<p> বাংলাদেশ এখন টি-টোয়েন্টি জ্বরে ভুগছে। এটা টাইফয়েডের মতো। একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ভোগাবে : দুই সপ্তাহ, তিন সপ্তাহ, আর না হয় চার সপ্তাহ। তারপর রোগীকে হাড্ডিচর্মসার করে চলে যাবে। আর আসবে না। আবার ফিরে এলে অবশ্য খবর আছে। তবে সাধারণত ফিরে আসে না।</p> <p> বাংলাদেশ নামক রোগী শুধু টাইফয়েডে নয়, একই সঙ্গে ম্যালেরিয়াতেও ভুগছে। হ্যাঁ, ম্যালেরিয়াতেও। চিকিৎসাশাস্ত্রে যুগপৎ এই দুই ধরনের জ্বরে ভোগার কথা লেখা না থাকলেও বাংলাদেশে তাই হয়েছে। পত্রিকায় হয়তো শিরোনাম হবে, 'প্রকৃতির বিচিত্র খেয়াল : একই রোগী ভুগছে দুই রকম জ্বরে- টাইফয়েড ও ম্যালেরিয়া'। টাইফয়েড ছেড়ে যাবে ৬ এপ্রিল, কিন্তু ম্যালেরিয়ার জ্বর আজ নামলেও দুই দিন পর আবার কাঁপুনি দিয়ে, গা শীত শীত করে ফিরে আসবে হুড়মুড় করে।</p> <p> টাইফয়েড তো বুঝলাম টি-টোয়েন্টি নামক ক্রিকেট, ম্যালেরিয়াটি কী? বুদ্ধিমান পাঠক ঠিকই ধরে ফেলেছেন, ম্যালেরিয়া জ্বরটি হচ্ছে বাংলাদেশের রাজনীতি। ৫ জানুয়ারির আগে এই জ্বর ১০৫ ডিগ্রি পর্যন্ত উঠেছিল, রোগী প্রচণ্ড জ্বরে আবোল-তাবোল বকছিল, বউকে বলছিল, এক গ্লাস পানি দাও না গো মা, প্রবল খিঁচুনিতে তড়পাতে তড়পাতে মেয়েকে বলছিল, বোন রে, আমার গায়ে আরো দুটো কাঁথা চাপিয়ে দে। সেই জ্বর, জ্বরের বিকার সারল, তবে তা ক দিনের জন্য। আবার কাঁপুনি দিয়ে, খিঁচুনি-নাচুনিসহ সে ফিরে এলো। এবার তার নাম উপজেলা নির্বাচন। আগেরবার হয়েছিল জাতীয় নির্বাচনী জ্বর। সেটা ছিল ম্যালেরিয়ার ভয়ংকরী রূপ : ম্যালিগন্যান্ট ম্যালেরিয়া। রোগীর তখন যায় যায় অবস্থা। দেশের ১৬ কোটি মানুষের আত্মার আকুতিতে, ময়-মুরবি্ব-পীর-ফকিরের দুআয় সে যাত্রা বেঁচে গেছে রোগী। কিন্তু ডাক্তার-বদ্যিদের নিষেধ না মেনে, অপথ্য-কুপথ্য সেবন করে আবার বাঁধিয়েছে জ্বর। এবারের জ্বরের নাম উপজেলা নির্বাচন। এই জ্বর শুরু হয়েছিল যথেষ্ট আনন্দঘন পরিবেশে। এখন কোথাও কোথাও এটা দেখা দিয়েছে 'উপজ্বালা' নির্বাচন হিসেবে। এটা আবার দফায় দফায় আসছে। পহেলা দফায় যেমনতেমন, দ্বিতীয় দফায় মাথা ধরা, গা জ্বালা, বমি বমি ভাব। তৃতীয় দফা অর্থাৎ সর্বশেষ দফায় শুরু হয়ে গেছে বিক্ষিপ্তভাবে হলেও নাচুনি-খিঁচুনি। সঙ্গে ভেদবমি। রোগী তার স্বভাবমতো জ্বরের ঘোরে যা মুখে আসছে তাই বলছে। শুনে বাড়ির বউ-ঝিরা মুখে আঁচলচাপা দিয়ে সরে পড়ছে। ডাক্তার-কবিরাজ বলছে, লক্ষণ ভালো নয়। অবস্থা বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে