স্মার্ট গেজেটের খোঁজখবর

  • বাংলাদেশের বাজারে স্মার্টফোনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কয়েক বছর ধরে বাড়ছে ওয়্যারবেল গেজেট বা পরিধানযোগ্য প্রযুক্তি পণ্য—স্মার্ট ওয়াচ, ফিটনেস ট্র্যাকার, স্মার্ট হোম, অ্যাসিস্ট্যান্স ডিভাইসের বাজার। খোঁজখবর নিয়ে এই বাজারের হাল-হকিকত জানাচ্ছেন রিয়াদ আরিফিন
শেয়ার
স্মার্ট গেজেটের খোঁজখবর
স্বাস্থ্যসচেতনদের অনেকেই এখন স্মার্ট ওয়াচ ব্যবহার করছেন। মডেল : নাসিফ, ছবি : কাকলী প্রধান

পরিধানযোগ্য স্মার্ট গেজেট

স্মার্ট গেজেট বাজারের একটা বড় অংশ দখল করে আছে পরিধানযোগ্য নানান প্রযুক্তিপণ্য। বিভিন্ন ধরনের স্মার্ট ঘড়ি, ফিটনেস ট্র্যাকার ব্র্যান্ড, ব্রেসলেট, স্মার্ট চশমা, জুতা, সানগ্লাস ইত্যাদি। বৈশ্বিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্রাউডভিউ রিসার্চ-এর হিসাবে এই পরিধানযোগ্য গেজেটের বৈশ্বিক বাজারের আকার ছয় হাজার কোটি ডলারের বেশি, আর ২০৩০ সাল নাগাদ এই বাজারের প্রবৃদ্ধি হবে প্রায় ১৫ শতাংশ। আরেক গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইডিসির পরিসংখ্যানে এই খাতের শীর্ষ ব্র্যান্ডগুলোঅ্যাপল, স্যামসাং, হুয়াওয়ে এবং শাওমি।

দেশের বাজারে এই ক্যাটাগরির প্রায় সব ব্র্যান্ডের পণ্যই পাওয়া যায়। বিভিন্ন ধরনের স্মার্ট ঘড়ি এক হাজার থেকে শুরু করে লাখ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। ব্যবহারকারীরা তাঁদের পছন্দ ও প্রয়োজন মোতাবেক নানান ব্র্যান্ডের হরেক রকম দামের ও নানান ফিচারসমৃদ্ধ এসব ঘড়ি কিনতে পারেন।

 

বাজেট যখন পাঁচ হাজারের নিচে

এই বাজেট রেঞ্জে দেশের বাজারে ওয়ানপ্লাস, শাওমি, অ্যামাজফিট, ইমিল্যাব, লেনোভোর বিভিন্ন মডেলের স্মার্ট ঘড়ি পাওয়া যায়।

এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য চার হাজার ৭০০ টাকা মূল্যের অ্যামাজফিট বিপ-৩, দুই হাজার ৩০০ টাকা মূল্যের হেলিও জিএসটি লাইট, চার হাজার ২০০ টাকা মূল্যের কিসিলেক্ট কেআর কলিং স্মার্ট ওয়াচ, তিন হাজার ৩৫০ টাকা মূল্যের অ্যামাজফিট ব্যান্ড-৫ অন্যতম। এই ধরনের ঘড়িগুলো ব্লুটুথের মাধ্যমে স্মার্টফোনের সঙ্গে যুক্ত করা যায়। এর মাধ্যমে সময় দেখার পাশাপাশি স্মার্টফোনের বিভিন্ন নোটিফিকেশন দেখা, কল করা, কল রিসিভ করা যায়। এ ছাড়া এই ঘড়িগুলোতে রয়েছে আরো কিছু স্মার্ট ফিচার।
যেমন : হেলথ ট্র্যাকার, স্লিপ ট্র্যাকার, অ্যাক্টিভিটি মনিটরের মতো সুবিধাও পাওয়া যায়।

 

