<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমাদের দেশের ব্যাংকিং খাতের সংস্কার নিয়ে আলোচনা চলছে দীর্ঘদিন ধরে এবং আমরাও সেই আলোচনা করে আসছি। কিন্তু শুধু ব্যাংকিং খাতের সংস্কার করে পরিপূর্ণ সফলতা পাওয়া যাবে বলে হয় না। এখন সংস্কার করা প্রয়োজন পুরো আর্থিক খাতের। আধুনিক ব্যাংকিং কার্যক্রমের পরিধি ও ব্যাপ্তি এতটা বৃদ্ধি পেয়েছে যে এই খাতকে এখন আর পৃথক করে দেখার সুযোগ নেই। ব্যাংকের কার্যাবলি এখন অনেকটাই আর্থিক খাতের কার্যাবলির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তা ছাড়া ব্যাংকিং খাতের চরম অব্যবস্থার কারণে এই খাত সংস্কারের দাবি উঠেছে। কিন্তু দেশের আর্থিক খাতের অন্যান্য অংশেও তো একই রকম অব্যবস্থা বিরাজ করছে। ফলে অব্যবস্থার কারণে ব্যাংকিং খাতের সংস্কার করতে হলে, সেই একই কারণে আর্থিক খাতের অন্যান্য বিভাগের সংস্কার করা এখন সময়ের দাবি।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অনেকেই ব্যাংকিং খাত এবং আর্থিক খাতকে পৃথক করে দেখার চেষ্টা করেন না। আর্থিক খাত হচ্ছে দেশের অর্থনীতি এবং অর্থ ব্যবস্থার একটি পরিপূর্ণ কার্যক্রম, যেখানে ব্যাংকিং ছাড়াও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ আছে, যেগুলো দেশের অর্থনীতি ও মুদ্রাব্যবস্থার সঙ্গে সরাসরি জড়িত। ব্যাংকিং খাত হচ্ছে দেশের সমগ্র আর্থিক খাতের একটি অংশ মাত্র। আর্থিক খাতের আওতায় ব্যাংকিং ছাড়াও আরো অন্য যেসব খাত আছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ঃ ১. ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান, যেমন</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">লিজিং কম্পানি, ২. বীমা কম্পানি, ৩. মার্চেন্ট ব্যাংক, ৪. বিশেষায়িত ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং ৫. পুঁজিবাজার। পুঁজিবাজারের আবার আছে সুনির্দিষ্ট দুটো খাত, যার একটি হচ্ছে প্রাথমিক বাজার বা প্রাইমারি মার্কেট এবং আরেকটি হচ্ছে শেয়ার বাজার বা স্টক মার্কেট। এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা; যেমন</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডও এই আর্থিক খাতের বাইরে নয়। আর্থিক খাতের এই প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গ একটি অন্যটির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। একটি বিভাগ আরেকটির ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীল না হলেও, একটি অন্যটির সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমেই সফলভাবে কাজ করে থাকে। এ কারণেই সমগ্র আর্থিক খাতের অন্যান্য বিভাগকে বিবেচনায় না নিয়ে শুধু একটি বিভাগের সংস্কার করা হলে খুব একটা সফলতা পাওয়া যাবে বলে মনে হয় না। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সত্যি বলতে কী, অব্যবস্থা বিরাজ করছে সমগ্র আর্থিক খাতের সব বিভাগে। ব্যাংকিং খাতের অব্যবস্থার কথা সবার জানা। কিন্তু যে খাতের কথা কেউ আলোচনায়ই আনেন না, তা হচ্ছে দেশের বীমা খাত এবং এখানেও চরম অব্যবস্থা বিরাজ করছে। আমাদের দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য এবং সমাজের পদে পদে ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও বীমা সুবিধা একেবারেই জনপ্রিয় নয়। এর কারণ এই খাতে চরম অব্যবস্থা। বীমা দাবী পূরণ না করার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। শুধু তাই নয়, বীমার প্রিমিয়ামের অর্থ ব্যবস্থাপনা নিয়ে আছে নানা অভিযোগ। অনেক ক্ষেত্রে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগও আছে। সবচেয়ে বেশি অব্যবস্থা বিরাজ করছে দেশের পুঁজিবাজারে। কী প্রাইমারি মার্কেট, অর্থাৎ প্রাথমিক মূলধন উত্তোলনের মাধ্যম বা শেয়ার বাজার, তথা স্টক