<p>আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সোমবার (৮ এপ্রিল) দুপুরে ছুটি পেয়ে শিল্প অধ্যুষিত টঙ্গী ও  গাজীপুর থেকে লাখ লাখ গার্মেন্টস শ্রমিক নাড়ির টানে ঈদযাত্রায় শামিল হয়েছে। এতে গাজীপুরের ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ঈদে ঘরে ফেরা যাত্রীদের ঢল নেমেছে। এতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গী থেকে জৈনাবাজার পর্যন্ত ১৮টি পয়েন্টে যাত্রী উঠানামার কারণে  গতি হারাচ্ছে যানবাহন।  এর ফলে যানজটের তৈরি হয়েছে। যানজট নিরসনে পুলিশের উদ্যোগ কাজে আসছে না বলে জানিয়েছেন পরিবহন সংশ্লিষ্টরা।</p> <p>ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গী থেকে জয়দেবপুর চৌরাস্তা হয়ে জৈনাবাজার পর্যন্ত প্রায় ৫২ কিলোমিটার এলাকায় ১৮টি পয়েন্টে যানজট তৈরি হয়েছে। ঢাকা থেকে আব্দুল্লাহপুর, টঙ্গী বাজার, গাজীপুরা, বোর্ডবাজার, জয়দেবপুর চৌরাস্তা এলাকায় গাড়িগুলো পৌঁছে। এরপর সালনা, রাজন্দ্রেপুর, হোতাপাড়া, ভবানীপুর, মেম্বারবাড়ি, বাঘের বাজার, গড়গড়িয়া নতুন বাজার, গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ি, ১নং সিএন্ডবি বাজার, আনসার রোড, মাওনা চৌরাস্তা, অবদার মোড়, এমসি বাজার, নয়নপুর বাজার, জৈনাবাজার এলাকায় যানজটের তৈরি হয়েছে। যানজটের কারণ হিসেবে দূরপাল্লার যানবাহনের চালক ও সহকারীরা অটোরিকশা, স্বল্প দূরত্বে চলাচল করা মিনিবাস, মহাসড়কের মোড়ে মোড়ে যাত্রীর জন্য অপেক্ষমান বাস, সিএনজি, ট্রাক ও পিকআপকে দুষছেন।</p> <p>ময়মনসিংহগামী আলম এশিয়া পরিবহনের চালক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ঢাকা থেকে গাড়ি নিয়ে টঙ্গী হয়ে জয়দেবপুর চৌরাস্তা এসেছি। প্রায় এক ঘণ্টারও বেশি সময় লেগেছে মহাসড়কের ওই অংশ পাড় হতে। যত্রতত্র গাড়ি দাঁড় করিয়ে রেখে তোলা হচ্ছে যাত্রী। এযেন কেউ দেখার নেই। একটু যদি শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা, যাত্রী নেওয়া গাড়িগুলোকে যদি শৃঙ্খলার মধ্যে মহাসড়কের এক পাশে রেখে যাত্রী তোলা সুযোগ দেওয়া হতো তাহলে এমন পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হতো না।</p> <p>নেত্রকোনাগামী হযরত শাহজালার পরিবহনের চালক আনোয়ার শেখ বলেন, আমরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রী তুলি না বিধায় কোনো মোড়ে আমাদের দাঁড়ানোর দরকার হয় না।</p> <p>ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের রাজেন্দ্রপুর এলাকা পাড় হতে প্রায় ১৫ মিনিটের মতো সময় লেগেছে। রাজন্দ্রেপুর পাড় হয়ে হোতাপাড়া, ভবানীপুর, মেম্বার বাড়ি ও বাঘের বাজার পাড় হতে প্রায় ঘণ্টা খানেক সময় লেগেছে। সময় লাগার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, মহাসড়কে ছোট ছোট পিকআপ, খোলা ট্রাক ও স্বল্প দূরত্বের যান দুরপাল্লার যাত্রী বহন করছে। তারা মহাসড়কের যত্রতত্র দাঁড়িয়ে যাত্রী তুলছে। মহাসড়কের ওপর দাঁড়িয়ে ভাড়া নির্ধারণ করে তারা যাত্রী তোলার সময় যাচ্ছে আর এতেই গতি হারাচ্ছে। মহাসড়কের মোড়ে মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে, আর এতেই যানজটের তৈরি হচ্ছে বলে তিনি জানান।</p> <p>ট্রাকে যাত্রী পরিবহন করছেন মমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, ভবানীপুর থেকে যাত্রী নিয়ে কয়েকটি জায়গার যানজট পেরিয়ে মাওনা ফ্লাইওভারে উঠেছি। মাওনা ফ্লাইওভার থেকে নেমেই আবদার মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রী তুলছে গাড়িগুলো। এতে পেছনে দীর্ঘ যানজটের তৈরি হচ্ছে, যানজটে ফ্লাইওভার ছাড়িয়ে বহুদূর পর্যন্ত ছাড়িয়েছে।</p> <p>হাইওয়ে পুলিশের গাজীপুর রিজিওনের পুলিশ সুপার মো. মোস্তাফিজুর রহমান রহমান বলেন, আমরা এক দেড় সপ্তাহ আগে পরিকল্পনা নিয়েছি মহাসড়কের ওপর যত্রতত্র কোনো গাড়ি দাঁড়িয়ে যাত্রী তুলতে পারবে না। এখন তার বাস্তবায়ন করছি। গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে ময়মনসিংহ পর্যন্ত আমাদের হাইওয়ে পুলিশ তারা বিভিন্ন জায়গায় পিকেট আকারে কাজ করছে, মোবাইল টিম হিসেবে কাজ করছে, বিভিন্ন জায়গায় রেকার মোতায়েন করা হয়েছে, অ্যাম্বুল্যান্স আছে। সিসি টিভি ও ড্রোনের মাধ্যমে মনিটরিং করতেছি, যেখানেই অসঙ্গতি পাওয়া যাচ্ছে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। অধিক গাড়ি অধিক চাপ, আজকে ৬০ ভাগের ওপরে গার্মেন্টস্ ছুটি হয়েছে। শ্রমিকদের একটি বড় চাপ আছে, এ কারণেই গাড়ির সংখ্যা বেশি। কোথাও গাড়ি থেমে নাই, গাড়ি চলছে। বিশেষ করে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে গাড়ি চলছে, কোথাও গাড়ি থেমে নাই।</p>