বাজেট যখন পাঁচ থেকে ১৫ হাজার

এই বাজেট সেগমেন্টের দেশের বাজারে অনেক মডেলের স্মার্ট ঘড়ি পাওয়া যায়। এগুলোর মধ্যে ছয় হাজার ৪০০ টাকার রিয়েলমি ব্র্যান্ডের ওয়াচ-২ প্রো, পাঁচ হাজার ৯০০ টাকার মেয়েদের জন্য কিসিলেক্ট ব্র্যান্ডের কিসিলেক্ট লোরা, পাঁচ হাজার ১০০ টাকা মূল্যের মিব্রো ব্র্যান্ডের টি-১ কলিং স্মার্ট ওয়াচ, ১৩ হাজার টাকা মূল্যের ওয়ানপ্লাস স্মার্ট ওয়াচ এবং ১৫ হাজার টাকা মূল্যের অ্যামাজফিট ব্র্যান্ডের জেপ-ই মডেলের স্মার্ট ওয়াচ।

 

বাজেট যখন ১৫,০০০+

দেশের বাজারে প্রিমিয়াম ক্যাটাগরির কিছু স্মার্ট ওয়াচ পাওয়া যায় যেগুলোর দাম তুলনামূলক বেশি। এগুলোর মধ্যে টেক জায়ান্ট অ্যাপল ও স্যামসাংয়ের কিছু মডেলের স্মার্ট ওয়াচ ও বিশ্বখ্যাত পরিধানযোগ্য ডিভাইস নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ফিটবিটের বেশ কিছু ফিটনেস ট্র্যাকার ব্র্যান্ড রয়েছে।

বর্তমানে অ্যাপলের ওয়াচ সিরিজ মডেল আল্ট্রা চলছে, যার বাজারমূল্য প্রায় ৯৫ হাজার টাকা। এ ছাড়া ৪৭ হাজার টাকা মূল্যের অ্যাপল ওয়াচ সিরিজ ৮, ৩১ হাজার ৫০০ টাকা মূল্যের এসই ২০২২,  ৪২ হাজার টাকা মূল্যের সিরিজ ৭, ৩০ হাজার ৫০০ টাকা মূল্যের ও সিরিজ ৬ বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। স্যামসাং ব্র্যান্ডের গ্যালাক্সি ওয়াচ ৩ ও ৪ পাওয়া যাবে যথাক্রমে ৩০ হাজার এবং ৪১ হাজার ৫০০ টাকায়।

এ ছাড়া টেক জায়ান্ট গুগলের স্মার্ট ঘড়ি পিক্সেল ওয়াচ পাওয়া যায় ৪৮ হাজার টাকায়।

 

অডিও পণ্য

দেশের বাজারে সংগীতপ্রেমীদের মধ্যে বিশেষত অডিও গেজেটের চাহিদা অনেক। ব্যবহারকারীদের চাহিদা মাথায় রেখে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো ও বৈশ্বিক বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দেশে নানা মডেলের অডিও গেজেট বিপণন করছে। মোটা দাগে তিন ক্যাটাগরির অডিও গেজেট দেশের বাজারে জনপ্রিয়তারযুক্ত ইয়ারফোন ও হেডফোন, তারবিহীন বিভিন্ন ক্যাটাগরির ইয়ারফোন ও ট্রুথওয়্যারলেস (এয়ারপড) জাতীয় গেজেট। এগুলোর মধ্যে ট্রুথওয়্যারলেস (টিডাব্লিউ) জাতীয় পণ্যের চাহিদা বেশি। এই ক্যাটাগরিতে অ্যাপল ব্র্যান্ডের হালনাগাদ মডেল এয়ারপড প্রোর (দ্বিতীয় প্রজন্মের) দাম প্রায় ৩০ হাজার টাকা। এ ছাড়া এই ক্যাটাগরিতে এক হাজার ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে শাওমি, রিয়েলমি, লেনোভো ও কিউসিওয়াই ব্র্যান্ডের পণ্য পাওয়া যায়। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ১৩০০ টাকা মূল্যের লেনোভো লাইভ পড, ৩০০০ টাকা মূল্যের রিয়েলমি এয়ার ৩ নিও, ১১ হাজার টাকা মূল্যের ওয়ানপ্লাস প্রো ইত্যাদি।