মার্কেট</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সর্বত্রই অব্যবস্থার অভিযোগ অনেক দিনের। বলার অপেক্ষা রাখে না যে অনেক ক্ষেত্রেই ব্যাংকিং খাতের চেয়ে পুঁজিবাজারের অব্যবস্থার মাত্রা বেশি। এ কথা অনস্বীকার্য যে ব্যাংকিং খাতের অব্যবস্থার কারণে দেশের ক্ষতি হয়েছে এবং প্রতিটি ব্যাংকের ক্ষতি হয়েছে, কিন্তু আমানতকারী তাঁদের আমানত হারিয়েছেন</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এমন অভিযোগ আমরা শুনিনি এবং এখনো হয়তো সেই পর্যায়ে যায়নি। পক্ষান্তরে পুঁজিবাজার, বিশেষ করে স্টক মার্কেটে অব্যবস্থার কারণে অনেক বিনিয়োগকারী তাঁদের পুঁজি হারিয়ে সর্বস্বান্ত হয়েছেন। সুতরাং দেশের আর্থিক খাতের সর্বত্রই সমস্যা এবং অব্যবস্থা। ফলে সংস্কার করা প্রয়োজন সমগ্র আর্থিক খাতেই।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সমগ্র আর্থিক খাতে সংস্কার না করে শুধু নির্দিষ্ট একটি খাতে বা ব্যাংকিং খাতে সংস্কার করলে সেই সংস্কার উদ্যোগ প্রত্যাশা অনুযায়ী ফল বয়ে আনবে না। সেই মাপের সংস্কারের মাধ্যমে ব্যাংকিং খাতের বিরাজমান সমস্যার সন্তোষজনক সমাধান সম্ভব হবে না। যেমন</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মানসম্পন্ন ব্যাংকিং নিশ্চিত করতে হলে এই খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব বিভাগের মধ্যে কিছু সাধারণভাবে গৃহীত শর্তাবলি মেনে চলার বাধ্যবাধকতা আছে। কিন্তু ব্যাংকিং খাতের পাশাপাশি অন্যান্য সংশ্লিষ্ট খাতের আধুনিকায়ন করা না গেলে ব্যাংকিং খাতের একার পক্ষে সেসব শর্ত পরিপালন করা সম্ভব হবে না। ফলে যতই সংস্কার করা হোক না কেন, দেশের ব্যাংকিং খাতে দুর্বলতা বা ফাঁকফোকর থাকবে, যার মাধ্যমে এই খাতের বিশৃঙ্খল অবস্থা চলতেই থাকবে। একইভাবে দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসা বা আত্মকর্মসংস্থানে নিয়োজিত ব্যবসা-বাণিজ্যকে উৎসাহিত করতে হলে সেই খাতে ব্যাংকিংসেবা, বিশেষ করে ঋণ সুবিধা প্রদানকে সহজ এবং অবারিত করতে হবে। বাস্তবতা হচ্ছে, এই খাতে ঋণ প্রদানে ঝুঁকির মাত্রা অনেক বেশি এবং এখানে প্রদত্ত ঋণের প্রায় ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ খেলাপি হয়। ফলে এত বিশাল অঙ্কের ঋণখেলাপির ঝুঁকি নিয়ে কোনো ব্যাংক ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ে ঋণ প্রদানে আগ্রহী হবে না। এই মাত্রাতিরিক্ত ঋণ ঝুঁকি লাঘবের জন্য বিশেষ বীমা সুবিধার প্রচলন করা হয়। এ কারণেই দেশের বীমা খাতের সংস্কার না করে শুধু ব্যাংকিং খাতের সংস্কার করলে ব্যাংক চাইলেও ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ে ঋণদানে উৎসাহিত হবে না এবং সংস্কারের কাঙ্ক্ষিত ফল লাভ সম্ভব হবে না।  </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বর্তমান ব্যাংকিং কার্যক্রম শুধু গ্রাহকদের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহের দায়িত্বই পালন করে না, সেই সঙ্গে গ্রাহকদের ব্যক্তিগত আর্থিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করে। একজন গ্রাহক যখন ব্যাংকে আসেন, তখন তাঁর সব আর্থিক চাহিদা পূরণের কাজটি করতে হয় আধুনিক ব্যাংকের। সেই গ্রাহকের উপার্জন, সঞ্চয়, ঝুঁকি গ্রহণের সক্ষমতা এবং অবসর জীবন কেমন হবে, প্রভৃতি বিষয় বিবেচনায় নিয়ে তাঁর মাসিক খরচের পরিমাণ, সঞ্চয়ী হিসেবে জমা, স্থায়ী আমানতে জমা, পেনশন তহবিলে জমা, মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ এবং এমনকি প্রযোজ্য ক্ষেত্রে শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগের ব্যাপারে সুপরামর্শ প্রদান করা হয় আধুনিক ব্যাংকের মাধ্যমে। এ কারণেই প্রতিটি ব্যাংকে ব্যাক্তিগত ব্যাংকিংসেবা বা পার্সোনাল ব্যাংকিং এবং সম্পদ ব্যবস্থাপনা বা ওয়েলথ ম্যানেজমেন্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ কার্যাবলি। আমাদের দেশের ব্যাংকে এই ব্যবস্থার প্রচলন এখনো সেভাবে শুরু হয়নি। এখন সংস্কারের মাধ্যম প্রতিটি ব্যাংক ব্যাক্তিগত ব্যাংকিং এবং সম্পদ ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম শুরু করলেও দেশের পুঁজিবাজারে সংস্কারের অভাবে সেসব সেবা প্রদান করতে পারবে না এবং সে ক্ষেত্রে ব্যাংকিং খাতের সংস্কার সেভাবে কাজে আসবে না।