নামের এক মুসল্লি বয়ানে বাধা দেন। তখন আরেক মুসল্লি আমার পক্ষে দাঁড়ালে তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন মসজিদের সভাপতি। পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় আমি বয়ান বন্ধ করে দিই। এক পর্যায় নামাজ শেষে সভাপতি আমাকে চাকরি ছেড়ে চলে যেতে বলেন। এরপর আমি চলে এসেছি।’</p> <p style="text-align:justify">তিনি দুঃখ প্রকাশ করে আরো বলেন, ‘বর্তমান সমাজে সত্য কথা বলারও ক্ষমতা নেই আমাদের। সত্য কথা বললেই পেটে লাথি দিতে চায় সবাই।’</p> <p style="text-align:justify">এ বিষয়ে জানতে মসজিদের সভাপতি মো. স্বপন মাতুব্বরের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। এমনকি তার ফোন নম্বরও বন্ধ পাওয়া যায়। </p> <p style="text-align:justify">তবে স্বপনের বাবা মাঝারদিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান মো. আফছার মাতুব্বর কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ইমাম সাহেব ধর্মীয় বয়ান বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কথা বলতেছিলেন। পরে পোলাপান ঝামেলা বাধালে তিনি চলে যান। আমরা তাকে চাকরিচ্যুত করিনি। তিনি নিজেই চলে গেছেন। এখন আমরা ভালো একজন ইমাম রাখব।’</p> <p style="text-align:justify">এদিকে এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অনেক আলেম ও সাধারণ জনতা পোস্ট দিয়েছেন। সালথা মডেল মসজিদের ইমাম মুফতি রবিউল ইসলাম তার ফেসবুক পোস্টে লিখেন, ‘মুরাটিয়া মধ্যপাড়া জামে মসজিদের ইমামকে জোরপূর্বক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত মসজিদ কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে ধর্মপ্রাণ তাওহিদি জনতা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করুন।’</p> <p style="text-align:justify">বেলায়েত হোসেন নামের একজন ইসলামিক লেখক তার ফেসবুক পোস্টে  লেখেন, ‘জুলুমের বিরুদ্ধে কথা বলায় ইমামকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট মসজিদের সভাপতি নাকি হুমকি দিয়ে বলেছেন, যেসব আলেম এসব নিয়ে কথা বলবেন তাদের বিলের পানিতে ডোবাবেন। সালথার মতো আলেম অধ্যুষিত এলাকায় মসজিদের সভাপতির এমন আচরণ কেন?’</p>