যাচ্ছে। এরপর কোনো অ্যান্টিবায়োটিক, কোনো জড়িবুটিতে কাজ হবে না। এদিকে মহাবিদ্বান রোগীর অভিভাবক বলছে, ওই ব্যাটা ডাক্তার কী বোঝে? আমি সব জানি। রোগীর সব ঠিক আছে। রোগীকে ভালোমন্দ সব কিছু খেতে দাও। যেখানে খুশি যেতে দাও, যেমন খুশি চলতে দাও। রোগীর 'দিল বাহলানেকে লিয়ে' গান-বাজনার আসর বসাও। খাও-দাও ফুর্তি কর।</p> <p> উপজেলা নির্বাচনের ম্যালেরিয়া জ্বরের জ্বালায় রোগী যখন কাতরাচ্ছে তখন শুরু হলো টি-টোয়েন্টির টাইফয়েড। হুকুম হলো, রোগীকে তো আর আফিম খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখা যাবে না, কারণ আফিম একটি নিষিদ্ধ মাদক। অতএব? অতএব, বসাও একটি জমকালো গান-বাজনার আসর। মুমূর্ষু মনহুস রোগী তো আর অতশত বুঝবে না, সে ভাববে, তার মঙ্গলের জন্য কর্তা কত কী না করছেন! এমন আসর বসাবে যা রোগী কেন, তার বাপদাদা-চৌদ্দ পুরুষ কোনো দিন চোখে দেখেনি। এমন শিল্পীদের আনো, যাদের দেখে দেশবাসীর চমক লেগে যাবে। এমন গান শোনাবে, যা শুনে শ্রোতাদের কানে তালা লেগে যাবে, লাস্যময়ী নৃত্যশিল্পীরা এমন নাচ দেখাবে, খবরের কাগজে যার সচিত্র বয়ান পাঠ করে ধর্মব্যবসায়ীরা দর্শকদের জন্য বিবি তালাকের ফতোয়া খুঁজবে, আর বিবিরা সম্মার্জনী হস্তে ওই নৃত্যদর্শক স্বামী নামক আসামিকে তাড়া করবে, চৌকাঠ ডিঙিয়ে ঘরে ঢুকতে দেবে না। বুঝছই তো, এখন দিনটা হচ্ছে চমকের আর ধমকের।</p> <p> ২. তারপর? তারপর বিসিবির সেলিব্রেশন কনসার্টের নামে কয় দিন আগে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে কী হয়েছে, তা দেশবাসী সবাই দেখেছেন।</p> <p> মাসটার নাম মার্চ। আমাদের স্বাধীনতার মাস। ১৯৭১ সালে এই মাসেই বর্বর পাকিস্তানি বাহিনী নিরস্ত্র নিরপরাধ বাঙালি জাতির ওপর রাতের অন্ধকারে উন্মত্ত হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। পাকিরা চেয়েছিল বাঙালির ভাষা-সাহিত্য, শিল্প-সংস্কৃতিকে ধ্বংস করে দিয়ে এ দেশে উর্দু ভাষা ও সংস্কৃতির প্রসার ঘটাতে, যেমনটি হয়েছে পশ্চিমবঙ্গে, যেখানে বাঙালি বাংলাভাষাকে স্বভূমে পরবাসী করে বরণ করে নিয়েছে হিন্দিকে। পূর্ব বাংলার মানুষ এই ধরনের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল সেই ১৯৪৭ সালে, দেশবিভাগের পরপরই, ভাষার জন্য বুকের রক্ত দিয়েছিল বায়ান্নতে। তারপর একাত্তরের ২৫ মার্চের পর সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে ছিনিয়ে এনেছে বাঙালির ভাষা-শিল্প-সংস্কৃতির ঐতিহ্যমণ্ডিত রক্তলাল স্বাধীনতা।