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বর্তমান বিশ্বে ব্যাংকিং কার্যক্রমে এমন পরিবর্তন সাধিত হয়েছে, যেখানে আমানত সংগ্রহ করে ঋণ প্রদানের সুযোগ কমে গেছে। ব্যাংক সব সময়ই আমানতকারীর অর্থ নিয়ে ব্যবসা করে সর্বোচ্চ মাত্রার ঝুঁকির মধ্যে থাকে। কেননা ব্যাংক যে আমানত সংগ্রহ করে, তা গ্রাহকদের চাহিবামাত্র দিতে বাধ্য থাকে। এমনকি স্থায়ী আমানতের অর্থও মেয়াদ পূর্তির আগেই ব্যাংক প্রদান করতে বাধ্য হবে যদি গ্রাহক দাবি করে। পক্ষান্তরে ব্যাংক যে ঋণ প্রদান করে, সেই অর্থ মেয়াদ পূর্তির আগে তো অনেক পরের কথা, মেয়াদ পূর্তির পরও যে ফেরত আসবে, সেই নিশ্চয়তা একেবারেই নেই। ফলে ব্যাংক সব সময়ই তারল্য সংকটের একটা ঝুঁকির মধ্যে থাকে। এই ঝুঁকির মাত্রা কয়েক গুণ বেড়ে যায় যখন ব্যাংক স্বল্পমেয়াদি আমানত গ্রহণ করে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ প্রদান করে থাকে। এ কারণেই আধুনিক ব্যাংকিং ব্যবস্থায় আমানত সংগ্রহ করে ঋণ প্রদানের প্রবণতা পর্যাপ্ত হ্রাস পেয়েছে।  </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিকল্প হিসেবে ঋণের মেয়াদের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ঋণদাতা ব্যাংক বন্ড ইস্যু করে বন্ড মার্কেট থেকে অর্থ উত্তোলন করে ঋণ প্রদান করে থাকে। ধরা যাক, ব্যাংকের কাছে ২৫ বছর মেয়াদি ৫০০ কোটি টাকার একটি ঋণ প্রস্তাব এসেছে। যাচাই-বাছাই এবং বিচার-বিশ্লেষণ শেষে প্রস্তাবটি লাভজনক বিবেচিত হওয়ায় ব্যাংক ঋণ প্রদানে সম্মত হতে পারে। এ ক্ষেত্রে ব্যাংক স্বল্পমেয়াদি আমানতের অর্থ ঋণ হিসেবে প্রদান না করে, দেশের বন্ড মার্কেটে এই ৫০০ কোটি টাকার বন্ড ইস্যু করে সেই অর্থ ঋণ হিসেবে প্রদান করতে পারবে। এখন দেশে যদি কার্যকর বন্ড মার্কেট গড়ে তোলা না হয়, তাহলে ব্যাংক চাইলেও এই ধরনের আধুনিক সেবা প্রদান করতে পারবে না। ব্যাংকিং খাতে সংস্কারের মাধ্যমে দেশের ব্যাংকে এই ধরনের ঋণদান ব্যবস্থা প্রচলন করলেও, তা কাজে আসবে না যদি দেশের পুঁজিবাজারে সংস্কার করে কার্যকর বন্ড মার্কেট চালু করা না হয়। উল্টো ব্যাংকিং খাতের সংস্কার সত্ত্বেও ব্যাংকগুলো সেই আগের কায়দায় আমানতের টাকা দীর্ঘমেয়াদি ঋণ হিসেবে বিতরণ করে একই সমস্যার পুনরাবৃত্তি ঘটাবে। এ রকম অসংখ্য উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে, যেখানে বিচ্ছিন্নভাবে সংস্কার করে সে রকম কোনো লাভ হবে না, যদি সমগ্র আর্থিক খাতে সংস্কার করা না হয়।          </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মোটকথা এখন ব্যাংকিং খাতকে আর স্বতন্ত্র এবং পৃথক করে দেখার সুযোগ নেই। বরং আধুনিক অর্থব্যবস্থায় ব্যাংক, মুদ্রাবাজার, পুঁজিবাজার এবং অন্যান্য খাত মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে এবং একটি আরেকটির সঙ্গে মিলিতভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। তাই শুধু ব্যাংকিং খাতের সংস্কারের পরিবর্তে সমগ্র আর্থিক খাতের সংস্কার প্রয়োজন, যেখানে দেশের ব্যাংকিং খাতও গুরুত্বসহকারে থাকবে। </span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> লেখক: সার্টিফায়েড অ্যান্টি-মানি লন্ডারিং স্পেশালিস্ট ও ব্যাংকার, টরন্টো, কানাডা</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">nironjankumar_roy@yahoo.com</span></span></span></span></p> <p> </p>