<p> বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের অন্যতম একজন বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের আগামীকাল ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী।<br /> ১৯৭১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর যশোর জেলার গোয়ালহাটি ও ছুটিপুরে পাকবাহিনীর সাথে সম্মুখ যুদ্ধে মৃত্যুবরণ করেন রণাঙ্গনের লড়াকু সৈনিক নূর মোহাম্মদ। যশোরের শার্শা উপজেলার কাশিপুর গ্রামে তাঁকে সমাহিত করা হয়।<br /> জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান নূর মোহাম্মদ শেখ ১৯৩৬ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি নড়াইল সদর উপজেলার চন্ডীবরপুর ইউনিয়নের মহিষখোলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।<br /> নূর মোহাম্মদ শেখের বাবার নাম মোহাম্মদ আমানত শেখ এবং মার নাম জেন্নাতুন্নেছা। বাল্যকালেই তিনি বাবা-মাকে হারান। লেখাপড়া করেছেন সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত। এরপর ১৯৫৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি তৎকালিন পূর্ব পাকিস্তান রাইফেলসে যোগদান করেন। ১৯৭০ সালের ১০ জুলাই বদলি হন যশোর সেক্টরে। পরে তিনি ল্যান্স নায়েক পদোন্নতি পান। মুক্তিযুদ্ধের সময় যশোর অঞ্চল নিয়ে গঠিত ৮নং সেক্টরে অংশগ্রহণ করে দেশমাতৃকার স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করেন। এ সময়ে ক্যাপ্টেন নাজমুল হুদার নেতৃত্বে যশোরের শার্শা উপজেলার কাশিপুর সীমান্তের বয়রা অঞ্চলে পাক হানাদারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন নড়াইলের এ সাহসী সন্তান নূর মোহাম্মদ। ’৭১-এর এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত ৮নং সেক্টর কমান্ডার ছিলেন কর্নেল (অব) আবু ওসমান চৌধুরী এবং সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত মেজর এম এ মঞ্জুর। এদের নেতৃত্বেও প্রাণ-পণ লড়েছেন নূর মোহাম্মদ। ৫ সেপ্টেম্বর পাকবাহিনীর গুলিতে নূর মোহাম্মদের সহযোদ্ধা নান্নু মিয়া গুরুতর আহত হন। আহত সহযোদ্ধাকে কাঁধে নিয়েই এলএমজি হাতে শত্রুপক্ষের সাথে যুদ্ধ করেছেন। হঠাৎ করে পাকবাহিনীর মর্টারের আঘাতে নূর মোহাম্মদের হাঁটু ভেঙ্গে যায়। তবুও গুলি চালান। প্রিয় মাতৃভূুমিকে শক্রমুক্ত করার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যান। এক সময় তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।<br /> তাঁর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে নড়াইলে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে আগামিকাল শুক্রবার সকাল ৯টায় নূর মোহাম্মদ স্মৃতি জাদুঘর মিলনায়তনে কোরআনখানি, ১১টায় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ, দুপুর ১২টায় স্মৃতি জাদুঘর মিলনায়তনে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল।আলোচনা সভায় জেলা প্রশাসক আব্দুল গফফার খান, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদের সহধর্মিনী বেগম ফজিলাতুন্নেছা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আনন্দ কুমার বিশ্বাস, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ ট্রাস্টের সদস্য সচিব আজিজ ভূঁইয়া প্রমুখ উপস্থিত থাকবেন।<br /> এ ছাড়া শার্শার কাশিপুরে অবস্থিত কবর জিয়ারতে বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের পরিবারের সদস্যরা, বিজিবি দক্ষিণ-পশ্চিম রিজিওয়নের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এবং নড়াইল জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা যাবেন বলে ট্রাস্ট সূত্রে জানা গেছে।</p>