<p>ক্রমাগত ভারী বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলে কুড়িগ্রামের ব্রহ্মপুত্র ও দুধকুমার নদীর পানি টানা ৮ দিন বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। গত দুই দিন এসব নদীর পানি কিছুটা কমলেও সকাল থেকে আবার বাড়ছে এই দুই নদীর পানি। ফলে প্লাবিত হয়ে দুর্ভোগ বাড়ছে মানুষের। </p> <p>বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) দুপুর ১২টায় কুড়িগ্রামের পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) দেয়া তথ্য উপাত্ত বলছে, কুড়িগ্রামের ব্রহ্মপুত্র নদের পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে ৩৬ সেন্টিমিটার, চিলমারী পয়েন্টে ৫০ সেন্টিমিটার ও হাতিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আর দুধকুমার নদের পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে বিপৎসীমার ১ সেন্টিমিটার উপর দিয় প্রবাহিত হচ্ছে। গত ৮ দিন ধরে দুধকুমার ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপৎসীমার ওপরে আছে। তবে আজ ধরলা নদীর পানি তালুক শিমুলবাড়ী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।</p> <p>চিলমারী উপজেলার নয়ারহাট ইউনিয়নের বাসিন্দা আল হাবিব বলেন, ‘পনেরো দিন থাকি চরত পানি, কামকাজ বন্ধ হয়া আছে। বাসাত যা জমানো টাকা আছিল (ছিল) সউগ শ্যাষ। এল্যা ছাওয়া-পোয়া (ছেলে–মেয়ে) নিয়ে চারজন মানুষ খুব বিপদে আছি। দুই দিন আগত মেম্বারে ১০ কেজি করি চাল দিয়ে গেইছে। এলা বাজার করার টাকা নাই।‘ </p> <p>বেশ কিছুদিন ধরে কুড়িগ্রামে বন্যায় নদ-নদী তীরবর্তী অঞ্চলের মানুষের জমানো খাবার শেষ হয়ে গেছে। গোচারণভূমি তলিয়ে যাওয়ায় পশুর খাদ্যসংকট দেখা দিয়েছে। বানভাসী মানুষের চর্মরোগ ও বিভিন্ন পানিবাহিত রোগ দেখা দিয়েছে।</p> <p>নয়ারহাট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আসাদুজ্জামান কালের কন্ঠকে বলেন, আমরা এই ইউনিয়ন পুরোটাই ব্রহ্মপুত্র নদী অববাহিকায়। এই এলাকায় সব অঞ্চলের মানুষাই পানিবন্দি। সংখ্যার হিসেবে প্রায় ৪ হাজার ২০০ পরিবারের প্রায় ১৮ হাজার মানুষ পানিবিন্দি। সরকারের পক্ষ থেকে আমরা সাধ্যমত ত্রাণ দিচ্ছি। কিন্তু বেসরকারি কোনো ত্রাণ ত’পরতা নেই আমাদের ইউনিয়নে। </p> <p>জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ জানান, ‘সরকারিভাবে ত্রাণ তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে। সেই সঙ্গে বিশুদ্ধ পানি, চিকিৎসা ও স্যানিটেশনের দিকে আমরা নজর দিয়েছি। মানুষের কষ্ট লাঘব করতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’</p>