এগুলো ছাড়া নেক ব্র্যান্ডজাতীয়ও ইয়ারফোন পাওয়া যায় ন্যূনতম এক হাজার টাকা থেকে শুরু করে।

 

স্মার্ট হোম

আমাদের নিত্য জীবনযাপনকে সহজ করছে হরেক রকম স্মার্ট হোম পণ্য। এগুলোর মধ্যে রয়েছে নানা ধরনের হোম ও কিচেন অ্যাপ্লায়েন্স অন্যতম। গৃহস্থালি ব্যবহার্য অনেক পণ্য যেমন : রাইস কুকার, ওয়াশিং মেশিন, রেফ্রিজারেটর, এয়ারকন্ডিশনার ইত্যাদিতে এখন অনেক স্মার্ট ফিচার জুড়ে দিচ্ছে নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো, যার মাধ্যমে এগুলোকে স্মার্টফোনের মাধ্যমে দূর থেকে নিয়ন্ত্রণের মতো সুযোগও রাখা হচ্ছে। এ ছাড়া স্মার্ট হোম কন্ট্রোলারজাতীয় প্রযুক্তির মাধ্যমে বাড়ির লাইট, ফ্যানসহ অন্য সব ইলেকট্রনিক পণ্যকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

এগুলোর পাশাপাশি বাজারে নানান ধরনের এয়ার পিউরিফারার ও ঘরবাড়ি পরিষ্কার করার জন্য রোবটিক ক্লিনারজাতীয় পণ্যেরও চাহিদা রয়েছে বাজারে।

দেশের বাজারে ওয়ালটন ব্র্যান্ডের এয়ার পিউরিফায়ার পাওয়া যায় ১৭ হাজার টাকায়, স্যামসাং ব্র্যান্ডের পিউরিফায়ারগুলো ২৫-৪৭ হাজার টাকার মধ্যে আর শাওমি ব্র্যান্ডের পিউরিফায়ারের মূল্য ১৫-২৫ হাজার টাকার মধ্যে।

 

স্মার্ট টিভি

টেলিভিশনের ধারণাই যেন পাল্টে গিয়েছে বিগত কয়েক বছরে! সাধারণ টেলিভিশনের জায়গা দখল করে বাড়িতে বাড়িতে স্মার্ট টিভির জয়জয়কার। বাজারে এখন হরেক রকম ফিচারসমৃদ্ধ স্মার্ট টেলিভিশন পাওয়া যায়, যেগুলোতে সাধারণ টেলিভিশনের সুবিধার পাশাপাশি নানা অনলাইন প্ল্যাটফরম (ওটিটি) স্ট্রিম, ইন্টারনেট ব্যবহারসহ আরো অনেক সুবিধা মেলে। দেশের বাজারে সনি, স্যামসাং, ওয়ালটন, শাওমি ইত্যাদি ব্র্যান্ড নানা ধরনের স্মার্ট টিভি বাজারজাত করছে।

দেশীয় নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওয়ালটনের বিভিন্ন মডেলের স্মার্ট ফিচারসমৃদ্ধ টিভি ২৬ হাজার টাকা থেকে শুরু করে লাখ টাকা দামের পর্যন্ত রয়েছে। শাওমি ব্র্যান্ডের ৩২ ইঞ্চি থেকে ৫৫ ইঞ্চি ডিসপ্লের কয়েকটি মডেলের টিভি পাওয়া যায়, যেগুলোর দাম ২৪-৬৫ হাজার টাকা, সনি ব্রাভিয়া সিরিজের স্মার্ট টিভি পাওয়া যায় ৪৫ হাজার থেকে শুরু করে আট লাখ টাকার মধ্যে।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

একনজরে

জরুরি যোগাযোগের অ্যাপ ‘বিটচ্যাট’

