<article> <p align="left">কুমিল্লার ১৭টি উপজেলা নিয়ে গঠিত ১১টি সংসদীয় আসনের প্রার্থীরা ১৮ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ পেয়েই ‘দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন’ ভোটের মাঠ। এর মধ্যে তিনটি আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে কোনো আওয়ামী লীগ নেতা না থাকায় স্বস্তিতে রয়েছেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা। বাকি আটটি আসনে নৌকার প্রার্থীদের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটের মাঠে রয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী (হেভিওয়েট) ১২ জন নেতা। ১১টি আসনে মোট প্রার্থী ৯৩ জন।</p> </article> <article> <p align="left">ভোটাররা বলছেন, আটটি আসনে আওয়ামী লীগের স্থানীয় পর্যায়ের প্রভাবশালী নেতারা ‘বিদ্রোহী’ (স্বতন্ত্র) প্রার্থী হওয়ায় আসনগুলোতে ৭ জানুয়ারির ভোটে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাচ্ছেন ভোটাররা। আটটি আসনের সাতটিতেই লড়াই হবে আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থীদের সঙ্গে দলটির স্বতন্ত্র প্রার্থীদের। আসন সাতটি হলো কুমিল্লা-১ (দাউদকান্দি-তিতাস), কুমিল্লা-২ (হোমনা-মেঘনা), কুমিল্লা-৩ (মুরাদনগর), কুমিল্লা-৪ (দেবীদ্বার), কুমিল্লা-৫ (বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া), কুমিল্লা-৬ (আদর্শ সদর, সিটি করপোরেশন ও সেনানিবাস এলাকা), কুমিল্লা-৭ (চান্দিনা) ও কুমিল্লা-১১ (চৌদ্দগ্রাম)। কুমিল্লা-৫ আসনে নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে রয়েছেন আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট চার প্রার্থী।</p> </article> <article>আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা স্বতন্ত্র থাকায় কিছুটা এগিয়ে রয়েছেন শওকত। তবে কুমিল্লা-৮ (বরুড়া) আসনে বর্তমান এমপি নাছিমুল আলম চৌধুরী নজরুল স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন। তিনি মনোনয়নপত্র তুলে নেওয়ায় এখানে নৌকার প্রার্থী কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবু জাফর মোহাম্মদ সফিউদ্দিন শামীম স্বস্তিতে আছেন।  <p align="left">কুমিল্লা-১ আসনে নৌকার প্রার্থী দলের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী মো. আব্দুস সবুর। এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য ব্যারিস্টার নাঈম হাসান। তাঁর কারণে কিছুটা হলেও বেকায়দায় পড়েছেন নৌকার প্রার্থী।</p> </article> <article> <p align="left">কুমিল্লা-২ আসনে নৌকার প্রার্থী বর্তমান এমপি সেলিমা আহম্মাদ মেরী। এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হোমনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ আবদুল মজিদ ও মেঘনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুল আলম। এ দুজনই হেভিওয়েট প্রার্থী।</p> </article> <article>কুমিল্লা-৩ আসনে নৌকার প্রার্থী বর্তমান এমপি ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন। ইগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম সরকার হেভিওয়েট প্রার্থী। <p align="left">কুমিল্লা-৪ আসনে নৌকার প্রার্থী বর্তমান এমপি রাজী মোহাম্মদ ফখরুল। এখানে হেভিওয়েট স্বতন্ত্র প্রার্থী (ইগল প্রতীক) সদ্য পদত্যাগী উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ।</p> <p align="left">কুমিল্লা-৫ আসনে নৌকার প্রার্থী বর্তমান এমপি আবুল হাশেম খান। নৌকার মনোনয়ন না পাওয়া দলীয় চারজন নেতা এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। এখানে আওয়ামী লীগের চার হেভিওয়েট ‘বিদ্রোহী’ এবং বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত শওকত মাহমুদ প্রার্থী থাকায় ভোটের লড়াই জমবে। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে আছেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন স্বপন, ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করা এম এ জাহের, একই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর খান, কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা এহতেশামুল হাসান ভূঁইয়া রুমি।</p> <p align="left">কুমিল্লা-৬ আসনে নৌকার প্রার্থী বর্তমান এমপি মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার। স্বতন্ত্র প্রার্থী আঞ্জুম সুলতানা সীমা। তিনি সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি, মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি ও কুমিল্লার বর্ষীয়ান আওয়ামী লীগ নেতা প্রয়াত আফজল খানের মেয়ে। প্রায় চার দশক ধরে আফজল পরিবারের সঙ্গে বাহারের রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব চলছে। তাই ভোটের লড়াইয়ের আভাস দেখছেন ভোটাররা। আঞ্জুম সুলতানা সীমা বলেন, ‘কুমিল্লার মানুষের আগ্রহে প্রার্থী হয়েছি। আশা করি, নির্বাচনে জয়ী হব। গণজোয়ার দেখতে পাচ্ছি।’</p> <p align="left">বাহাউদ্দীন বাহার বলেন, ‘রাজনীতির শুরু থেকেই আমি কুমিল্লার মানুষের জন্য সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি। ইনশাআল্লাহ এবারও তারা আমাকেই জয়ী করবে।’</p> <p align="left">কুমিল্লা-৭ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান এমপি প্রাণ গোপাল দত্ত। এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী চান্দিনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুনতাকিম আশরাফ টিটু। তিনি আসনটির পাঁচবারের নির্বাচিত সাবেক এমপি ও সাবেক ডেপুটি স্পিকার প্রয়াত আলী আশরাফের ছেলে। </p> <p>কুমিল্লা-১১ (চৌদ্দগ্রাম) আসনে সাবেক রেলপথ মন্ত্রী ও বর্তমান এমপি মো. মুজিবুল হক নৌকার প্রার্থী। তিনি কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র মিজানুর রহমান। এরই মধ্যে মুজিবুল হকবিরোধীরা একজোট হয়েছেন ফুলকপি প্রতীকের মিজানের পক্ষে। সে হিসাবে আসনটিতে জমে উঠতে পারে এই ‘গুরু-শিষ্যের’ লড়াই।</p> </article>