<p>পেঁয়াজ ও আলু আমদানিতে শুল্ক কমিয়েছে সরকার, কিন্তু এখনো শুল্ক কমানোর সুফল দেখা যায়নি বাজারে। আগের মতো চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে পণ্য দুটি। বর্তমানে ভারতের পাশাপাশি পাকিস্তান, চীনসহ বিভিন্ন দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করছেন আমদানিকারকরা। বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহেও কোনো ঘাটতি নেই।</p> <p>রাজধানীর খুচরা বাজারগুলোতে দেশি পেঁয়াজ কেজি মানভেদে ১১০ থেকে ১২০ টাকা এবং আলুর কেজি ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এদিকে দাম কমাতে ভারত থেকে ডিম আমদানি শুরু হলেও বাজারে এর প্রভাব দেখা যায়নি। খুচরা পর্যায়ে এখনো প্রতি ডজন ডিম ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।</p> <p>গতকাল বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, রামপুরা কাঁচাবাজার, বাড্ডা কাঁচাবাজার ও জোয়ারসাহারা বাজার ঘুরে এসব তথ্য দেখা গেছে।</p> <p>রাজধানীর রামপুরা কাঁচাবাজারের মেসার্স হালিম এন্টারপ্রাইজের ব্যবসায়ী মো. মহিউদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘পেঁয়াজ ও আলুতে শুল্ক কমিয়েছে সরকার তা শুনেছি, কিন্তু বাজারে এর প্রভাব এখনো পড়েনি। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারি পর্যায়ে পেঁয়াজ, আলু, ডিমসহ কোনো পণ্যের দাম কমেনি। পাইকারিতে না কমলে খুচরায় কমার কোনো সম্ভাবনা নেই।’</p> <p>রাজধানীর কারওয়ান বাজারের পেঁয়াজের আড়তদার জালাল উদ্দিন খান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘পেঁয়াজের দামে কোনো পরিবর্তন নেই। পাইকারিতে পাবনার পেঁয়াজ প্রতি কেজি ১০৮ থেকে ১১০ টাকা এবং ফরিদপুরের পেঁয়াজ ১০২ থেকে ১০৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ব্যাপকভাবে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হলে মজুদদাররা তাদের পেঁয়াজ বাজারে ছেড়ে দেবে। তখন হয় তো দাম কমতে পারে।’</p> <p>সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এক প্রজ্ঞাপনে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আলু ও পেঁয়াজের দাম কমাতে আমদানি শুল্ক কমিয়েছে। সেই সঙ্গে চাষাবাদের জন্য প্রয়োজনীয় কীটনাশক আমদানিতেও শুল্ক কমানো হয়েছে।</p> <p>এদিকে যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে শুল্কায়নসহ সাড়ে সাত টাকা দরে গত সোমবার দুই লাখ ৩১ হাজার মুরগির ডিম আমদানি করা হয়েছে। আগামী দুই মাসের মধ্যে বন্দর দিয়ে আরো ৪৭ লাখ ডিম আমদানি করা হবে বলে জানিয়েছেন আমদানিকারকরা।</p> <p>রাজধানীর বাজারে গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে মুরগির দাম কিছুটা কমে ব্রয়লার প্রতি কেজি ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা এবং সোনালি মুরগি মানভেদে ২৫০ থেকে ২৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।</p> <p>রাজধানীর সবজির বাজারে এখনো বেশ কয়েকটি সবজির দাম বাড়তি। প্রতি কেজি গোল বেগুন ৯০ থেকে ১০০ টাকা, লম্বা বেগুন ৮০ টাকা, কাঁচা মরিচ কেজি ২০০ থেকে ২৪০ টাকা, টমেটো ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা, গাজর ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, পটোল ও ঢেঁড়স ৫০ থেকে ৬০ টাকা, ধুন্দল ৬০ থেকে ৭০ টাকা, শসা কেজি মানভেদে ৫০ থেকে ৭০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, চালকুমড়া প্রতি পিস ৫০ থেকে ৬০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া কেজি ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।</p> <p><strong>হিলি দিয়ে কমেছে পেঁয়াজ আমদানি</strong></p> <p>পেঁয়াজ আমদানিতে শুল্ক কমালেও ভারত সরকার পেঁয়াজ রপ্তানিতে ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করায় দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি কমিয়ে দিয়েছেন আমদানিকারকরা। যেখানে আগে ১৫ থেকে ২০ ট্রাক পেঁয়াজ আমদানি হতো, এখন তা কমে এক থেকে চার ট্রাকে ঠেকেছে।</p> <p>এদিকে দেশের বাজার স্বাভাবিক রাখতে এরই মধ্যে আলু আমদানির অনুমতি (আইপি) পেয়েছেন ১২ থেকে ১৫ জন আমদানিকারক। গতকাল সকালে হিলি বাজারের খুচরা বিক্রেতা ও আমদানিকারকের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য পাওয়া যায়।</p> <p>বন্দরের আমদানিকারকরা বলছেন, ‘বাংলাদেশে পেঁয়াজ আমদানিতে শুল্ক কমানো হলেও তা এখনো কার্যকর করা শুরু হয়নি। তবে ভারত সরকার পেঁয়াজ রপ্তানিতে ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করায় এই বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানিতে খরচ বেশি পড়ছে। তাই আমরা এ বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি কমিয়ে দিয়ে পাকিস্তান থেকে পেঁয়াজ আমদানি করছি।’ ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করায় প্রতি কেজি পেঁয়াজের অতিরিক্ত ২৫ টাকা গুনতে হচ্ছে। ভারত সরকার ৪০ শতাংশ শুল্ক প্রত্যাহার করলে ভারতীয় পেঁয়াজের দাম ৫০ টাকা কেজির নিচে নেমে আসবে। তবে পাকিস্তানসহ অন্যান্য দেশে থেকে পেঁয়াজ আমদানি করে লোকসান গুনতে হবে না।</p> <p>হিলি স্থলবন্দর উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ কেন্দ্রের উপসহকারী কর্মকর্তা ইউসুফ আলী জানান, হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আজ পর্যন্ত ১৫ জন আমদানিকারক প্রায় ১২ হাজার মেট্রিক টন আলু আমদানির অনুমতি পেয়েছেন। তবে এখনো এই বন্দর দিয়ে আলু আমদানি শুরু হয়নি।</p> <p>[প্রতিবেদনে তথ্য দিয়েছেন কালের কণ্ঠ’র হিলি (দিনাজপুর) প্রতিনিধি]</p>