</p> <p> <a name=\"RIMG0\"></a></p> <p> যাঁরা ২০১৪ সালের মার্চ মাসে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে সীমান্তের ওপার থেকে হিন্দি গানের একজন বিশ্ববরেণ্য শিল্পী ও পাশ্চাত্যের ধুমধাড়াক্কা ইংরেজি ব্যান্ডের তাণ্ডবসংগীত আমদানি করলেন, তাঁদের কাছে বিনীত প্রশ্ন : সেলিব্রেশন কনসার্টে বিজাতীয় হিন্দি ও পাশ্চাত্য সংস্কৃতির জয়গাথা তুলে ধরে আপনারা কী সেলিব্রেট করলেন? মার্চ মাসে শুরু হওয়া বাঙালির মুক্তিযুদ্ধ? লাখ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ? না কি উর্দুকে হটিয়ে হিন্দির বিজয়-বৈজয়ন্তী? পাশ্চাত্য ঢংয়ের ছলাকলাপূর্ণ নৃত্যপটীয়সী হ্রস্ববসনা উদ্ভিন্নযৌবনা বিদেশিনীরা কাদের মনোরঞ্জনের জন্য মেদিনী কাঁপিয়ে লম্ফঝম্প করল সেদিন? বুকে হাত দিয়ে বলুন তো, ওই অত্যন্ত উঁচুমানের হিন্দি গানের ঝঙ্কার ও ততধিক উত্তেজনাবর্ধক নৃত্যকলার সমারোহ সত্ত্বেও মঞ্চে উপবিষ্ট ভি-ভি-ভি-ভি-আই-পি-রা কি সেদিন ওই নৃত্যগীত অবলোকন করে পরম পরিতোষ লাভ করেছিলেন? আর এত টাকা দিল কোন গৌরী সেন? এটা কি এ দেশের জনগণের রক্তমাংস জলকরা পয়সা, না শুভেচ্ছার নিদর্শনস্বরূপ গঙ্গা-তিস্তার স্রোতধারা বন্ধ করে দিয়ে নৃত্যগীতের মন্দাকিনীর মাগনা সিঞ্চন? আপনারা কী বলবেন, ১০০ কোটি টাকা যাঁরা চাঁদা দেন, তাঁরা রাতারাতি কয় শ কোটি টাকা সুদেমূলে তুলে নেন ১৬ কোটির চান্দিতে নুন রেখে বরই খেতে খেতে? তাহলে চাঁদার পয়সাটা আসলে কার? টিভি ক্যামেরার সামনে কান-এঁটো-করা বিগলিত হাসি দিয়ে যাঁরা সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষের হাতে কোটি টাকার চাঁদার চেক তুলে দিচ্ছেন তাঁদের, নাকি যাদের কাছ থেকে ওই চেকের টাকার দ্বিগুণ পরিমাণ টাকা তাঁরা অচিরেই তুলে নেবেন তাদের?</p> <p> আচ্ছা, কী এমন গরজ পড়েছিল টি-টোয়েন্টি কাপের আয়োজন হওয়ার ব্যাপারটাকে এ রকম ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে 'ব্লো-আপ' করার? এটা সেলিব্রেট বা উদযাপন করার কী এমন বিষয় হলো? এমন তো নয় যে টি-টোয়েন্টি কাপটা বাংলাদেশ জিতে গেছে, কিংবা ওয়ার্ল্ড কাপ। সেই সুদিন যেদিন আসবে, সেদিন তো বোধহয় স্কুল-কলেজ এক মাস ছুটি দিয়ে দেওয়া হবে। আর বিশ্বের যত শীর্ষস্থানীয় গায়ক-গায়িকা, নায়ক-নায়িকা, রাষ্ট্রনায়ক-রাষ্ট্রনায়িকা আছেন, তাঁদের পদচারণে প্রকম্পিত হবে এই গাঙ্গেয় বদ্বীপ! এই আদেখলাপনা কেন? নাকি কর্তাব্যক্তিদের মাথায় এসেছে, বাংলাদেশ যে বিশ্বসভায় এখন একটা কেষ্টবিষ্টু হয়ে গেছে, বড় বড় আসর বসানোর জন্য যে বিশ্বমোড়লরা তাঁদের ডাক দেন, তাঁরা যে কতটা 'ইম্পোটেন্টো' তাঁবেদার হয়ে উঠেছেন তাদের কাছে, দেশকে তাঁরা উন্নতির কোথায় কোন মগডালে নিয়ে গেছেন- এসব বিষয় এই 'মূঢ়-ম্লান-মূক মুখের' মানুষদের বোঝাতেই হবে।