<p style="text-align: justify;">চলমান তীব্র দাবদাহে অতিষ্ঠ গরম থেকে রেহাই পেতে বৃষ্টি চেয়ে নওগাঁসহ দেশজুড়ে ইসতিসকার নামাজ পড়া হচ্ছে। তবে এ মুহূর্তে বৃষ্টি চান না ধানচাষিরা। কারণ, চলমান তীব্র দাবদাহ আশা জাগাচ্ছে নওগাঁর ধানচাষিদের মনে। এমন দাবদাহে কষ্টের বদলে এক ধরনের স্বস্তি আছে তাদের মাঝে।</p> <p style="text-align: justify;">নওগাঁ সদর উপজেলার শৈলগাছী ইউনিয়নের দীঘলিবিল। এই বিলে প্রায় ৮০ ভাগ ধান পেকে গেছে। শুরু হয়ে গেছে ধান কাটা-মাড়াই। আবার কোথাও আধা পাকা ধান দুলছে ক্ষেতে। শুধু দীঘলি বিলই নয়, বিভিন্ন নিচু এলাকায় শুরু হয়ে গেছে ধান কাটা-মাড়াই। আবার কোথাও কোথাও ধান আধপাকা অবস্থা। পুরো দমে ধান কাটা-মাড়াই শুরু হতে আরো ১০ থেকে ১৫ দিন সময় লাগবে। তাই ফসল ঘরে তোলার পর বৃষ্টি এলেই কৃষকের জন্য ভালো।</p> <p style="text-align: justify;">আজ শনিবার (২৭ এপ্রিল) সকাল ১০টায় সরেজমিনে দীঘলি বিলে গিয়ে দেখা যায়, তীব্র দাবদাহ উপেক্ষা করেই মাঠে ধান কাটছেন কৃষকরা। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কাজ করে যাচ্ছেন। তীব্র রোদ, ভাপসা গরম কিছুই তাদের কাজে ব্যাঘাত ঘটাতে পারছে না। ঘাম ঝরিয়ে ফলানো ফসল ঘরে তুলতে না হয় আরেকটু বেশি ঘাম ঝরাবেন। তবুও ঝড় হাওয়া বজ্রসহ বৃষ্টি, শিলাবৃষ্টি চান না কৃষকরা।</p> <p style="text-align: justify;">ধানচাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ বছর আবহাওয়া ভালো থাকায় এখন পর্যন্ত ভালো ফলনের আশা করছেন চাষিরা। এমন অবস্থায় বজ্রসহ বৃষ্টি, শিলাবৃষ্টি হলে কৃষকের ব্যাপক ক্ষতি হবে। এ ছাড়া এ সময় একটু বৃষ্টি হলে নিচু এলাকার জমিতে পানি জমে যাবে। এ ছাড়া ধান রোপণ থেকে শুরু করে ধান ঘরে তোলা পর্যন্ত  শ্রমিক, সার, কীটনাশক ও বিদ্যুতের দাম বাড়ায় বেড়েছে উৎপাদন খরচ।  তাই সব মিলিয়ে রোদ আর গরম যত বেশিই হোক, কষ্টের ফসল ঘরে তুলতে পারলেই খুশি তারা। এ জন্য আরো প্রায় দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে এমন আবহাওয়ার প্রত্যাশা করেন তারা।</p> <p style="text-align: justify;">শৈলগাছী মধ্যপাড়া কৃষক বাচ্চু মণ্ডল বলেন, আজকে ১ বিঘা জমির ধান কাটছি। আর কিছু ধান জমিতে এখন আধাপাকা আছে। এ মুহূর্তে যদি ঝড়-বৃষ্টি হয় ধান নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। জমিতে পানি জমে গেলে স্বাভাবিকভাবে ধান কাটতে পারব না। আবার মাঠে ধান রাখা যাবেও না। এমনিতেই এ বছর শ্রমিক, সার, কীটনাশক ও বিদ্যুৎতের দাম বাড়ায় খরচ বেশি হয়েছে। সব মিলিয়ে ধান ভালোভাবে ঘরে তুলতে পারলেই আমরা খুশি।</p> <p style="text-align: justify;">আরেক কৃষক সোহাগ প্রামাণিক বলেন, এ বছর এখন পর্যন্ত আবহাওয়া ভালো থাকায় ধান ভালোই হয়েছে। তাই রোদ বা গরমে এখন আমাদের সমস্যাই না। তবে এখন বৃষ্টি হলে অনেক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে আমাদের। তাই যে রকম আবহাওয়া আছে এ রকম আরো বেশ কিছুদিন থাকলেও আমাদের জন্য ভালো।</p> <p style="text-align: justify;">কৃষক ইসমাইল হোসেন বলেন, আমাদের এই এলাকায় ধান কাটা ও মাড়াই শুরু হয়েছে। সেগুলো ঘরে তোলা হচ্ছে। এখন ঝড়-বৃষ্টি হলে ভোগান্তি বাড়বে। তাই আমরা চাই এমন আবহাওয়া আরো কিছুদিন যেন থাকে। </p> <p style="text-align: justify;">জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ বছর জেলায় এক লাখ ৯১ হাজার ৪২৫ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। যা থেকে প্রায় ১২ লাখ ৮৫ হাজার ২১৫ মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। ধানের আবাদ ভালো হওয়ায় চাল আকারে আট লাখ ৫৬ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন চাল উৎপাদনের আশা করছে কৃষি বিভাগ।</p>