<p style="text-align:justify">ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দিলীপ কুমার আগরওয়ালাকে তিন দিনের রিমান্ডে নিয়ে বাড্ডা থানা পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে। থানা পুলিশের পাশাপাশি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশও (ডিবি) তাঁকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। একই সঙ্গে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) জিজ্ঞাসাবাদ করছে অর্থপাচার, হীরা ও স্বর্ণ চোরাকারবারের বিষয়ে। আগরওয়ালার কলকাতায় তিনটি জুয়েলারি দোকান, ১১টি বাড়ি এবং মালয়েশিয়া, দুবাই ও কানাডায় বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়েও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।</p> <p style="text-align:justify">গতকাল বৃহস্পতিবার বাড্ডা থানার ওসি মো. সাইফুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে এ তথ্য জানিয়ে বলেন, ‘ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দিলীপ কুমার আগরওয়ালাকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়েছে। থানা পুলিশের পাশাপাশি ডিবি ও সিআইডি তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।’</p> <p style="text-align:justify">পুলিশ বলছে, গত ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গুলিবিদ্ধ হয়ে বিএনপিকর্মী হৃদয় আহম্মেদ মারা যায়। এ ঘটনায় গত ২২ আগস্ট মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার বিএনপির জয়েন্ট সেক্রেটারি শাহাদাত হোসেন বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন।</p> <p style="text-align:justify">পুলিশ আরো বলেছে, দিলীপ কুমার আগরওয়ালার বিরুদ্ধে দায়ের করা এই হত্যা মামলা তদন্ত করছে থানা ও ডিবি পুলিশ। এ বিষয়ে গতকাল বিকেলে ডিবি পুলিশের একটি দল বাড্ডা থানায় এসে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তিনি সরাসরি হত্যাকাণ্ডে অংশ নেন, নাকি হত্যার প্ররোচনায় অংশ নেন? হত্যাকাণ্ডে আর কে কে ছিল? বিশেষ হত্যার সময় তাঁর সঙ্গে আরো কোনো সন্ত্রাসী ছিল কি না? এমন অনেক বিষয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তবে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার দায় এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। বরং দায় চাপান অন্যদের ওপর। তার পরও তাঁকে এ বিষয়ে আরো জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।  </p> <p style="text-align:justify">এদিকে, থানা ও ডিবি পুলিশের পাশাপাশি সিআইডির একটি টিমও গতকাল বিকেলে বাড্ডা থানায় এসে দিলীপ কুমার আগরওয়ালাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট এক পুলিশ কর্মকর্তা।</p> <p style="text-align:justify">তিনি বলেন, আগরওয়ালার বিরুদ্ধে বিদেশ থেকে চোরাচালানের মাধ্যমে সোনা ও হীরা আমদানির নামে বিদেশে অর্থপাচার করার অভিযোগ রয়েছে। সিআইডির জিজ্ঞাসাবাদে তিনি এসব বিষয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেন বলে জিজ্ঞাসাবাদকারী এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।</p> <p style="text-align:justify">সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মো. আজাদ রহমান এ বিষয়ে বলেন, সিআইডির ফিন্যানশিয়াল ক্রাইম টিম আগরওয়ালাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তাঁর বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উঠেছে তার তদন্ত শুরু করেছে।</p> <p style="text-align:justify">সিআইডি সূত্র আরো বলেছে, ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দিলীপ কুমার আগরওয়ালার বিরুদ্ধে রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলায় নামমাত্র শোরুম দিয়ে প্রতারণা ও জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে ওই সব শোরুমে ডায়মন্ডের বদলে উন্নতমানের কাচের টুকরাকে প্রকৃত ডায়মন্ড হিসেবে বিক্রির অভিযোগ রয়েছে। এসব বিষয়েও আগরওয়ালাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।</p> <p style="text-align:justify">দুবাই-সিঙ্গাপুরে স্বর্ণ চোরাচালান সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করার বিষয়েও দিলীপ কুমার আগরওয়ালাকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় জানিয়ে সিআইডি সূত্র জানায়, ভারতের কলকাতায় তিনটি জুয়েলারি দোকান, ১১টি বাড়ি এবং মালয়েশিয়া, দুবাই ও কানাডায় বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছে দিলীপ আগরওয়ালার কাছে। এ ছাড়া প্রতারণার মাধ্যমে ৪০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে অবৈধভাবে একটি ব্যাংকের পরিচালক হওয়ার বিষয়ে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে জানতে চাওয়া হয়।</p> <p style="text-align:justify">সূত্র বলেছে, প্রাথমিকভাবে এমন আরো অনেক বিষয়ে সিআইডির ফিন্যানশিয়াল ক্রাইম কর্তৃক মানি লন্ডারিং অনুসন্ধান  টিম আগরওয়ালাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। এর মধ্য অনেক প্রশ্নের জাবাব দিয়েছেন আবার অনেক প্রশ্নের বিষয়ে নীরব ছিলেন।</p> <p style="text-align:justify">এর আগে দিলীপ কুমার আগরওয়ালাকে গত মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশান এলাকার বহুতল ভবন থেকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-১। পরের দিন তাঁর তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে বাড্ডায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বিএনপিকর্মী হৃদয় আহম্মেদকে (১৬) গুলি করে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় রিমান্ডে নেওয়া হয় তাঁকে।</p> <p style="text-align:justify">গত ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গুলিবিদ্ধ হয়ে বিএনপিকর্মী হৃদয় আহম্মেদ মারা যায়। এ ঘটনায় গত ২২ আগস্ট মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার বিএনপির জয়েন্ট সেক্রেটারি শাহাদাত হোসেন বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর বোন শেখ রেহানা, শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ১৬১ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়।</p>