</p> <p> ঠিক আছে, যত খুশি বোঝান। দেশবাসী যদি আপনারা যা বোঝাতে চাচ্ছেন, তা অত সহজে বুঝে ফেলে, যা গেলাতে চাচ্ছেন, তা গিলে ফেলে, তাহলে নিশ্চয়ই আপনারা দশে দশ পাবেন। কিন্তু মনে রাখবেন, 'ভবী ভোলে না' বলে একটা কথা আছে। তারা মরছে তাদের জীবনজগতজনিত হাজারটা জ্বালায় জর্জরিত হয়ে। তাদের জোয়ান ছেলেটি ঘরের বাইরে গেলে ভালয় ভালয় ফিরবে কি না সেই চিন্তা, শিশুটি কি নারায়ণগঞ্জের নিষ্পাপ কুসুমকলিদের মতো বিনা দোষে অকালে ঝরে যাবে, কিংবা বার্ন ইউনিটের বিছানায় অঙ্গার হয়ে পড়ে পড়ে কাতরাবে, সেই আতঙ্ক। চালের দাম, তেলের দাম, বিদ্যুতের দাম, ছেলের চাকরি, মেয়ের বিয়ে, বউয়ের চিকিৎসা- এসব দুশ্চিন্তায় তাদের ঘুম হয় না। এসব সমস্যার সমাধান চায় তারা আপনাদের কাছে, কনসার্টের মাদকে তাদের কোন অভিরুচি নেই। এগুলো দিয়ে তাদের ঘুম পাড়িয়ে রাখা যাবে না।</p> <p> এক আকাশ-সংস্কৃতির জ্বালায় আমরা অস্থির। আমরা মানে তরুণদের-নবীনদের মা-বাপ, চাচা-চাচি, মামা-মামি- যাঁদের নতুন নামকরণ হয়েছে ড্যাডি-মামি, আঙ্কেল-আন্টি। ছেলেমেয়েদের পোশাক-আশাক, কথাবার্তা, চলাফেরা, মেলামেশায় বাঙালিয়ানা তো যেতে বসেছেই, এমনকি বাসার কাজের ছেলে, বুয়ারাও হিন্দি বলতে বলতে হেসে গড়িয়ে পড়ে। তার ওপর সেই আকাশ-সংস্কৃতিকে এখন সরকারি উদ্যোগে যদি স্টেডিয়ামে নামিয়ে আনা হয়, তাহলে কেমন লাগে! নিতান্ত ব্যবসায়িক কারণে আজকের মুক্তবাজার অর্থনীতির দিনে যদি কেউ শাহরুখ খান-সালমান খান-বাপ্পী লাহিড়ীদের নিয়ে এসে হাম্বাসংগীত-খাম্বানৃত্যের আয়োজন করে, তা সহ্য করা যায়, কিন্তু একটা আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠানকে উপলক্ষ করে বাংলাদেশের শিল্প-সংস্কৃতির 'শো-কেসিংয়ের' নামে ভারতের রাষ্ট্রভাষা, তার সংগীত, তার নৃত্য, মার্কিন মুলুকের গায়কের ভিনদেশি পরিবেশনাকে সরকার কর্তৃক 'হাইলাইট' করতে হবে, এটা কেমন কথা? কেন, 'শো-কেসিং' করার মতো কোনো আনন্দঘন বিনোদন কি আমাদের নেই? আয়োজকরা ও তাঁদের চারপাশের সংস্কৃতিসেবীরা, এক শ্রেণীর বুদ্ধিজীবীরা তো সুযোগ পেলেই লালন-হাসন-আব্দুল করিম, রবীন্দ্রনাথ-নজরুল-আব্বাসউদ্দিনদের উদ্দেশে ঘড়া ঘড়া কুম্ভীরাশ্রু বর্ষণ করেন, কড়াপাকের বক্তৃতা-বিবৃতি ঝেড়ে দেশপ্রেমের পরাকাষ্ঠা প্রদর্শন করেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলতে বলতে মুখে ফেনা তোলেন (পারলে ওটাকে পেটেন্ট করে ফেলেন রেজিস্ট্রার জয়েন্ট স্টক কম্পানির দপ্তরে দরখাস্ত দিয়ে!)