<p style="margin-bottom:13px"><span style="font-size:11pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:SolaimanLipi">গ্রামাঞ্চলের অনেক মুখরোচক ও ঐতিহ্যবাহী খাবার রয়েছে, যা শুধু গ্রামেই পাওয়া যায়, শহরে মেলে না। এমন খাবারগুলোই ভালো পরিবেশে উৎপাদন করে, গুণগত মান ঠিক রেখে এবং সুন্দর প্যাকেজিং করে শহরের মানুষের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে সেফ ট্রেডিং করপোরেশন বা সতেজ ফুড।</span></span></span></span></span></span></p> <p style="margin-bottom:13px"><span style="font-size:11pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:SolaimanLipi">২০২২ সালে বর্ষসেরা জাতীয় এসএমই উদ্যোক্তা পুরস্কার পেয়েছেন কম্পানিটির প্রতিষ্ঠাতা মো. মোস্তাফা কামাল। মাত্র তিনজন কর্মী নিয়ে শুরু হলেও এখন তাঁর অধীন কাজ করেন ৩৫ জন। বিয়ের সময় স্ত্রীকে দেওয়া দেনমোহরের ৯২ হাজার টাকা দিয়েই শুরু হয় তাঁদের যাত্রা। তাঁর কম্পানিতে এখন তৈরি হচ্ছে মুড়ির মোয়া, চিড়ার মোয়া, নিমকি, নাড়ু, ফুসকা, পাপড়, চুই পিঠা, খুরমা, বাদাম পাপড়িসহ ৪৫ ধরনের পণ্য।</span></span></span></span></span></span></p> <p style="margin-bottom:13px"><span style="font-size:11pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:SolaimanLipi">মোস্তাফা কামাল বলেন, আমি পড়া অবস্থায় এলাকার বিভিন্ন মেলায় দেখতাম বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী মুখরোচক খাবার বিক্রি হতো। যেমন</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:SolaimanLipi">পিঠা, নিমকি, মুড়ির মোয়া, চিড়ার মোয়া, নাড়ু। কিন্তু সেগুলো স্বাস্থ্যসম্মতভাবে বিক্রি হয় না। তখন থেকেই আমার চিন্তা ছিল যে এই পণ্যগুলো কিভাবে ভালো পরিবেশে উৎপাদন করে মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায়। গ্রামের হারিয়ে যাওয়া খাবারগুলো শহরের মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার চিন্তা থেকে ২০১০ সালে এই ব্যবসা শুরু করি। ২০০১ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত আমি চাকরি করি। যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করতাম, সেটি ২০০৯ সালে বন্ধ হয়ে যায়। এরপর আমার স্ত্রীকে আমার লালন করা চিন্তার কথা জানাই। তখন সে বলল শুরু করা যায়। তখন আমার কাছে কোনো টাকাও ছিল না। স্ত্রীকে দেনমোহরের যে টাকা দিয়েছিলাম বিয়ের সময়, সেই ৯২ হাজার টাকা সে রেখে দিয়েছিল। সেই টাকা দিয়েই ব্যবসা শুরু করলাম। </span></span></span></span></span></span></p> <p style="margin-bottom:13px"><span style="font-size:11pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:SolaimanLipi">শুরুতেই আমি ফ্যাক্টরি নিতে পারিনি। তখন উত্তরায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে আমি, আমার স্ত্রী শায়লা আখন্দ তিনজন কর্মীকে নিয়োগ দিলাম। আর এই পণ্যগুলো তখন পাবনা, নরসিংদী ও ঢাকার বিভিন্ন জায়গা থেকে সংগ্রহ করে বিক্রি শুরু করলাম। প্রথম মাসে বিক্রি হলো ১২ হাজার টাকা। বিভিন্ন দোকানে গিয়ে কথা বলে, দোকানের তাকে একটু জায়গা বের করে ডাস্টার দিয়ে পরিষ্কারের পর আমার পণ্যগুলো ডিসপ্লে করে রেখে আসতাম। পর দিন গিয়ে খোঁজ নিতাম বিক্রি হয়েছে কি না? সবাই টাকা দিত না, বাকিতে পণ্য দিয়ে আসতাম। আমি নিজেই পণ্য সরবরাহ করার পাশাপাশি মার্কেটিং শুরু করলাম। আমার স্ত্রী ও তিনজন শ্রমিক প্যাকেজিংয়ের কাজ করত। </span></span></span></span></span></span></p> <p style="margin-bottom:13px"><span style="font-size:11pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:SolaimanLipi">এরপর সুপারশপগুলোতে গেলাম। প্রথমে যাদের কাছে গিয়েছি, তারা কেউ আমার পণ্য রাখতে চায়নি। তখন মিনাবাজারে গিয়ে তাদের বলেছিলাম, আমি খুব ক্ষুদ্র একজন মানুষ। আপনারা যদি সহায়তা করেন, তাহলে ভালো সাপোর্ট আপনাদের দিতে পারব। তখন তারা আমার পণ্য নেয়, ২০১১ সালের দিকে। আমার পণ্য তাদের ওখানে অনেক ভালো বিক্রি হওয়া শুরু হলো। কিছুদিন পর যাদের কাছ থেকে পণ্য নিয়ে আসতাম, তারা পণ্যের মান খারাপ করে আমাকে দিল। এতে হঠাৎ করে আমার পণ্য বিক্রি কমে গেল। তখন সব পণ্য আবার ফেরত নিয়ে এলাম। আর সব নষ্ট করে দিতে হলো। তখন টঙ্গীবাজারে দ্রুত একটি ফ্যাক্টরি নিয়ে নিলাম, যাতে নিজেরাই পণ্যগুলো তৈরি করতে পারি। তিন-চার দিনে আমরা কারখানা চালু করে ফেললাম। কারখানায় ছয়জন উৎপাদনে এবং প্যাকেজিংয়ের জন্য তিনজনকে নিয়োগ দিলাম। এভাবেই ব্যবসা দাঁড়াতে শুরু করে। এই দীর্ঘ যাত্রায় ২০১২ সালে তিন লাখ এবং ২০১৭ সালের পর দুই দফায় ৫০ লাখ টাকা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছিলাম। এখন আমাদের কারখানায় ৪৫ ধরনের পণ্য তৈরি হচ্ছে। আর ৩৫ জন লোক আমার অধীন কাজ করে। মাসে ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকা বিক্রি হয়।</span></span></span></span></span></span></p> <p style="margin-bottom:13px"> </p> <p style="margin-bottom:13px"> </p>