<p>নাটোরের গুরুদাসপুরে স্থানীয় দুই ব্যক্তির পুকুর বাঁচাতে সরকারি প্রকল্পের খাল পুনঃখননে নকশা না মেনে খনন করার অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শেখ এন্টারপ্রাইজের বিরুদ্ধে। </p> <p>বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) গুরুদাসপুর অফিস সূত্রে জানা গেছে, পাবনা, নাটোর ও সিরাজগঞ্জ (পানাসি) জেলার ভূ-উপরিভাগের পানির মাধ্যমে সেচ প্রকল্পের আওতায় গুরুদাসপুর সেচ বিভাগ মির্জা মাহমুদ খাল পুনঃখননের কাজ বাস্তবায়ন করছে। গত ৪ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সংসদ সদস্য সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী এ প্রকল্প উদ্বোধন করেন। তিনটি দরপত্রের মাধ্যমে গুরুদাসপুর উপজেলার চাপিলা ইউনিয়নের কৈডিমা ব্রিজ থেকে ধানুড়া মিল্কি পাড়া পর্যন্ত সাড়ে আট কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই খাল পুনঃখননের কাজ শুরু করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শেখ এন্টারপ্রাইজ। কাজটি বাস্তবায়ন করছে কৃষি মন্ত্রণালয়ের কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) সেচ বিভাগ গুরুদাসপুর। আরো আট থেকে ১০টি দরপত্রের মাধ্যমে অবশিষ্ট কাজ সম্পন্ন হবে বলে জানায় বিএডিসি।</p> <p>স্থানীয়দের অভিযোগ—ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শেখ এন্টারপ্রাইজ নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা ও নকশা অনুসরণ না করে স্থানীয় নয়ন হোসেন ও টিপু আলী নামের দুই প্রভাবশালী ব্যক্তির জমি, পুকুর বাঁচাতে খালের দিক পরিবর্তন করে ফেলছে। </p> <p>কান্দাইল গ্রামের বাসিন্দা মিলন শেখ বলেন, ‘সরকারি খাল খনন করতে গিয়ে ঠিকাদার আমার ব্যক্তিগত জমি কেটে ফেলেছে। প্রতিবাদ করে কর্মকর্তাদের কাছে অভিযোগ দিলেও তাঁরা আমার অভিযোগ আমলে নেননি।’</p> <p>চাপিলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসমত আলী বলেন, ‘খালের সাহাপুর এলাকায় স্থানীয় বাসিন্দা নয়ন হোসেন ও টিপু আলীর দুটি পুকুর রক্ষা করতে সেখানে দরপত্র অনুযায়ী খাল প্রশস্ত করা হয়নি। সামান্য বৃষ্টি হলে খাল ভরাটের আশঙ্কা করা হচ্ছে। নিয়মের বাইরে কাজ করলে জনগণ মেনে নেবে না।’</p> <p>চাপিলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহাবুবুর রহমান বলেন, ‘কৃষকদের উন্মুক্ত সেচ ও কৃষিজমির জলাবদ্ধতারোধে সরকার খাল পুনঃখনন করছেন। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কোথাও কোথাও নকশা বহির্ভূত, আবার কারো পুকুর রক্ষা করতে দিকও পরিবর্তন করছে। স্থানীয়দের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে দরপত্র অনুযায়ী কাজ করতে অনুরোধ জানিয়েছি।’</p> <p>অভিযোগ অস্বীকার করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শেখ এন্টারপ্রাইজের মিঠু আহমেদ বলেন, ‘বিএডিসি অফিসের নির্দেশনা অনুসরণ করেই খাল খনন করা হচ্ছে। কোনো অনিয়ম করার সুযোগ নেই। দুটি পুকুরের মালিক অর্থের বিনিময়ে তাঁদের পুকুরের পার মেরামত করার প্রস্তাব দিলেও তা ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।’ </p> <p>এ বিষয়ে বিএডিসি সহকারী প্রকৌশলী সাইদুর রহমান বলেন, ‘মির্জা মাহমুদ খাল খননের অভিযুক্ত জায়গায় কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। অভিযোগকারীদের জমির মালিকানার কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ <br /> উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সালমা আক্তার বলেন, ‘অনিয়মের বিষয়ে লিখিত বা মৌখিক অভিযোগ পাইনি। কোনো অনিয়ম হয়ে থাকলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ </p>