<p>তালিকায় নিজের নাম দেখে আনন্দেই ছিলেন হতদরিদ্র আব্দুল হক। কিন্তু যখন চোখ পড়ে নিজের নামের পাশে মোবাইল নাম্বার অন্যজনের তখন ঘটনাটি 'হরিষে বিষাদে' পরিনত হয়। মোবাইল নাম্বারটি পাশের গ্রামের রোকেয়া বেগমের। তার নাম্বারেই গেছে হকের নামের বরাদ্ধ প্রধানমন্ত্রীর সহায়তার টাকা। তিনি জাতীয় পার্টির ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদকের ভাবি। এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার উচাখিলা ইউনিয়নে।</p> <p>জানা যায়, নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত আর্থিক সহায়তার তালিকায় ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা থেকে ৬ হাজার ৮৩৪ জনের একটি তালিকা চূড়ান্ত করা হয়। এই তালিকা ধরে প্রণোদনার ২ হাজার ৫০০ টাকা আসতে শুরু করে। এ অবস্থায় অভিযোগ পাওয়া গেছে বিভিন্ন ইউনিয়নের নেতারা নাম দেওয়ার সময় তাঁদের পরিবারের একাধিক লোকজনের নাম ছাড়াও বিত্তশালী ও সরকারের অন্যান্য সুবিধা পাওয়ার ব্যাক্তিরাও রয়েছেন।</p> <p>উপজেলার উচাখিলা ইউনিয়নের আলাদিয়ার চর গ্রামের মো. শামছুদ্দিনের ছেলে মো. আব্দুল হক এই তালিকায় নিম্ন আয়ের মানুষ হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছেন। চূড়ান্ত তালিকায় তাঁর নাম ও বাবার নাম ছাড়াও ঠিকানা ঠিক থাকলেও জাতীয় পরিচয়পত্রের নাম্বার ও মোবাইল নাম্বারটির কোন মিল নেই। আব্দুল হকের মোবাইল নাম্বারটি হচ্ছে ০১৯৫৫-৯৮৮২৫৮ অপরদিকে তালিকায় হকের নামের পাশে মোবাইল নাম্বারটি হচ্ছে ০১৮৩৪-১২৫৬৮৫। সত্যতা যাচাই করতে এই নাম্বারটিতে কল দিলে আপরপ্রান্ত থেকে কথা বলেন এক নারী। জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি উচাখিলা ইউনিয়নের উত্তর মরিচারচর গ্রামের মৃত মকবুল হোসেনের স্ত্রী। গত ২২ বছর আগে তাঁর স্বামী মারা গেছেন। পরে সরকারের বিধবা ভাতার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়ে সুবিধা গ্রহন করছেন। </p> <p>তার মোবাইলে ২৫০০ টাকা পাওয়ার কোনো বার্তা পৌঁছিয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এই বার্তা পেয়ে তিনি টাকাও উত্তলোনের চেষ্টা করেন। পরে সেখান থেকে জানানো হয় নাম্বারটি বিকাশ বা নগদে রেজিস্ট্রেশন করলেই টাকা উত্তলোন করা যাবে। আজ শনিবার তিনি ছেলেকে নিয়ে টাকা উত্তোলন করতে ফের দোকানে গেছেন।</p> <p>কিভাবে আপনি তালিকাভুক্ত হলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার দেবর তো নেতা মানুষ। তাঁর কারণেই টাকা পাইছি। </p> <p>তবে এ ব্যাপারে ওই নেতা জাতীয় পার্টির ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম আর্মি জানান, তিনি নিজেও জানেন না কি করে এমন হলো। এ অবস্থার জন্য তিনিও তদন্ত চান। সেই সাথে বলেন, আমি তো তালিকায় নাম দিছিলাম অন্য সুবিধার জন্য।</p> <p>এ ব্যাপারে ঈশ্বরগঞ্জ থানার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন জানান, এ ব্যাপারে আব্দুল হক যদি লিখিত অভিযোগ দেন তাহলে তদন্ত করে দেখা হবে।</p>