<p style="text-align: justify;">প্রার্থী জাতীয় পার্টির। কিন্তু তাঁর নির্বাচনী পোস্টারে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার ছবি। আবার পোস্টারে উল্লেখ করা হয়েছে আওয়ামী লীগ সমর্থিত। আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টির দলীয় স্লোগানও ভিন্ন। তাই বাংলাদেশ জিন্দাবাদ স্লোগানের পোস্টারে আওয়ামী লীগ নেত্রীর ছবি সহজভাবে মানছে না আওয়ামী লগী কর্মীরা। সব মিলে আওয়ামী লীগ দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে জাপার প্রার্থীকে নিয়ে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এমন অবস্থা পটুয়াখালী-১ (সদর-মির্জাগঞ্জ-দুমকি) আসনের।</p> <p style="text-align: justify;">এ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ওই দলের কো-চেয়ারম্যান এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার। এখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেনকে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মহাজোটের সাথে সমঝোতা হওয়ায় জোট প্রার্থী হিসেবে রুহুলকে মনোনয়ন দেওয়া হয় এবং আফজাল মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন। ভোটের মাঠে এ আসনে জাপার ভোট নগণ্য, এমনটা অতীত রেকর্ড বলছে। প্রার্থী হিসেবে রুহুল হেভিওয়েট হলেও ভোটের মাঠে অনেকটা নড়বড়ে। তবে বাকি প্রার্থীদের চেয়ে তাঁর অবস্থা ভালো।</p> <p style="text-align: justify;">সরেজমিনে দেখা গেছে, নির্বাচনী প্রচারণায় রুহুল যত পোস্টার-লিফলেট ব্যবহার করছেন তাতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার ছবি ব্যবহার করছেন। পোস্টারে লেখা হয়েছে জাতীয় পার্টি মনোনীত এবং আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী। এ ছাড়াও পোস্টারে জাপার দলীয় স্লোগান বাংলাদেশ জিন্দাবাদ লেখা রয়েছে। এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে। </p> <p style="text-align: justify;">আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বলছেন, সমঝোতার কারণে আওয়ামী লীগ এই আসনে দলীয় প্রার্থী দেয়নি। কিন্তু আওয়ামী লীগ থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার সুযোগ দিয়েছে। সমঝোতাকে আওয়ামী লীগের সমর্থন মনে করার কোনো কারণ নেই। এটা একটা উন্মুক্ত নির্বাচন।</p> <p style="text-align: justify;">পটুয়াখালী জেলা যুবলীগের সভাপতি শহীদুল ইসলাম শহিদ বলেন, ‘বাংলাদেশ জিন্দাবাদ’ পাকিস্তানি স্লোগান। হতে পারে এটা জাতীয় পার্টির স্লোগান। ওই স্লোগানের পোস্টার, ব্যানার কিংবা লিফলেটে প্রধানমন্ত্রীর ছবি। এটা কোনোভাবেই মানায় না। পুরোটাই সাংঘর্ষিক। ওখানে জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু থাকলে মেনে নেওয়া যেত। প্রধানমন্ত্রীর ছবি ব্যবহার করে তাঁর ওই সব কথা লেখা কোনোভাবেই ঠিক হয়নি।’</p> <p style="text-align: justify;">আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাহারকারী আফজাল হোসেনের ছোট ভাই এস এম কামাল হোসেন তাঁর ফেসবুকে লিখেছেন, ‘লাঙল প্রতীকের পোস্টারে প্রধানমন্ত্রীর ছবি থাকতে পারে না। লাঙল প্রতীক বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নয়। বাংলাদেশ জিন্দাবাদ যারা বলে তারা আওয়ামী লীগের লোক নয়। আওয়ামী লীগের লোক যারা তাদের স্লোগান জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু। তাই মানুষকে বিভ্রান্ত করার কোনো সুযোগ নেই।’</p> <p style="text-align: justify;">যুবলীগ নেতা জুয়েল ইসলাম মিঠুন বলেন, ‘আমাদের দল থেকে সমঝোতা হয়েছে কিন্তু সমর্থন দেয়নি, এ ছাড়া জাতীয় পার্টি যে অধঃপতন বা দেউলিয়া হয়েছে সেটা এই পোস্টারেই স্পষ্ট। উন্মুক্ত নির্বাচনে জাতীয় পার্টি আমাদের নেত্রীর ছবি ব্যবহার করতে পারে না।’</p> <p style="text-align: justify;">অপরদিকে এসব নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ হলেও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী আলমগীর হোসেন জাপার রুহুলকে বিজয়ী করতে প্রার্থীর সাথে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। তাঁর সাথে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মান্নান। </p> <p style="text-align: justify;">এ ব্যাপারে এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, ‘আমার পোস্টার ব্যানারে কিভাবে ছবি এসেছে এটা আমি জানি না। এটা একটা ষড়যন্ত্র। আমাকে হেয় করতে, ছোট করতে, ভোটারদের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ ও বিব্রত করতে একটি মহল এ কাজটি করেছে।’</p>