টেকবিশ্ব ডেস্ক
টেকবিশ্ব ডেস্ক
শেয়ার
জরুরি যোগাযোগের অ্যাপ ‘বিটচ্যাট’
টুইটারের সাবেক সিইও জ্যাক ডরসি ছবি : সংগৃহীত

ওয়াই-ফাই বা মোবাইল নেটওয়ার্কের বদলে ব্লুটুথের মাধ্যমে মেসেজ পাঠানোর প্ল্যাটফর্ম বিটচ্যাট। এটি তৈরি করেছেন এক্স তথা টুইটারের সাবেক প্রধান নির্বাহী এবং প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক ডরসি।  বিটচ্যাটের মাধ্যমে একক ব্যক্তি বা গ্রুপে অনেকের সঙ্গে মেসেজ আদান-প্রদান করা যাবে। শুধু প্রয়োজন ব্লুটুথ মেশ ফিচারযুক্ত ডিভাইস।

  আপাতত শুধু আইফোন এবং ম্যাকে এটি ব্যবহার করা যাবে।

মেশ নেটওয়ার্ক তৈরি করতে সক্ষম আধুনিক ব্লুটুথ প্রযুক্তি। প্রতিটি ডিভাইস কাজ করে প্রাপক এবং প্রেরক হিসেবে। বিটচ্যাটের তাই কোনো সার্ভার নেই, প্রত্যেক ব্যবহারকারীই সার্ভার এবং ক্লায়েন্ট।

একটি এলাকায় যত বেশি ব্যবহারকারী থাকবে, নেটওয়ার্কের পরিব্যপ্তিও হবে তত বেশি। ইন্টারনেটের বদলে এই নেটওয়ার্ককে কাজে লাগিয়ে বিটচ্যাট তৈরির কারণ হিসেবে জ্যাক ডরসি ডিসেন্ট্রালাইজেশন এবং স্বাধীনতার কথা বললেও ধরে নেওয়া যায় এর আসল ব্যবহারের ক্ষেত্র হয়ে উঠবে দুটি। দুর্যোগের ফলে ইন্টারনেট ও মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ হয়ে গেলে অথবা আন্দোলন চলাকালে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হলে। অ্যাপটির অস্বাভাবিক পরিমাণ নিরাপত্তা ফিচার দ্বিতীয় ব্যবহারের কথাই মনে করিয়ে দেয়।

 

 

মন্তব্য
একনজরে

মনিটাইজেশন নীতিমালা বদলেছে ইউটিউব

টেকবিশ্ব ডেস্ক
টেকবিশ্ব ডেস্ক
শেয়ার
মনিটাইজেশন নীতিমালা বদলেছে ইউটিউব

ইউটিউবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে তৈরি মানহীন ভিডিও বা এআই স্লপ-এর বন্যা বইছে। গুগলের নিজস্ব সেবা ভিও ৩ এবং ওপেনএআইয়ের তৈরি সোরা এ কাজে জনপ্রিয়। চলমান ট্রেন্ডগুলোকে কি-ওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহার করে এ ভিডিওগুলো তৈরির লক্ষ্য শুধু ভিউ কামানো, যাতে চ্যানেল দ্রুত মনিটাইজেশন পায়। এভাবে মাসে কয়েক হাজার ডলার আয় করছে অনেকে।

অথচ এসব ভিডিওর ভিড়ে হারিয়ে যাচ্ছে মানসম্মত ভিডিও এবং দর্শকও ইউটিউবের রিকমেন্ডেশন অ্যালগরিদমের ওপর আস্থা হারাচ্ছে। পাশাপাশি ইউটিউবেরও অর্থ অপচয় হচ্ছে।

সমস্যাটি নিরসনে ২ জুলাই ইউটিউব কর্তৃপক্ষ তাদের ইউটিউব পার্টনারশিপ প্রোগ্রামের (ওয়াইপিপি) শর্তাবলিতে বদল এনেছে। আগামী ১৫ জুলাইয়ের পর থেকে চ্যানেলে এআই স্লপ থাকলে সেটি ইউটিউব পার্টনার হতে পারবে না, অর্থাৎ চ্যানেলগুলো মনিটাইজেশনের অযোগ্য হয়ে যাবে।

