<p>জামালপুর জেলা কারাগারে কারাবন্দিরা বিদ্রোহ করে বের হওয়ার চেষ্টা করার সময় কারারক্ষীদের গুলিতে ছয়জন বন্দি নিহত হয়েছে। নিহতদের লাশ জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। ঘটনাটি গতকাল বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) ঘটলেও মৃত্যুর বিষয়টি আজ শুক্রবার (৯ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে জানাজানি হয়।</p> <p>জানা যায়, গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে কারাবন্দিরা বিদ্রোহ করে পালানোর চেষ্টা করে। এ সময় কারারক্ষীরা গুলিবর্ষণ শুরু করেন। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরাও উপস্থিত হন। বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত চলে গুলিবর্ষণ। পরে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে। এরপর কারাগারের ভেতরে সেনাবাহিনীসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অ্যাম্বুল্যান্স নিয়ে ভেতরে ঢোকেন। এ সময় কোনো গণমাধ্যমকর্মীদের আশপাশে যেতে দেওয়া হয়নি।‌</p> <p>নিহতরা হলেন- মো. আরমান, রায়হান, শ্যামল, ফজলে রাব্বি বাবু, মো. জসিম মিয়া ও রাহাত। তাদের সবার বাড়ি জামালপুর সদর উপজেলায়। এ ঘটনায় কারারক্ষীসহ ১৮ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ। আহতদের মধ্যে পাঁচজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।</p> <p>কারাগার সূত্রে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গ্রেপ্তার শিক্ষার্থী ও রাজনৈতিক মামলার বন্দি আসামিরা গত কয়েক দিনে তারা কারাগার থেকে মুক্ত হয়েছে। অন্য মামলার আসামিরা কারাগারে বন্দি রয়েছে। সেই বন্দি আসামিরা দুই ভাগে বিভক্ত হয়। তাদের একটি পক্ষ মুক্তির জন্য বিদ্রোহ করে। তারা দুই পক্ষ মারামারি শুরু করে। পরে ওই বিদ্রোহী পক্ষ প্রথম গেট ভেঙে কারাগার থেকে বের হয়ে আসে এবং দ্বিতীয় গেট খুলে দেওয়ার জন্য জেলার আবু ফাতাহসহ কারারক্ষীদের অপর আক্রমণ করে এবং গেট খুলে দেওয়ার জন্য বলে। গেট খুলে দিতে অস্বীকৃতি জানালে বিদ্রোহীরা তার ওপর আক্রমণ এবং মারধর করে। পরে বন্দিদের একটি পক্ষের সহায়তায় জেলার কারাগার থেকে বের হয়ে এলেও ১০ জন কারারক্ষী আটকা পড়েন। এ সময় বিদ্রোহী কারাবন্দিরা গেটে আক্রমণ করে। পরে কারারক্ষীরা ফাঁকা গুলি ছুড়তে থাকেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত হন। বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত চলতে থাকে গুলিবর্ষণ। ওই পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কারাগারের ভেতরে প্রবেশ করেন। এ সময় কারাগারের ভেতরে অ্যাম্বুল্যান্স প্রবেশ করে।</p> <p>জামালপুর জেলা কারাগারের জেলার আবু ফাতাহ বলেন, ‘কারাবন্দিরা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে মারামারি শুরু করে। এ সময় তারা আমাকে ও কারারক্ষীদের ওপর আক্রমণ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়। এ ঘটনায় ছয়জন কারাবন্দির মৃত্যু হয়েছে। কারারক্ষীসহ ১৮ জন আহত হয়েছেন।’</p>