। অথচ এত বিশাল আয়োজনের একটি অনুষ্ঠানে দেশের শিল্প-সংস্কৃতিকে যে অবহেলা করা হলো, দেশের একটি জনপ্রিয় ব্যান্ডদলকে যে মঞ্চে উঠতেই দেওয়া হলো না, সে ব্যাপারে মনে হচ্ছে তাঁদের 'বাক্যি হরে গেছে'। নাকি তাঁরা তাঁদের 'কিং ক্যান ডু নো রং', (আপনি কস্মিনকালে কদাচ ভ্রান্তিতে নিপতিত হতে পারেন না, রাজন) নীতি থেকে এক চুলও নড়তে চান না?</p> <p> ৩. ১৬ মার্চের উদ্বোধনী খেলার আগে সারা দেশ দারুণ টেনশনে ভুগছিল। একটা 'না জানি কী হয়' 'না জানি কী হয়' ভাব এই ক্রিকেটপাগল দেশের মানুষকে আচ্ছন্ন করে রেখেছিল। যা হোক, শেষ পর্যন্ত মানির মান আল্লাহ রেখেছেন, ৯ উইকেটের বিশাল জয়ের সঙ্গে সঙ্গে সারা জাতির যেন জ্বর দিয়ে ঘাম ছাড়ল। এত টেনশনের কারণ এই আফগান ভাঙা শামুকেই ক দিন আগে সুন্দরবনের মামাদের পা কেটেছিল।</p> <p> হ্যাঁ, কথাটা ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়া, জ্বর দিয়ে ঘাম ছাড়া নয়। এই নিবন্ধের শিরোনামে এটা উল্টো করে লেখার কারণটা ব্যাখ্যা করে আজকের মতো বিদায় জানিয়ে 'টাইগারস বনাম নেপালি শেরপাজ' লড়াই দেখার প্রস্তুতি নেব।</p> <p> কোন ছোটখাটো বা মাঝারি ধরনের ফাঁড়া কেটে গেলে কখনো কখনো আমি এই ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়া প্রবচনটি ব্যবহার করি। কিন্তু যখন কোন বে-অসম্ভব রকম বিপদ থেকে উদ্ধার পাই তখন সেটাকে বলি জ্বর দিয়ে ঘাম ছাড়া। যেমন খুব কষ্ট করে কিছু অর্জন করলে আমি বলি, পায়ের ঘাম মাথায় ফেলে পাওয়া গেল, মাথার ঘাম পায়ে ফেলে নয়। আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে জয়লাভ ছিল ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়া।</p> <p> আর রাজনীতির যে দুষ্টচক্রে (ভিশাস সার্কেল) জাতি আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধা পড়েছে, সেই ম্যালিগনেন্ট ম্যালেরিয়ার কবল থেকে মুক্তি পাওয়া হবে জ্বর দিয়ে ঘাম ছাড়া। সেটা কবে হবে? (আদৌ হবে তো?)</p> <p> আর তার জন্য পুরো জাতিকে আর কত দিন পায়ের ঘাম মাথায় ফেলতে হবে?</p> <p> লেখক : সাবেক সচিব, কবি ও কলাম লেখক</p> <p> mkarim06@yahoo.com</p> <p>  </p> <p>  </p>