এআইভিত্তিক কনটেন্টের নতুন চ্যানেল মনিটাইজেশন পাবে না, পুরনোগুলোও সেটি হারাবে। এর পাশাপাশি একই ধরনের ভিডিও একাধিকবার আপলোড করলে, অন্যান্য চ্যানেলের ভিডিও জোড়াতালি দিয়ে আপলোড করলে অথবা এআই ভয়েস ব্যবহার করলে সেসব কনটেন্টকে রিপিটেটিভ ধরা হবে এবং চ্যানেলে মনিটাইশেন থাকবে না।

 

মন্তব্য

স্যামসাং আনপ্যাকড নতুন যা এলো

    প্রতিবছরের মধ্যভাগে স্যামসাং বাজারে আনে ফোল্ড ও ফ্লিপ সিরিজের নতুন ফোন। এবারও এসেছে। এ বছর ডিজাইনের দিকে মনোযোগী হয়েছে স্যামসাং, ফোল্ড এবং ফ্লিপ মডেলগুলোর ডিজাইনে বড় পরিবর্তন দেখা গেছে। ঘড়ির ডিজাইনও বদলে গেছে অনেকটা। নতুন ডিভাইসগুলোর বিস্তারিত জানাচ্ছেন আশিক উল বারাত
শেয়ার
স্যামসাং আনপ্যাকড নতুন যা এলো
স্যামসাং গ্যালাক্সি জেড ফ্লিপ ৭ এবং গ্যালাক্সি জেড ফোল্ড ৭। ছবি : সংগৃহীত

৯ জুলাই নিউইয়র্কের ব্রুকলিনে অনুষ্ঠিত হয়েছে স্যামসাংয়ের গ্রীষ্মকালীন আনপ্যাকড ২০২৫ ইভেন্ট। গ্যালাক্সি জেড ফোল্ড ৭ এর পাশাপাশি আরো ছিল জেড ফ্লিপ ৭ এবং প্রথমবারের মতো এফই সিরিজের ফোল্ডিং ফোন গ্যালাক্সি জেড ফ্লিপ সেভেন এফই। নতুন স্মার্টওয়াচের মধ্যে রয়েছে গ্যালাক্সি ওয়াচ এইট, এইট ক্লাসিক এবং ওয়াচ আলট্রা ২০২৫।

 

গ্যালাক্সি জেড ফোল্ড ৭

নতুন ডিভাইসগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচিত গ্যালাক্সি জেড ফোল্ড ৭।

ফোল্ড সেভেন ফোনটি স্যামসাংয়ের সবচেয়ে পাতলা ও হালকা ফোল্ডিং ফোন। ভাঁজ করা অবস্থায় এর পুরুত্ব মাত্র ৮.৯ মিলিমিটার, যা আগের ফোল্ড সিক্সের ১২.২ এর তুলনায় অনেকটাই কম। খোলা অবস্থায় এর পুরুত্ব মাত্র ৪.২ মিলিমিটার। এমনকি ওজনেও মাত্র ২১৫ গ্রাম, যা ফোল্ডিং ফোন হিসেবে বেশ হালকা।

ফোনটির বাইরের ডিসপ্লে ৬.৫ ইঞ্চি। ভেতরে থাকছে ৮ ইঞ্চি ডিসপ্লে। ফোনটিতে রয়েছে ২০০ মেগাপিক্সেলের মূল ক্যামেরা, পাশাপাশি থাকছে ১০ মেগাপিক্সেলের টেলিফটো লেন্স ও ১২ মেগাপিক্সেলের আলট্রাওয়াইড লেন্স। দুটি ১০ মেগাপিক্সেলের সেলফি ক্যামেরা আছে।

