<p>নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলায় পাঁচ শ মিটার রাস্তার পুরনো ইট তুলে বিক্রি করা হচ্ছে। রাধানগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম (তপন) ও দুই ইউপি সদস্য কাজল মিয়া ও এসডু মিয়া এ কাজ করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।</p> <p>জানা গেছে, ইউপি চেয়ারম্যান ওই দুই ইউপি সদস্যের মতামতের ভিত্তিতেই উপজেলার গোকলনগর এলাকার বাসিন্দা সেলিম মিয়া রাস্তার ইট শ্রমিক দিয়ে তুলে তার বাড়ির আঙিনায় নিয়ে যান। পরে সেখান থেকে দুই হাজার ইট তাঁর চাচাতো ভাই রফিকুল ইসলামের কাছে ১৫ টাকায় বিক্রি করার কথা স্বীকার করেন সেলিম।</p> <p>উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিস সূত্রে জানা যায়, ওই ইউনিয়নের গোকলনগর এলাকায় নির্মিত ইটের সলিং এর রাস্তাটি চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়ে। পরে পুনরায় রাস্তাটি নির্মাণের জন্য তিন মাস আগে দরপত্র আহ্বান করা হয়। পরে এ কাজ পান স্থানীয় এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এর আগে ২০১৭-১৮ অর্থ বছরের নরসিংদী জেলা পরিষদ ও রাধানগর ইউনিয়ন পরিষদ যৌথ ব্যয়ে গোকলনগরে আসাদ মিয়ার দোকান থেকে হাসিন মিয়ার বাড়ি পর্যন্ত পাঁচ শ মিটার রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছিল।</p> <p>গতকাল বুধবার (৬ মার্চ) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাস্তার ইট দিয়ে ঘর তৈরি করছেন তিনজন রাজমিস্ত্রি। দুজন নারী পুরনো ইটের গায়ে থাকা ময়লা পানি দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করছেন। পাশেই সারিবদ্ধভাবে রাখা আছে রাস্তার পুরনো ইট। আগে থেকেই সেখানে উপস্থিত ছিলেন সেলিম মিয়া। কথা বলে জানা যায়, সেলিম আগে বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। এলাকায় তিনি বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যানের বিশ্বস্ত ব্যক্তি হিসেবে সবার কাছে পরিচিত।</p> <p>সেলিম মিয়া জানান, চেয়ারম্যান ও মেম্বারের নির্দেশে স্থানীয় শ্রমিকদের দিয়ে রাস্তার ইটগুলো তুলে তার বাড়ির আঙিনায় রাখেন। ইটগুলো আনতে তার ৫৫ হাজার টাকা শ্রমিক ও গাড়িভাড়া বাবদ ব্যয় হয়েছে। সেই ব্যয়ের ভাউচার দিলেও ইউনিয়ন পরিষদ টাকা দিতে পারছেন না। পরে শ্রমিক ও গাড়িভাড়া পরিশোধ করতে দুই হাজার ইট ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেন তিনি।</p> <p>এদিকে ওই রাস্তা থেকে শ্রমিক দিয়ে কত হাজার ইট তুলেছেন এ তথ্য দিতে রাজি হননি সেলিম।</p> <p>সরকারি রাস্তার ইট বিক্রির সুযোগ নেই বলে জানান রাধানগর ইউপি চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম তপন। তিনি বলেন, ‘ইট বিক্রি হয়ে থাকলে ইউপি মেম্বারদের এই দায় নিতে হবে। আমার সঙ্গে আলাপ করে তারা এ কাজ করেনি। এর দায়ভার আমি নেব না।’</p> <p>রাস্তার ইট বিক্রির দায় স্বীকার করে রাধানগর ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য এসডু মিয়া বলেন, ‘ইট তুলে আনতে শ্রমিক ও গাড়িভাড়া বাবদ অনেক টাকা ব্যয় হয়েছে। সেই টাকা পরিশোধ করতে কিছু ইট বিক্রির জন্য বলেছি।’</p> <p>রায়পুরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোজলিন শহীদ চৌধুরী বলেন, ‘সরকারি রাস্তার ইট বিক্রির কোনো সুযোগ নেই। এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’</p>