<p style="text-align: justify;">ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছয়টি সংসদীয় আসনের চারটিতে আওয়ামী লীগ ও দুটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়লাভ করেছেন। এর মধ্যে একটি আসন ভাগাভাগির কারণে জাতীয় পার্টিকে ছাড় দেয় আওয়ামী লীগ। যদিও আসনটিতে জাতীয় পার্টির প্রার্থী জামানত হারিয়েছেন।<br />  <br /> বিজয়ীদের মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের সংসদ সদস্য আনিসুল হক ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসনের সংসদ সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এবারের মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পেতে পারেন বলে দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে বেশ আলোচনা চলছে। তবে এক জেলায় দুজন মন্ত্রী দেওয়া হয় কি না এ নিয়েও আছে আলোচনা।<br />  <br /> আনিসুল হক বর্তমানে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। আনিসুল হক তৃতীয়বারের মতো ও মোকতাদির চৌধুরী চতুর্থবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।<br />  <br /> আনিসুল হক আবারও আইন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেতে যাচ্ছেন বলে দলের স্থানীয় একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। কেননা দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালনকালে আনিসুল হক বেশ সুনাম কুড়িয়েছেন। সরকারের যে কয়জন মন্ত্রী ‘গুডবুকে’ ছিলেন, তাদের মধ্যে আনিসুল হকের নাম রয়েছে। এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড করে, চার হাজারের মতো বেকারকে চাকরি দিয়ে ও সর্বোপরি সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে তিনি এলাকায়ও ব্যাপক জনপ্রিয়। যে কারণে আনিসুল হক আবারও মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পাবেন বলে নেতাকর্মীরা ধারণা করছেন। </p> <p style="text-align: justify;">আখাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের একটি সূত্র জানায়, আইনমন্ত্রী নিজেও তাঁর বর্তমান দায়িত্বের আইন মন্ত্রণালয় পাওয়ার ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। উনি নিজেও এটাতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন। তবে সব কিছুই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর নির্ভর করছে বলে সূত্রটিকে তিনি জানিয়েছেন।<br />   <br /> আখাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য দীপক কুমার ঘোষ বলেন, ‘উল্লেখযোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকা সত্ত্বেও মানুষ যেভাবে কেন্দ্রে এসে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়েছেন এতেই আনিসুল হকের প্রতি ভালোবাসার টান বোঝা যায়। এবারের মন্ত্রিসভায় তিনি দায়িত্ব পাচ্ছেন বলে আমরা শতভাগ নিশ্চিত। পাশাপাশি এটাও মনে করি যে আবার ওনাকে আইন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হবে।’ </p> <p style="text-align: justify;">এদিকে নেতাকর্মীদের মাঝে নতুন করে আলোচনায় আছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসন থেকে নির্বাচিত র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। এ নিয়ে চারবার তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। একান্ত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করায় উনি প্রধানমন্ত্রীরও বেশ ঘনিষ্ঠজন। নেতাকর্মীরা আশায় আছেন, ছাত্রলীগ দিয়ে রাজনীতি শুরু করা তুখোড় এ রাজনীতিবিদকে পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হবে।<br />   <br /> জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক উপদপ্তর সম্পাদক মো. মনির হোসেন বলেন, ‘মোকতাদির চৌধুরী এ মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পাচ্ছেন বলে আমরা আশাবাদী এবং উনি পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রী হচ্ছেন বলেই আমরা বিশ্বাস করছি। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কী সিদ্ধান্ত দেন সেটির অপেক্ষায় আছি আমরা।’ </p> <p style="text-align: justify;">ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছয়টি আসনে রবিবার সুষ্ঠুভাবে ভোট হয়। ছয়টি আসনের মধ্যে চারটিতে নৌকার প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। একটিতে হেরেছে নৌকা। আরেকটি আসনে নৌকা কোনো প্রার্থী না দিলেও দলটির এক নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয়লাভ করেছেন।<br />  <br /> ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক বিএনপি নেতা সৈয়দ এস এ কে একরামুজ্জামান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা মঈন উদ্দিন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ (নবীনগর) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ফয়জুর রহমান বাদল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ (বাঞ্ছারামপুর) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত ক্যাপ্টেন (অব.) এ বি তাজুল ইসলাম নির্বাচিত হয়েছেন। এর মধ্যে একরামুজ্জামান ও মঈন উদ্দিন প্রথমবারের মতো, ফয়জুর রহমান দ্বিতীয়বারের মতো এবং তাজুল ইসলাম পঞ্চমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। সংসদ সদস্যদের মধ্যে এ বি তাজুল ইসলামই সবচেয়ে প্রবীণ। এবারের ভোটে তাঁর তেমন কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকলেও ভোটার উপস্থিতির জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়। এতে বেশ সফলও হয় আওয়ামী লীগ।</p>