থাকছে ৪৪০০ এমএএইচ ব্যাটারি। প্রসেসর হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে স্নাপড্রাগনের ৮ এলিট প্লাস। ডিভাইসের মূল্য ধরা হয়েছে ২০০০ ডলার, যা বাংলাদেশি টাকায় আড়াই লাখ টাকা পড়তে পারে।

 

গ্যালাক্সি জেড ফ্লিপ ৭ এবং এফই

স্যামসাং আনপ্যাকড নতুন যা এলোবেজেলহীন ৪.১ ইঞ্চি বাইরের ডিসপ্লেই গ্যালাক্সি জেড ফ্লিপ ৭ এর সবচেয়ে বড় নতুন ফিচার। সঙ্গে ভেতরে থাকছে ৬.৯ ইঞ্চি ডিসপ্লে।

ব্যাটারি থাকছে ৪৩০০ এমএএইচ। চিপসেট হিসেবে থাকছে স্যামসাংয়ের নিজস্ব এক্সিনস ২৫০০ প্রসেসর।

এবার বাইরের ডিসপ্লে থেকেই জেমিনি চালানো যাবে। এ ছাড়াও ফোন না খুলেই মেসেজিং, এমনকি ভিডিও কলও করা যাবে। এই ডিভাইসটির দাম ধরা হয়েছে এক হাজার ১০০ ডলার, যা বাংলাদেশি টাকায় এক লাখ ৪০ হাজার টাকা।

বাজেট মডেল হিসেবে স্যামসাং এনেছে ফ্লিপ সেভেন এফই। সমালোচকরা বলছে, এটি নতুন নামে মূলত ফ্লিপ সিক্স। ফ্লিপ ৭ এর ডিজাইন, ওজন ও ব্যাটারি এক রেখে প্রসেসর পরিবর্তন করে এক্সিনস ২৪০০ ব্যবহার করা হয়েছে। এই ফোনটির মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৯০০ ডলার, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় এক লাখ ১০ হাজার টাকা।

স্যামসাং এই ইভেন্টে তাদের প্রতিটি ডিভাইসে সাত বছরের সফটওয়্যার আপডেট থাকবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

 

গ্যালাক্সি ওয়াচ সিরিজ ৮

স্মার্টওয়াচের ডিজাইনে এবার স্যামসাং বড় পরিবর্তন এনেছে। গ্যালাক্সি ওয়াচ এইট সিরিজে স্কয়ার + সার্কেল অর্থাৎ স্কোয়ারকেল ডিজাইনে এসেছে, যাকে কম্পানি বলছে কুশন ডিজাইন

ওয়াচ এইট ৪০ ও ৪৪ মিলিমিটার, মোট দুটি ভার্সনে এসেছে, যার দাম যথাক্রমে ৩৫০ ও ৩৮০ ডলার। বাংলাদেশি টাকায় ঘড়িগুলোর দাম ৫০ হাজার টাকার মধ্যেই থাকবে। ওয়াচ এইট ক্লাসিক মডেলটি এসেছে ৪৬ মিলিমিটারে এবং এতে আগের মতোই রয়েছে গোল বেজেল। এর দাম শুরু হচ্ছে ৫০০ ডলার থেকে। ঘড়িগুলোতে এবার যুক্ত হয়েছে গুগলের নতুন সফটওয়্যার ওয়্যার ওএস ৬। গ্যালাক্সি ওয়াচ আলট্রা নতুন কালার ও বাড়তি প্রোটেকশন নিয়ে এসেছে।
সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ৬৪ গিগাবাইট ইন্টারনাল স্টোরেজ। এর দাম ৬০০ ডলার।  বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৭৩ হাজার টাকা।

মন্তব্য
সমাপ্তির পথে

যুক্তরাষ্ট্র বনাম টিকটক যুদ্ধ

টি এইচ মাহির
টি এইচ মাহির
শেয়ার
যুক্তরাষ্ট্র বনাম টিকটক যুদ্ধ

টিকটক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে রেষারেষি অবশেষে শেষ হতে যাচ্ছে। আইন অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবসা করতে হলে টিকটকের মালিকানা বাইটডান্স রাখতে পারবে না। এই শর্ত রক্ষা করতে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবহারকারীদের জন্য আলাদা অ্যাপ তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে টিকটক কর্তৃপক্ষ।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পর পর তিনবার টিকটক নিষিদ্ধের সময়সীমা বাড়িয়ে নোটিশ জারি করেছেন।

