<p>টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৪০জন শিক্ষার্থী বাল্য বিয়ের স্বীকার হয়েছে বলে জানা গেছে। তারা লেখাপড়া বন্ধ করে এখন স্বামীর সংসার করছে। গত প্রায় দেড় বছরে তাদের এই বিয়ে হয় বলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে।</p> <p>বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও পরিচালনা পরিষদের সদস্যরা বাল্য বিয়ের খবর পেয়ে বিয়ে বাড়িতে উপস্থিত হয়ে কয়েকটি বিয়ে বন্ধও করেন। কিন্তু পরবর্তীতে ওইসব পরিবারের অভিভাবকরা বিভিন্ন উপায়ে বয়স বাড়িয়ে মেয়েদের বিয়ে দেন বলে অভিযোগ শিক্ষকদের।</p> <p>উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত গেড়ামাড়া গোহাইলবাড়ি সবুজ সেনা উচ্চ বিদ্যালয়। বিদ্যালয়টিতে গত দেড় বছরে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ষষ্ঠ শ্রেণির চারজন, ২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী ১৯জন ও ২০২২ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী ৯জন ছাত্রী বাল্য বিয়ের স্বীকার হয়েছে বলে বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক ফিরোজ আল মামুন নিশ্চিত করেছেন।</p> <p>এদিকে, মির্জাপুর উপজেলা সদরের আফাজ উদ্দিন দারুল উলুম দাখিল মাদরাসায় গত দেড় বছরে অষ্টম শ্রেণির একজন ও নবম শ্রেণির চারজন ছাত্রীর বিয়ে হয়ে গেছে।</p> <p>এই অবস্থা উপজেলার ৬৬ নম্বর বহুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। এ বিদ্যালয়টিতে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান চলে। এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গত দেড় বছরে অষ্টম শ্রেণি পাশ তিন শিক্ষার্থীর বিয়ে হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক শফিকুল ইসলাম।</p> <p>গেড়ামাড়া গোহাইলবাড়ি সবুজ সেনা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক বলেন, বাল্যবিয়ে আগামী প্রজন্মের সুস্থভাবে বেড়ে উঠা এবং সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে বড় বাধা। শিক্ষার্থীদের অভিবাবকদের এ বিষয়ে বুঝালেও তারা বুঝতে চেষ্টা করেন না। বিভিন্ন উপায়ে মেয়েদের বয়স বৃদ্ধি করে তাদের বিয়ে দেন অভিভাবকরা।</p> <p>মির্জাপুর থানা মসজিদের ইমাম ও খতিব হাফেজ মাওলানা ও নিকাহ রেজিস্ট্রার (ভাতগ্রাম ইউনিয়ন) মো. ফরিদ হোসাইন বলেন, অপ্রাপ্ত ছেলে-মেয়ের বয়স বৃদ্ধির মাধ্যমে বিয়ের বৈধতা নেই। তবে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতি সাপেক্ষে নিকাহ রেজিস্ট্রার করানো হয় বলে তিনি জানান।</p> <p>মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হাফিজুর রহমান জানান, বাল্য বিয়ের খবর পেলে আমরা উপস্থিত হয়ে ওই বিয়ে বন্ধ করি। গত দেড় বছরে এ উপজেলায় কতজন শিক্ষার্থী বাল্য বিয়ের স্বীকার হয়েছে তার তালিকা করা হচ্ছে।</p>