তৃতীয় নোটিশের সময়সীমাও প্রায় শেষ। এরপর যুক্তরাষ্ট্রে টিকটকের কার্যক্রম চালাতে হলে বাইটডান্সের অবশ্যই অ্যাপটির মালিকানা আমেরিকান কম্পানির হাতে হস্তান্তর করতে হবে, এ সিদ্ধান্তে মার্কিন প্রশাসন অটল। এ শর্ত মতে টিকটিক বিক্রি নিয়ে নতুন চুক্তি হতে যাচ্ছে। মার্কিন প্রশাসন জানিয়েছে, একদল বিনিয়োগকারী টিকটক কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
চুক্তির জন্য ঐকমত্যে পৌঁছেছে বেশির ভাগ পক্ষ, জানিয়েছে মার্কিন সরকার। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, তিনি সম্ভাব্য টিকটক চুক্তি নিয়ে চীন সরকারের সঙ্গে কথা-চালাচালি শুরু করবেন।

আগামী ৫ সেপ্টেম্বর আমেরিকায় টিকটকের নতুন সংস্করণ আসবে। এটি হবে সম্পূর্ণ পৃথক একটি অ্যাপ, মূল টিকটকের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়।

টিকটক নিষিদ্ধের সময়সীমা অনুযায়ী সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে এটি যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাপ স্টোর থেকে সরিয়ে নিতে হবে, যাতে নতুন করে ডাউনলোড করা না যায়। এরপর আগামী বছরের মার্চ মাস থেকে অ্যাপটি যুক্তরাষ্ট্রে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে। তাই টিকটকের কর্মীরা অ্যাপটির নতুন সংস্করণ তৈরিতে ব্যস্ত। এম টু কোডনেমে নতুন একটি অ্যাপ আসবে আমেরিকানদের জন্য। বর্তমান সংস্করণের কোডনেম হলো এম

 মার্কিন প্রশাসন জানিয়েছে, টিকটক বিক্রি নিয়ে চুক্তি প্রায় চূড়ান্ত, বাকি শুধু বেশ কিছু খুঁটিনাটি বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানো। আর এই ক্রেতাদের তালিকায় যে কম্পানির নাম শোনা যাচ্ছে, সেটি হলো ওরাকল। বহুজাতিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানটি টিকটক কেনার দৌড়ে সবচেয়ে এগিয়ে আছে। এ বছরের শুরু থেকে কাজ চলছে টিকটকের যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাবসায়িক কার্যক্রমকে একটি নতুন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করার জন্য। শর্ত অনুযায়ী মার্কিন টিকটকের বেশির ভাগ মালিকানা মার্কিন বিনিয়োগকারীদের হাতে থাকবে এবং তাদের দ্বারা পরিচালিত হবে। চীনা পণ্যের ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপের ঘোষণার পর চীন এটি অনুমোদন করবে না বলে ইঙ্গিত দেওয়ার পর তা স্থগিত করা হয়েছিল। 

টিকটক কেনার দৌড়ে ওরাকল কিভাবে এগিয়ে আছে সেটা নিয়েও রয়েছে ধোঁয়াশা। তবে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, সম্প্রতি এ প্রতিষ্ঠানটি যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে ৭৫ শতাংশ ছাড়ে ক্লাউডসেবা দিতে রাজি হয়েছে। পর পর তিনবার টিকটক ব্যান ঠেকিয়ে রাখতে ট্রাম্পের বিশেষ নোটিশ, এখন সরকারি চুক্তির মাধ্যমে টিকটকের মালিকানা ওরাকলের হাতে তুলে দেওয়া দুটোই বেশ প্রশ্নবিদ্ধ।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